
ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ভেকু ভাড়া করে এনে আওয়ামী লীগ অফিসটি গুঁড়িয়ে দেয়।
এর আগে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় দলটির পরিত্যক্ত ভবনে আগুন দেয় ছাত্র জনতা। পরে কার্যালয়ের ভাঙ্গা দেয়ালের সামনের অংশে লাল রং দিয়ে বড় করে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দেয় তারা।
এছাড়াও আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি যেখানে অবস্থিত সেই স্থানটিকে ‘পাবলিক টয়লেট মোড়’ নাম দেয় ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এরপর খড়মপট্টি এলাকায় অবস্থিত জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙে ছাত্র-জনতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শেখ হাসিনা ভারত থেকে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে ভাষণ দেবেন- এমন খবর শুনে বিক্ষুব্ধ শত শত ছাত্র-জনতা হাতুড়ি, শাবল নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যলের সামনে জড়ো হয়। ভাষণ শুরুর খবরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের দেয়াল ভাঙচুর শুরু করে তারা।
এর আগে গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় এবং ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুই দফা হামলা-ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছিল।
ছয় মাস পর বুধবার রাতে আবারও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পরিত্যক্ত ভবনে ভাঙচুর করে। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের ভৈরব, বাজিতপুর ও পাকুন্দিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর এবং উপজেলা পরিষদের নির্মিত শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙ্গে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা। বৃহস্পতিবার সকালে পাকুন্দিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে থাকা শেখ মুজিবের ম্যুরাল, দুপুরে বাজিতপুরে এমপি মার্কেটের সামনে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙ্গে দেওয়া হয়। শত শত মানুষ এসব ম্যুরাল ভাঙচুরে অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদরের বিন্নাটি চৌরাস্তা মোড়ে থাকা সাবেক তিন রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্য ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার অন্যতম সংগঠক আশরাফ আলী সোহান জানান, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে আবার বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পায়তারা করছেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করছে। হাসিনা ভারত থেকে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা জেলা আওয়ামী কার্যালয়ে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দিয়েছেন এবং শেখ মুজিবের ম্যুরালও ভাঙচুর করেছেন। সর্বশেষ ভেকু দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তাসলিমা আক্তার মিতু/মাহফুজ