ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়
ছবি: খবরের কাগজ

ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ভেকু ভাড়া করে এনে আওয়ামী লীগ অফিসটি গুঁড়িয়ে দেয়। 

এর আগে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় দলটির পরিত্যক্ত ভবনে আগুন দেয় ছাত্র জনতা। পরে কার্যালয়ের ভাঙ্গা দেয়ালের সামনের অংশে লাল রং দিয়ে বড় করে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দেয় তারা। 

এছাড়াও আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি যেখানে অবস্থিত সেই স্থানটিকে ‘পাবলিক টয়লেট মোড়’ নাম দেয় ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এরপর খড়মপট্টি এলাকায় অবস্থিত জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙে ছাত্র-জনতা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শেখ হাসিনা ভারত থেকে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে ভাষণ দেবেন- এমন খবর শুনে বিক্ষুব্ধ শত শত ছাত্র-জনতা হাতুড়ি, শাবল নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যলের সামনে জড়ো হয়। ভাষণ শুরুর খবরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের দেয়াল ভাঙচুর শুরু করে তারা।

এর আগে গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় এবং ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুই দফা হামলা-ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছিল।

ছয় মাস পর বুধবার রাতে আবারও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পরিত্যক্ত ভবনে ভাঙচুর করে। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।

এদিকে বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের ভৈরব, বাজিতপুর ও পাকুন্দিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর এবং উপজেলা পরিষদের নির্মিত শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙ্গে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা। বৃহস্পতিবার সকালে পাকুন্দিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে থাকা শেখ মুজিবের ম্যুরাল, দুপুরে বাজিতপুরে এমপি মার্কেটের সামনে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙ্গে দেওয়া হয়। শত শত মানুষ এসব ম্যুরাল ভাঙচুরে অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদরের বিন্নাটি চৌরাস্তা মোড়ে থাকা সাবেক তিন রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্য ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার অন্যতম সংগঠক আশরাফ আলী সোহান জানান, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে আবার বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পায়তারা করছেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করছে। হাসিনা ভারত থেকে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা জেলা আওয়ামী কার্যালয়ে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দিয়েছেন এবং শেখ মুজিবের ম্যুরালও ভাঙচুর করেছেন। সর্বশেষ ভেকু দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

তাসলিমা আক্তার মিতু/মাহফুজ 

 

কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:০৫ এএম
কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার
ছবি : খবরের কাগজ

সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের সময় পাচটি ভারতীয় গান (এয়ার গান), একটি ভারতীয় পিষ্টন অ্যাসেম্বলি ও ৩৩ হাজার ১০০ পিস ভারতীয় সিসাগুলি উদ্ধার করেছে বিজিবির কুড়িগ্রাম ২২ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাত ১২টার দিকে ২২ বিজিবির অধীনস্থ দিয়াডাংগা বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার মেইন পিলার-৯৮৫/৩-এস এর নিকট দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচারের সময় এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। তবে এগুলোর মালিক পালিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানিয়েছে বিজিবি।

বিজিবি জানায়, অস্ত্র গোলাবারুদ পাচারের গোপন খবর পেয়ে শুক্ববার রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে সদর ও দিয়াডাংগা বিওপির ১৯ সদস্যের বিশেষ টহলদল ওই এলাকায় গোপনে অবস্থান নেন। এ সময় কয়েকজন ব্যক্তি ভারত হতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসতে দেখে তাদের সন্দেহ হলে বিজিবির টহলদল তাদের আটক করতে এগিয়ে গেলে এসব অস্ত্র গোলাবারুদ ফেলে ভারতের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়।

পরে তল্লাশী ভারতীয় পাঁচটি গান, একটি পিষ্টন অ্যাসেম্বলি, ৩৩,১০০ পিস সিসা গুলি পায়। এ সময় পাচাকারীদের ফেলে যাওয়া একটি ভারতীয় হিরো ইগনেটর মোটরসাইকেল জব্দ করে বিজিবি।

বিজিবি জানায়, মোটরসাইকেলসহ এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদের মূল্য ৮লাখ ২৬ হাজারেরও বেশি টাকা। এসব এয়ার গান পাখি মারার কাজে ব্যবহার করা হয়।

বিজিবির ২২ কুড়িগ্রাম ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মাহবুব-উল-হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সীমান্তে পর্যাপ্ত টহল অব্যাহত রয়েছে।

মওলা সিরাজ/জোবাইদা/

প্লাস্টিক জমা দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে নিত্যপণ্য

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:০০ এএম
প্লাস্টিক জমা দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে নিত্যপণ্য
চট্টগ্রামে প্লাাস্টিক জমা দিয়ে বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী গ্রহণ। ছবি: খবরের কাগজ

ক্লিন বাংলাদেশের উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সহযোগিতায় নগরের কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারে প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার উদ্বোধন করা হয়েছে। সামনে চসিকের ৪১টি ওয়ার্ডে ভ্রাম্যমাণ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে নগরের কাজীর দেউরি কাঁচাবাজারের সামনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘ক্লিন বাংলাদেশের উদ্যোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সার্বক্ষণিক সহযোগিতা থাকবে। পাশাপাশি ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি, হেলদি সিটি বাস্তবায়নে এবং প্লাস্টিক ও পলিথিনের ফলে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবে এই উদ্যোগ। সামনে ক্লিন বাংলাদেশ সংগঠনকে নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে ভ্রাম্যমাণ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার চালু করা হবে।’ 

নগরীর জলাবদ্ধতা ও প্লাস্টিকদূষণ রোধে ক্লিন বাংলাদেশ এই উদ্যোগটি নিয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় রমজান উপলক্ষে ‘প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার’ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। নগরের চকবাজার, বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ কাঁচাবাজারের পর এবার কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারে চতুর্থ নতুন বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ জনগণ ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিন জমা দিয়ে বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী- ছোলা, খেজুর, চিড়া, আলু, পেঁয়াজ, ডিম ইত্যাদি সংগ্রহ করতে পারবেন।

ক্লিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শওকত হোসেন জনি বলেন, “শহরকে প্লাস্টিক ও পলিথিন নিয়ে আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ক্লিন বাংলাদেশ এভাবে নগরীর প্রত্যেকটা পয়েন্টে চালু রাখার চেষ্টা থাকবে। আমরা চেয়েছি সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান দিতে- যেখানে পরিবেশ রক্ষা ও মানবিক সহায়তা একসঙ্গে করা যায়। তাই ‘প্লাস্টিক আনুন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিন’ এই ধারণা নিয়ে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এটি শুধু প্লাস্টিকদূষণ রোধ করবে না, বরং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রমজানের সময়ে সহায়তা হিসেবে কাজ করবে।”

প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার প্রোগ্রামটি পরিচালনা করছেন ক্লিন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক তানভীর রিসাত। তিনি বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের হাত ধরেই পরিবর্তন হবে আমাদের লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এই প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নারের মাধ্যমে শুরু হোক পরিবর্তন ও সচেতনতা। যেখানে সেখানে প্লাস্টিক ও পলিথিন না ফেলে জমা দিয়ে নিতে পারছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, যা মানুষকে একদিকে যেভাবে সচেতন করা হচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশকে রক্ষা করতে ভূমিকা রাখছে। রমজান মাসজুড়ে প্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে।’ 

পটিয়ার শেভরণ হাসপাতাল: ইনজেকশন দিতেই মারা গেল ৪ মাসের শিশু

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৭ এএম
পটিয়ার শেভরণ হাসপাতাল: ইনজেকশন দিতেই মারা গেল ৪ মাসের শিশু
চট্টগ্রামের পটিয়ার শেভরণ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পটিয়ার শেভরণ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় চার মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠেছে। নিহত শিশুর নাম নুর আফসা। শিশুটির বয়স তিন মাস। এ ঘটনায় হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল ৯টায় ওই শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির কানে সমস্যা ছিল, একই সঙ্গে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ছিল। 

ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ করে শিশু আফসার চাচা মো. কাদের খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার ভাতিজির নিউমোনিয়া ও হালকা কানের সমস্যা ছিল। তাই তাকে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে পটিয়া পৌরসভার পটিয়া শেভরণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তাকে একটি ইনজেকশন দিতে হবে জানিয়ে ডাক্তার দেলোয়ার লিখে দেন। আমরা সেই অনুযায়ী পটিয়া শেভরণ হাসপাতালের ফার্মেসি থেকেই সেটি কিনে নিই। এরপর নার্স সেটি পুশ করার পর পরই আমার ভাতিজি মারা যায়। অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ইনজেকশনটি ছিল বয়স্ক মানুষের। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। তারা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে বলেছে। আমরা এখন শিশুটির ময়নাতদন্ত করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসেছি।’ 

জানা গেছে, নিহত শিশু নুর আফসা উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের সাকিব আল হাসানের মেয়ে। এ ঘটনায় শিশুটির বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে বলে জানা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলে, শিশুটির মৃত্যুর পর হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রোগীর স্বজনরা। তারা হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষের গ্লাস, জানালা ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। পরে পটিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

শেভরণ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদ হাসান বলেন, ‘শিশুটিকে ডা. দেলোয়ার দেখছিলেন। নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীকে কোনো কিছু খাওয়ানোর নিয়ম নেই। কিন্তু রোগীর মা চিকিৎসা চলাকালে বাচ্চাটিকে বুকের দুধ খাওয়ালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ অবস্থায় চিকিৎসক ইনজেকশন পুশ করেন। পরে বাচ্চাটি মারা যায়।’

এ সময় তিনি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘রোগীর স্বজনদের অভিযোগ তদন্ত করা হবে। তদন্তে কারও গাফিলতির প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুন নুর বলেন, ‘হাসপাতালে হট্টগোল হচ্ছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ সুরুহাল রিপোর্ট করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক আটক

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৮ এএম
বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক আটক
ছবি : খবরের কাগজ

মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে রাজেন রায় (২৪) নামে এক যুবককে আটক করেছে বড়লেখা থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে বড়লেখার নিউ সমনবাগ চা বাগানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত রাজেন রায়কে আটক করা হয়।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম সরকার বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) নিউ সমনবাগ চা বাগানের এক তরুণীকে (২১) ধর্ষণ করা হয়েছে বলে একটি সংবাদ পাই। তার ভিত্তিতে আজ অভিযুক্ত রাজেন রায়কে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম জানান, নারীদের প্রতি যেকোনো যৌন হয়রানি বা সহিংসতার বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।

পুলক পুরকায়স্থ/জোবাইদা/

পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ খাওয়ারও পানি নেই

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২২ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৮ এএম
পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ খাওয়ারও পানি নেই
তীব্র পানির সংকটে ভুগছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পাশে পরিত্যাক্ত টিউবওয়েল। ছবি: সংগৃহীত

পানির তীব্র সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখানে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। হাসপাতালের তিনটি পানির ফিল্টারই নষ্ট। এ ছাড়া টিউবওয়েলগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এ ছাড়া হাসপাতালের ড্রেনগুলোও অপরিষ্কার। এতে মশার উপদ্রব বাড়ছে। এ কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। 

হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারীরা বলেন, ‘ভর্তি রোগীদের সুবিধার্থে কয়েক বছর আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দোতলায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে একটি ফিল্টার স্থাপন করা হয়। এর সুবিধা রোগীরা আজও পাননি। ওষুধ খাওয়ানোর জন্য সামান্য পানিও আনতে হয় মহাসড়কের কাছের চায়ের দোকানের পাশের টিউবওয়েল থেকে। অথচ কাছেই রয়েছে কয়েকটি পানির ফিল্টার। সেগুলো নষ্ট থাকায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না। রোগীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে মাঝে মধ্যে জানানো হয়। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি টিউবওয়েল থাকলেও সঠিক তদারকির অভাবে সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আবার পানি সরবরাহে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফিল্টার বসানো হয়। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে ফিল্টারে পানি সরবরাহ বন্ধ আছে। এতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। জরুরি প্রয়োজনে রোগীর স্বজনেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরের একটি টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা না রাখায় জন্ম নিচ্ছে এডিস মশার লার্ভা। হাসপাতালের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে ময়লার স্তূপ। আয়রনমুক্ত পানির জন্য রাখা ফিল্টারও অকেজো হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে প্রথম কমপ্লেক্স ভবন চালু হয়। শুরু থেকে ৩১ শয্যা সেবা কার্যক্রম থাকলেও সেটি ২০১০ সাল থেকে উন্নীত করে ৫০ শয্যা করা হয়। বাড়ানো হয় চিকিৎসকের সংখ্যা ও সেবা কার্যক্রম। এদিকে কমপ্লেক্স এলাকায় একাধিক টিউবওয়েল থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো প্রায় ৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। এর কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা প্রতিনিয়ত খাবার পানির সংকটে ভুগছেন। আবার কর্মরত চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চেয়ে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। এতে কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা এখন ভেঙে পড়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা আসমা বেগম বলেন, ‘দুই দিন ধরে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। এখানে বিশুদ্ধ পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের কাছাকাছি একটি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে হয়।’

অপর এক রোগীর স্বজন শরীফা খাতুন বলেন, ‘হাসপাতালজুড়ে কোথাও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। এখানে আসা কিংবা ভর্তি রোগীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি বাড়ি থেকে আনতে হয়। হাসপাতালে প্রচুর মশা। পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ভালো না।’ 

চিকিৎসা নিতে আসা আরফিন নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘আমরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। এর মধ্যে সব থেকে বড় সমস্যা হলো, এখানে খাবার পানির সংকট। এ ছাড়া শৌচাগার একেবারে অপরিষ্কার। রাতে পানির প্রয়োজন হলে মেডিকেলের গেটের ওপারে মহাসড়কের কাছে একটি টিউবওয়েল থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এখানে তিনটি টিউবওয়েল সবই নষ্ট।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ হাসান শাওন বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে তিনটি ফিল্টার বসানো হয়। তবে কারিগরি কিছু ত্রুটির কারণে এগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। নষ্ট টিউবওয়েল বিষয়ে আমি সব জায়গায় জানিয়েছি। আমি পৌরসভারও সদস্য, সেখানেও জানিয়েছি। টিউবওয়েলগুলো অনেক আগের। এগুলো মেরামত করা সময়সাপেক্ষ। তবুও আশা করছি, দ্রুত বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসন হবে।’