ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

জনগণের শান্তির জন্য যা যা করার সব করব: জিএমপি কমিশনার

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৮ পিএম
জনগণের শান্তির জন্য যা যা করার সব করব: জিএমপি কমিশনার
ছবি: খবরের কাগজ

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, জনগণের শান্তির জন্য যা যা করার আমরা অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে সব অপারেশনই করবো। আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, পুলিশ জনগণের পাশে আছি এবং শান্তিপ্রিয় জনগণও আমাদের পাশে আছে। তারা কোনভাবেই ফ্যাসিবাদের রাঙ্গা চোখ এটিকে কখনো বরদাস্ত করবে না, তাদেরকে দমন করবে।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে ইনফরমেশন আছে, গাজীপুরকে কেন্দ্র করে পতিত সরকার তারা ঘোষণা দিয়েছে, যারা আমাদের ঘুমাতে দেয় না, আমরা গাজীপুরবাসীকে ঘুমাতে দিব না, জনগণকে ঘুমাতে দিব না।

তারা যখন ঘোষণা দেয়, তারা জনগণকে ঘুমাতে দিবে না, জনগণকে প্রতিপক্ষ ভেবে জনগণকে শান্তি দিবে না, একথা  বলে। তখন পুলিশের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জের ব্যাপার হয়ে যায়। পুলিশ অবশ্যই তখন একটু অ্যাগ্রেসিভভাবে না করলে জনগণকে শান্তিতে ঘুমাতে দিবে না। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব জনগণকে শান্তি দেওয়া, তার জন্য পুলিশকে আরেকটু ভালো করে পুলিশিং না করলে জনগণের পাশে না দাঁড়ালে একটি আমাদের দায়িত্বের অবহেলা হয়ে যায়। এটিকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কনসার্ন হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিদের্শনা এসেছে। অপারেশন ডেবিল হান্ট নামে একটি অপারেশন চালু করেছে। সেই অপারেশনের অংশ হিসেবে আমরা যৌথ বাহিনী অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করছি, গাজীপুরে তারা প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ঢুকিয়েছে। গাজীপুরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। আপনারা দেখেছেন, গত সন্ধ্যায় আমরা পুলিশ ছিলাম, কিছুক্ষণ আগে পুলিশ আমরা ওখান থেকে এসেছি, আমি নিজেও ওখান থেকে এসেছি, কথা বলে এসেছি। ছাত্র-জনতা ছিল, কিছু দূরেই আর্মি ছিল, বিজিবি ছিল। তার মধ্যেই তারা একটি গুলি করে একজনকে আহত করেছে। তারা অশান্ত করার জন্য সকল কিছু করছে। আমরা মনে করি এই দুর্বৃত্তকারীদেরকে যেকোনভাবে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এই নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমাদের এই দুর্বৃত্তকারীদেরকে অবশ্যই গ্রেপ্তারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। জনগণের শান্তির জন্য যা যা করার আমরা অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে সব অপারেশনই করবো। যারা জনগণকে অশান্ত করতে চায়, জনগণকে অস্বস্তিতে রাখতে চায়, জনগণকে ঘুমাতে দিতে চায় না। তাদেরকে সমুচিত জবাব আমরা দিতে চাই। আপনাদের মাধ্যমে আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই আমরা জনগণের পাশে আছি। এবং শান্তিপ্রিয় জনগণও আমাদের পাশে আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা কখনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিনা । আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করি দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে। আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।

তিনি জানান, এঘটনায় যারা সরাসরি জড়িত তাদের মধ্যে থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত ৮২ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। আমরা আশা করছি প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনবো এবং যারাই জনগণকে অশান্ত করবে, যারা জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, যারা জনগণকে ঘুমাতে দিবে না বলে ঘোষণা দিবে, তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

পলাশ প্রধান/এমএ/

প্লাস্টিক জমা দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে নিত্যপণ্য

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:০০ এএম
প্লাস্টিক জমা দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে নিত্যপণ্য
চট্টগ্রামে প্লাাস্টিক জমা দিয়ে বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী গ্রহণ। ছবি: খবরের কাগজ

ক্লিন বাংলাদেশের উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সহযোগিতায় নগরের কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারে প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার উদ্বোধন করা হয়েছে। সামনে চসিকের ৪১টি ওয়ার্ডে ভ্রাম্যমাণ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে নগরের কাজীর দেউরি কাঁচাবাজারের সামনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘ক্লিন বাংলাদেশের উদ্যোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সার্বক্ষণিক সহযোগিতা থাকবে। পাশাপাশি ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি, হেলদি সিটি বাস্তবায়নে এবং প্লাস্টিক ও পলিথিনের ফলে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবে এই উদ্যোগ। সামনে ক্লিন বাংলাদেশ সংগঠনকে নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে ভ্রাম্যমাণ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার চালু করা হবে।’ 

নগরীর জলাবদ্ধতা ও প্লাস্টিকদূষণ রোধে ক্লিন বাংলাদেশ এই উদ্যোগটি নিয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় রমজান উপলক্ষে ‘প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার’ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। নগরের চকবাজার, বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ কাঁচাবাজারের পর এবার কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারে চতুর্থ নতুন বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ জনগণ ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিন জমা দিয়ে বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী- ছোলা, খেজুর, চিড়া, আলু, পেঁয়াজ, ডিম ইত্যাদি সংগ্রহ করতে পারবেন।

ক্লিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শওকত হোসেন জনি বলেন, “শহরকে প্লাস্টিক ও পলিথিন নিয়ে আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ক্লিন বাংলাদেশ এভাবে নগরীর প্রত্যেকটা পয়েন্টে চালু রাখার চেষ্টা থাকবে। আমরা চেয়েছি সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান দিতে- যেখানে পরিবেশ রক্ষা ও মানবিক সহায়তা একসঙ্গে করা যায়। তাই ‘প্লাস্টিক আনুন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিন’ এই ধারণা নিয়ে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এটি শুধু প্লাস্টিকদূষণ রোধ করবে না, বরং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রমজানের সময়ে সহায়তা হিসেবে কাজ করবে।”

প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার প্রোগ্রামটি পরিচালনা করছেন ক্লিন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক তানভীর রিসাত। তিনি বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের হাত ধরেই পরিবর্তন হবে আমাদের লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এই প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নারের মাধ্যমে শুরু হোক পরিবর্তন ও সচেতনতা। যেখানে সেখানে প্লাস্টিক ও পলিথিন না ফেলে জমা দিয়ে নিতে পারছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, যা মানুষকে একদিকে যেভাবে সচেতন করা হচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশকে রক্ষা করতে ভূমিকা রাখছে। রমজান মাসজুড়ে প্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে।’ 

পটিয়ার শেভরণ হাসপাতাল: ইনজেকশন দিতেই মারা গেল ৪ মাসের শিশু

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৭ এএম
পটিয়ার শেভরণ হাসপাতাল: ইনজেকশন দিতেই মারা গেল ৪ মাসের শিশু
চট্টগ্রামের পটিয়ার শেভরণ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পটিয়ার শেভরণ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় চার মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠেছে। নিহত শিশুর নাম নুর আফসা। শিশুটির বয়স তিন মাস। এ ঘটনায় হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল ৯টায় ওই শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির কানে সমস্যা ছিল, একই সঙ্গে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ছিল। 

ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ করে শিশু আফসার চাচা মো. কাদের খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার ভাতিজির নিউমোনিয়া ও হালকা কানের সমস্যা ছিল। তাই তাকে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে পটিয়া পৌরসভার পটিয়া শেভরণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তাকে একটি ইনজেকশন দিতে হবে জানিয়ে ডাক্তার দেলোয়ার লিখে দেন। আমরা সেই অনুযায়ী পটিয়া শেভরণ হাসপাতালের ফার্মেসি থেকেই সেটি কিনে নিই। এরপর নার্স সেটি পুশ করার পর পরই আমার ভাতিজি মারা যায়। অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ইনজেকশনটি ছিল বয়স্ক মানুষের। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। তারা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে বলেছে। আমরা এখন শিশুটির ময়নাতদন্ত করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসেছি।’ 

জানা গেছে, নিহত শিশু নুর আফসা উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের সাকিব আল হাসানের মেয়ে। এ ঘটনায় শিশুটির বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে বলে জানা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলে, শিশুটির মৃত্যুর পর হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রোগীর স্বজনরা। তারা হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষের গ্লাস, জানালা ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। পরে পটিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

শেভরণ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদ হাসান বলেন, ‘শিশুটিকে ডা. দেলোয়ার দেখছিলেন। নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীকে কোনো কিছু খাওয়ানোর নিয়ম নেই। কিন্তু রোগীর মা চিকিৎসা চলাকালে বাচ্চাটিকে বুকের দুধ খাওয়ালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ অবস্থায় চিকিৎসক ইনজেকশন পুশ করেন। পরে বাচ্চাটি মারা যায়।’

এ সময় তিনি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘রোগীর স্বজনদের অভিযোগ তদন্ত করা হবে। তদন্তে কারও গাফিলতির প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুন নুর বলেন, ‘হাসপাতালে হট্টগোল হচ্ছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ সুরুহাল রিপোর্ট করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

বখাটের অত্যাচারে চিরকুট লিখে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা!

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪১ এএম
বখাটের অত্যাচারে চিরকুট লিখে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা!
ছবি : খবরের কাগজ

"আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছু করিনি, আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। ওই ছেলের জন্য ওর পরিবারের জন্য আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ সাতি (শান্তি) চলে (গেছে)" এভাবেই চিরকুট লিখে রেখে আত্মহত্যা করেছেন এক শিক্ষার্থী। নিহত শিক্ষার্থীকে পথেঘাটে ইভটিজিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠিয়ে  ব্ল্যাকমেইল করায় তিনি আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। 

শনিবার (১৪ মার্চ) পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামে খান বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত শিক্ষার্থী নাজনিন জাহান কুমকুম (১৪) ওই বাড়ির নজরুল খানের মেয়ে ও পূর্ব কালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত কিশোর রিয়াদুল ইসলাম তৌসিফ (১৬) একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও শৌলা গ্রামের রিয়াজ চৌকিদারের ছেলে। 

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নিহত কিশোরীকে পথেঘাটে ইভটিজিং করে আসছিলো প্রতিবেশী কিশোর তৌসিফ। বিষয়টি তারা তৌসিফের চাচা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল শুক্রবার নিহত কিশোরী ও তার এক সহপাঠী কিশোরের একসঙ্গে তোলা একটি ছবির সঙ্গে নোংরা মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় অভিযুক্ত তৌসিফ। এরপরে খাতায় একটি চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেন কুমকুম। 

পুলিশ জানায়, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। প্রথমে পরিবার নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত করাতে চায়নি। তাই বিষয়টিকে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনাজনিত অপমৃত্যু বলে স্থানীয়দেরকে ও পুলিশকে জানায়। মরদেহ হাসপাতাল থেকেই বাড়িতে নিয়ে রাতে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবার। তখন স্থানীয়রা মরদেহের গলায় ফাঁসের মত চিহ্ন দেখতে পায়। অন্যদিকে, মেয়ের রুমে খাতায় লেখা চিরকুটের সন্ধান পায় পরিবারের সদস্যরা। পরে ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবহিত করে পরিবার। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ নিহত শিক্ষার্থীর বাড়িতে যায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানায় পুলিশ। 

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, 'একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় এক কিশোরের ইভটিজিং এর কারণে ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে ধারণা পরিবারের। এখনো লিখিত অভিযোগ করেনি ভুক্তভোগী পরিবার। তবুও অভিযোগের বিষয় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান রয়েছে।' 

মশিউর মিলন/জোবাইদা/ 

বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক আটক

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৮ এএম
বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক আটক
ছবি : খবরের কাগজ

মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে রাজেন রায় (২৪) নামে এক যুবককে আটক করেছে বড়লেখা থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে বড়লেখার নিউ সমনবাগ চা বাগানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত রাজেন রায়কে আটক করা হয়।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম সরকার বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) নিউ সমনবাগ চা বাগানের এক তরুণীকে (২১) ধর্ষণ করা হয়েছে বলে একটি সংবাদ পাই। তার ভিত্তিতে আজ অভিযুক্ত রাজেন রায়কে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম জানান, নারীদের প্রতি যেকোনো যৌন হয়রানি বা সহিংসতার বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।

পুলক পুরকায়স্থ/জোবাইদা/

পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ খাওয়ারও পানি নেই

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২২ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৮ এএম
পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ খাওয়ারও পানি নেই
তীব্র পানির সংকটে ভুগছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পাশে পরিত্যাক্ত টিউবওয়েল। ছবি: সংগৃহীত

পানির তীব্র সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখানে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। হাসপাতালের তিনটি পানির ফিল্টারই নষ্ট। এ ছাড়া টিউবওয়েলগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এ ছাড়া হাসপাতালের ড্রেনগুলোও অপরিষ্কার। এতে মশার উপদ্রব বাড়ছে। এ কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। 

হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারীরা বলেন, ‘ভর্তি রোগীদের সুবিধার্থে কয়েক বছর আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দোতলায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে একটি ফিল্টার স্থাপন করা হয়। এর সুবিধা রোগীরা আজও পাননি। ওষুধ খাওয়ানোর জন্য সামান্য পানিও আনতে হয় মহাসড়কের কাছের চায়ের দোকানের পাশের টিউবওয়েল থেকে। অথচ কাছেই রয়েছে কয়েকটি পানির ফিল্টার। সেগুলো নষ্ট থাকায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না। রোগীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে মাঝে মধ্যে জানানো হয়। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি টিউবওয়েল থাকলেও সঠিক তদারকির অভাবে সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আবার পানি সরবরাহে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফিল্টার বসানো হয়। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে ফিল্টারে পানি সরবরাহ বন্ধ আছে। এতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। জরুরি প্রয়োজনে রোগীর স্বজনেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরের একটি টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা না রাখায় জন্ম নিচ্ছে এডিস মশার লার্ভা। হাসপাতালের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে ময়লার স্তূপ। আয়রনমুক্ত পানির জন্য রাখা ফিল্টারও অকেজো হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে প্রথম কমপ্লেক্স ভবন চালু হয়। শুরু থেকে ৩১ শয্যা সেবা কার্যক্রম থাকলেও সেটি ২০১০ সাল থেকে উন্নীত করে ৫০ শয্যা করা হয়। বাড়ানো হয় চিকিৎসকের সংখ্যা ও সেবা কার্যক্রম। এদিকে কমপ্লেক্স এলাকায় একাধিক টিউবওয়েল থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো প্রায় ৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। এর কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা প্রতিনিয়ত খাবার পানির সংকটে ভুগছেন। আবার কর্মরত চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চেয়ে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। এতে কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা এখন ভেঙে পড়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা আসমা বেগম বলেন, ‘দুই দিন ধরে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। এখানে বিশুদ্ধ পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের কাছাকাছি একটি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে হয়।’

অপর এক রোগীর স্বজন শরীফা খাতুন বলেন, ‘হাসপাতালজুড়ে কোথাও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। এখানে আসা কিংবা ভর্তি রোগীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি বাড়ি থেকে আনতে হয়। হাসপাতালে প্রচুর মশা। পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ভালো না।’ 

চিকিৎসা নিতে আসা আরফিন নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘আমরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। এর মধ্যে সব থেকে বড় সমস্যা হলো, এখানে খাবার পানির সংকট। এ ছাড়া শৌচাগার একেবারে অপরিষ্কার। রাতে পানির প্রয়োজন হলে মেডিকেলের গেটের ওপারে মহাসড়কের কাছে একটি টিউবওয়েল থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এখানে তিনটি টিউবওয়েল সবই নষ্ট।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ হাসান শাওন বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে তিনটি ফিল্টার বসানো হয়। তবে কারিগরি কিছু ত্রুটির কারণে এগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। নষ্ট টিউবওয়েল বিষয়ে আমি সব জায়গায় জানিয়েছি। আমি পৌরসভারও সদস্য, সেখানেও জানিয়েছি। টিউবওয়েলগুলো অনেক আগের। এগুলো মেরামত করা সময়সাপেক্ষ। তবুও আশা করছি, দ্রুত বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসন হবে।’