দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে পুলিশের বেশে পণ্যবাহী গাড়ি ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডাকাতির পৃথক ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
সম্প্রতি নারয়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি ডিমের গাড়ি ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে ও সাভারের চান্দিনায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ডাকাতির ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলো- আসলামুল হক আসলাম ওরফে বেলাল (৩৭), রমজান শেখ ওরফে কালু (৪০), মেহেদী শেখ হিরা (৩৩), জমির খান (৩৬) ও মো. জহিরুল ইসলাম চকিদার (৫০)। অপর দলটি হলো- জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মো. মিরন ওরফে সুজন (৫০), মো. মেহেদী হাসান রাজীব (৩০), আব্দুল মতিন (৪২), বাদল মুন্সী (৪৫) ও সাগর ইসলাম (২৪)।
তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের পাঁচটি গাড়ি, পুলিশের ওয়্যারলেস, জ্যাকেট জব্দ করা হয়েছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তারা মহাসড়কে ডিবি পুলিশের পোশাক পরে লেজার লাইটের সংকেত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি থামিয়ে চালক ও হেল্পরের হাত-পা বেঁধে গাড়িসহ পণ্য ডাকাতি করত। এই চক্রটি ধারাবাহিকভাবে মূল্যবান যেকোনো পণ্যবাহী গাড়ি দেখলেই সংকেত দিত। সম্প্রতি রূপগঞ্জে ডিমবাহী গাড়ি থামিয়ে চালকের হাত-পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রটি ডাকাতি করা পণ্য বিক্রি করত। পাশাপাশি ডাকতি করে নেওয়া গাড়ি দিয়ে তারা আবার ডাকাতি করত।’
হারুন আরও বলেন, ‘আমাদের ধারাবাহিক অভিযানে সাভারের চান্দিনায় এক ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ডাকাতির শিকার হন। এই ঘটনায় করা মামলার তদন্তে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই সকল মামলা তদন্ত করতে গিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা বেশ কয়েকটি মামলা শনাক্ত করা হয়েছে। সে সকল ঘটনায় এই দুই ডাকাত দলের সদস্যরা জড়িত।’
ভুক্তভোগীদের করা মামলায় দেখা গেছে, এই ডাকাত দলের সদস্যরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি ডাকাতি করত।
অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, আমরা বলতে চাই দেশের কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটলে অবশ্যই মামলা করবেন। কারণ মামলা হলে তখন এই সব চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ কাজ করতে পারবে। গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে পাঁচ থেকে ১২টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তারা সবাই পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য।
অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তাররা নিজেদের আড়াল করতে অত্যন্ত কৌশলী। তারা নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করত। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
খাজা/জোবাইদা/অমিয়/