ঢাকা ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

ক্ষমতার অপব্যবহারে বেপরোয়া ছিলেন দীপু মনি

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম
আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৭ পিএম
ক্ষমতার অপব্যবহারে বেপরোয়া ছিলেন দীপু মনি
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) আসনের চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য হন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে ভিন্ন তিন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া গত প্রায় ১৬ বছর তিনি ছিলেন বেশ বেপরোয়া। তার দুর্নীতি ও অপকর্মের মূল সহযোগী ছিলেন আপন বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু।

ডা. দীপু মনি গ্রেপ্তারের পর তার ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতির নানা তথ্য বের হতে শুরু করে। সংসদ সদস্য হওয়ার পর প্রথম মেয়াদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তৃতীয় মেয়াদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং চতুর্থ মেয়াদে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। 

মূলত ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর নিজস্ব বাহিনী গড়েন তিনি। ফলে এলাকার সবকিছু চলে যায় তার নিয়ন্ত্রণে। তার এই কাজে সহযোগিতা করেন হাজি নামে পরিচিত ওসমান গণি পাটওয়ারী, যাকে উপহার হিসেবে দুবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। অবৈধভাবে টাকা আয় করার জন্য তার সঙ্গী হন আওয়ামী লীগ নামধারী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও চিহ্নিত লোকজন। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন মেঘনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী বালুখেকো সেলিম চেয়ারম্যান। আর এদের নিয়ে লুটপাটের রাজ্য নিয়ন্ত্রণের অন্যতম ছিলেন ভাই টিপু। তিনবার মন্ত্রী থাকার সময়ে তদবির, মনোনয়ন-বাণিজ্য, বদলি, ঘুষ-বাণিজ্য ও বালু উত্তোলনের টাকার ভাগ নেওয়াসহ সব দায়িত্ব পালন করতেন এই টিপু। এ ছাড়া ছিলেন সাবেক মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ব্যাপারী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম রোমান, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাইদুল ইসলাম বাবু ওরফে বিহারি বাবু। বিহারি বাবুর মাধ্যমে চলত সরকারি উন্নয়ন টাকা লুটপাটের সব কমিশন উত্তোলনের কাজ। এ ছাড়া শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন বদলি-বাণিজ্যসহ শিক্ষকদের হয়রানি করার মূল হোতা ছিলেন পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দীপু মনির অনুসারী এবং লুটপাটে নিয়োজিত সবাই আত্মগোপনে। তার ভাই টিপু দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আর দীপু মনি বর্তমানে কারাগারে। ফলে পতন ঘটে তার ১৬ বছরের সাম্রাজ্যের।

শেখ হাসিনার সঙ্গে একসময় দীপু মনির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় চাঁদপুরের জন্য বড় ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প আনা হলেও নিজেদের লুটপাট ও ভাগ-বাঁটোয়ারায় অমিল হওয়ায় এসব প্রকল্প আজও বাস্তবায়ন হয়নি। জেলা সদরে তিনি তার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে দলকে একাধিক গ্রুপে বিভক্ত করেন। ফলে বারবার মন্ত্রী হয়েও চরম সমালোচনার মুখে পড়েন দীপু মনি।

বিগত ১৬ বছরে দীপু মনি সাধারণ মানুষকে দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম চাঁদপুর শহর রক্ষাসহ মেঘনা নদীর বাঁধের মেগা প্রকল্প, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অনুমোদন হলেও বাস্তবে অস্তিত্বসংকটে রয়েছে ওই সব প্রকল্প।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সেলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, বিগত প্রায় দেড় যুগে দীপু মনি ও তার লোকদের হাতে বিএনপি-জামায়াতের বহু নেতা-কর্মী গায়েবি মামলার আসামি ও ঘরছাড়া হয়েছেন। তার নিজের দলের লোকজনও রক্ষা পাননি। জুলুম-নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জবাব নিতে অপেক্ষায় আছেন। যদিও নিরাপত্তাহীনতার কারণে দীপু মনিকে চাঁদপুর আদালতে উপস্থিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

সাবেক এই মন্ত্রীর সবচেয়ে বড় টাকার মেশিন ছিল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বালুখেকো সেলিম খান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে তার হাত ধরেই উত্থান হয় সেলিম খানের। তিনি মেঘনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতেন। আর তার ভাগ পেতেন দীপু মনি। তাই তাকে বারবার ডিও লেটার দিয়ে নির্বিচারে পদ্মা-মেঘনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পুত্রসহ গণপিটুনিতে নিহত হন সেলিম খান।

অভিযোগ রয়েছে, সেলিম খানের এই বালুমহাল থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন দীপু মনি ও তার ভাই টিপু। যদিও এই অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সেলিম চেয়ারম্যানকে ২৬৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা জমা দিতে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক। অথচ এই অবৈধ বালু উত্তোলনের সমালোচনা করায় ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নদীরক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীও পদ হারান।

এ প্রসঙ্গে ড. মনজুর আহমেদ চাঁদপুর সফরে এসে বলেছিলেন, ‘মেঘনায় অবৈধভাবে যারা বালু তুলছে, তাদের সঙ্গে একজন নারী মন্ত্রীর সম্পর্ক আছে বলে আমি মন্তব্য করেছিলাম। আর ওই ঘটনার পরই আমি আমার পদ হারাই।’

চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ

চাঁদপুর সরকারি মেডিকেল কলেজ অনুমোদন হওয়ার পর থেকে এর কার্যক্রম চলছে সরকারি জেনারেল হাসপাতালের একটি ভবনে। মেডিকেল কলেজের প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। জমি অধিগ্রহণ থেকে টাকা লুটপাটের বিষয় ধরা পড়ার আশঙ্কায় বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্প। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার শহরতলির নিজগাছতলা এলাকায় হাসপাতালের জমি পরিদর্শন করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি।

নিজগাছতলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম পাঠান বলেন, ‘আমাদের এলাকায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করবেন বলে ওয়াদা করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।’ 

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে ৬০০ কোটি টাকা লুটপাটেরও অভিযোগ ওঠে লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ দীপু মনি চক্রের বিরুদ্ধে। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জমি অধিগ্রহণে ৩৫৯ কোটি টাকা জালিয়াতির পাঁয়তারার ঘটনায় তার ভাই টিপুসহ চক্রের সদস্যরা জড়িয়ে পড়েন। এই লুটপাটের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো তৎকালীন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিসের চিঠির পর। এ কারণেই ওই সময়ে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার শহর রক্ষায় স্থায়ী ও শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প ভেস্তে যায়। বর্তমানে ওই বিশ্ববিদ্যালয় শহরের খলিশাডুলি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে অস্থায়ীভাবে চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার চেষ্টা করা হয় সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের মেঘনা নদীর উপকূলে। এ বিষয়ে ওই এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দা কালু খান, কাজল গাজী ও হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সেলিম চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় করবে বলে আমাদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে। কিন্তু আমাদের সম্পত্তি আজও বুঝিয়ে দেয়নি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ও স্থাপন হয়নি।’

দীপু মনির ভাইয়ের টিপুনগর

দীপু মনির ক্ষমতাবলে তার বড় ভাই টিপু হাইমচর উপজেলার ৪ নম্বর নীলকমল ইউনিয়নের বাহেরচরে ৪৮ একর সরকারি খাসজমি দখল করে গড়ে তোলেন ‘টিপুনগর’। সেই জমি তিনি নিজ নামে দখলে নিয়ে তৈরি করেন মাছের ঘের, গবাদিপশুর খামার ও সবজির বাগান। যদিও বিষয়টি জানতে পেরে তৎকালীন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সরকারি ভূমি উদ্ধারে উদ্যোগ নেন। কিন্তু তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে দীপু মনি ওই জেলা প্রশাসককে নেত্রকোনায় বদলি করে দেন।

শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে যত অনিয়ম

২০১৯ সালে শিক্ষামন্ত্রী হন দীপু মনি। এরপর ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মশিউর রহমানকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তার সখ্য থাকায় তিনি মন্ত্রীর হয়ে নেমে পড়েন তদবির-বাণিজ্যে। আর তার এ কাজে সহযোগিতা করতেন পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার। এসব বাণিজ্যের ঘুষের টাকা লেনদেনের রফাদফা করতেন দীপু মনির ভাই টিপু। তিনিই বোনের ক্ষমতাবলে শিক্ষা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত না হয়েও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে ভিসি পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের সব পদায়ন, পদোন্নতি ও বদলি-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ নিয়োগে ৫০ লাখ ও ভিসি নিয়োগে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত নিতেন টিপু। একাধিক শিক্ষক বলেন, টিপুর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটই নিয়ন্ত্রণ করত সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি।

চাঁদপুর শহরের মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘টিপু ও রতন মজুমদারের মনমতো না হলেই ওই শিক্ষক হয়ে যেতেন বিএনপি-জামায়াত। যেমন আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিকুলামবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় আমাকে খাগড়াছড়িতে বদলি করা হয়েছিল।’

অভিযোগ রয়েছে, দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরেরও নিয়ন্ত্রণ নেন টিপু। তিনি এ দপ্তরের ঠিকাদারদের কমিশন ছাড়া কাজ দিতেন না।

স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রণ

চাঁদপুরের একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা অভিযোগ করে বলেন, নিজের স্বার্থ উদ্ধারে দীপু মনি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগকে করেছেন কয়েক ভাগে বিভক্ত। এ ছাড়া ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাংশকে নিয়ে একক রাজত্ব কায়েম করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় প্রথম সারির প্রায় সব নেতাই ছিলেন তার চক্ষুশূল। তিনি তাদের ছাড়াই অগ্রহণযোগ্য নবীন নেতা ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। 

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি সংগঠন ব্যক্তি কিংবা পরিবারতান্ত্রিক হবে এটা মোটেও কাম্য নয়। ইতোপূর্বে একজনের কারণে জেলা নেতাদের মধ্যে অনৈক্য ছিল। এটা সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে আমি অতীতেও চাইনি, এখনো চাই না। কারণ যেকোনো অনৈক্য সংগঠনকে দুর্বল করে দেয়।’

ফেনীতে ১০ কেজি ভারতীয় গাঁজাসহ আটক ১

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৪ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৫ পিএম
ফেনীতে ১০ কেজি ভারতীয় গাঁজাসহ আটক ১
ছবি: খবরের কাগজ

ফেনীর ফতেহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০ কেজি ভারতীয় গাঁজাসহ এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রবিবার (১ডিসেম্বর) ফেনীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে তাকে আটক করা হয়। 

আটক ইকবাল হোসেন (৩০) কুমিল্লার রাজাপুর ইউনিয়নের লরিবাগ গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে৷ 

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷ 

তিনি জানান, এক মাদক কারবারি চট্টগ্রামগামী বাসে করে মাদকদ্রব্য নিয়ে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ফতেহপুর স্টার লাইন পাম্প এলাকায় অস্থায়ী চেকপোষ্ট বসায়। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা একটি বাসে তল্লাশি করে ১০ কেজি গাঁজাসহ ইকবাল হোসেনকে আটক করা হয়।

তোফায়েল আহাম্মদ নিলয়/মেহেদী

স্বপ্নতে চাকরির নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৯ পিএম
স্বপ্নতে চাকরির নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৩
প্রতারক চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তার

দেশের অন্যতম বৃহৎ রিটেইল চেইনশপ ‘স্বপ্ন’-তে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। প্রতারণার অভিযোগে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরার ৪নং সেক্টর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

স্বপ্নর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট টিমের তথ্য ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পূর্ব থানার একটি টিমের যৌথ প্রয়াসে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও সিম, মানি রিসিভসহ বেশকিছু কাগজ জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন শাহীন রব্বানী, স্বপন দাস ও পারভেজ মোশারফ।

এ বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি মামলা করা হয়েছে।

থানার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি শাহীন রব্বানী ড্রাগন শিল্ড সিকিউরিটি সলিউশন কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তার অধীনে অন্য আসামিরা বিভিন্ন পদে চাকরি করেন। স্বপ্নতে প্রায় ৮ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময় প্রায়ই নতুন কর্মীর নিয়োগ করতে হয়। কিন্তু স্বপ্ন সব সময় তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং লিংকডিনের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু বেশকিছু দিন ধরে এই চক্র স্বপ্নর লোগো, আউটলেটের ছবি ফেসবুকে ব্যবহার করে কর্মী নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি স্বপ্ন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এরপর ২৮ নভেম্বর উত্তরা পূর্ব থানার সহযোগিতায় আসামিদের অফিসে গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

এ সময় অনেকে কৌশলে পালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করে। সুজন পাল নামের এক চাকরিপ্রত্যাশী সেই অফিসে উপস্থিত ছিলেন। তার বাসা টাঙ্গাইল।

তিনি বলেন, ‘আমাকে স্বপ্নতে চাকরি দেওয়া ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কথা বলে টাকা চাওয়া হয়। কিছু টাকা দিয়েছি, এরপর আরও টাকা চাওয়া হয়। আমার মতো অনেকে অফিসে এসে প্রতিনিয়ত টাকা দিচ্ছে বলে জানতে পারি। চাকরির আশায় আমরা অনেকে টাকাও দিয়েছি, তাদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।’

স্বপ্নর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট টিমের প্রধান মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে এই চক্রটি অনলাইনের মাধ্যমে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং, বাড্ডা নতুন বাজার, মোহাম্মদপুর ও সাভার এলাকায় স্বপ্নর লোগো ব্যবহার করে চাকরির ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। স্বপ্নে যোগ দিতে কোনো অর্থ নয়, যোগ্যতা প্রয়োজন।’ 

এ বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুহিবুল্লাহ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি কৌশলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল বলে জানা যায়। এরপর অভিযুক্তদের তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়।’

বিজ্ঞপ্তি/সালমান/

পুুলিশ অনিয়ম করলে সাসপেন্ড: হাইওয়ে পুলিশ সুপার

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২০ পিএম
পুুলিশ অনিয়ম করলে সাসপেন্ড: হাইওয়ে পুলিশ সুপার
রংপুর রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ তারিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

কোনো হাইওয়ে পুলিশ যদি ট্রাক বা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে তবে তাকে সাসপেন্ড করা হবে বলে জানিয়েছেন রংপুর রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ তারিকুল ইসলাম।

বুধবার (২৭ নভেম্বের) দুপুরে হাইওয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'রংপুর রিজিয়নে কোন পুলিশের ট্রাক বা কোম্পানির সঙ্গে মাসিক চুক্তি বা টাকা নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে নামসহ এডিশনাল আইজির কাছে পাঠানো হবে। শুধু বদলিই নয় অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় শাস্তি হবে। একদিনে সমাজ পরিবর্তন হবে না। পাঁচ তারিখের পর কিছু কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। এখন বাংলাদেশ পুলিশে সাড়ে ১৬ হাজার মেয়ে আছে। স্কুল-কলেজগুলোতেও মেয়েদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এসব পরিবর্তন ধীরে ধীরে হবে এবং আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। 

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‌চেকিং বা কোন অনিয়ম বা আইন বহির্ভূত কোন জিনিস হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। 'রাস্তা বন্ধ করে চেকপোস্ট স্থাপন করা যাবে না। রাস্তার পাশে চেকপোস্ট করতে হবে যাতে অন্য যানবাহন চলাচল করতে পারে। প্রত্যেকটা হাইওয়েতে যেন আলাদা রোড থাকে যেগুলোতে থ্রি হুইলার বা অন্যান্য যানবাহন চলতে পারে। থ্রি হুইলার আমাদের জীবনের একটি অংশ হয়ে গেছে ইচ্ছে করলেই তাদেরকে বন্ধ করতে পারবেন না। মহাসড়কে থ্রি হুইলার বন্ধের আইন প্রয়োগ কঠিন হবে। 

পুলিশের কাজ শুরু করার ব্যাপারে তিনি বলেন, যারা এখনও কাজ শুরু করেনি তাদেরকে মোটিভেশন দিচ্ছি। দুপক্ষের যে শত্রুতা তৈরি হয়েছে তা ভাঙতে হবে। আমরা আগের মত লোক দেখানো বন্ধুত্ব চাই না আমরা চাই কাগজে-কলমে। 

এ সময় অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ১৮ বছরের নিচে যারা অষ্টম বা ১০ম শ্রেণিতে পড়ে তাদেরকে দয়া করে মোটরসাইকেল কিনে দিবেন না। এমন কাউকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়া মানে আপনি তাদেরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন।

সেলিম সরকার/মেহেদী/এমএ/

পুলিশের কাছ থেকে আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন এলাকাবাসী

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৩ পিএম
আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১ পিএম
পুলিশের কাছ থেকে আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন এলাকাবাসী
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার ধামরাইয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রসহ ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগের ওই নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম কাউসার সুলতান। তবে আসামিকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় তদন্ত কেন্দ্রের দরজার লক, জানালার গ্লাস ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ জনতা।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে উপজেলার কাউয়ালীপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে। 

সরেজমিন জানা যায়, উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ভাবনাটি গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা নুরে আলম সিদ্দিক নান্নুকে ধামরাই থানার এসআই কাউসার সুলতান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তার নিজ গ্রাম থেকে আটক করেন। আটক করার পর নান্নুকে কাওয়ালীপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। ওই সময় আটকের খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ঘেরাও করেন এবং তদন্ত কেন্দ্রে রাস্তায় বেরিকেড দেন। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ হেফাজত থেকে আটককৃত নান্নুকে ছিনিয়ে নিয়ে যান এলাকাবাসী। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানান, নান্নু আওয়ামী লীগ করেন দীর্ঘদিন ধরে এটা সবাই জানেন। কিন্তু তার মাধ্যমে কারও কোনো ক্ষতি হয়নি। কোনো মানুষ বিপদে পড়লে তাকে সহযোগিতা করেন নিজের টাকা-পয়সা দিয়ে। যে কারণে নান্নুর আটক হওয়ার খবরে এলাকাবাসী বসে থাকতে পারেননি। পুলিশের কাছ থেকে তারা ছিনিয়ে নিয়েছেন। 

এ বিষয়ে ধামরাই থানার এসআই এস এম কাউসার সুলতান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা নান্নু এজাহারভুক্ত কোনো আসামি না। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। কিন্তু এলাকাবাসী তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তবে এখন নান্নুর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় জনতা দরজার লক, জানালার গ্লাস ভাঙচুর করেছে।’ 

আওয়ামী লীগ নেতা নান্নুকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার সত্যতা জানিয়ে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকাবাসী মনে করেছেন আসামি কক্ষের ভেতর রাখা হয়েছে। তাই ধাক্কাধাক্কি করে দরজার লক ভেঙে ফেলেছে। তবে নূরে আলম সিদ্দিক নান্নুকে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় যারা এই কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা নুরে আলম সিদ্দিক নান্নুর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

মো. রুহুল আমিন/মেহদী/এমএ/ 

আফরোজা আব্বাসের নির্বাচনি প্রচারে হামলায় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
আফরোজা আব্বাসের নির্বাচনি প্রচারে হামলায় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গ্রেপ্তার
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মারুফ হোসেন রাজিব

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিপ্রার্থী আফরোজা আব্বাসের নির্বাচনি প্রচারে হামলার মামলায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মারুফ হোসেন রাজিবকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত দেড়টার দিকে খিলগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মারুফ হোসেন রাজিব খিলগাঁও মডেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। 

ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গত ২৬ আগস্ট আওলাদ হোসেন বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা-৯ আসনের বিএনপিপ্রার্থী ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনি গণসংযোগ করছিলেন। খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ায় নির্বাচনি প্রচারের সময় ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে নির্বাচনি প্রচার বন্ধ করে দেয়।

আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। 

মাহফুজ/সালমান/