নোয়াখালী সদরের একটি হাসপাতালের স্ক্রিনে ‘আওয়ামী লীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরবে, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ ভেসে ওঠার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে যুবদলের কর্মীরা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শহর যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল ওয়াদুদ বাবলুকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাইজদীর সিটি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে সিটি হাসপাতালের স্ক্রীনে ভেসে ওঠে আওয়ামী লীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরবে, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। পরে বিষয়টি দেখে নাইটগার্ড স্ক্রিনের বিদ্যুৎলাইন কেটে দেন। পরে মঙ্গলবার রাতে বাবলুর নেতৃত্বে একদল যুবদল কর্মী গিয়ে ওই স্ক্রিন আবার চালাতে বলেন। সংযোগ দিলে আওয়ামী লীগ ফেরার ওই স্ক্রল আবার ভেসে উঠলে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক কাজী মো. শাহজাহান নাজিম বলেন, হামলায় পুরো হাসপাতাল ভেঙে তছনছ করে অন্তত ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়। এ সময় অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, এক্সরে, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, সিসি ক্যামরা, টেলিভিশন ভেঙে চুরমার করা হয়। হামলাকারীরা হাসপাতালের কাউন্টার থেকে ৪৫ হাজার ও ফার্মেসি থেকে ৩৫ হাজার নগদ টাকাসহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে গেছে।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান বলেন, শহর যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল ওয়াদুদ বাবলু হাসপাতালের সাইনবোর্ডে আওয়ামী লীগ ফেরার স্ক্রলের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে গেলে সেখানে অতিউৎসাহী কিছু লোক ভাঙচুর করে। পরে বাবলুকে বেদম মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়।
সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম শহীদুল ইসলাম বলেন, হামলার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। ফিরে এসে আলাপ-আলোচনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এক সপ্তাহ আগে স্ক্রল উঠলেও তা আমাদের অপসারণ করা উচিত ছিল।
এদিকে একটি সূত্র দাবি করেন, যুবদল নেতা বাবলু এ কসময় সিটি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেখানে মালিকপক্ষের এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গে তার মতবিরোধ হয়। সেই ক্ষোভ থেকে ৫ আগস্টের পর কয়েকবার হামলার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হন। পরে পূর্বের ক্ষোভ থেকে স্ক্রিনকাণ্ডের জেরে মঙ্গলবার রাতে তার নেতৃত্বে এ হামলা হয়।
তবে বাবলু পুলিশ হেফাজতে থাকায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সদর উপজেলা প্রাইভেট ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব মো. আক্তার উদ্দিন বলেন, হামলার ঘটনা দুঃখজনক। তবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ আওয়ামী লীগ ফেরার স্ক্রল ওঠার পর তা অপসারণ করলে এমন ঘটনা ঘটতো না।
সুধারাম মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ কামাল বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো অভিযোগ না পেয়ে আটক আবদুল ওয়াদুদ বাবলুকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মজনু/মেহেদী