ঢাকা ৫ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

কোম্পানীগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম
কোম্পানীগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা
প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

কোম্পানীগঞ্জে ঘরের সামনে থেকে তুলে নিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। পরে বিষয়টি ৩ লাখ টাকায় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্তরা। কিন্তু ভিকটিমের মা তাদের প্রলোভনে না পড়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করেছেন। 

বুধবার (৮ জানুয়ারি) ভিকটিমের মা কোম্পানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করলে ওইদিনই মামলা রেকর্ড করা হয়।

অভিযুক্তরা হলেন- ভোলাগঞ্জের ছানাফর আলীর ছেলে কালা মিয়া (৫০), নুরু মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া (২৫), ও ছটু মিয়ার ছেলে ফারুক।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম তার পরিবারের সঙ্গে উপজেলার ভোলাগঞ্জ এলাকার একটি কলোনিতে ভাড়ায় থাকেন। গত ৩ জানুয়ারি রাত ১২টার দিকে বাথরুমে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হলে ২/৩ জন মিলে তাকে মুখ চেপে ধরে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা রাত দুইটায় প্রধান অভিযুক্তের ভোলাগঞ্জের  আবাসিক হোটেলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এ সময় ভিকটিম চিৎকার করলে তাকে মারধর করে তার পড়নে থাকা কাপড়চোপড় ছিড়ে ফেলে অভিযুক্তরা।

ভিকটিমের মা জানান, আমি এ এলাকার ভাড়াটিয়া, নিরীহ মানুষ। অন্য জেলার বাসিন্দা। আমার মেয়েকে তারা ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে ব্যাপক মারধর করেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা ভালো হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে ফুলা জখম। আমার মেয়েটি অবুঝ। আমার মেয়ের মান সম্মান সব শেষ হয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে অভিযুক্তরা আমাকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমি তাতে রাজি না হওয়ায় তারা আর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে পারেনি।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা রেকর্ড করেছি। আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান চলছে। এছাড়া ভিকটিমের সঙ্গে আমাদের তদন্তকারী কর্মকর্তা কথা বলেছেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

শাকিলা ববি/মেহেদী

পাওনা টাকার জন্য পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়ার অভিযোগ

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৫ পিএম
পাওনা টাকার জন্য পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়ার অভিযোগ
ভুক্তভোগী গোপাল বাকালি নকুল। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকার ধামরাইয়ে ১৭ হাজার পাওনা টাকার জন্য গোপাল বাকালি নকুল (৫০) নামে একজনকেে হত্যা চেষ্টাসহ তার পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গোপাল সরকার নামে এক মহাজনের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি)  বিকেলে ধামরাই পৌরসভার আমিন মডেল টাউন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

নকুল মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার বালিয়াটি গ্রামের শ্রীধাম বাকালির ছেলে। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে আমিন মডেল টাউন এলাকার সাইজুজ্জামান লিমনের বাড়িতে ভাড়া থাকেতেন। এছাড়া তিনি পাইলস ও ক্লোন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন।

জানা গেছে, নকুল ও গোপাল সরকারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ চলছিল। পাওনা টাকার জন্য বিভিন্ন সময়ে হত্যার হুমকিও দিতেন গোপাল সরকার।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী নিপা বাকালি (৩৮) বাদি হয়ে ধামরাই থানায় গোপাল সরকার ও তার সঙ্গে থাকা অজ্ঞাত একজনকে আসামি করে একটি এজাহার করেছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, নকুল দীর্ঘদিন ধরে ইসলামপুর কাঁচাবাজারে ব্যবসা করে আসছিলেন। তিনি মহাজন গোপাল সরকারের কাছ থেকে মালামাল কিনে বাজারে বিক্রি করেতেন। পাওনা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ধামরাইয়ের ইসলামপুরের স্থানীয় বাসিন্দা মহাজন গোপাল সরকার পাওনা টাকার জন্য প্রভাব দেখিয়ে নকুলকে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিতেন। পরে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মহাজন গোপাল সরকার  নকুলের ভাড়া বাসায় গিয়ে হুমকি ধমকি দেন এবং একপর্যায়ে সঙ্গে থাকা লোক নিয়ে বিদ্যুতের তার গলায় পেঁচিয়ে নকুলকে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে হাত-পা বেঁধে বাসার আলমারির তালা ভেঙে নকুলের চিকিৎসার জন্য রাখা নগদ ৪ লাখ টাকা, ৩ ভরি স্বর্নালঙ্কার ও ১২শত টাকার একটি বাটন ফোন নিয়ে চলে যায়।

নকুলের স্ত্রী নিপা বাকালি বলেন, মাত্র ১৭ হাজার পাওনা টাকার জন্য মহাজন গোপাল সরকার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার স্বামী একজন পাইলস ও ক্লোন ক্যান্সারের রোগী। আমি অফিসে থাকা অবস্থায় বাড়ি ছিল ফাঁকা । আমার দুই ছেলে বাহিরে খেলতে চলে গেলে গোপাল সরকার আমার স্বামীকে একা পেয়ে প্রথমে বিদ্যুতের তার গলায় পেচিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে আমার স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেন এবং আলমারিতে থাকা নগদ ৪ লাখ টাকা, তিন ভরি স্বর্ণ এবং একটি ১২শত টাকার বাটন মোবাইল ফোন নিয়ে যান। আমি বাদি হয়ে থানায় একটি এজাহার করেছি।

ইসলামপুর এলাকার কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, গোপাল সরকারের চরিত্র অনেক খারাপ। বিভিন্ন সময়ে তার সঙ্গে নারী সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছে।

গোপাল সরকারের আপন ভাই তাপস সরকার বলেন, 'আমার ভাই গোপাল লোক ভালো না। এর আগেও নারী সংক্রান্ত বিষয় স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করা হয়েছে। ভাই হলেও এর আগে-পিছে আমি বা আমার আত্নীয় স্বজন কেউ যাবে না।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

গোপাল সরকারের বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি এবং তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

রুহুল আমিন/মেহেদী/

লেনদেনের বিরোধে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে অপহরণ, আটক ২

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৭ এএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৭ এএম
লেনদেনের বিরোধে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে অপহরণ, আটক ২
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন অমি)

রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমিকে অপহরণের পর আটকে রেখে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জমি ও প্লট বিক্রির লেনদেনের বিরোধে তারই পার্টনার এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে নগরীর রাজপাড়া থানার বিলশিমলা এলাকার রায়না কমপ্লেক্স নামের একটি ভবন থেকে অমিকে উদ্ধার করা হয়। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অপহরণের শিকার জাকির হোসেন অমি ও অপহরণকারী দুজনই রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠ। জমি ও প্লট বিক্রির টাকার লেনদেনসংক্রান্ত বিরোধ থেকেই এই অপহরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সময় আব্দুর রশিদ (৫০) ও মীম ইসলাম (৩০) নামের দুজনকে আটক করেন র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। র‌্যাব-৫-এর রাজশাহী ও নগরীর চন্দ্রিমা থানা পুলিশ এ অভিযান চালায়। আটক মীম হলেন আব্দুর রশিদের গাড়িচালক।

এর আগে মাদকাসক্তি ও টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর জাকির হোসেন অমিকে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার বাড়ি রাজশাহীর জেলার বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জে। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে ইন্টার্নশিপ করছেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা আমির হোসেন। 

অন্যদিকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার জমি ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী। কয়েক বছর ধরে রাজশাহীর সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন এলাকার বিরোধপূর্ণ ও খাসজমি দখল নিয়ে বহুতল ভবন তৈরি করে প্লট ও ফ্ল্যাট বিক্রি করে আসছেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অমিও পার্টনার ছিলেন রশিদ।  

অমির বাবা আমির হোসেন চন্দ্রিমা থানায় দেওয়া অভিযোগে বলেছেন, তার ছেলে পেশায় দন্ত চিকিৎসক। নগরীর ছোটবনগ্রাম ব্যাংক টাউন এলাকায় বসবাস করেন। গত ১৫ জানুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে সিএনজি অটোরিকশাযোগে গ্রামের বাড়ি বাগমারা থেকে শহরের ছোট বনগ্রামের বাসায় ফিরছিলেন। বাসায় প্রবেশের সময় ৬ থেকে ৭ জনের একটি সশস্ত্র দল তাকে অপহরণ করে আব্দুর রশিদের বিলশিমলার অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা তার কাছ থেকে ব্যাংকের চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এরপর তার কাছ থেকে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবিতে আটকে রেখে মারধর করা হয়। পরে  জানতে পেরে অমির স্ত্রী মিথিলা পারভিন র‌্যাব-৫ ও চন্দ্রিমা থানায় অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে উদ্ধার করা হয়।

অন্যদিকে অপহরণের অভিযোগে আটক ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ জানান, জাকির হোসেন অমি একসময় তার ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন। তারা দুজনই রাজশাহীর সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বিভিন্ন এলাকার বিরোধপূর্ণ ও খাস জমি কিনে ফ্ল্যাট ও প্লট করে বিক্রি করেন। গত ৫ আগস্টের আগে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অমি এসব কাজে রশিদকে দলীয়ভাবে সহযোগিতা করতেন।

রশিদের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো থেকে আরও জানা গেছে, রশিদ ও অমি নগরীর ডাবতলা ও জিন্নানগর এলাকার বিরোধপূর্ণ দুটি জমি সাবেক মেয়রের প্রভাব খাটিয়ে দখলে নেন। এই জমি দখল বাবদ সাবেক মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরসহ কয়েকজনকে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। এই টাকাটা প্লট ক্রেতাদের কাছ থেকে তুলে নেন অমি। তবে গত ৫ আগস্ট সাবেক মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা আত্মগোপন করায় এই টাকা অমি আর কাউকে দেননি। রশিদ বিষয়টি সম্প্রতি জানতে পেরে টাকা উদ্ধারের জন্য অমির ওপর চাপ দেন। কিন্তু অমি টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। অবশেষে গত ১৫ জানুয়ারি রাতে রশিদের লোকজন অমিকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন।
  
গোদাগাড়ীর বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আব্দুর রশিদ একসময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। জীবিকার সন্ধানে পাড়ি দেন কাতারে। কয়েক বছর কাতারে থেকে সেখানকার একজন ব্যবসায়ীর বিপুল টাকা মেরে দিয়ে দেশে চলে আসেন। এসে নগরীর উপশহর এলাকায় বসবাস শুরু করেন এবং জমির ব্যবসা শুরু করেন। এভাবে তিনি এখন শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। বর্তমানে ডাবতলা এলাকায় রশিদের তিনটি বহুতল ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। আব্দুর রশিদ হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।  

নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান জানান, অপহৃত জাকির হোসেন অমির বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। অপহরণ চক্রের মূলহোতা আব্দুর রশিদ ও তার গাড়ি চালক মীম ইসলামকে আদালতে চালান করা হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলেও জানান তিনি।

এনায়েত করিম/জোবাইদা/

গাইবান্ধায় ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৭ এএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৪ এএম
গাইবান্ধায় ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা
ছবি : খবরের কাগজ

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব মিটাতে গিয়ে আবদুল জোব্বার (৬০) নামের এক ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। 

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের নশরৎপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জোব্বার বোয়ালি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তিনি নশরৎপুর গ্রামের মৃত খেজর উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নশরৎপুর গ্রামের বাসিন্দা ময়নুল ইসলামের সঙ্গে একই উপজেলার বাদিয়াখালি ইউনিয়নের ফুলবাড়ি হাজিপাড়া গ্রামের আছর আলীর মেয়ে রোজিনা আকতারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জীবিকার তাগিদে ময়নুল ইসলাম (বিদেশ) মালদ্বীপে অবস্থান করছেন। নানা বিষয় নিয়ে তাদের সংসারে  বিরোধ লেগেই থাকত।

তাদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে কলোহের জেরে আজ শ্বশুরবাড়ি থেকে বিয়ের মালামালসহ বাবার বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নেন রোজিনা। বাড়ির লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে ইউপি সদস্যকে ডাক দেন। পরে ইউপি সদস্য জোব্বার ওই বাড়িতে যান। একপর্যায়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আলোচনায় বসেন। আলোচনায় একপর্যায়ে দুই পক্ষ বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। 

হঠাৎ ময়নুলের মা জোবেদা বেগম ও বোন মঞ্জুরাণী কাঠের তৈরি বসার পিঁড়ি দিয়ে ইউপি সদস্যকে আঘাত করে। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবদুল জোব্বারকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইউপি সদস্যের নাতি (১৪) জাহিদ মিয়া জানান, আমার নানা একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি ঝগড়া মিটাতে আসছিলেন। অথচ তাকে বুকে ও পিঠে পিঁড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। আমরা নানার হত্যাকারীদের শাস্তি চাই।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে জানান তিনি। 

রফিক খন্দকার/জোবাইদা/

মেডিকেলে ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০৪ পিএম
মেডিকেলে ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার
ছবি : সংগৃহীত

ময়মনসিংহে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্য নাজমুল এহসান নাঈমকে (২১) গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর মীরবাড়ী এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার নাঈম জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ভুরার বাড়ি গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি আনন্দ মোহন কলেজের গনিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

ডিবি পুলিশ জানায়, নাঈম মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভনে পরীক্ষার্থীদের থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আদায় করত। মেডিকেল কলেজে ২০২৫ সালের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তার হাতে রয়েছে এমন নিশ্চয়তা দেওয়া হতো পরীক্ষার্থীদের। এজন্য তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন। হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ১২ হাজার টাকা কন্ট্রাক্ট করে একেকজন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে অগ্রিম ছয় হাজার টাকা বিকাশ নম্বরে আদায় করত।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ডিভিশন এই প্রতারকের তথ্য উদ্ঘাটন করে। পরে ঘটনাটি ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশকে জানালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, নাজমুল এহসান নাঈম একজন প্রতারক। মেডিকেল কলেজের প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা বলে সম্প্রতি তিনি লক্ষাধিক টাকা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তার সঙ্গে এমন প্রতারণার কাজে জড়িত চক্র রয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ। তাদেরও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। বিকেলে গ্রেপ্তার নাঈমকে আদালতে পাঠানো হবে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/অমিয়/

নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীর উপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৭ পিএম
নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীর উপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা
কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত শিক্ষার্থী মাইন উদ্দিন। ছবি: খবরের কাগজ

মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১০ জনের উপর হামলা চালিয়েছে কিশোর গ্যাং। আহত শিক্ষার্থীর নাম মাইন উদ্দিন। তিনি নোবিপ্রবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) আনুমানিক রাত ১১টার দিকে নোয়াখালী সদর উপজেলার ৭ নম্বর ধর্মপুর ইউনিয়নের ভাটিরটেক গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

পরে এলাকাবাসী মাইন উদ্দিনকে উদ্ধার করে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।

এই বিষয়ে আহত শিক্ষার্থী মাইন উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে জনতা বাজারে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল এই কিশোর গ্যাং। স্বৈরাচার পতনের পর বাটিরটেক গ্রামের একটি বাড়িতে তারা আস্তানা তৈরি করে। সেখানে তারা গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন করে। এ ছাড়া এলাকার নানা অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত এই মাদকসেবীরা। তারা গ্রামের বাড়ি থেকে ছাগল, হাঁস, মুরগী চুরি করে জনসাধারণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।’

তিনি বলেন, ‘বুধবার রাতে তারা ঐ বাড়িতে গাঁজা সেবন করতে গেলে স্থানীয়রা আমাদের জানান। সে সময় আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কয়েকজন পাঠাগারে বসে ছিলাম। পরে আমরা প্রায় ১০ জন ঘটনাস্থলে গিয়ে মোবাইলে তাদের ভিডিও ধারণ করি। এ সময় তাদের মধ্যে থেকে একজন পালিয়ে তাদের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ে আসে। পরে তারা ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোঠা দিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ চালায়। এতে আমার মাথা, নাক, মুখে গুরুতর জখম হয়। সে সময় আমাদের সঙ্গে একজন শিক্ষক ছিলেন। সন্ত্রাসীরা শিক্ষককে মারধর করে এবং এক ঘণ্টা জিম্মি করে রাখে।’

মাইন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সুধারাম মডেল থানায় জিডি করেছি এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন।’

এই বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুর রহমান খান বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগটি পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাউসার/পপি/