চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছানোর পর সোমবার (২৯ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর গমের ভবিষ্যৎ সরবরাহ (ফিউচার মার্কেট) চুক্তিমূল্য কমে গেছে। তবে রাশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে খারাপ আবহাওয়ার কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কায় গত সপ্তাহে গমের দাম প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে যায়। বর্তমানে দাম চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থাটির খবরে বলা হয়, গমের দাম কমার পাশাপাশি ভুট্টা ও সয়াবিনের ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিমূল্য সামান্য পরিবর্তন হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পণ্য বিনিময় বাজার শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডের (সিবিওটি) সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া গমের দাম দশমিক ৫০ শতাংশ কমে ৬ ডলার ১৯ সেন্টে লেনদেন হয়েছে। এর আগে শুক্রবার এই গমের দাম বেড়ে বুশেলপ্রতি ৬ ডলার ৩৩ সেন্টে উঠেছিল, যা গত ২৯ ডিসেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ।
খবরে বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক রাশিয়ায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মে মাসে দেশটির দক্ষিণ ফেডারেল জেলার পূর্ব অঞ্চলের অর্ধেকে খরা দেখা দিতে পারে।
বিশ্লেষক টবিন গোরে বলেছেন, রাশিয়ার খরার প্রবণতা দেশটির গম ও অন্যান্য শীতকালীন ফসলের জন্য একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। টবিন গোরে বলেন, রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে মাটির আর্দ্রতায় ঘাটতির পথে রয়েছে ... এই অঞ্চলগুলো প্রচুর গম রপ্তানি করে। তাই তারা প্রকৃত অর্থেই গমের সরবরাহকে প্রভাবিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে শুষ্ক আবহাওয়ায় সেখানে শস্যের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে বলেছে, ২০২৩ সালের ১৪ কোটি ৪৯ লাখ টন থেকে কমে ২০২৪ সালে দেশটির শস্যের উৎপাদন ১৩ কোটি ২০ লাখ টনে নেমে যেতে পারে।
ইউরোপের কিছু অংশে হিমায়িত অবস্থাও সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। ইউরোপীয় কমিশন গত সপ্তাহে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান ফসল গমের জন্য তাদের পূর্বাভাসকে কমিয়ে চার বছরের সর্বনিম্নে নামিয়ে এনেছে।
ফার্ম অফিস ফ্রান্সএগ্রিমারের তথ্য অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ উৎপাদক ফ্রান্সে, গমের অবস্থা গত সপ্তাহে চার বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে।
রয়টার্স জানায়, শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডের গমের দামে শুক্রবার ধারাবাহিকভাবে সপ্তম দিনের মতো বৃদ্ধি দেখা গেছে। এই ঊর্ধ্বগতি ত্বরান্বিত হয়েছে। কারণ কিছু বিনিয়োগকারী, যারা আগে বাজারে কম দামে কেনার প্রত্যাশায় বেশি পরিমাণে গম বিক্রি করেছিলেন, তারা এখন আবার গম কিনছেন।
কৃষ্ণসাগর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে সরবরাহ পাওয়া প্রচুর সস্তা গমের কারণে বাজারের দাম কমতে থাকার পর এই মূল্যবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এর আগে মার্চ মাসে সিবিওটি গমের দাম কমে বুশেলপ্রতি ৫ ডলার ২৩ সেন্টে নেমে এসেছিল, যা ২০২০ সালের পর সর্বনিম্ন।