ঢাকা ২৬ কার্তিক ১৪৩১, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উত্তরাঞ্চলে চুইঝাল চাষে স্বাবলম্বী কৃষক

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ১২:৩১ পিএম
আপডেট: ১৯ মে ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম
উত্তরাঞ্চলে চুইঝাল চাষে স্বাবলম্বী কৃষক
ছবি: খবরের কাগজ

বাসাবাড়িসহ হোটেলেও বিভিন্ন ধরনের মাংসের তরকারির স্বাদ বাড়াতে মসলাজাতীয় ডাঁটা চুইঝালের জুড়ি নেই। দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলায় চুইঝালের ব্যবহার অনেক আগে থেকে হলেও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় এর তেমন ব্যবহার ছিল না। তবে বর্তমানে এ অঞ্চলেও চুইঝালের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। ভোজনরসিকদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এটি। খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় ওষুধি গুণসম্পন্ন মসলাজাতীয় চুইঝাল চাষে আগ্রহও বাড়ছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর কৃষকদের। এতে উপজেলাটির অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি ক্যানসার, হৃদরোগ, ক্ষুধামান্দ্য, গ্যাস্ট্রিক, অ্যাজমা, হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগে চুইঝালের উপকারিতা রয়েছে। ফলে দিন দিন বাড়ছে এর ব্যবহার। উত্তরাঞ্চলে তৈরি হচ্ছে এর বাণিজ্যিক ক্ষেত্র। এ ছাড়া বাড়ির আশপাশের পরিত্যক্ত জমি, সুপারির বাগানসহ বিভিন্ন গাছে পরজীবী হিসেবে বেড়ে ওঠায় তেমন কোনো উৎপাদন খরচ নেই। 

উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের গোবর্ধ্বনকুটি চাকেরকুটি এলাকার হোসেন আলী সুপারি বাগানে চুইঝালের দুই শতাধিক গাছ লাগিয়েছেন। একই এলাকার মকবুল হোসেন তিন শতাধিক, মোস্তফা কামাল সাড়ে তিন, জালাল উদ্দিন দেড় শতাধিক ও মোজাফ্ফর হোসেন তার বাগানে দেড় শতাধিক জায়গায় চুইগাছ লাগিয়েছেন। ইতোমধ্যে তারা বিক্রি করতে শুরু করেছেন।

মোস্তফা কামাল বলেন, ‘চুইগাছ হুবহু পানগাছের মতো। গাছের গোড়ায় রোপণ করতে হয়। পরজীবীর মতো অন্য গাছ আঁকড়ে ধরে বড় হয়। গাছ বড় ও মোটা হলে খাবার ও বিক্রির উপযোগী হয়।’ 

কৃষক মকবুল হোসেন জানান, চুইঝাল চাষ করে তার সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। চুই বিক্রির টাকা দিয়ে তার সংসারের যাবতীয় খরচ চলে। 

জালাল উদ্দিন জানান, কয়েক বছর ধরে সুপারি বাগানে চুইঝাল চাষ করছেন। এ পর্যন্ত একটি গাছ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। 

উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের নাখারগঞ্জ এলাকার রফিকুল ইসলামও চাষ করছেন চুইঝাল। সুপারি বাগানে শতাধিক গাছ লাগিয়েছেন তিনি। প্রতিবছর চুই বিক্রি করে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করেন তিনি।

চাষিরা বলছেন, যেকোনো গাছের গোড়ায় বর্ষা মৌসুমে চুইগাছ রোপণ করে মাঝে মাঝে হালকা জৈব সার ও পানি দিলেই হয়ে যায়। এক থেকে তিন বছরের মধ্যেই চুইঝাল খাওয়া কিংবা বিক্রির উপযোগী হয়। মূলত দক্ষিণাঞ্চল থেকে পাইকারি ক্রেতারা এসে এসব চুইঝাল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ এগুলো কুরিয়ারে নিয়ে ব্যাংকে অর্থ লেনদেন করছেন। কম পুঁজিতে অল্প শ্রমে ভালো লাভ হওয়ায় এটি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকেই, হচ্ছেন স্বাবলম্বীও। কৃষকদের তথ্যমতে, চুইগাছের আকার-আকৃতি, পরিমাপ অনুযায়ী প্রতিটি চুইগাছ ৩ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা সম্ভব। 

নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি এখন নাগেশ্বরীতেও সুপারি বাগান ও বিভিন্ন গাছে সঙ্গী ফসল হিসেবে চুইঝাল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। শুধু গাছপালায় নয়, ঢালাওভাবে মাটিতে কিংবা মাচার মাধ্যমেও চুইঝাল চাষ করা যায়। এর বাণিজ্যিক প্রসার ঘটাতে আমরা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি যাতে দেশের মসলার চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হয়, সেই লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।’

আফগানিস্তানে ৮২  শতাংশ সহায়তা  কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ এএম
আফগানিস্তানে ৮২ 
শতাংশ সহায়তা 
কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
সংগৃহীত

আফগানিস্তান পুনর্গঠন সম্পর্কিত মার্কিন বিশেষ পরিদর্শক জেনারেল (এসআইজিএআর) দেশটির আইনসভা কংগ্রেসকে তাদের মিশন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ দেশটিতে মার্কিন সাহায্যের পরিমাণ তীব্রভাবে কমেছে। খবর খামা প্রেস নিউজ এজেন্সির।

এসআইজিএআরের বরাত দিয়ে আফগানিস্তানভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটির খবরে বলা হয়, ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে আফগানিস্তানের পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় মার্কিন সরকারের অবদান ৮২ শতাংশ কমে গেছে। মার্কিন বিশেষ পরিদর্শক জেনারেল জন সোপকো কংগ্রেসে এ-সংক্রান্ত সংস্থার ফলাফল উপস্থাপন করেছেন, যেখানে আর্থিক সহায়তা ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা- উভয় ক্ষেত্রেই একটি বড় ধরনের হ্রাসের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

নতুন প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, এসআইজিএআরের মিশন ২০২৫ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সমাপ্ত করা উচিত এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএস এইড) ২০২৬ অর্থবছরের পর থেকে নিজেদের সাহায্যের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ২০২১ সালের জুন মাসে ৬৬৮ কোটি (৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন) ডলার থেকে কমে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ ১২১ কোটি (১ দশমিক ২১ বিলিয়ন) ডলারে নেমে এসেছে।

এসআইজিএআর আরও উল্লেখ করেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে টম ওয়েস্ট পদত্যাগ করার পর আফগানিস্তানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি পদটির জন্য কোনো প্রতিস্থাপন করা হয়নি।

তবে যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে, তবুও কাতারের দোহায় মার্কিন কর্মকর্তা এবং তালেবানের মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে।

খামা প্রেসের খবরে বলা হয়, ৮২ শতাংশ তহবিল কমে যাওয়া সত্ত্বেও, এসআইজিএআর (বিশেষ আফগানিস্তান পুনর্গঠন অডিটর জেনারেল) বলছে, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের বৃহত্তম দাতা হিসেবে রয়ে গেছে। ২০২১ সাল থেকে তালেবান নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় ৩ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার এই নাটকীয় হ্রাস আমেরিকান নীতিতে একটি পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করে, যা আফগানিস্তানে আর্থিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণে দেশটির পতনকে চিহ্নিত করছে।

খবরে বলা হয়, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমছে, সে কারণে আফগানিস্তানের পুনর্গঠন ও স্থিতিশীলতার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা ক্রমশ সীমিত হয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, তালেবানদের ক্ষমতা গ্রহণের দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে আফগানরা খরা, কয়েক দশকের যুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের সঙ্গে তাদের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে ৪০ শতাংশেরও বেশি আফগানিবাসী তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং অর্ধেকেরও বেশি মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করছে। এদিকে আফিম ব্যবসার ক্ষতি দেশের দরিদ্র চাষিদের মধ্যে মানবিক সাহায্যের চাহিদা বাড়াচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আফগানিস্তানের আফিম উৎপাদন থেকে দূরে থাকা চাষিদের টেকসই জীবিকা নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী বিনিয়োগের খুব প্রয়োজন। সেটি করা না হলে দেশটিতে ভুক্তভোগী জনতার মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বাড়বে।

যুক্তরাজ্যের রপ্তানিতে শুল্ক বাড়াবে

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ এএম
যুক্তরাজ্যের রপ্তানিতে শুল্ক বাড়াবে
যুক্তরাজ্যের পোর্ট অব ফেলিক্সস্টো। ছবি: সংগৃহীত

দেশের সব ধরনের আমদানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক (ব্ল্যাঙ্কেট ট্যারিফ) আরোপ করতে চান যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে একটি বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে রপ্তানিতে যুক্তরাজ্যের ওপর শুল্কের বোঝা বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই নীতি বাস্তবায়িত হলে রপ্তানির ক্ষেত্রে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতির মুখে পড়তে পারে যুক্তরাজ্য। সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ট্রেড পলিসির (সিআইটিপি) অর্থনীতিবিদদের নতুন একটি বিশ্লেষণে এই তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বিবিসির।

সিআইটিপির অর্থনীতিবিদদের মতে, ট্রাম্পের এই নীতি বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাজ্যের বৈশ্বিক রপ্তানি ২ দশমিক ৬০ শতাংশের বেশি কমতে পারে, যার কারণ হবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং এটির বৈশ্বিক প্রভাব (নক-অন ইফেক্ট)। এই পতন তখনই ঘটতে পারে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তার নির্বাচনি প্রচারের সময় দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সব আমদানির ওপর ২০ শতাংশ এবং চীনা আমদানির ওপর ৬০ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করেন।

প্রসঙ্গত, ব্ল্যাঙ্কেট ট্যারিফ এমন একটি শুল্কনীতি যেখানে নির্দিষ্ট দেশ বা অঞ্চলের সব পণ্যের ওপর একই হারে শুল্কারোপ করা হয়। এর ফলে আমদানির খরচ বেড়ে যায় এবং রপ্তানিকারকদের বাজারে প্রবেশের সুযোগ কমতে থাকে। আর নক-অন প্রভাব বলতে একটি ঘটনার প্রভাবে পরবর্তী অন্যান্য ক্ষেত্রে সৃষ্ট প্রভাবকে বোঝানো হয়। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক বাড়ানোর কারণে যুক্তরাজ্যের অন্যান্য বাজারেও এটির প্রভাব পড়তে পারে।

ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্কারোপের কারণে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক উৎপাদনে বার্ষিক দশমিক ৮০ শতাংশ ক্ষতি হবে। 

গবেষক নিকোলো তামবেরি একটি ব্লগ পোস্টে বলেন, যদিও ট্রাম্পের কঠোর প্রতিশ্রুতিগুলো একটি আলোচনার কৌশল হতে পারে, তবে ‘এই শুল্কগুলো আরোপ করার সম্ভাবনাও অবশ্যই রয়েছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের যেসব প্রধান খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে মৎস্য, পেট্রোলিয়াম ও খনিজশিল্প। এর ফলে এই খাতগুলোর রপ্তানি প্রায় এক-পঞ্চমাংশ কমতে পারে। এর মাধ্যমে ওষুধ শিল্প ও বৈদ্যুতিক খাতও প্রভাবিত হবে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এমনকি যেসব কোম্পানি নিজেরা সরাসরি রপ্তানি করে না, তারাও প্রভাবিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পরিবহন পরিষেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এই ক্ষতির মধ্যে পড়বে, যাদের ব্যবসা কার্যক্রম বাণিজ্যিক প্রবাহের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিমা ও আর্থিক পরিষেবাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে কিছু খাত চীনা রপ্তানির কমে যাওয়ার কারণে উপকৃত হতে পারে। যদি চীনের রপ্তানির ওপর ট্রাম্পের উচ্চশুল্ক আরোপিত হয়, তবে কম প্রতিযোগিতার কারণে টেক্সটাইল ও পোশাক খাতে লাভবান হতে পারে যুক্তরাজ্য।

ট্রাম্পের শাসনামলে সীমান্ত কর (বর্ডার ট্যাক্স) কতটা বাড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কিছু কূটনীতিক মার্কিন মিত্রদের জন্য সামান্য শুল্কের মতো আরও বাস্তবসম্মত প্রস্তাবের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তবে ট্রাম্পের শীর্ষ বাণিজ্য উপদেষ্টা, সাবেক বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার এই (শুল্ক-সংক্রান্ত) কৌশলের দৃঢ় সমর্থক।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সম্প্রতি বিবিসির নিউজকাস্ট পডকাস্টে বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝানোর চেষ্টা করব এবং আমি বিশ্বাস করি তারা এটি বুঝবে যে, নিকট মিত্রদের ক্ষতি করা তাদের মধ্যম বা দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের পরিপন্থি।’

কিন্তু ট্রাম্পের আগের শাসনামলে তার প্রশাসনে যুক্তরাষ্ট্রে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত লর্ড ডারক যুক্তরাজ্যকে সতর্ক করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতির ঝুঁকিগুলোকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। তিনি সম্প্রতি বিবিসির নিউজনাইট অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি আশাবাদী নই। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এবার তিনি আরও বড় কিছু করতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন- এটি কোনো ভাঁওতাবাজি নয়। আমি মনে করি তিনি এটি করবেন।’

যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী (চ্যান্সেলর) র‍্যাচেল রিভস ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি দুজনেই বলেছেন, তারা মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের বিষয়টি চালিয়ে যাবেন।

খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যকে হয়তো এমন একটি অবস্থানে পড়তে হতে পারে, যেখানে ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে আলাদাভাবে চুক্তি করার চেষ্টা করে শুল্ক এড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভ্যাটসপ্তাহ, মিলবে ২৪ ধরনের সেবা

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩১ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০২ এএম
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভ্যাটসপ্তাহ, মিলবে ২৪ ধরনের সেবা
প্রতীকী ছবি

সেবামুখী ও জনবান্ধব ভ্যাট বা মূসক ব্যবস্থাপনা নির্মাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সারা দেশে আগামী ১০ ডিসেম্বর ভ্যাট দিবস পালন করা হবে। একই সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ পালন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সম্প্রতি মূসক করদাতা সেবার দ্বিতীয় সচিব প্রণয় চাকমার সই করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। 

ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে ব্যবসায়ী ও সেবাগ্রহীতারা ২৪ ধরনের সেবা পাবেন নিকটস্থ ভ্যাট কমিশনারেটে। এর মধ্যে রয়েছে- অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানসমূহকে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া, নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানসমূহকে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে দেওয়া। প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ করার আবেদন তৈরি করে দেওয়া, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন বাতিলের আবেদন প্রস্তুত করে দেওয়া, ভ্যাট দাখিলপত্র অনলাইনে দাখিল, ভ্যাট দাখিলপত্রে সংশোধন করার আবেদন, কোনো ক্রয়ের ক্ষেত্রে রেয়াত পাওয়া যাবে কি না, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে।

এ ছাড়া কোনো ক্রয়ের ক্ষেত্রে উৎসে ভ্যাট কর্তন করতে হবে কি না, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া; কোনো সরবরাহ রপ্তানি হিসেবে গণ্য হবে কি না, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে। কোনো বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রযোজ্য হবে কি না, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া এবং ভ্যাট অনলাইনের আইডি, পাসওয়ার্ড লক হয়ে গেলে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ মিলবে। পাশাপাশি বিন লক হয়ে গেলে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হলে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া, ভ্যাট অফিস কর্তৃক গাড়ি, পণ্য আটক করা হলে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে।

আরও যেসব সেবা মিলবে তার মধ্যে রয়েছে- শতভাগ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান কোন পদ্ধতিতে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি পরিষেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি পেতে পারে সে বিষয়ে পরামর্শ, অনিবন্ধিত ভ্যাটদাতাকে ফোর্সড রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হলে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে।

একই সঙ্গে ভ্যাটসংক্রান্ত হিসাবপত্র যেমন- চালানপত্র, ক্রয় হিসাব পুস্তক, বিক্রয় হিসাব পুস্তক ইত্যাদি কীভাবে লিখতে হয় তা হাতে-কলমে শেখানো হবে। পেছনের বা পূর্ববর্তী সময়ের দাখিলপত্র অনলাইনে আপডেট করা, বকেয়া পরিশোধে কিস্তি সুবিধার আবেদন, চলমান/বিচারাধীন মামলা এডিআরের (বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি) মাধ্যমে নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া, ভ্যাটসংক্রান্ত যেসব কাজ ম্যানুয়ালি বা অনলাইনে করে দেওয়া সম্ভব সেগুলো করে দেওয়া, ভ্যাটসংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া ও ভ্যাট ব্যবস্থাপনা ভ্যাটদাতাদের জন্য সহজীকরণসংক্রান্ত অন্যান্য সেবা দেওয়া হবে।

সব কর অঞ্চলে চলছে মিনি মেলা

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ এএম
সব কর অঞ্চলে চলছে মিনি মেলা

জাতীয়ভাবে আয়কর মেলার আয়োজন করা হবে না। তার পরিবর্তে কর অঞ্চলগুলোতে চলছে মিনি কর মেলা। এখানে মেলার মতোই সেবা দেওয়া হচ্ছে। অনেক কর অঞ্চলে অফিস কক্ষের বাইরে বসানো হয়েছে সারি সারি ডেস্ক। সাজানো হয়েছে প্ল্যাকার্ড, ব্যানারসহ কর দিতে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ফটো। 

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, আয়কর মেলা না হলেও প্রতিটি কর অঞ্চলেই বিশেষ আয়োজনে মেলার মতো করেই কর দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে কর দিতে আসছেন। 

২০১০ সালে প্রথমবারের মতো ঢাকা ও চট্টগ্রামে আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি বিভাগীয় শহর, জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়েও কর মেলা অনুষ্ঠিত হতো। এসব মেলায় করদাতাদের ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে রিটার্ন জমা দিতে দেখা গেছে।

এবারও আয়কর মেলা হবে না। ফলে সাধারণ করদাতাদের কর মেলায় যাওয়ার ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে না। যদিও তাদের অনেকেই নভেম্বর মাস এলেই কর মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কারণ কর মেলায় গিয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দিলে তাদের কর কর্মকর্তারা হয়রানি করেন না। করোনা শুরু হওয়ার পর। অর্থাৎ ২০২০ সাল থেকে আর কর মেলা হয়নি। এবার অবশ্য প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ক্ষমতায় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। তারা কর মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে 

এবার ঘরে বসে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়াকেই বেশি উৎসাহ দিচ্ছে। 

আয়কর তথ্য সেবা মাস হিসেবে আয়কর মেলার পরিবর্তে অফিসে অফিসে চলছে মিনি কর মেলা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উদ্যোগে নভেম্বরজুড়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ৪১টি কর অঞ্চলের ৮৬৯টি সার্কেলে অফিস চলাকালীন নিরবচ্ছিন্নভাবে পাওয়া যাবে করসেবা। চলবে ৩০ তারিখ পর্যন্ত।

প্রতিটি কর অঞ্চলে করদাতাদের জন্য সেবাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। সেখানে রিটার্ন জমার পাশাপাশি রিটার্ন ফরম পূরণে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রিটার্ন জমার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্ন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্রও পাবেন করদাতারা।

কর অঞ্চলগুলোতে যেসব সেবা পাওয়া যাচ্ছে- প্রতিটি অফিসে উন্মুক্ত স্থান বা কার পার্কিং এরিয়ায় রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে রিটার্ন গ্রহণ করা হচ্ছে। অনলাইনে কীভাবে রিটার্ন দাখিল করা যায়, সে বিষয়টি হাতে-কলমে দেখিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করলে কর সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য অফিস যেতে হবে না। সব কর কমিশনার সেবাকেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। কর অঞ্চল-৪ এবং কর 

অঞ্চল-১৬ ব্যবস্থাপনায় সচিবালয়ের সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য বাংলাদেশ সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন রিটার্ন দাখিল সুবিধা ও হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে ৩-১৮ নভেম্বর পর্যন্ত কর তথ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে।

কর অঞ্চল-১১-এর ব্যবস্থাপনায় ১৮-১৯ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর সেবা দেওয়া ----

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, অনেক কর--- রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিভাগীয় কমিশনার অফিসের সামনে ১২ তলা ভবনে অবস্থিত কর অঞ্চল-১-এর অফিস। এখানে রিটার্ন দাখিল, অনলাইনে রিটার্ন দাখিল, ইটিআইএন, ডিজিটাল চালানসহ বিভিন্ন সেবা দিতে মোট ৬টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। কর অঞ্চল-১-এর আওতায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭১৬ ব্যক্তি ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছিলেন ৩ হাজার ৭৭৬ জন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২ হাজারের কিছু বেশি ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে কর অঞ্চল-১-এর কমিশনার মো. লুৎফুল আজীম সাংবাদিকদের বলেন, হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়া হচ্ছে। অনেক করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করছে। এতে সময় ও হয়রানির অভিযোগ কমে যাবে। অহেতুক অডিট থেকে মুক্তি পাবে করদাতারা।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পুরোনো এনবিআর প্রধান কার্যালয়ের ভবনে কর অঞ্চল-৪ অফিসেও চলছে মিনি কর মেলা। এখানে রিটার্ন দাখিল, অনলাইনে রিটার্ন দাখিল, ইটিআইএন, ডিজিটাল চালানসহ বিভিন্ন সেবা দিতে মোট ১৭টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এখানে প্রায় দেড় লাখের বেশি ব্যক্তি ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ১ লাখ ব্যক্তি নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। মোট ২২ কর সার্কেল রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত মিনি মেলায় প্রায় ৩ হাজার 

ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ও প্রায় ৮ হাজার অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন।

এনবিআর জানায়, ২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিল ও কর পরিশোধ পদ্ধতি গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল সিস্টেম করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। ই-রিটার্নসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য এনবিআরে একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। অফিস চলাকালীন যেকোনো সময়ে কল সেন্টারের ০৯৬৪৩৭১৭১৭১ নম্বরে করদাতারা তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এ ছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন থেকে করদাতারা ই-রিটার্নসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা e-mail এর মাধ্যমে জানাতে পারছেন, যা দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বিষয়ক একটি ভিডিও টিউটোরিয়াল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবপেজ (www.nbr.gov.bd), ইউটিউব চ্যানেল www.youtube.com/@nbr.bangladesh এবং ফেসবুক পেজ www.facebook.com/nbr.bangladesh -এ পাওয়া যাচ্ছে।

এবারে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলগুলোর অধিক্ষেত্রভুক্ত সব সরকারি কর্মচারী, তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং কয়েকটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। 

আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সভা-সেমিনারসহ নানা আয়োজন থাকবে। ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক করদাতাদের কর কার্ড ও সম্মাননা দেওয়া হয়। প্রতিবারের মতো এবারেও কর কার্ড দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে সিদ্ধান্তহীনতা। উল্লেখ্য, প্রতিবছর ১৪১ জন সেরা করদাতাকে কর কার্ড ও সম্মাননা দেওয়া হয়।

রপ্তানি আয় ২০ শতাংশ বেড়েছে অক্টোবরে

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ এএম
রপ্তানি আয় ২০ শতাংশ বেড়েছে অক্টোবরে
ছবি : খবরের কাগজ

গত অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে এটি ছিল ৩ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার।

রবিবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে ১৫ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার।

রপ্তানি আয় বেড়েছে তৈরি পোশাক খাতে

চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ১২ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ১১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার।

ওভেন পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়ে ৫ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে নিট পণ্যের রপ্তানি আয় ১২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে।

অক্টোবরে পোশাক খাত ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন আয় করেছে, যা গত বছরের চেয়ে ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি।

পোশাক খাত আয়ের তীক্ষ্ণ প্রবৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কারণ এ খাতটি জাতীয় রপ্তানিতে সর্বোচ্চ অবদান রাখে।

গ্রীষ্মের জন্য পণ্য পাঠানোর শেষ মাস ছিল অক্টোবর। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কারণে জুলাই-আগস্টে কম চালান হয়েছে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, অক্টোবরে আটকে থাকা পণ্য পাঠানো হয়েছিল, যা রপ্তানি আয়কে তীব্রভাবে বাড়িয়েছে।

‘তবে প্রবৃদ্ধির প্রবণতা সম্পর্কে মন্তব্য করার জন্য আমাদের আগামী কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। কারণ সেক্টরে অস্থিরতা ছিল এবং ক্রেতারা কাজের অর্ডার দিতে ধীরগতিতে চলেছিলেন’, যোগ করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

পোশাক খাতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘আমরা এত শক্তিশালী বৃদ্ধির জন্য কোনো যুক্তি খুঁজে পাইনি এবং এটি টিকবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এখনই মন্তব্য করার সময় নয় বরং অপেক্ষা করতে হবে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পোশাক খাত অভূতপূর্ব অস্থিরতা দেখেছে এবং ক্রেতারা কাজের আদেশ স্থানান্তর করেছেন।’

রপ্তানিকারকরা বলছেন, পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির জন্য খাতটির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রয়োজন, যা বাংলাদেশের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে স্থায়ী হওয়া উচিত। প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আমাদের আন্তরিক আহ্বান।

অন্য খাতগুলোর রপ্তানি আয়

অক্টোবর মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১১৩ মিলিয়ন ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য ৩০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা এক বছর আগের একই সময়ে ২০ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৫৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ১ শতাংশ কমে ৮৩ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যের আয় ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে ৭৯ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।

বিশেষায়িত টেক্সটাইল সেক্টর ৩৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এ খাত থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল খাতের রপ্তানি আয় কমেছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ এবং আয় করেছে ৬৪ মিলিয়ন ডলার।

হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ থেকে রপ্তানি আয় অক্টোবরে ৩২ শতাংশ বেড়েছে। আয় হয়েছে ৫২ মিলিয়ন ডলার, যা গত অক্টোবরের একই সময়ে ছিল ৩৯ মিলিয়ন। অক্টোবরে ওষুধপণ্য রপ্তানি ৪৯ শতাংশ।