ঢাকা ২৩ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চাল-মুরগির দাম কমলেও পেঁয়াজে চড়া

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:১৭ এএম
আপডেট: ৩১ মে ২০২৪, ১১:১৭ এএম
চাল-মুরগির দাম কমলেও পেঁয়াজে চড়া
ছবি : সংগৃহীত

কোনো কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পেঁয়াজের দাম। ভারত সরকার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও দেশের বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে গেছে। পেঁপেসহ সবজি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে মরিচের দাম লাগামহীন হতে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে ২০০ টাকা বিক্রি হলেও গতকাল ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাছের দামও কমেনি। চিংড়ি মাছের দাম লাগামহীন হয়ে পড়েছে। নদীর চিংড়ি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি। তবে চাষেরগুলো ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় আদা, রসুনের দামও কমছে না। তবে মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। খেতের ধান উঠায় চালের দামও কমতে শুরু করেছে। ডিমের ডজন এখনো ১৪০-১৪৫ টাকা। তবে অলিগলিতে আরও বেশি ডিমের দাম। 

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।

কমেনি পেঁয়াজ আলুর দাম

ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করলে হঠাৎ করে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি তা প্রত্যাহার করলেও সেই ঘোষণার কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না বাজারে। দেশে প্রচুর পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তারপরও মোকামের বেপারিরা ইচ্ছামতো দাম আদায় করছেন। 

এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের সুরুজ বাণিজ্যালয়ের খলিল বলেন, ‘ভারতের ঘোষণায় কমবে না পেঁয়াজের দাম। কারণ হচ্ছে বেপারিরা আস্তে আস্তে ছাড়ছেন বাজারে।’ 
এর ফলে পাইকারিতেই বাড়ছে। তা ৬৫-৬৮ টাকা কেজি। সেই পেঁয়াজই বিভিন্ন বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকা বেড়ে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। 

টাউনহল বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. রফিক বলেন, ‘পেঁয়াজের কেজি ৭০-৮০ টাকা। বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’ 

কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় মসলার মধ্যে আদা, রসুন, জিরাসহ অন্যান্য মসলার দামও কমছে না

গত সপ্তাহ থেকেই চায়না রসুনের দাম বাড়তি। কেজি ২৪০ টাকা হয়ে গেছে। দেশি রসুনও ২০০ টাকা। কোথাও ২৩০ টাকা। কারওয়ান বাজারের এরশাদ বলেন, ‘ঈদের আগে আদার দাম বেড়ে গেছে। ভারতের কেরালার আদার কেজি ২৯০-৩০০ টাকা। বার্মার আদা ২৮০ টাকা। তবে চায়না আদার দাম একটু কম ২২০-২৪০ টাকা।’ 

এই বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের শাহ আলম বলেন, ‘এলাচের দাম দুই সপ্তাহ আগেই বেড়ে গেছে। ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা কেজি। জিরার দামও বেড়ে কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা। উৎপাদন বেশি হলেও আলুর দাম কমেনি।’ 

টাউনহল বাজারের দেলোয়ার বলেন, ‘বর্তমানে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। তবে গোল লাল আলুর দাম আরও বেশি ৬০-৭০ টাকা কেজি।’ 

কমেছে মুরগির দাম 

সপ্তাহের ব্যবধানে পোলট্রি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ২০০-২১০ টাকা, সোনালির কেজি ৩৮০-৩৭০ টাকা। কারওয়ান বাজারের জনপ্রিয় ব্রয়লার হাউসের হাসান বলেন, পোলট্রির দাম কমেছে। ২০০-২১০ টাকা কেজি। সোনালির দামও কেজিতে ২০-৩০ টাকা কমে ৪৪০-৪৫০ টাকায় নেমেছে। এর ফলে দেশি মুরগির দাম কেজিতে ৭০০ থেকে কমে ৬৮০-৬৫০ টাকায় নেমেছে। 

অন্য বিক্রেতারাও বলেন, মুরগির সরবরাহ বাড়তে থাকায় দাম কমছে। তবে ডিমের দাম বিভিন্ন বাজারে ১৪০-১৪৫ টাকা ডজনে স্থির হয়ে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে আরও বেশি দামে ১৫০-১৫৫ টাকা ডজন বিক্রেতারা নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কমছে চালের দাম

দেশের প্রায় এলাকায় বোরো ধান উঠতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে ঢাকায় চালের দাম কেজিতে ২-৪ টাকা কমেছে। আগের সপ্তাহের ৭২-৭৫ মিনিকেট ৬৮-৭০ টাকায় নেমেছে। ৫৫-৬০ টাকার আটাশ ৫৩-৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল ৪৮-৫২ টাকা কেজি। কারওয়ান বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা আওয়ালসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, ‘ধান উঠতে থাকায় কমতে শুরু করেছে চালের দাম। তবে আরও কমা দরকার। এই বাজারের হাজি রাইস এজেন্সির মঈন উদ্দিনও জানান, ‘সিন্ডিকেটের কারণেই সেভাবে কমে না চালের দাম।’

কমে না মসলার দাম

কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসায় বিভিন্ন বাজারে জিরাসহ বিভিন্ন মসলার দাম বাড়তির দিকে। জিরার কেজি ৭০০-৯০০ টাকা, এলাচ ৩ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭ টাকা ও পাঁচ লিটার ৭৯০-৮১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ২ কেজি আটা ১১০-১৩০ টাকা কেজি, বেসন ১২০, খোলা চিনি ১৩০-১৪০, প্যাকেট চিনি ১৪৫ টাকা। 

পেঁপের কেজি কমে ৪০-৬০ টাকা

গত সপ্তাহে পেঁপে ৮০ টাকা কেজি হলেও গতকাল ৪০-৬০ টাকায় নেমেছে। মোহাম্মদপুরের টাউন হলের মো. আলম বলেন, ‘সরবরাহ বেড়েছে। এ জন্য প্রায় সবজির দাম কমেছে। পেঁপের কেজি ৪০-৬০ টাকা।’ 

বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে টমেটোর কেজি ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০-৫০, ঢ্যাঁড়স ৪০, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৪০, শসা ৪০-৬০, ঝিঙে ও ধুন্দুল ৪০-৫০, সজনে ডাঁটা ৮০-১২০, পটোল ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা। তবে কাঁচা মরিচ কেজি ২৪০-২৬০ টাকা।

এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের আল আমিন বলেন, ‘সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বেশি। গত সপ্তাহে ২০০ টাকায় বিক্রি করলেও এখন ২৫০ টাকার কম না।’ 

স্থিতিশীল গরু, চড়া চিংড়ির দাম

গত সপ্তাহের মতো গরুর মাংস ৭৭০-৮০০ টাকা, খাসির মাংসও ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। মাংস বিক্রেতারা আরও জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে দাম বাড়তি। এর চেয়ে আর কমবে না দাম।

বিভিন্ন পণ্যের মতো মাছের বাজারেও কিছুটা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের আলালসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, রুই ও কাতল ৩৫০-৫৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৬০০-৮০০ টাকা। তবে নদীর চিংড়ি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এক পয়সাও কম হবে না। 

পাবদা ৫০০-৭০০, পাঙাশ ২০০, তেলাপিয়া ২০০-২৫০, শিং ও মাগুর ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। বিক্রেতারা বলছেন, নদীর পানি কমে যাওয়ায় খাল বিলের মাছের দাম বেড়ে গেছে। ইলিশ মাছের দামও বাড়তি। এক কেজির ইলিশ গত সপ্তাহে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা বিক্রি হলেও গতকাল ২ হাজার টাকার কমে বিক্রি করা হবে না বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান। তবে ছোট সাইজের ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। 

ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার সীমা প্রত্যাহার

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১০ পিএম
ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার সীমা প্রত্যাহার
ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলনে আর কোনো সীমা থাকছে না

আগামীকাল রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে গ্রাহকের ব্যাংকের টাকা উত্তোলনে আর কোনো সীমা থাকছে না। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে। সর্বশেষ এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে গ্রাহক কর্তৃক নগদ টাকা তোলার সীমা প্রত্যাহার করা হলো। 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়। এরপর নগদ টাকা পরিবহনে নিরাপত্তার শঙ্কা ও ব্যাংক থেকে বেশি টাকা তুলে কেউ যেন পাচার কিংবা ব্যাংক খাতকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করা হয়েছিল।

ইসলামী ব্যাংক চেয়ারম্যানের বক্তব্যের নিন্দা এস আলম গ্রুপের

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম
আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫২ পিএম
ইসলামী ব্যাংক চেয়ারম্যানের বক্তব্যের নিন্দা এস আলম গ্রুপের
এস আলম গ্রুপ-ইসলামী ব্যাংক

ইসলামী ব্যাংকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এস আলম গ্রুপ।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এস আলম গ্রুপের বিনিয়োগ সংক্রান্ত ইসলামী ব্যাংকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। উনার এ মিথ্যা, মনগড়া আর ভিত্তিহীন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য দেশবাসীর অবগতির জন্য পেশ করছি।

এস আলম গ্রুপ ১৯৮৯ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংক থেকে বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এ দীর্ঘ পথযাত্রায় ব্যাংকের বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করে আমাদের গ্রুপের যেমন অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তেমনি ব্যাংকও আমাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছে। আজ পর্যন্ত আমাদের কোনো বিনিয়োগ খেলাপি হয়নি। বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায় ক্ষতি হলেও আমরা ব্যাংকের পাওনা যথাযথভাবে পরিশোধ করে এসেছি।

বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হলে একটি পক্ষ আমাদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ নিয়ে ঢালাও ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে আসছে। এর আগে থেকে কয়েকটি মিডিয়া ধারাবাহিকভাবে আমাদের গ্রুপ এবং ব্যবসা নিয়ে নেতিবাচক প্রচার চালিয়ে আসছিল, যার ধারাবাহিকতা আমরা লক্ষ্য করছি।

ওই মিডিয়াসমূহের একটি প্রতিবেদনে অনুরূপভাবে আমাদের বিনিয়োগের হিসাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি বিশেষ নিরীক্ষা চালানো হয়েছিল, যাতে আমাদের গ্রুপের প্রকৃত বিনিয়োগ ওঠে এসেছিল।

আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান কোনো পরিসংখ্যানের ধার না ধেরে বিভিন্ন স্বনামধন্য গ্রুপের বিনিয়োগ আমাদের গ্রুপের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা অত্যন্ত অন্যায় এবং ব্যাংকের বিনিয়োগ আদায়কে ঝুকির মধ্যে ফেলবে।

আমরা দেখেছি নাবিল গ্রুপ, রংধনু গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপ, এননটেক্স গ্রুপ এবং আরও কিছু কোম্পানি এবং ব্যাক্তির নামে গৃহীত বিনিয়োগ আমাদের বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এসব গ্রুপ এবং ব্যাক্তির সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবসায়িক লেনদেন আছে, তবে তা আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বলে কোনোভাবেই প্রমাণ করে না। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে।

একটি বৃহৎ ব্যাবসায়িক গ্রুপ হিসেবে অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং গ্রুপের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালিত হয়ে থাকে। লেনদেন পরিচালিত হওয়া মানেই আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, এটা কোনোভাবে হতে পারে না। আলোচিত নাবিল গ্রুপের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক লেনদেন আছে। কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানির নামে গৃহীত বিনিয়োগের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এসব কোম্পানির সঙ্গে আমাদের কোনো লেনদেনও নেই।

আমরা লক্ষ্য করেছি যে, নাবিল গ্রুপের কর্ণধার আমিনুল ইসলামের বাবার কোম্পানির নামে গৃহীত বিনিয়োগও আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বলে দেখানো হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি যে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এহেন অপেশাদার আচরণের ফলে প্রকৃত বিনিয়োগ গ্রহীতাদের বিনিয়োগ ফেরৎ দেওয়ার ব্যাপারে দায়মুক্তি দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং আমাদের ব্যবসায়িক সুনাম এবং ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ, যেন সঠিকভাবে বিনিয়োগের পরিসংখ্যান জাতির সামনে পেশ করা হয়।

বড় কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে সূচক নিম্নমুখী

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
বড় কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে সূচক নিম্নমুখী

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বুধবার মূল্যসূচকের নেতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। তাতে প্রধান সূচক কমেছে ৪৭ পয়েন্ট। এর আগের কার্যদিবসে প্রধান সূচক ১৭ পয়েন্ট কমেছিল। এর মাধ্যমে গত দুই কার্যদিবসে সূচক কমেছে ৬৪ পয়েন্ট। 

দেশের পুঁজিবাজারে দুই দিন ধরে বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারে দরপতন হয়েছে। এর প্রভাবে সূচক ও লেনদেনও নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল দিনভর সূচকে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়েছে। দিন শেষে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৪৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৭৩৯ পয়েন্টে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৫ হাজার ৭৮৬ পয়েন্ট। গত দুই দিনে সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্রামীণফোন, রবি, ইসলামী ব্যাংক, এমজেএল বাংলাদেশ, রেনাটা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি), ব্র্যাক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। 

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই দিন ধরে পুঁজিবাজারে দর সংশোধন চলছে। সতর্ক বিনিয়োগকারীদের অনেকেই শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিয়েছেন। এদিন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার কেনা ও বেচা দুই ধরনের প্রবণতাই দেখা গেছে। পাশাপাশি পুঁজিবাজারের বিগত সময়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও কারসাজির ঘটনা তদন্তে নিয়ন্ত্রক সংস্থার উদ্যোগের বিষয়টিও বাজারের গতিপ্রকৃতির ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রভাব ফেলে, সেদিকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক দৃষ্টি ছিল।

গতকালের বাজার বিশ্লেষণ
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের শেষ দিকে বিক্রির চাপ বাড়ান একশ্রেণির বিনিয়োগকারীরা। ফলে দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে।

এতে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সব কটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬৪টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৩৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সব কটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৯৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৩৩ কোটি ৩ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমের ২১ কোটি ৬০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইবনে সিনা।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে গ্রামীণফোন, আইএফআইসি ব্যাংক, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বঙ্গজ লিমিটেড এবং শাহজীবাজার পাওয়ার।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে শাইনপুকুর সিরামিকস লিমিটেড।
সূত্রমতে, এদিন ডিএসইতে শাইনপুকুর সিরামিকস লিমিটেডের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১ টাকা ৬০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়েছে।

দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর ২ টাকা ৮০ পয়সা বা ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়েছে। দর বৃদ্ধির তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২ টাকা ৯০ পয়সা বা ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

গতকাল দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসা অপর কোম্পানিগুলো হচ্ছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, দ্য ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, শাহজীবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, আইসিবি এএমসিএল গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড, এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেড।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মাঝে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

এদিন ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ৫০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। তাতে দরপতনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি।

দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা এমবি ফার্মার শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ কমেছে। আর শেয়ারদর ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমে যাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে রেনউইক যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড।

গতকাল দরপতনের তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো হলো রূপালী লাইফ, ইউসিবি, নিউলাইন ক্লথিং, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড, এমজেএল বিডি, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স এবং তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডায়িং।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৫টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিন বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দুর্নীতি বন্ধের দাবি আইবিএফবির

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৫১ পিএম
বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দুর্নীতি বন্ধের দাবি আইবিএফবির
গতকাল আইবিএফবিয়ের ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেন, সিস্টেম লসের নামে এ খাতে পুকুরচুরি হচ্ছে। এই খাতকে দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা। গতকাল বুধবার ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।

তারা আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট থেকে দ্রুত উত্তরণ সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতি দেশের জ্বালানিনির্ভর শিল্পগুলোকে আরও দীর্ঘসময় ভোগাবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের দিকে যাওয়ায় কথা বলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো অনেক অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। সে সুযোগে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। ফলে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, এ দেশে গ্যাসের সিস্টেম লস ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। এটি অসম্ভব। এ লসের কথা বলে গ্যাস চুরি হচ্ছে। যেভাবে লসের কথা বলা হয়, বাস্তবে সেটা অর্ধেকও হবে না। এ ছাড়া টেকনিক্যাল লস রয়েছে। এসব কমিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা সম্ভব হলে এখনকার সংকট হয়তো খুব স্বাভাবিকভাবে উতরে যাওয়া যেত।

ড. ইজাজ হোসেনের ভাষ্য, সিস্টেম লসের বিষয়টি একটি শুভঙ্করের ফাঁকি। গ্যাসের সিস্টেম লসটা পুরোপুরি চুরি, বিগত সরকার নিজেও সেটা জানত। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো আমাদের জাতীয় সম্পদ এভাবে চুরি হয়ে গেছে, কেউ কিছু বলেনি। আর এখন তো আমরা অনেকটা সোনার দামে এলএনজি কিনে আনছি। জাতীয় স্বার্থে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে গ্যাসের এই চুরি বন্ধ করা উচিত ছিল; কিন্তু রাজনৈতিক মদদে সেটা আরও বেশি হয়েছে। এই চুরি হওয়া গ্যাস দিয়ে কমপক্ষে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে পরিকল্পনাহীনতার বড় বড় দৃষ্টান্ত রয়েছে। গৃহস্থালিতে গ্যাস বিতরণ বাড়িয়ে অনিয়ম হয়েছে। এ খাতে ১১ শতাংশ গ্যাসের বড় অংশ চুরি হচ্ছে। নতুন সরকারকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।

সেমিনারে আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ূন রশিদ বলেছেন, জ্বালানিসংকটে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম বলেন, বিগত সরকারের সময় সব খাতে ‘তথ্য সন্ত্রাস’ হয়েছে, জ্বালানিতে তা আরও বেশি হয়েছে। সরকার একটি উন্নয়নের টার্গেট নিয়েছে, কিন্তু কোনো পরিকল্পনা ছাড়া ওই অবকাঠামো করা হয়েছে। তথ্যে উন্নয়ন দেখানো হয়েছে, যা বাস্তবে উন্নয়নে কাজে আসেনি।

তিনি বলেন, সরকারের কিছু বিষয় জ্বালানি খাতকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। টার্গেট করা হয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চতকল্পে উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার, কিন্তু সেটা ধরে-বেঁধে করা হয়েছে। উৎপাদন অর্ধেক হলেও কাগজে-কলমে শতভাগ দেখানো হয়েছে। ‘সরকার সুবিধা নিয়েছে এ খাত থেকে। সেজন্য এ খাতকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল। কিন্তু উন্নত কোনো দেশের সরকার এ ধরনের খাত নিয়ন্ত্রণে রাখে না।’

ম তামিম বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ টেকনিক্যাল বিষয়, এটি রাজনৈতিকভাবে নির্ধারণ সম্ভব, যেটি আমাদের দেশে হয়েছে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতায় উন্নয়ন করতে পারেনি।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি এ দুটো জিনিস এ খাতকে শেষ করে দিয়েছে। এটা থেকে বের হওয়া এখন কঠিন। তবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ধরে রাখতে হলে আমাদের এ জঞ্জাল থেকে বেরিয়ে আসতে হবেই। সেক্ষেত্রে নতুন সরকারের কাছে এটিই আমাদের বড় প্রত্যাশা।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- জ্বালানিবিষয়ক ম্যাগাজিন ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’র সম্পাদক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল ও বাংলাদেশ সোলার রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল আক্তার প্রমুখ।

এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক কর কাঠামো সহজীকরণ চায় ঢাকা চেম্বার

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
কর কাঠামো সহজীকরণ চায় ঢাকা চেম্বার
আগারগাঁওয়ে গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির একটি প্রতিনিধিদল। ছবি: সংগৃহীত

দেশের কর কাঠামো জটিল। এর কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য বিশেষ করে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা প্রায়ই নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। হার না বাড়িয়ে কর কাঠামো আরও সহজ করলে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করা সহজ হবে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের-এনবিআর আবদুর রহমান খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা জানান ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ। 

এ সময় এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, করজাল সম্প্রসারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান করদাতারা কর প্রদানে নিরুৎসাহিত হবেন। তাই করজাল সম্প্রসারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগামী ৬ মাস কাজ করবে এনবিআর। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫ শতাংশ লোক রাজস্ব প্রদান করে, যেখানে ভারতে এ হার ২৩ শতাংশ। বিদ্যমান বাস্তবতায় রাজস্ব আহরণের হার বাড়াতে নিজেদের করজাল সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মোট রাজস্বের সিংহভাগই আসে বিদ্যমান করদাতাদের কাছ থেকে এবং সমাজের একটি বড় অংশই করজালের বাইরে থেকে যাচ্ছে। ফলে চাপ বাড়ছে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর। এমতাবস্থায়, করজাল সম্প্রসারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান করদাতারা কর প্রদানে নিরুৎসাহিত হবেন, তাই করজাল সম্প্রসারণে এনবিআর অগ্রাধিকারভিত্তিতে আগামী ৬ মাস কাজ করবে।

আবদুর রহমান জানান, বিভিন্ন স্তরে কর আহরণের কারণে বিশেষ করে করপোরেট করের ইফেক্টিভ হার বেড়ে যায়। বিষয়টি এনবিআর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। সামগ্রিক রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা না কমিয়ে, কর হার যৌক্তিকীকরণের পাশাপাশি দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানো হবে।

ব্যবসায়িক লেনদেন প্রক্রিয়া ক্যাশলেস ও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পন্ন করার জন্য ব্যবসায়ী সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে কর আহরণের হার আরও বৃদ্ধি পাবে। রাজস্ব খাতের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি সমাধানের লক্ষ্যে ডিসিসিআইকে প্রয়োজনীয় গবেষণা পরিচালনা করে সুপারিশ করলে এনবিআর যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, দেশের জটিল রাজস্ব কাঠামোর জন্য আমাদের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তারা ব্যবসা পরিচালনায় নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাই এ খাতের উদ্যোক্তাদের বিকাশে সহায়ক এবং সহজ রাজস্ব কাঠামো প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিদ্যমান কর হার না বাড়িয়ে, করজাল সম্প্রসারণ বেশি নজর দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

বর্তমান আইনে ব্যবসায়িক ক্ষতিকে অন্যান্য ব্যবসায়িক উৎসের আয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতে না পারলে ব্যবসায়ীদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা আরোপিত হচ্ছে, এ লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ৩৭-এর অনুরূপ বিধান পুনর্বহালের প্রস্তাব করেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি। কর প্রদান ও করসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি সহজীকরণের লক্ষ্যে আয়কর ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।

তিনি বলেন, পণ্যের বিবরণ সঠিক থাকলেও এইচএস কোডে ভুল থাকার কারণে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে, যার ফলে ব্যবসায়ীদের অনেক সময় হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়। এমতাবস্থায় পণ্যের বিবরণ এবং এইচএস কোডের যেকোনো একটি সঠিক থাকলে কাস্টমস আইন ২০২৩-এর ৮৬(১) ধারা সংশোধন করে অ্যাসেসমেন্ট পর্যায়ে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণার সংশোধন ও প্রত্যাহার করতে হবে। 
 
এ সময় ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, এনবিআর সদস্য (শুল্ক) মো. মাসুদ সাদেক, সদস্য (করনীতি) এ কে এম বদিউল আলম, সদস্য (কর প্রশাসন) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ উপস্থিত ছিলেন।