ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গোপালগঞ্জে চিনাবাদাম চাষে কৃষকের সাফল্য

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম
আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
গোপালগঞ্জে চিনাবাদাম চাষে কৃষকের সাফল্য
খেত থেকে তোলা হচ্ছে চিনাবাদাম। ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে কৃষকরা এবার চিনাবাদামের চাষে এক চমকপ্রদ সাফল্য অর্জন করেছেন। চলতি বছর জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ৫১৫ হেক্টর জমিতে চিনাবাদামের চাষ করা হয়েছে, যার ফলে উৎপাদিত হয়েছে ১ হাজার ৩০ মেট্রিক টন বাদাম। প্রতি হেক্টরে গড়ে ২ টন বাদাম উৎপন্ন হওয়ায় কৃষকদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য বয়ে এনেছে। এটি জেলার কৃষি খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

গোপালগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আ. কাদের সরদার বলেন, ‘জেলার সদর উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ করা হয়েছে, যেখানে উৎপাদিত হয়েছে ৯০০ টন বাদাম। অন্যান্য উপজেলায় উৎপাদন বিবরণ হলো- মুকসুদপুরে ১০ হেক্টরে ২২ টন, কাশিয়ানীতে ৩৫ হেক্টরে ৬৮ টন, কোটালীপাড়ায় ১৫ হেক্টরে ২৯ টন ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৫ হেক্টরে ১১ টন বাদাম উৎপাদিত হয়েছে। 

নতুন উচ্চফলনশীল চিনাবাদামের জাত, বিশেষ করে বিনা ও বারি চিনাবাদাম কৃষকদের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ সঞ্জয় কুমার কুণ্ডু জানান, সরকার বাদাম চাষাবাদে প্রণোদনা হিসেবে ৬৮০ জন কৃষককে বীজ ও সার দিয়েছে। প্রত্যেক কৃষককে ১০ কেজি চিনাবাদামের বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এই সহায়তার ফলে কৃষকরা ৬৮০ বিঘা জমিতে চিনাবাদামের আবাদ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন এবং এর মাধ্যমে তারা অধিক উৎপাদন ও লাভবান হয়েছেন।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষক সাইফুল আলম খান তার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বিনা উপকেন্দ্র থেকে বিনা মূল্যে বিনা চিনাবাদাম-৬ বীজ ও সার পেয়েছেন এবং ১৫০ শতাংশ জমিতে বাদামের চাষ করেছেন। তিনি মোট ২৪৬ দশমিক ৫১ শতাংশ জমিতে ১ হেক্টরে ২ টন ৯৫৮ দশমিক ১২ কেজি বাদাম উৎপাদন করেছেন। তিনি আরও জানান, বাদাম চাষে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। তিনি ১ হাজার ৮০০ কেজি বাদাম বিক্রি করে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় করেছেন। বাদাম চাষে খরচ বাদে তার লাভ হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ধান ও পাটের তুলনায় বাদামে লাভ অনেক বেশি হওয়ায় কৃষক তার আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন।

বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইনচার্জ ড. মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, বিনা চিনাবাদাম-৬ জাতের বাদাম হেক্টরে ২ টন ৯০০ কেজি পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। তবে সাইফুল আলম খান বাড়তি পরিচর্যা করে ২ টন ৯৫৮ কেজি ফলন অর্জন করেছেন। এই বাদামের তেলের পরিমাণ ৪৮ শতাংশ হওয়ায় এটি উচ্চমানের এবং বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক। চিনাবাদামের চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে দেশের ভোজ্যতেলের আমদানি হ্রাস এবং তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব হবে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গোপালগঞ্জের কৃষকদের এই সাফল্য দেশের কৃষি খাতে একটি নতুন উদাহরণ স্থাপন করেছে। চিনাবাদামের চাষ কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করেছে। এই সাফল্য অন্যান্য অঞ্চলে কৃষি সম্প্রসারণে একটি প্রেরণা হবে। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা বৃদ্ধিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পুঁজিবাজার সংস্কারে নানা উদ্যোগ

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ এএম
পুঁজিবাজার সংস্কারে নানা উদ্যোগ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কারে হাত দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অন্যান্য সেক্টরের মতো দেশের শেয়ারবাজারেও সংস্কারের ছোঁয়া লেগেছে। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষপদে রদবদল করা হয়েছে। পাশাপাশি শেয়ারবাজারের বিগত সময়ের অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতি অনুসন্ধান করতে সমন্বিত ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি’ গঠন এবং শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং আস্থা ফেরাতে সময়োপযোগী নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা দ্রুত ফেরার পাশাপাশি অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতি কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত এক মাসে শেয়ারবাজার সংস্কারের যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলো হলো-

শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পাঁচ দিন পর ১০ আগস্ট রাতে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম পদত্যাগ করেন। 

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের পদত্যাগের পর গত ১২ আগস্ট দুজন কমিশনার পদত্যাগ করেন। তারা হলেন অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ ও ড. রুমানা ইসলাম।

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ দিনের মাথায় ১৮ আগস্ট বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে বিশিষ্ট ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি পরের দিন ১৯ আগস্ট বিএসইসিতে যোগদান করেন।

বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের যোগদানের এক দিন পর অর্থাৎ ২০ আগস্ট সন্ধ্যায় দুই স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যানসহ সব স্বতন্ত্র পরিচালকের পদত্যাগের বিষয়ে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর ২১ ও ২২ আগস্ট ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) চেয়ারম্যানসহ স্বতন্ত্র পরিচালকরা ধারাবাহিতভাবে পদত্যাগ করেন।

২০ আগস্ট ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের শেয়ার কারসাজি অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন বিএসইসির পরিচালক মো. আবুল কালাম, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মাদ রাকিবুর রহমান এবং উপপরিচালক মোহাম্মাদ আসিফ ইকবাল।

দেশের উভয় শেয়ারবাজারের সব কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে গত ২১ আগস্ট দুটি পরিদর্শন কমিটি গঠন করে বিএসইসি। ডিএসইর পরিদর্শন কমিটির নেতৃত্ব দেন বিএসইসির পরিচালক আবুল কালাম। সিএসসির কমিটির নেতৃত্ব দেবেন বিএসইসির পরিচালক ফখরুল ইসলাম মজুমদার।

শেয়ারবাজারে অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ২১ আগস্ট শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট ১১ ব্যক্তির বেনিফিসিয়াল ওনার্স অ্যাকাউন্ট (বিও অ্যাকাউন্ট) জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) নির্দেশ দেয় বিএসইসি। জব্দ হওয়া বিও অ্যাকাউন্টধারীরা হলেন ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম, বিতর্কিত বিনিয়োগকারী সমবায় অধিদপ্তরের উপনিয়ন্ত্রক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু, তার স্ত্রী ব্রোকার হাউস মোনার্ক হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাদিয়া হাসান, তার বাবা আবুল কালাম মাতবর, তার বোন কনিকা আফরোজ, তার ভাই সাজেদ মাতবর, মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান জাবেদ এ মতিন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান সিডব্লিউটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিজা চৌধুরী, সদ্য পদত্যাগ করা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং তার ছেলে জুহায়ের শাহরিয়ার ইসলাম।

পুঁজিবাজারের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান রেস প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান দুই কর্ণধার চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও হাসান তাহের ইমামের বিও অ্যাকাউন্ট গত ২২ আগস্ট জব্দ করা হয়। ডিএসই ও সিএসইর সদস্য প্রতিষ্ঠান মাল্টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড সার্ভিসেসের অনিয়ম তদন্তসংক্রান্ত বিএসইসির কমিটির কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রেস প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একই সঙ্গে ব্রোকার হাউসটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিচালক জালাল একরামুল কবীরের সব বিও হিসাবও স্থগিত করা হয়।

বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের যোগদানের তিন দিন পর অর্থাৎ ২২ আগস্ট সংস্থাটির শীর্ষ পদে রদবদল করা হয়। এ রদবদলে বিএসইসির দুই কমিশনারের পাশাপাশি নির্বাহী পরিচালকদের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে।

বিএসইসি কমিশনারের শূন্য পদে গত ২৮ আগস্ট সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আলী আকবরকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরের দিন ২৯ আগস্ট তিনি বিএসইসিতে যোগদান করেন। এ ছাড়া গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএসইসি কমিশনারের আরেক শূন্য পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ফারজানা লালারুখকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরের দিন ৪ সেপ্টেম্বর তিনি বিএসইসিতে কাজে যোগদান করেন। আগামী চার বছর তারা কমিশনার পদে দায়িত্ব পালন করবেন।

গত ২৭ আগস্ট শেয়ারের দাম বাড়া বা কমার ক্ষেত্রে পুরোনো সার্কিট ব্রেকারসংক্রান্ত নির্দেশনা (২০২১ সালের ১৭ জুন) পুনর্বহাল করা হয়, ২৮ আগস্ট থেকে যা কার্যকর হয়েছে। এর ফলে শেয়ারের বাজারমূল্য ভেদে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারবে। একইভাবে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারবে। তবে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (বেক্সিমকো) এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ওপর ফ্লোর প্রাইস অব্যাহত থাকায় সার্কিট ব্রেকার কার্যকর হবে না।

গত ২৮ আগস্ট বিএসইসির ‘দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম’-এর শুভেচ্ছাদূত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নিয়োগ বাতিল করা হয়। সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজির অভিযোগ রয়েছে।

গত ২৮ আগস্ট শেয়ারবাজারে যেসব তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিধি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘোষিত ডিভিডেন্ড দেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয় বিএসইসি। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করার পরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ পাঠায় না। আর এই ধারা দীর্ঘদিন ধরে চলছে আসছে। ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা এই বিষয়ে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছেও অভিযোগ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শেয়ারবাজারে অবশিষ্ট ছয়টি কোম্পানির মধ্যে চারটি শেয়ারদরের সর্বনিম্ন স্তর বা সীমা (ফ্লোর প্রাইস) গত ২৮ আগস্ট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ২৯ আগস্ট থেকে তা কার্যকর হয়েছে। কোম্পানি চারটি হলো খুলনা পাওয়ার, বিএসআরএম, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজীবাজার পাওয়ার। তবে বেক্সিমকো ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ওপর ফ্লোর প্রাইস বহাল রয়েছে।

মশিউর সিকিউরিটিজে তদন্ত ও পরিচালকদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মশিউর সিকিউরিটিজের (ট্রেক নং-১৩৪) বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে সমন্বিত গ্রাহক হিসেবে প্রায় ৬৯ কোটি টাকার ঘাটতি পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ আগস্ট অধিকতর তদন্তের স্বার্থে বিএসইসি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। একই সঙ্গে ব্রোকারেজ হাউসটির কর্তাব্যক্তিরা যেন বিদেশ পালিয়ে যেতে না পারেন, সে লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দেয় বিএসইসি।

শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে গত ১ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের টেরা রিসোর্সেস ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং কনসালট্যান্ট জিয়া ইউ আহমেদ, ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট ইয়াওয়ার সাইদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মো. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. জিশান হায়দার ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম। গঠিত সমন্বিত তদন্ত কমিটি শেয়ারবাজারের বিগত সময়ের অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করবে।

বিএসইসি গত ১ সেপ্টেম্বর ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদে সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করে। ডিএসইর নতুন স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন মালদ্বীপ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান কে এ এম মাজেদুর রহমান, আর্মি ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডিরেক্টর জেনারেল প্রফেসর মেজর জেনারেল (অব.) ডক্টর মো. কামরুজ্জামান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ আর্মির ৪৬ ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মফিজুল ইসলাম রাশেদ, সেন্টার অন ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের (সিরডাপ) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মো. হেলালউদ্দিন, মেটলাইফ বাংলাদেশের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ হাম্মাদুল করীম এবং বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার ও ডিজাস্টার রিকভারি সাইট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, চিফ ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিসার (সিআইএসও) বাংলাদেশ ব্যাংক (লিয়েন) মো. ইসহাক মিয়া।

স্থানীয় সরবরাহ ও ইথানল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা চিনি রপ্তানির নিষেধাজ্ঞার সময় আরও বাড়াতে চায় ভারত

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ এএম
চিনি রপ্তানির নিষেধাজ্ঞার সময় আরও বাড়াতে চায় ভারত
ভারতের জম্মুতে গুদামে চিনির বস্তা বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এক শ্রমিক। ছবি: সংগৃহীত

টানা দ্বিতীয় বছরের মতো চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে ভারত সরকার। কারণ বিশ্বে চিনির সবচেয়ে বড় ভোক্তা দেশটিতে চলতি মৌসুমে আখের ফলন কম হওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সে কারণে চিনির উৎপাদনও কমতে পারে। সরকারি একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ের প্রত্যক্ষ জ্ঞান রয়েছে এমন সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, জৈব জ্বালানি সরবরাহ বাড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে চিনি কল থেকে তেল কোম্পানিগুলো যে দামে ইথানল কেনে, নয়াদিল্লি সেই দাম আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। 

নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করা হোক- সূত্রগুলো সেটা চায়নি। কারণ আলোচনাগুলো অত্যন্ত গোপনীয় ছিল। সূত্র বলছে, চিনি রপ্তানিতে বিশ্ববাজারে ভারতের অনুপস্থিতি, বৈশ্বিক সরবরাহকে আরও সংকুচিত করবে। সেই সঙ্গে নিউইয়র্ক ও লন্ডনে বেঞ্চমার্ক চিনির দাম আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, নয়াদিল্লি এমনি একটি সময়ে কলগুলোকে চিনি রপ্তানি করতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, যখন বিশ্বের শীর্ষ উৎপাদক ও সরবরাহকারী ব্রাজিল থেকে সরবরাহ কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি বিশ্বে চিনির সবচেয়ে বড় জোগানদাতা। সম্প্রতি খরার কারণে তাদের চিনির উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

ভারত সরকারের একটি সূত্র বলেছে, বর্তমানে আখের ফলন যেই পরিস্থিতিতে রয়েছে, সেখানে চিনি রপ্তানির কোনো সুযোগ নেই। সূত্রটির বক্তব্য হলো ‘দেশীয় চিনির চাহিদা পূরণের পর আমাদের পরবর্তী অগ্রাধিকার ইথানল ব্লেন্ডিং (পেট্রলের সঙ্গে ইথানল মিশিয়ে একটি নতুন জ্বালানি তৈরির প্রক্রিয়া)। সেই সঙ্গে ইথানল ব্লেন্ডিংয়ের লক্ষ্য পূরণের জন্য আমাদের আরও অনেক বেশি আখের প্রয়োজন।’ 

খবরে বলা হয়, কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে ভারত ২০২৫ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে পেট্রলে ইথানলের অনুপাত বর্তমান ১৩-১৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার লক্ষ্যে কাজ করছে। ভারতের ইআইডি-প্যারি, বলরামপুর চিনি মিলস, শ্রী রেনুকা, বাজাজ হিন্দুস্তান ও দ্বারিকেশ সুগারসহ বেশ কয়েকটি চিনিকলের ইথানল উৎপাদন ক্ষমতা গত কয়েক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, সরকার নতুন বিপণন মৌসুম শুরু হওয়া নভেম্বর মাস থেকে ইথানলের মূল্য ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানোর কথা ভাবছে। গত মাসের শেষের দিকে সরকারের একটি আদেশে বলা হয়, ভারত নভেম্বর থেকে চিনিকলগুলোকে আখের রস বা সিরাপ ব্যবহার করে ইথানল উৎপাদন শুরু করার অনুমতি দেবে।

ভারতের চিনি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো ও দেশীয় ইথানলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। উভয় ব্যবস্থার কথা এই মাসের শেষের দিকে ঘোষণা করা হতে পারে। এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে ভারত সরকারের একজন মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

খবরে বলা হয়, ব্রাজিলের পরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিনি উৎপাদক ভারতও গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বর্তমান মৌসুমে চিনি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সাত বছর পর চিনি রপ্তানির ওপর এটি ছিল দেশটির প্রথম নিষেধাজ্ঞা।

গত মৌসুমে নয়াদিল্লির চিনি রপ্তানির পরিমাণ ৬১ লাখ মেট্রিকটনে সীমাবদ্ধ ছিল, যা ২০২১-২২ মৌসুমে দেশটির মোট রপ্তানির প্রায় অর্ধেক। সূত্রগুলো জানায়, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক রাজ্যে গত বছরের অপর্যাপ্ত বৃষ্টির প্রতিকূল প্রভাবের কারণে আগামী ২০২৪-২৫ মৌসুমে চিনির উৎপাদন চলতি মৌসুমের ৩ কোটি ৪০ লাখ টন থেকে কমে আগামী মৌসুমে ৩ কোটি ২০ লাখ টনে নেমে আসতে পারে। মুম্বাইভিত্তিক একজন ডিলার বলেছেন, ব্রাজিলের উৎপাদন কম হওয়ার প্রত্যাশায় বিশ্বকে ২০২৫ সালে ভারত থেকে চিনি আমদানির প্রয়োজন হবে। তবে ভারত থেকে রপ্তানি না হলে, বিশ্ববাজারে চিনির দাম আরও বাড়বে।

ডলারের বিপরীতে এক বছরে আফগানির মূল্য ১৭ শতাংশ বেড়েছে

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ এএম
ডলারের বিপরীতে এক বছরে আফগানির মূল্য ১৭ শতাংশ বেড়েছে

জনগণের প্রতি সরকারের জবাবদিহি কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম উপগভর্নর সদিকুল্লাহ খালিদ বলেছেন, গত এক বছরে আফগান মুদ্রার বিনিময়মূল্য মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় তিনি গ্রাহক আমানত উত্তোলনের পরিমাণ প্রতি সপ্তাহে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার আফগানি এবং প্রতি মাসে ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ আফগানি করার ঘোষণা দেন। আর ডলারের হিসাবে এই সংখ্যা প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার থেকে ২ হাজার ডলার এবং প্রতি মাসে ৩ থেকে ৬ হাজার ডলারে উন্নীত করেন। খবর আফগান ভয়েস এজেন্সির।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি বিভাগের প্রধান আহমদ জাভেদ সাদাদ বলেছেন, কেন্দ্র ও প্রদেশ থেকে ৭ বিলিয়ন আফগানি নোট সংগ্রহ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর বদলে নতুন নোট চালু করা হয়েছে।

ব্যাংকিং তদন্ত বিভাগের উপ-পরিচালক ইহসানুল্লাহ মানসুর জানিয়েছেন, গত এক বছরে মুদ্রাবিনিময় অফিস ও মানি সার্ভিস কোম্পানিগুলোর ১৪৯টিকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মোট নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা ১ হাজার ৭৮০টিতে পৌঁছেছে।

অন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানের প্রধান আহমদ জহির নাসিরজাই দেশে ইলেকট্রনিক মুদ্রা ব্যবহারের জন্য একটি জাতীয় কৌশল গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। এই লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতাল এবং সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরগুলোতে ইলেকট্রনিক মুদ্রা ব্যবহারের জন্য যন্ত্রপাতি ইনস্টল করা হয়েছে। আহমদ জহির নাসিরজাই বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত এক বছরে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগের বছরগুলোতে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৮ শতাংশ। কিন্তু গত বছরে সেটি কমে মাইনাস ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ হয়েছে।

দেশের পেমেন্ট সিস্টেমের প্রধান আসাদুল্লাহ মোশফাক বলেছেন, ৩৭৭টি মুদ্রাবিনিময় অফিস এবং মানি সার্ভিস কোম্পানি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষণের আটটি অসঙ্গতি ও ইলেকট্রনিক মানি প্রতিষ্ঠানের বিদেশি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ছয়টি অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে মুদ্রা আদান-প্রদানের ৭০০টি পদ্ধতি নিবন্ধন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত বছর আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট খোলা, প্রাথমিক আমানত, নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট সক্রিয়করণ এবং ব্যক্তিগত ও করপোরেট অ্যাকাউন্টের জন্য বার্ষিক ফি সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় সুবিধা চালু করেছে। 

জবাবদিহিতা কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, ব্যাংকটি গত বছরে আফগান মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল করার জন্য ৩৯ বার ডলার নিলাম করেছে। তারা জানান, এই মুদ্রানীতি বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে আফগান মুদ্রার বিনিময় হার বজায় রাখার সর্বোত্তম উপায়।

প্রসঙ্গত, তালেবান সরকারের নেতৃত্বে আফগানিস্তান তাদের উত্তরোত্তর সাফল্য দেখাচ্ছে। এক সময় আফিমের ওপর নির্ভরশীল হলেও বর্তমানে সেখান থেকে ফিরে এসে অর্থনীতিকে বহুমুখী রূপান্তরের চেষ্টা করছে দেশটি। ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে অন্য দেশগুলো যেখানে বৈদেশিক বাণিজ্যে হোঁচট খাচ্ছিল, আফগানিস্তান সেখানে ডলারকে হারিয়ে বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

হিলিতে কমেছে পেঁয়াজের দাম

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ এএম
হিলিতে কমেছে পেঁয়াজের দাম
ছবি : খবরের কাগজ

পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক কমানোর পর কিছুটা প্রভাব পড়তে শুরু করেছে হিলি বন্দরের পাইকারি বাজারে। বন্দরে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা কমেছে। শুল্ক কমানোর আগে বৃহস্পতিবার হিলি স্থলবন্দরে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল রবিবার তা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়।

হিলি বন্দরের আমদানিকারক বাবু হোসেন বলেন, ‘শুধু দেশের আমদানি শুল্ক কমিয়ে খোলাবাজারে পেঁয়াজের দামে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। পেঁয়াজের দাম কমিয়ে আনতে হলে ভারতের ৪০ শতাংশ শুল্ক তুলে দিতে হবে। তবেই আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে আসবে পেঁয়াজের দাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘অধিক মূল্যের কারণে পেঁয়াজের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকায় ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানিও কম হচ্ছে।’

পাইকারি ক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক কমানোর পর কিছুটা প্রভাব পড়েছে। কিছুদিন আগে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও আজ (রবিবার) বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। প্রকারভেদে কেজিতে দাম কমেছে ৩ থেকে ৫ টাকা। এর ফলে মানুষের মাঝে স্বস্তি এসেছে এবং পেঁয়াজের বেচাকেনা কিছুটা ভালো হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই পেঁয়াজ হিলি বন্দর থেকে কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।’

হিলি বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা শাহবুল ইসলাম বলেন, ‘পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক কমানোর পর দাম কিছুটা কমে এসেছে। এতে করে বেচাকেনা বাড়ছে। এদিকে ভারতের সঙ্গে কথা বলে ওই দেশের ৪০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করলে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসত।’

৭০ লাখ টাকার ক্ষতি বন্যায় নিঃস্ব পোলট্রি ব্যবসায়ী বাপ্পি

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১১ এএম
বন্যায় নিঃস্ব পোলট্রি ব্যবসায়ী বাপ্পি
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার পোলট্রি ব্যবসায়ী জাহেদ হোসেন বাপ্পির ক্ষতিগ্রস্ত মুরগির শেড// খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পোলট্রি ব্যবসায়ী জাহেদ হোসেন বাপ্পি ভয়াবহ বন্যায় সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। তার ২২টি পোলট্রি শেডের মধ্যে ৯টি শেডের ৬০ হাজার মুরগি বন্যায় মারা গেছে। প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি। বন্যার ফলে মুরগির শেডও নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যাংকঋণ ও শ্রমিকদের বেতন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন বাপ্পি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।

জানা গেছে, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় পোলট্রিশিল্পে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নিঃস্ব হয়েছেন অনেক খামারি। টাকার অঙ্কে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। এর মধ্যে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি হচ্ছেন বাপ্পি। তার ২২টি পোলট্রি শেডের মধ্যে ৯টি বৃহৎ শেডের বিক্রিযোগ্য ৬০ হাজার মুরগি বন্যার পানিতে মারা গেছে।

মুরগির শেডগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকগুলো শেড ভাড়া নিয়েছিলেন বাপ্পি। এতে তিনি বিপাকে পড়েছেন । মুরগির শেডে শ্রমিক, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাসে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা বেতন পরিশোধ করতে হয় তাকে। অন্যদিকে, বাপ্পিকে ব্যাংকঋণের বোঝা নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। ২০০৬ সালে অনার্স পড়ুয়া জাহেদ হোসেন বাপ্পি বন্ধুর মাধ্যমে পোলট্রি ব্যবসায় প্রবেশ করেন। কিন্তু বন্যায় সবকিছু হারিয়ে তিনি নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের বাপ্পি পোলট্রি ফর্মের স্বত্বাধিকারী জাহেদ হোসেন বাপ্পি বলেন, ‘আমার মিরসরাইয়ের বেচুনি পোল এলাকায় ৪ হাজার ব্রয়লার, ছাগলনাইয়ার আলোকদিয়ায় ৫ হাজার ব্রয়লার ও ৯ হাজার ৮০০ সোনালি এবং সমিতি বাজার এলাকায় ১০ হাজার ব্রয়লার মুরগি ছিল। বিক্রিযোগ্য এসব মুরগি বন্যার পানিতে মারা গেছে। এতে আমার প্রায় প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংকঋণ, শ্রমিকদের বেতন, খাদ্য- কিভাবে কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’ 

সবকিছু নতুন করে শুরু করতে পারবেন কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘুমহীন রাত কাটছে বাপ্পির। বাপ্পির মতো অনেকেই এই বন্যায় নিঃস্ব হয়েছেন। সরকারি সহায়তা না পেলে ঘুরে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা নেই তাদের।

মিরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ফরিদ বলেন, ‘বন্যায় মিরসরাইয়ে পোলট্রি সেক্টরে বড় ক্ষতি হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত জাহেদ হোসেন বাপ্পী। আমরা সরকারিভাবে যতটুকু পারি সহায়তা করব।’