সরকার পরিবর্তনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন বাজার মনিটরিং শুরু করেছেন। এর ফলে আলু কেজিতে ৫ টাকা ও পেঁয়াজ ১০ টাকা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, মোকামে দাম কিছুটা কমেছে। এ জন্য তারাও কম দামে বিক্রি করতে পারছেন। মুরগিও কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। ইলিশ মাছের দামও কমেছে। তবে চালের দাম কেজিতে ১-২ টাকা ও মরিচ কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে। স্থিতিশীল রয়েছে সবজির দাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বিক্রেতারা জানান, সরকার বদলের পর ছাত্ররা বিভিন্ন বাজারে যাচ্ছেন। কম দামে বিক্রি করতে বলছেন। এই মেসেজ বিভিন্ন মোকামেও পৌঁছে যাচ্ছে। এ জন্য তারা কিছুটা কম দামে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি করতে শুরু করেছেন।
কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা সুরুজ বলেন, ‘কয়েক দিনের ব্যবধানে আলু ও পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও গতকাল তা ১১০-১২০ টাকায় নেমেছে। কেজিতে কমেছে ১০ টাকা। ৬০-৭০ টাকার আলু নেমেছে ৫৫-৬০ টাকায়। তবে আগের মতোই আদার কেজি ২৮০-৩০০ টাকা ও রসুন ২০০-২৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’
এই বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের মালিক শাহ আলম বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমেছে। তবে অন্য জিনিসের দাম কমেনি। আগের মতোই মসুর ডাল ১২৫-১৩৫ টাকা, ছোলা ১১০-১১৫ টাকা, এক লিটার সয়াবিন তেল ১৬৫ টাকা ও পাঁচ লিটার ৮০০-৮১০ টাকা, চিনির কেজি ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
সরকার পরিবর্তনের পর রাজধানীতে চালের দাম বস্তায় ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাবে খুচরা বাজারেও চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১-২ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, আগের মজুত চালের দাম বাড়েনি। কিন্তু দুই-চার দিনের মধ্যে যে চাল মোকাম থেকে এসেছে তার দাম বেড়েছে। বর্তমানে নাজিরশাইল চাল ৭৮ টাকা, মিনিকেট ৭০-৭২, আটাশ চাল ৫৫-৫৮, মোটা চাল ৫২-৫৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের হাজি ইসমাইল রাইস এজেন্সির বিক্রেতা জসিম বলেন, ‘চালের সরবরাহ ঠিকই আছে। তবে দাম বাড়তি। পাইকারি পর্যায়ে ৩ হাজার ৪০০ টাকার (৫০ কেজি) বস্তা ৩ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।’
বেড়েছে মরিচের দাম
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে প্রচুর সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এ জন্য সপ্তাহের ব্যবধানে বাড়েনি সবজির দাম। তবে কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা বেড়ে ২০০ টাকার মরিচ ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
তারা আরও জানান, গত সপ্তাহের মতোই বেগুন ৭০-১০০ টাকা, করলা ৮০-১০০, পটোল, ঢ্যাঁড়স, ধুন্দুল ৪০-৬০ টাকা। ঝিঙ্গা, মুলা ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৫০-৬০, শসার ৫০-৬০, বরবটি ৯০ টাকা। কচুর মুখী ৭০-৮০ টাকা কেজি। টমেটো, গাজর ১৫০-১৮০ টাকা, লাউ ও চালকুমড়ার পিস ৬০-৮০ টাকা। এ ছাড়া লাউশাক ও পুঁইশাকের আঁটি ৩০-৪০ টাকা, কলমিশাক, লাল শাক, পালং ও পাটশাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা বিক্রি হতে দেখা যায়।
ইলিশের দাম কমেছে
বিভিন্ন বাজারের মাছ বিক্রেতারাও জানান, দুই দিনের ব্যবধানে বিভিন্ন আড়তে সরবরাহ বেড়েছে। এ জন্য দামও স্বাভাবিক। বাড়েনি, কমেনি। তবে ইলিশের দাম কেজিতে ১০০-২০০ টাকা কমেছে। এক কেজির ওপরে আগে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও গতকাল বিভিন্ন বাজারে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, ছোটটা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়। আগের মতোই রুই, কাতলা ৩৫০-৭০০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি। ট্যাংরা ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, কাচকি, মলা মাছ ৫০০-৭০০, পাঙাশ, তেলাপিয়া ২০০-২৫০, পাবদা ৪০০-৫০০ টাকা।