ইসলামী ব্যাংকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এস আলম গ্রুপ।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এস আলম গ্রুপের বিনিয়োগ সংক্রান্ত ইসলামী ব্যাংকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। উনার এ মিথ্যা, মনগড়া আর ভিত্তিহীন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য দেশবাসীর অবগতির জন্য পেশ করছি।
এস আলম গ্রুপ ১৯৮৯ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংক থেকে বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এ দীর্ঘ পথযাত্রায় ব্যাংকের বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করে আমাদের গ্রুপের যেমন অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তেমনি ব্যাংকও আমাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছে। আজ পর্যন্ত আমাদের কোনো বিনিয়োগ খেলাপি হয়নি। বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায় ক্ষতি হলেও আমরা ব্যাংকের পাওনা যথাযথভাবে পরিশোধ করে এসেছি।
বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হলে একটি পক্ষ আমাদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ নিয়ে ঢালাও ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে আসছে। এর আগে থেকে কয়েকটি মিডিয়া ধারাবাহিকভাবে আমাদের গ্রুপ এবং ব্যবসা নিয়ে নেতিবাচক প্রচার চালিয়ে আসছিল, যার ধারাবাহিকতা আমরা লক্ষ্য করছি।
ওই মিডিয়াসমূহের একটি প্রতিবেদনে অনুরূপভাবে আমাদের বিনিয়োগের হিসাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি বিশেষ নিরীক্ষা চালানো হয়েছিল, যাতে আমাদের গ্রুপের প্রকৃত বিনিয়োগ ওঠে এসেছিল।
আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান কোনো পরিসংখ্যানের ধার না ধেরে বিভিন্ন স্বনামধন্য গ্রুপের বিনিয়োগ আমাদের গ্রুপের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা অত্যন্ত অন্যায় এবং ব্যাংকের বিনিয়োগ আদায়কে ঝুকির মধ্যে ফেলবে।
আমরা দেখেছি নাবিল গ্রুপ, রংধনু গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপ, এননটেক্স গ্রুপ এবং আরও কিছু কোম্পানি এবং ব্যাক্তির নামে গৃহীত বিনিয়োগ আমাদের বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এসব গ্রুপ এবং ব্যাক্তির সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবসায়িক লেনদেন আছে, তবে তা আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বলে কোনোভাবেই প্রমাণ করে না। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে।
একটি বৃহৎ ব্যাবসায়িক গ্রুপ হিসেবে অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং গ্রুপের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালিত হয়ে থাকে। লেনদেন পরিচালিত হওয়া মানেই আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, এটা কোনোভাবে হতে পারে না। আলোচিত নাবিল গ্রুপের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক লেনদেন আছে। কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানির নামে গৃহীত বিনিয়োগের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এসব কোম্পানির সঙ্গে আমাদের কোনো লেনদেনও নেই।
আমরা লক্ষ্য করেছি যে, নাবিল গ্রুপের কর্ণধার আমিনুল ইসলামের বাবার কোম্পানির নামে গৃহীত বিনিয়োগও আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বলে দেখানো হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি যে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এহেন অপেশাদার আচরণের ফলে প্রকৃত বিনিয়োগ গ্রহীতাদের বিনিয়োগ ফেরৎ দেওয়ার ব্যাপারে দায়মুক্তি দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং আমাদের ব্যবসায়িক সুনাম এবং ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ, যেন সঠিকভাবে বিনিয়োগের পরিসংখ্যান জাতির সামনে পেশ করা হয়।