বিশ্বের অন্যতম প্রধান চাল রপ্তানিকারক দেশ হওয়া সত্ত্বেও এ বছর প্রায় ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের চাল আমদানি করবে ভিয়েতনাম। প্রক্রিয়াকরণের জন্য এই বিশাল অর্থের চাল আমদানি করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে দেশটি। খবর ভয়েস অব ভিয়েতনামের।
ভিয়েতনামের শুল্ক বিভাগ জেনারেল ডিপার্টমেন্ট অব ভিয়েতনাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশটি ৮৫ কোটি মার্কিন ডলারের চাল আমদানি করেছে। এটি ভিয়েতনামের গত বছরের একই সময়ে আমদানির তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি।
ভিয়েতনামের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির চাল উৎপাদনকারীরা উচ্চমূল্যের সুগন্ধি চালের বিভিন্ন জাতের প্রতি ঝুঁকছেন, যার ফলে দেশীয় চাল উৎপাদন আংশিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। এ কারণে দেশীয় চালের নির্দিষ্ট চাহিদা পূরণ করার জন্য আমদানি করতে হচ্ছে দেশটিকে।
কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের (এমএআরডি) একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ভয়েস অব ভিয়েতনামের খবরে বলা হয়, ভিয়েতনাম প্রতিবছর তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কম্বোডিয়া থেকে ১০ লাখ টনেরও বেশি চাল আমদানি করে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্রাণী খাদ্য ও অন্যান্য খাদ্যপণ্যের সহযোগী উপাদান হিসেবে ব্যবহারের জন্য আমরা ভারতের মতো প্রধান রপ্তানিকারী দেশগুলো থেকে চাল আমদানি করি।’
তবে আমদানি করা চাল দেশীয় চালের সঙ্গে মিশ্রিত হতে পারে কিংবা ভিয়েতনামি চাল হিসেবে পুনরায় রপ্তানি করা যেতে পারে- এমন উদ্বেগ থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, বিভিন্ন দেশের চালের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কারণে এই ঝুঁকি খুবই সামান্য।
ভিয়েতনামের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, দেশটির বার্ষিক চাল উৎপাদন তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জাতীয় মজুত বজায় রাখা এবং রপ্তানি করার জন্যও যথেষ্ট। এমএআরডি ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক ৪ কোটি ৩০ লাখ টন ধান উৎপাদন বজায় রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা ২ কোটি ৭০ লাখ থেকে ২ কোটি ৮০ লাখ টন চালের সমতুল্য।
ভিয়েতনামের কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ধারণা করছে যে, খাদ্য নিরাপত্তা ও দেশীয় খরচ নিশ্চিত করার জন্য দেশটির প্রায় ২ কোটি ৯৫ লাখ টন ধান প্রয়োজন হবে, যার মধ্যে ১ কোটি ৩৫ লাখ টন ধান বা ৭০ থেকে ৮০ লাখ টন চাল রপ্তানির জন্য অবশিষ্ট থাকবে।
প্রসঙ্গত, ভিয়েতনাম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ চাল উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক দেশ। দেশটির অর্থনীতিতে চাল খাতের অবদান যথেষ্ট। বিশ্ববাজারে চালের দাম ও চাহিদার ওঠানামার সঙ্গে ভিয়েতনামের চাল রপ্তানিও প্রভাবিত হয়। কারণ ভিয়েতনাম বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ। ভারত ও থাইল্যান্ডের পরেই তাদের অবস্থান। গত কয়েক বছরে ভিয়েতনামের চাল রপ্তানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ববাজারে চালের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া এবং ভারতসহ অন্যান্য প্রধান রপ্তানিকারক দেশের রপ্তানি কমানোর ফলে তাদের রপ্তানি বেড়েছে।