
৯০ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে মরক্কো থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি, সৌদি আরব থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬০১ কোটি ২৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এসব সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সার কেনার অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, দেশে কৃষি পণ্যের উৎপাদন যেন কোনোভাবে ব্যাহত না হয় সে লক্ষ্যে যথাসময়ে সারের মজুত ও সরবরাহ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে, একই বৈঠকে ১০ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি এস এ এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৪১৫ মার্কিন ডলার।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১২৮ কোটি ২২ লাখ ১২ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৫৬.১৭ মার্কিন ডলার।
এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এই সার কিনতে মোট ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৪৩.৩৭৫ মার্কিন ডলার।
১০ হাজার টন ডাল ক্রয়: এবার ৯৬ টাকা ৩৯ পয়সা কেজি দরে মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার সর্বশেষ যে দামে মসুর ডাল কিনেছে, এখন প্রতি কেজি মসুর ডাল কিনতে তারচেয়ে ৫ টাকা ৮১ পয়সা কম খরচ হচ্ছে।
বৈঠক শেষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব হবে না। বৈঠকে মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের পায়েল ট্রেডিং থেকে এই মসুর ডাল কেনা হবে।
ডাল কিনতে মোট খরচ হবে ৯৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আর প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরা হয়েছে ৯৬ টাকা ৩৯ পয়সা। এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে সাহারা এন্টারপ্রাইজ থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ৯৮ কোটি ২০ লাখ টাকায় কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরা হয় ৯৮ টাকা ২০ পয়সা।
তার আগে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম বৈঠকে ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় প্রতি কেজি মসুর ডালের মূল্য ধরা হয় ১০১ টাকা ৮৬ পয়সা। এ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম যে দামে মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছিল এবার তার তুলনায় কেজিতে ৫ টাকা ৪৭ পয়স কমে মসুর ডাল কিনতে পারছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সর্বশেষ মসুর ডাল কেনা হয় ১০২ টাকা ২০ পয়সা কেজি দরে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকার সর্বশেষ যে দামে মসুর ডাল কিনেছে তার তুলনায় এবার মসুর ডাল কিনতে কেজিতে ৫ টাকা ৮১ পয়সা কম পড়ছে।