ঢাকা ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
English

আর্থিক সংকটে ৪০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৫ পিএম
আর্থিক সংকটে ৪০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করা প্রায় ৪০টি কোম্পানি অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। বেশিরভাগ কোম্পানি ইতোমধ্যে লোকসানে চলে গেছে। এ অবস্থায় কোম্পানির ওপর বাড়ছে ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের চাপ। একই সঙ্গে এসব কোম্পানিতে কর্মরতরা ছাঁটাইয়ের ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন। এ অবস্থায় সংকট সমাধানে আন্দোলনে নেমেছে যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশন। ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলন, বিক্ষোভ ও অর্থ উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। 

ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহজালাল জানান, বিনিয়োগকারীদের ওপর দীর্ঘ ৬ বছর ধরে অযৌক্তিকভাবে ভাড়াসহ নানা বিল চাপানো, হঠাৎ করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্নকরণের নোটিশ ইস্যু, সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও ইচ্ছামতো বিদ্যুৎ বিল তৈরিসহ নানা সংকট রয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরের পূর্বপ্রান্তে নাজির শংকরপুর এলাকায় স্থাপিত যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে এখন প্রায় ৪০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরা মূলত আইটি ও আইটিসংশ্লিষ্ট ব্যবসা, সফটওয়্যার, ডিজিটাল মার্কেটিং, আইএসপি, গ্রাফিক্স, ই-কমার্স, কলসেন্টার এবং দক্ষকর্মী সৃষ্টির কার্যক্রমে যুক্ত। এ ছাড়া কম্পাউন্ডেই রয়েছে একটি ডরমেটরি (যা এখন হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট) এবং ক্যাফেটেরিয়া, একাধিক কনফারেন্স ও মিটিং রুম।

এখানকার কোম্পানি টেকনোসফট গ্লোবাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহজালাল। তিনি পার্কে উদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনর সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘আমরা সফটওয়্যারের নতুন কোনো অর্ডার পাচ্ছি না। যেসব কোম্পানি আমাদের সার্ভিস নেয়, তারাও নিয়মিত পেমেন্ট দিতে পারছে না। কিছুদিন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এ অবস্থা বিরাজ করছে। এর পাশাপাশি ৬ বছর ধরে অযৌক্তিক নানা বিল চাপানো ও ইচ্ছামতো বিদ্যুৎ বিল তৈরি আরও বিষিয়ে তুলেছে।’ 

হাসনাত ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী এএইচএম আরিফুল হাসনাত বলেন, ‘আমরা সফটওয়্যার ও ওয়েবসাইট তৈরি ও বিপণন করি। কিন্তু গত বেশ কিছুদিন ধরে কোনো অর্ডার নেই। এমনকি পাইপলাইনে থাকা অর্ডারগুলোও নিষ্পত্তি হচ্ছে না।’
ইভেন্টটেক নামের প্রতিষ্ঠানটি ই-কমার্সভিত্তিক। বিশেষ করে যশোরের ঐতিহ্য খেজুরের গুড়-পাটালি অনলাইনে বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি সুনাম অর্জন করেছে। এই প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সামনে ভরা মৌসুম। কিন্তু ব্যবসার অবস্থা করুণ।’

যশোর আইটি কোম্পানির ব্যবসা ইন্টারনেট সার্ভিস (আইএসপি) দেওয়া। এর ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের বিজনেস গ্রোথ বন্ধ হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে গ্রাহক কমছে। ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই চিন্তিত।’

এদিকে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ‘টনিস ক্যাফে’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে পার্কের কর্মীরা খাবার গ্রহণ করেন। নানা সামাজিক ও ব্যবসায়িক অনুষ্ঠান আয়োজনেরও ব্যবস্থা আছে এখানে।

কিন্তু বন্ধ হয়ে গেছে টনিস ক্যাফে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক ইসমাইল আল আজম জানান, ‘তাদের ভাড়া বকেয়া পড়েছে। ওই কারণে গেল টেকসিটি বাংলাদেশ লি. (পার্কটি দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান) তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে টনিস ক্যাফেতে।’

তিনি জানান, ‘সাম্প্রতিক তারা ভর্তুকি দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছিলেন। কিন্তু সামাজিক-ব্যবসায়িক অনুষ্ঠান একেবারেই কমে যাওয়ায় এখন আর চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এখানে প্রায় ১০ জনকে ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছেন।’ 

অন্যদিকে টেকসিটির কাছ থেকে বছরখানেক আগে ১২ তলাবিশিষ্ট ডরমেটরিটি চুক্তিতে ইজারা নিয়ে তা ‘হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট’ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘খান প্রোপার্টিস’। তাদেরও ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না বলে জানান এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন সজন। রিসোর্টটির ব্যবসা তলানিতে ঠেকেছে। ব্যবহারযোগ্য ৭৫টি কক্ষের মধ্যে দিনে গড়ে ৪/৫টি বুক হচ্ছে। নাজুক পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতোমধ্যে ২০ জনের বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে মালিক প্রতি মাসে বিপুল টাকা ভর্তুকি দিচ্ছেন। তবে এভাবে আর কতদিন চালানো সম্ভব তা নিয়ে শঙ্কিত রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। 

ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসান কবীর পার্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক অবস্থার চরম অবনতির কথা উল্লেখ করে জানান, এরই মধ্যে বেশকিছু কোম্পানি জনবল কমিয়েছে। কিন্তু দক্ষ কর্মী বিদায় করা সম্ভব না। কারণ প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তির ঘাটতি রয়েছে শুরু থেকেই।

তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলোর ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলের বোঝা বাড়ছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে আরও কোম্পানি ব্যবসা হারিয়ে পার্ক থেকে বিদায় হতে পারে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।

সার্বিক বিষয়ে যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক দেখভাল করা সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাই-টেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরউল্লাহের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিজিএমইএ প্রশাসকের সঙ্গে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪০ পিএম
বিজিএমইএ প্রশাসকের সঙ্গে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
ছবি: সংগৃহীত

বিজিএমইয়ের প্রশাসক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস সেসা।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার ইপিবি কার্যালয়ে আর্জেন্টিনা ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্র অনুসন্ধান এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা করেন তারা ।

তারা বলেন, এ উদ্যোগে উভয় দেশ শক্তি ও সক্ষমতা প্রদর্শনের একটি প্ল্যাটফর্ম পাবে, যেখানে ব্যবসায়ীরা নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন।

তারা বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার ব্যবসায়ীদের সরাসরি যোগাযোগের সুবিধার্থে রোড শো এবং একক দেশের মেলা আয়োজনের আলোচনা করেন।

এ সময় তারা অংশীদারিত্ব জোরদার করার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর জোর দেন এবং উভয় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

পোশাক খাতে পণ্য বৈচিত্র্যকরণের ওপর গুরুত্ব এবং ম্যান-মেইড ফাইবার ব্যবহার করে উচ্চ-মূল্যের পোশাক বিভাগে শিল্পের প্রয়াস সম্পর্কে সেসাকে জানান বিজিএমইএ প্রশাসক।

এ ছাড়া তিনি আর্জেন্টিনায় পোশাক রপ্তানি বাড়াতে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন।

আর্জেন্টিনা থেকে তুলা আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ধরনের অংশীদারিত্ব উভয় দেশেকে পারস্পরিক সুবিধা দিবে।

আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য আর্জেন্টিনা ভ্রমণের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য রাষ্ট্রদূতের সহায়তাও কামনা করেন।

এ ছাড়া পোশাক শিল্পকে টেকসই করতে বিজিএমইএ ও ক্যাসকেল একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানান তারা। সূত্র: ইউএনবি

মেহেদী

ঘুরে দাঁড়াল সূচক

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ এএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৫ পিএম
ঘুরে দাঁড়াল সূচক
প্রতীকী: সংগৃহীত

গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসসহ চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন টানা সূচক পতনের পর গতকাল সোমবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স।

গত দুই দিনের ডিএসইর প্রধান এই সূচক কমেছিল ১২ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট। দুই দিন পতনের পর গতকাল ডিএসইর সূচক বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট।

বাজার এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাভাবিকভাবে পুঁজিবাজারের অবস্থা এমনই হওয়া উচিত। কিন্তু ভিন্নতা আসে যখন ধারাবাহিকভাবে সূচকের পতন আঁকড়ে থাকে। তখন মূলত বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আস্থাহীন হয়ে পড়ে।

তারা বলছেন, গত রবিবার দেশের সার্বিক অর্থনীতির শ্বেতপত্রে পুঁজিবাজারের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, শ্বেতপত্রের মাধ্যমে যারা অভিযুক্ত হয়েছেন তাদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে।

গতকাল পুঁজিবাজারের লেনদেন শেষে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকার ঘরে উঠে এসেছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

কিন্তু শেষ ঘণ্টার লেনদেনে দাম বাড়ার তালিকা থেকে কিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কমে আসে। অবশ্য এরপরও দাম বাড়ার তালিকায় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ২৩৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৮টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৬১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২০১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯১৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫০০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৯৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১০২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ৯ কার্যদিবস পর ডিএসইতে ৫০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।

গতকাল দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় বেড়েছে দশমিক ৫০ পয়সা বা ১০ শতাংশ।

দর বৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়েছে। আর ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো হলো ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং লিমিটেড ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ, এম এল ডাইং ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টস ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, বিডি থাই ফুডের ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

গতকাল লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে ৯৮ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এদিন দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড।

কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। দরপতনের শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ারদর কমেছে আগের দিনের তুলনায় ৩০ পয়সা বা ৮ দশমিক ১০ শতাংশ। আর ৭০ পয়সা বা ৭ দশমিক ২১ শতাংশ দর কমে যাওয়ায় পতনের শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে জায়গা নিয়েছে নিউলাইন ক্লোথিংস লিমিটেড।

দরপতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে লিবরা ইনফিউশনসের ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, মুন্নু অ্যাগ্রোর ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ, জুট স্পিনার্সের ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ, এমারেল্ড অয়েলের ৪ দশমিক ৩৪ ডরিন পাওয়ারের ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল লিমিটেডের শেয়ারদর ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ কমেছে।

ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে: শ্বেতপত্র কমিটি

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ এএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০১ এএম
ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে: শ্বেতপত্র কমিটি
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমাতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আমলে মোট দেশজ উৎপাদন- জিডিপির প্রবৃদ্ধি ক্ষেত্রে যে অর্জন ছিল তা অতিরঞ্জিত বলে মনে করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। পরিসংখ্যানগত দিক থেকে তা ব্যতিক্রমী হলেও তা ছিল এক অলীক বিষয়। ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সমপর্যায়ের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ছিল বেশি। কমিটি মনে করে, রাজনৈতিকভাবে বাহাবা পাওয়ার জন্য জিডিপির হার ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছে যা, বাস্তবতার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। তথ্য-উপাত্ত নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখা হলে বোঝা যায়, এই পরিসংখ্যান ভুল। 

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। কিন্তু অর্থনীতির অন্যান্য সূচকের সঙ্গে প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান মেলে না, এই অভিযোগ অর্থনীতিবিদরা অনেক দিন ধরেই করে আসছেন। ফলে এই উচ্চ হারের প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতির পরিস্থিতি নিরূপণে যে শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করে, সেই কমিটি রবিবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন পেশ করে। সেখানে প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান নিয়ে এসব কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে শ্বেতপত্র কমিটি উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করেছে। তারা বলেছে, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার তৃতীয় পক্ষের স্বাধীন পর্যালোচনা ছাড়াই প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারিভাবে সংগৃহীত পরিসংখ্যানের ভিত্তিতেই কেবল তা করা হয়েছে। শুধু সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে দেখা গেছে, দুঃসময় বা দুর্যোগের সময়ও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ছিল অত্যন্ত চাঙা।

প্রতিবেদনের ভাষ্য, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার নিরূপণের বিভিন্ন মডেল আছে, যেসব মডেলে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের মধ্যে তাত্ত্বিক সম্পর্ক থাকে যেমন- শ্রম, পুঁজি, উৎপাদনশীলতা। কিন্তু এসব প্রথাগত মডেলে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির উচ্চ হার ব্যাখ্যা করা যায় না। ফলে শ্বেতপত্র কমিটি মনে করছে, এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত পক্ষপাত ছিল।

কোভিড-১৯ মহামারির যে সরলরৈখিকভাবে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তথ্য-উপাত্ত ও পদ্ধতিগতভাবে তা ব্যাখ্যা করা যায় না। এই সরলরৈখিক উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণ হিসেবে শ্বেতপত্র কমিটি মনে করে, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্রচারণার স্বার্থে রাজনৈতিক কর্তা ব্যক্তিরা প্রবৃদ্ধির গতি বাড়িয়ে দেখিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে যে রাজনৈতিক কর্তা সবচেয়ে উৎসাহী ও প্রভাবশীল ছিলেন, তার প্রস্থানের পরও পরিসংখ্যান ব্যুরোর মধ্যে সেই রেশ থেকে গিয়েছিল। ওপর মহলের ক্রোধের ভয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরো ধারাবাহিকভাবে ভুল পরিসংখ্যান প্রকাশ করে গেছে। 

টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে বিবিএসের তথ্য-উপাত্তের যে পর্যালোচনা হতো, ২০১৫ সালের পর তা একেবারে ভেঙে পড়ে।

শ্বেতপত্র কমিটি দেখিয়েছে, আন্তর্জাতিক প্যানেল ডেটা ব্যবহার করে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ মহামারির চার পাঁচ বছর আগেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে গিয়েছিল। কমটি শুধু গত ১৬ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ১৯৯৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করেছে। এতে দেখা গেছে, এই সময় প্রকৃত প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে আনুষ্ঠানিক প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম ছিল। এই প্রবণতা উত্তরোত্তর কেবল বেড়েছে। অর্থাৎ এই বাড়িয়ে দেখানোর প্রবণতা ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।

প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান নিয়ে বিশ্বব্যাংকও সময়-সময় আপত্তি তুলেছে। বিবিএসের প্রকাশিত তথ্যের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির তথ্যগত পার্থক্য ক্রমাগত বেড়েছে। ২০১৮ সালে প্রবৃদ্ধির তথ্যে বিস্তর ফারাক নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান তৎকালীন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। যদিও লোটাস কামাল ওই বছরের এপ্রিলে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হবে বলে দাবি করেন। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস ছিল, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে বড়জোর ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এডিবির পক্ষ থেকেও সরকারের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করা হয়।

২০২২ সালে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘কান্ট্রি ইকোনমিক মেমোরেন্ডাম-চেঞ্জ অব ফ্যাব্রিক’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে পার্থক্য বাড়তে থাকে। তবে ২০১৫-১৯ সময়ের মধ্যে প্রবৃদ্ধির এ পার্থক্য ৩ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হয়, যা কোনোভাবেই ব্যাখ্যা করা যায় না।

দেখা যায়, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও কর-জিডিপির অনুপাত বাড়েনি। সেই সঙ্গে প্রবৃদ্ধি বেশি হলে বিনিয়োগ ও রাজস্ব আয় যেমন ভালো হয়, তেমনি কর্মসংস্থানেও গতি থাকে। কিন্তু প্রবৃদ্ধির হারের সঙ্গে এসব সূচকের মিল ছিল না।

জমার সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়াল

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ এএম
জমার সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়াল
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। একই সঙ্গে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের জন্য রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা ১৩ লাখ অতিক্রম করেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কাগজপত্র দাখিল করতে হয় না। আর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ ও সাবলীল করতে করদাতাদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নেওয়া হচ্ছে। সেগুলো বাস্তবায়নের ফলে অনলাইন রিটার্ন দাখিল প্লাটফর্মটি করদাতাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

এনবিআরের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা সহজে ও দ্রুততার সঙ্গে ২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করে রিটার্নের কপি, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, আয়কর সনদ, টিআইএন সনদ ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারছেন। একই সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কার্ড পেমেন্ট ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে করদাতারা কর পরিশোধ ও কর সমন্বয়ের সুবিধা পাচ্ছেন।

গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন দাখিলের জন্য অনলাইনব্যবস্থা চালু করে এনবিআর। এ বিষয়ে এনবিআরের স্লোগান হচ্ছে, ‘না দাঁড়িয়ে লাইনে, রিটার্ন দিন অনলাইনে’।

অনলাইনে রিটার্ন জমায় করদাতাদের প্রবল আগ্রহ দেখে এনবিআর আশা করছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অনলাইনে অন্তত ১৫ লাখ রিটার্ন জমা পড়বে।

দুই বছরে অগ্রগতি ৪০ শতাংশ

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১০ এএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৪ পিএম
দুই বছরে অগ্রগতি ৪০ শতাংশ
দুই বছরেও সম্পন্ন হয়নি হজরত শাহ মখদুম দরগাহ শরিফের দৃষ্টিনন্দনের কাজ। ছবি : খবরের কাগজ

দুই বছরেও সম্পন্ন হয়নি হজরত শাহ মখদুম দরগাহ শরিফের দৃষ্টিনন্দনের কাজ। তিন বছরে অর্ধেকের কম বাস্তবায়ন হয়েছে। তাই ছোট এই প্রকল্পটিও সংশোধন করতে হয়েছে। এবার সময় বাড়ানো হয়েছে দুই বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে সম্পন্ন হবে। 

রাজশাহী সিটি করপোরেশন থেকে সংশোধনের প্রস্তাব করা হলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ প্রকল্পটি অনুমোদন করেছেন। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে এটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন। এতে খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। সংশ্লিস্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

কাজের ধীর গতির ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (উন্নয়ন) নিলুফার ইয়াসমিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রধান গেটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণের কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি কম হয়েছে। সেটা নির্মাণ হয়েছে। মুসল্লিরা নামাজ পড়তে পারছেন। প্রথমে পিডি হিসেবে অন্য জন দায়িত্বে ছিলেন। পরে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। নতুন মসজিদ ও মাজার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সব সমস্যার সমাধান হয়েছে। প্রকল্পটি সংশোধন করে সময় বাড়ানো হয়েছে। 

গত অক্টোবর পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৪০ শতাংশ। আশা করি, এবার নির্ধারিত সময়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে পুরো কাজ শেষ হবে।’ 

রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও যুগ্ম সচিব ড. এ বি এম শরীফ উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘মসজিদের জায়গাসহ অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। মসজিদ ভাঙতে হলে মুসল্লিদের জন্য বিকল্প মসজিদ করতে হবে। তাই সময় বাড়ানো হচ্ছে। আশা করি, বর্ধিত সময় ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে সব কাজ শেষ হবে।’ ছোট কাজেও বড় দেরি- এমন প্রশ্নের জবাবে এই যুগ্ম সচিব বলেন, ‘অর্থায়ন হচ্ছে বড় ব্যাপারে। বিগত সরকারের সময়ে হয়তো ঠিকভাবে অর্থ বরাদ্দ পায়নি। এ জন্য দেরি হয়েছে। এবার পরিকল্পনা উপদেষ্টা সময় বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে পুরো কাজ হবে।’       

এ ব্যাপারে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে সময় বাড়ানো একটা রেওয়াজ হয়ে গেছে। তার পরও কাজ শেষ হয় না। সেই কালচার থেকে বের হতে হবে। কারণ দেখা যায়, সময় বাড়িয়ে টাকা খরচের মাধ্যমে অনিয়ম গড়ে ওঠে। নজরদারি কমে যায়। আবার যে টাকা খরচ করা হয় এটা জনগণের করের টাকা। তাতে স্বচ্ছতা আনতে হবে। আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে নতুন সরকার এসেছে। সেই ধারা থেকে বের হতে হবে। খরচের ব্যাপারে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সময়ের কাজ সময়ের মধ্যে হয়।’    

পরিকল্পনা কমিশন ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, হজরত শাহ মখদুম (রা.)-এর পুণ্যভূমিখ্যাত অঞ্চল রাজশাহী। এই অঞ্চলে ইসলাম প্রচারে এই সুফি সাধকের অবদান সর্বজনস্বীকৃত। তার মাজার শরিফে দেশ-বিদেশের অনেক সুফি-সাধকসহ দশনার্থীর আগমন ঘটে। তাই ইতিহাস-ঐতিহ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এবং হজরত শাহ মখদুম (রা.) এর দরগা শরিফের অবকাঠামো উন্নয়ন তথা দৃষ্টিনন্দন করতে উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পটির অনুমোদন দেন। প্রমত্তা পদ্মার তীরে রাজশাহী কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে অবস্থিত এই মাজারের উন্নয়নে ২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়। যাতে দর্শনীয় স্থান নতুন রূপ পায়। বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ দুই বছর। 

প্রকল্পের আওতায় মসজিদ ও মাজার কমপ্লেক্স নির্মাণে স্থাপত্য নকশা ও প্রকৌশল নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণ তদারকিতে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়। এতে খরচ ধরা হয় ৪২ লাখ টাকা। প্রকল্পের প্রধান কাজ ধরা হয় ৪৬০ বর্গমিটারের চার তলা মাজার কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ। তাতে খরচ ধরা হয় ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ২ হাজার ৬০০ বর্গমিটারের চার তলা মিনারসহ মসজিদ নির্মাণ, ৪৫৫ বর্গমিটারের মাজার নির্মাণ, ৩৪৭ মিটারের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, প্রায় ৯৪ বর্গমিটারের প্রবেশ গেট নির্মাণ ও ৩ হাজার ১৮ বর্গমিটারের ল্যান্ড স্কেপিং করা হবে। এসব কাজের ফলে স্থাপত্য নকশায় নান্দনিক রূপ পাবে মসজিদ ও মাজার কমপ্লেক্সটি।

প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে- রাজশাহী মহানগরীর প্রত্নতত্ব সংরক্ষণের মাধ্যমে ইতিহাস ও ঐতিহ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং ধর্মযাজক হজরত শাহ মখদম (রা.) দরগা শরিফের অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে ভক্ত আশেকান ও মুসল্লিদের নামাজ আদায়সহ অন্যান্য এবাদত নির্বিঘ্নে পালনের সুবিধা নিশ্চিত করা।     

প্রকল্পটি ছোট হলেও অন্যান্য প্রকল্পের মতোই দুই বছরে শেষ করতে পারেনি। ফলে সংশোধন করার জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। তাতে বিভিন্ন অঙ্গের সমন্বয় করে খরচ কমানো হয়েছে ৫ লাখ টাকা অর্থাৎ ২৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ধরা হয়। এবং সময় বাড়ানো হয়েছে দুই বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে সম্পন্ন করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। গত ১১ নভেম্বর পরিকল্পনা উপদেষ্টা সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন।