ঢাকা ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প: অনিয়ম খুঁজে পাননি আইএমইডি সচিব!

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৪৫ পিএম
আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৪ পিএম
পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প: অনিয়ম খুঁজে পাননি আইএমইডি সচিব!
পায়রা বন্দর

২০১৫ সালে শুরু করে পাঁচবার সংশোধন করা হয়েছে। তার পরও গত জুনে ৯ বছরে শেষ হয়নি পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি। বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ শতাংশ। ৭ শতাংশ কাজ করতে এবার সময় বাড়ানো হয়েছে দুই বছর।

প্রকল্পটি ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা দেখতে পরিদর্শন করেন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন। কিন্তু কোনো অনিয়ম খুঁজে পাননি। তবে প্রকল্পের সব কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করার জন্য মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে বলে সুপারিশ করেছেন। প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে আইএমইডি সচিব খবরের কাগজকে বলেন, ‘ইতোপূর্বে অন্য অফিসাররা প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছেন। সর্বশেষ আমি জুলাই মাসে সেখানে মনিটরিংয়ে গিয়েছিলাম। প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিআইসি) ও প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটি (পিএসসি) সভা করার সুপারিশ করা হয়েছে। নিয়মিতভাবে এই দুই মিটিং করা হলে প্রকল্প সঠিকভাবে শেষ হবে। কারণ এসব মিটিংয়ে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা থাকেন। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, সরকার ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা খরচ করার জন্য ‘পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটি প্রথমে তিন বছরের জন্য অর্থাৎ ২০১৮ সালের জুনে শেষ করার জন্য সময় বেঁধে দেয়। নির্ধারিত তিন বছর পর আরও ছয় বছর বাড়িয়ে গত জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। তার পরও হয়নি পুরো কাজ। ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনকাজ বাকি থাকায় সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলে সম্প্রতি দুই বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুনে শেষ করার জন্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। 

ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পটির অর্থ ও কাজ সঠিকভাবে খরচ হচ্ছে কি না তা বিভিন্ন সময়ে মনিটরিং করছে আইএমইডি। সর্বশেষ গত জুলাইয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন প্রকল্পটি মনিটরিং করেন।

সার্বিক ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন মনিরুজ্জামান সম্প্রতি খবরের কাগজকে বলেন, ‘অনেকে বলছেন, এত সময় লাগছে কেন? কিন্তু বুঝতে হবে, এখানে বিভিন্ন ব্যাপার জড়িত। তার পরও গত জুন পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ শতাংশ। বাকি কাজের মধ্যে প্রায় ৮০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ বাকি রয়েছে। তা বাস্তবায়ন করতেই সময় বাড়ানো হচ্ছে।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডির প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, পায়রা বন্দরের ন্যূনতম অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সীমিত আকারে বন্দরের কার্যক্রম চালুকরণ এবং একটি পূর্ণাঙ্গ বন্দর গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণে সরকার প্রথমে তিন বছরের জন্য অনুমোদন দেয়। কিন্তু ওই সময়ে কাজের কাজ কিছু হয়নি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে সংশোধন প্রস্তাব করা হলে সরকার ২০১৮ সালের ২০ মার্চ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। তাতে খরচ ধরা হয় ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এক লাফে খরচ বাড়ে ১৯৭ শতাংশ। সময়ও বাড়ানো হয় দুই বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। গুরুত্ব বুঝে এটিকে ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা হয়। সময় ও অর্থ খরচ বাড়লেও কাজের অগ্রগতি ভালো হয়নি। তাই দ্বিতীয়বারের মতো ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর আবারও সংশোধন করা হয়। তখন খরচ ধরা হয় ৪ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। খরচ বেড়েছে ২৮৭ শতাংশ। দুই বছর করে দুবার এবং এক বছর করে দুবার মোট ছয় বছর সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুনে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। তাও পুরো কাজ শেষ হয়নি।

প্রকল্পের প্রধান কাজ ধরা হয় ৬ হাজার ৫৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ। এই ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত আনুমানিক ৩ হাজার ৫০০ পরিবারের পুনর্বাসন ও ৪ হাজার ২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। জাতীয় মহাসড়ক এন-৮-এর সঙ্গে পায়রা বন্দরের যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এবং আউটার বার ও নদীপথে চিহ্নিত বারগুলোর প্রয়োজনীয় ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নৌপথে মালামাল ও কন্টেইনার পরিবহন নিশ্চিত করা। 
ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হওয়ায় আইএমইডি থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রকল্পটি মনিটরিং করা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে ৬ হাজার ৫৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ ধরা হলেও হয়েছে ৫ হাজার ৩৩২ একর। এখনো ৯৪২ একর ভূমি অধিগ্রহণ বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন। আর ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৪টি প্যাকেজের আওতায় ৩ হাজার ৪২৩টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ২ হাজার ৬২৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে বিভিন্ন আকারের বাড়ি বরাদ্দ দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আরও প্রায় ২০৮টি বাড়ি নির্মাণ করা প্রয়োজন। ১১৯টি বাড়ি নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। গত জুন পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ শতাংশ। সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে হবে ২০২৬ সালের জুনে।

প্রতিবেদনে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন উল্লেখ করেছেন, অডিটসংক্রান্ত পর্যবেক্ষণে শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি অডিট আপত্তি হয়েছে। এর মধ্যে আটটির নিষ্পত্তি হয়েছে। তিনটি অডিট আপত্তির নিষ্পত্তির কার্যক্রম চলমান, আরও তিনটি অডিট নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশে বলা হয়েছে, পুনর্বাসনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের উদ্দেশ্যে নির্মিত বাড়িগুলো প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। প্রকল্পের সব কার্যক্রম যথাসময়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। নিয়মিত পিআইসি ও পিএসসি সভা করতে হবে। বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করতে কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি তিন মাস পরপর আইএমইডিকে অবহিত করতে হবে।

ক্রেডিট কার্ডে সুদহার বাড়ল

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পিএম
ক্রেডিট কার্ডে সুদহার বাড়ল
ক্রেডিট কার্ডে সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ক্রেডিট কার্ডে অর্থ ব্যবহারে গ্রাহকের ব্যয় অর্থাৎ সুদহার বিদ্যমান ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন এই সুদহার আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। 

রবিবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ব্যাংকগুলোকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুষ্ঠু ঋণঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ এবং নীতি সুদহার ও ব্যাংকগুলোর ক্রমবর্ধমান তহবিল ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার লক্ষ্যে ক্রেডিট কার্ডের ওপর সুদহার সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। ব্যাংকগুলো ঋণের চাহিদা ও ঋণযোগ্য তহবিলের জোগান সাপেক্ষে এ সীমার মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের সুদহার নির্ধারণ করবে। ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ডে তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও এ নির্দেশনা অনুসরণ করে মুনাফার হার নির্ধারণ করবে। ক্রেডিট কার্ডের সুদহারের ক্ষেত্রে আগের প্রজ্ঞাপনে দেওয়া অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে। নতুন এ নির্দেশনা ২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সবগুলো ব্যাংকের ইস্যু করা সক্রিয় ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ২৫ লাখ ৪৪ হাজার ৭৭৪টি। সেপ্টেম্বর মাসে ওই সব কার্ডে লেনদেন হয়েছে ৫০ লাখ। এসব লেনদেনের সম্মিলিত আর্থিক পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।

বাজার মূলধন বেড়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২২ এএম
বাজার মূলধন বেড়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা
সংগৃহীত

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে বাজার মূলধন প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। তবে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। যদিও গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এর পরও সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে বাজার মূলধন বেড়েছে। 

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে মাত্র এক কার্যদিবসে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। ওই এক দিনের দর বৃদ্ধির কারণে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, পাশাপাশি বেড়েছে বাজার মূলধন। 
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২১৩টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৬টির। আর ৫১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৬২ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বা দশমিক ২৫ শতাংশ।
দাম বাড়ার তালিকায় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান থাকলেও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে কমেছে ৪ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ১৫৭ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি কমে ৬৭ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
তবে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে বেড়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। 
আগের সপ্তাহের সূচকটি কমে ৩৭ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৬৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৮৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক ১৪ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসই লেনদেন কোম্পানির মধ্যে ২১৩টির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। এর মধ্যে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
গত সপ্তাহে এমারেল্ড অয়েলের শেয়ারদর আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৩১ টাকা ৪০ পয়সায়।
দর বৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের শেয়ারদর বেড়েছে ২১ দশমিক ২১ শতাংশ। আর ১৯ দশমিক ২৬ শতাংশ শেয়ারদর বাড়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান করেছে এইচআর টেক্সটাইল।

সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে ডরিন পাওয়ার, বিআইএফসি, জেনেক্স ইনফোসিস, এনআরবি ব্যাংক, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, মেট্রো স্পিনিং এবং সাফকো স্পিনিং মিলস লিমিটেড।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১২৬টির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শেয়ারদর পতন হয়েছে নিউলাইন ক্লোথিং লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানির দর কমেছে ২৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ৯ টাকা ৭০ পয়সা।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফিনিক্স ফাইন্যান্সের শেয়ারদর কমেছে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। শেয়ারটির দর দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা।

তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা এনার্জিপ্যাক পাওয়ারের শেয়ারদর কমেছে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ১২ টাকা ৮০ পয়সা।
তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ন্যাশনাল ফিড মিল, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার টেক্সটাইল, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং নিটল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল এনআরবি ব্যাংক পিএলসি। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির গড়ে ১৫ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তাতে লেনদেনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ১২ শতাংশ অবদান এনআরবি ব্যাংকের।

লেনদেন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের সপ্তাহজুড়ে গড়ে ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে আসা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের বিদায়ী সপ্তাহে শেয়ার হাতবদল হয়েছে গড়ে ১০ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

এ ছাড়া প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে অগ্নি সিস্টেমস, মিডল্যান্ড ব্যাংক, জেনেক্স ইনফোসিস, ইস্টার্ন ব্যাংক, বিচ হ্যাচারি, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ফাইন ফুডস লিমিটেড।

গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আগের সপ্তাহের তুলনায় সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১ দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে। জানা গেছে, গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা ৯ দশমিক ৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও শূন্য দশমিক ১২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে।

বছরে এলএনজি আমদানি হয় ৬ হাজার কোটি টাকার

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০১ এএম
বছরে এলএনজি আমদানি হয় ৬ হাজার কোটি টাকার
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে এখন বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানি করা হয় বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

শনিবার  (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) আয়োজিত নবায়নযোগ্যে দ্রুত রূপান্তর: দেশীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

আলোচনা সভায় ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম, সিপিডির রিচার্স ডিরেক্টর খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সেন্টার ফর এনভারমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিচার্সের (সিইপিআর) চেয়ারপারসন গৌরঙ্গ নন্দীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা বলেন, এলএনজি আমদানি আর কত বাড়াব? আমাদের একটা বাধ্যবাধকতা হয়েছে যে আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যেতে হবে। এটাতে যাওয়া ছাড়া আমাদের সামনে বিকল্প কিছু নেই। আমরা বলে থাকি ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আনব, কিন্তু প্রকৃতভাবে এটা যদি বাস্তবায়ন করা যায় দেখা যাবে আমাদের অর্জন ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের এনার্জি সমস্যা হচ্ছে প্রাইমারি এনার্জি সমস্যা। বিদ্যুৎ না থাকলে গ্রাহক বিদ্যুৎ চাইতে পারবে, কারণ এটা দৃশ্যমান। কিন্তু একটা শিল্প কারখানা যখন গ্যাস পায় না তখনতো এটা দেখা যায় না, তখন তার প্রডাকশন যে পতন হবে সেটা দেখা যায় না। আমাদের এখন দৈনিক দরকার হচ্ছে ৪ হাজার এমএমসিএফডি গ্যাস। এখন আমাদের দেশীয় উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে আছে ৩ হাজারের কাছাকাছি। এক হাজার এমএমসিএফডি ঘাটতি আছে। এটা ক্রমাগত বাড়ছে, কারণ আমাদের উৎপাদন কমছে। আমরা চেষ্টা করছি নতুন কূপ খনন করে আরও কিছু গ্যাস পাওয়া যায় কি না।

তিনি বলেন, সরকারি ক্রয় উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এখন উপদেষ্টা বা সচিবকে চিনতে হবে না। দক্ষতা, আর্থিক সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতা থাকলে অফিসে বসেই ব্যবসা করা যাবে। কাউকে চেনা জানার দরকার নেই। অর্থনৈতিক শৃঙ্খল মুক্ত করে জনগণের অধিকার জনগণকে ফেরত দিয়ে দিতে চাই।
সরকারি অনেক অব্যবহৃত জমি আছে সেগুলো ব্যবহার করলে নবায়নযোগ্য শক্তির চাহিদা মেটানো সম্ভব। সড়ক, রেলসহ সরকারের অনেক জমি রয়েছে এগুলো কীভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন প্রসারে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

উপদেষ্টা বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আমাদের টার্গেট ১০ শতাংশ, কিন্তু অর্জন ২ শতাংশের মতো। এমন হওয়ার কারণ আগের সরকার এটা নিয়ে কথা বলেছে কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার হোক সেটা চায়নি। আন্তরিকভাবে চাইলে হতো।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে অর্থায়ন সমস্যা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ব্যাংকাররা ঋণের ডিসিশন নেয় ডিনার বা লাঞ্চ করতে যেয়ে। এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির যারা উদ্যোক্তা তারা তো এত সফিস্টিকেটেড না। তাদের সঙ্গে তো লাঞ্চ-ডিনারে যাওয়া যায় না। আরেকটা বিষয় হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারের জন্য যে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দরকার সেটি আমাদের নেই।

উপদেষ্টা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটা সোলার সিস্টেম লাগানো হয়েছিল। এটাতে প্রায় কোটি টাকার বেশি খরচ হয়। কিন্তু এটা কোনো কাজ করেনি, শুধু একটা বাতি আর ফ্যান চলত। এ জন্য আমাদের প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে।

আলোচনা সভায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারের জন্য আমদানি করা জিনিসপত্রের ওপর কর কমানোর সুপারিশ জানানো হয়।

এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ক্যাবল বাহির থেকে আনতে হবে কেন? দেশেই তো ক্যাবল ফ্যাক্টরি আছে। সোলার স্ট্রাকচার দেশেই তৈরি করা যায়। সব কিছুতেই কেন আমাদের রেয়াতি শুল্ক চাইতে হবে। এখন সব কিছুতেই যদি রেয়াতি শুল্ক হয় তা হলে সরকারের কর্মচারীদের বেতন কীভাবে হবে!
সরকারের অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম কীভাবে হবে। এ জন্য আমাদের প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। তবে এই খাতে ৫ শতাংশের একটা এডভানসড ভ্যাট আছে সেটি আমরা তুলে দিতে বলেছি।

শুল্ক কমেছে, খেজুরের দাম কমবে তো

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
শুল্ক কমেছে, খেজুরের দাম কমবে তো
সংগৃহীত

‘মরিয়ম খেজুর। এক দাম ১৩০০ টাকা কেজি। এর চেয়ে কম দাম হবে না। তবে সরকার আগামী রমজান উপলক্ষে খেজুরের শুল্ক কমিয়েছে। দাম কিছুটা কমতে পারে। তার জন্য কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। নতুন খেজুর এলে কম দামের খেজুর মিলবে।’ এভাবেই দামের ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের খেজুর বিক্রেতা অমিত হাসান অভিমত ব্যক্ত করেন। অন্য বাজারের বিক্রেতাদেরও একই বক্তব্য। সরকার শুল্ক কমিয়েছে। তাই গত বছরের তুলনায় আগামী রমজানে কিছুটা কমতে পারে দাম। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাজারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। 

বিলাসী পণ্য হিসেবে গণ্য করে গত অর্থবছরে সরকার খেজুর আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করে। এর ফলে দাম অনেক বেড়ে যায়। ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকার খেজুর ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। এ নিয়ে দেশে হইচই পড়ে যায়। আমদানি অনেক কমে যায়। 

আসন্ন রমজানে ভোক্তা যাতে সাশ্রয়ী দামে খেজুর খেতে পারে, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গত ২১ নভেম্বর খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে। পাশাপাশি রোজার ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ এই পণ্যটির অগ্রিম কর পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে। সরকারে নির্দেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। 

এনবিআর জানিয়েছে, খেজুর একটি আমদানিনির্ভর ফল। যা সব শ্রেণির মানুষের ইফতারের অপরিহার্য উপাদান। পবিত্র রমজান মাসে খেজুরকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য আমদানির ওপর বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ এবং বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে অর্থাৎ মোট করভার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে কেজিতে ৬০ থেকে ১০০ টাকা কমতে পারে। এতে খেজুরের সরবরাহ বাড়বে। মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে বলে এনবিআর মনে করে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার উচ্চ শুল্ক আরোপ করায় গত রমজানে ব্যাপক বেড়ে যায় খেজুরের দাম। ফলে সাধারণ ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চয়ে যায়। কারওয়ান বাজারের খেজুর বিক্রেতা বিক্রমপুর ফল বিতানের বিক্রয়কর্মী অমিত হাসান খবরের কাগজকে বলেন, গত রমজানে অনেক বেশি ছিল খেজুরের দাম। সে তুলনায় এবার কেজিতে ২০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বর্তমানে মরিয়ম খেজুর ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা কেজি, আজুয়া ১০৫০ টাকা, তিউনেশিয়া, বরই ও দাবাস খেজুর ৫০০-৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে একেবারে কম দামের হচ্ছে জাহিদি খেজুর ১৮০-২৮০ টাকা কেজি। এটা খুব বিক্রি হয় না। কারণ নিম্ন আয়ের মানুষ রমজান ছাড়া অন্য সময়ে খেজুর খায় না। 

দামের ব্যাপারে একই তথ্য জানান, এই বাজারের আল্লাহর দান ফল বিতানের স্বত্বাধিকারী পারভেজ হোসেন। তিনি বলেন, গত রমজানের পর থেকে কেজিতে ২০০-৪০০ টাকা কমেছে দাম। সরকার শুল্ক কমিয়েছে। আমদানি হলে আরও দাম কমবে। এটা আশা করা যায়। কম দরের ৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজির খেজুর রয়েছে। জাহিদি ছাড়া ৫০০ টাকার কমে কোনো খেজুর বাজারে নেই। জাহিদি খেজুর কম বিক্রি হয়। কারণ যারা কম আয় করেন, তারা রমজান ছাড়া এটা খায় না। 

এদিকে টাউন হল বাজার, হাতিরপুল, মিরপুরসহ বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে একই চিত্র। ৫০০ টাকার কমে কোনো খেজুর মেলে না। জাহিদি খেজুর কোথাও পাওয়া গেলে বিক্রি কম বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা। তারা আরও বলেন, গত রমজান থেকে দাম বেশি। তাই অন্য বছরের চেয়ে বিক্রিও কমে গেছে।         

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই থেকে জানানো হয়েছে, বছরে খেজুরের বার্ষিক চাহিদা ৯০ হাজার টন থেকে ১ লাখ টন। এর মধ্যে রমজান মাসে লাগে ৫০ হাজার টন। অন্যান্য মাসে ৬ হাজার টন করে লাগে।

এসব খেজুর ইরাক, ইরান, তিউনেশিয়া, আলজেরিয়া, সৌদি আরব, আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে সস্তা খেজুর আনা হয় ইরাক থেকে। আর দামি খেজুর সৌদি আরব থেকে। সবচেয়ে ভালো কোয়ালিটি খেজুর হচ্ছে মরিয়ম ও আজুয়া। এ জন্য দামও বেশি। 

সরকার  ইফতারির প্রথম এই আইটেম বিলাসী পণ্য হিসেবে বাজারে ঘোষণা দিয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করে। এ জন্য গত রমজানের আগেই বেড়ে যায় অনেক দাম। এ নিয়ে হইচই পড়ায় অন্তর্বর্তী সরকার আলু, পেঁয়াজ, চালের পর খেজুরেও শুল্ক কমিয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, উচ্চ শুল্ক আরোপ ও ডলার সংকটের কারণে এটি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। অনেকেই আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। রমজান মাসে খেজুরের যে চাহিদা তার অর্ধেকও গত বছরে এলসি খোলা হয়নি। সম্প্রতি সরকার শুল্ক কমিয়েছে। এটা খুব বেশি না। তবে কমাতে  কিছুটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে। 

আমদানিকারকরা বলেছেন, গত বারের বাজেটে খেজুরকে বিলাসবহুল আইটেম হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এর ফলে প্রতি কেজি খেজুরে সবমিলে প্রায় ৬৫ শতাংশ বাড়তি কর দিতে হচ্ছে। অর্থাৎ অন্যান্য বছরে যে খুজর ১০০ টাকায় পাওয়া যেত সেটা কিনতে ১৬৫ টাকা লাগছে। এই বাড়তি শুল্কের প্রভাবে কার্টুনে ১০০০-১২০০ টাকা বেড়ে গেছে। গত অর্থবছরে হঠাৎ করে সিডি, ভ্যাট, আরডি, এআইটি, এটি মিলে প্রায় ৬৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া আগে প্রতি কার্টুনে (১০০০ কেজি) ১ হাজার ডলার অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু দিতে হলেও বর্তমানে ২ হাজার ৫০০-৪ হাজার ডলার দিতে হচ্ছে। এসব কারণে আগে যেখানে এক কেজি প্যাকেট খেজুরে ১০ টাকা দিতে হতো বর্তমানে লাগছে ১৭৬ টাকা। আর প্রতি কেজি বস্তা খেজুরে আগে ৫ টাকা দিতে হলেও বর্তমানে ৭০ টাকা দিতে হচ্ছে। এভাবে উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণে অনেকেই খেজুর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে খুচরা বাজারে বেড়েছে দাম।

অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসছে: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ এএম
অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসছে: অর্থ উপদেষ্টা
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ক্ষয় হয়ে যেতে শুরু করা দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে। বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বিদেশি সহযোগী সংস্থাগুলো খুবই ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ভবিষ্যতে কেউ আর অর্থ পাচার করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বিগত সরকারের রেখে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি ২-৪ মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়।

বেসরকারি খাতে ঋণের বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পলিসি রেট আপাতত বাড়ানো হচ্ছে না। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ যেন না কমে সেদিকে নজর দিচ্ছে সরকার।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়কারী এবং আইনপ্রণেতা আলাদা করা হবে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে গার্মেন্টসশিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।

বাণিজ্য সম্মেলনে সূচনা বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এখনো পুরোপুরি হয়নি। তা ছাড়া জ্বালানি সমস্যা লেগেই রয়েছে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে শিল্পকারখানায়। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়া কঠিন হবে।

এ বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা চেষ্টা করছি। আপনারা হতাশ হবেন না। গত ১৫ বছর ধরে যা হয়েছে তা অকল্পনীয়। যে ক্ষত হয়েছে সেটা প্যারাসিটামল দিয়ে সারবে না। কিছু হার্ড ডিসিশন নিতে হবে।

সম্মেলনে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে বাংলাদেশের আদৌ যাওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, চ্যালেঞ্জগুলো আমরা নিতে পারব কি না, তা এখনই ভেবে দেখা দরকার।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। মূল্যস্ফীতি এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মনিটারি পলিসিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

প্রতিটি খাত দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ব্যবসা চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে হবে। ব্যাংক খাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। জ্বালানি সরবরাহ বাড়াতে হবে।