ঢাকা ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, রোববার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সব কর অঞ্চলে চলছে মিনি মেলা

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ এএম
সব কর অঞ্চলে চলছে মিনি মেলা

জাতীয়ভাবে আয়কর মেলার আয়োজন করা হবে না। তার পরিবর্তে কর অঞ্চলগুলোতে চলছে মিনি কর মেলা। এখানে মেলার মতোই সেবা দেওয়া হচ্ছে। অনেক কর অঞ্চলে অফিস কক্ষের বাইরে বসানো হয়েছে সারি সারি ডেস্ক। সাজানো হয়েছে প্ল্যাকার্ড, ব্যানারসহ কর দিতে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ফটো। 

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, আয়কর মেলা না হলেও প্রতিটি কর অঞ্চলেই বিশেষ আয়োজনে মেলার মতো করেই কর দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে কর দিতে আসছেন। 

২০১০ সালে প্রথমবারের মতো ঢাকা ও চট্টগ্রামে আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি বিভাগীয় শহর, জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়েও কর মেলা অনুষ্ঠিত হতো। এসব মেলায় করদাতাদের ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে রিটার্ন জমা দিতে দেখা গেছে।

এবারও আয়কর মেলা হবে না। ফলে সাধারণ করদাতাদের কর মেলায় যাওয়ার ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে না। যদিও তাদের অনেকেই নভেম্বর মাস এলেই কর মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কারণ কর মেলায় গিয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দিলে তাদের কর কর্মকর্তারা হয়রানি করেন না। করোনা শুরু হওয়ার পর। অর্থাৎ ২০২০ সাল থেকে আর কর মেলা হয়নি। এবার অবশ্য প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ক্ষমতায় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। তারা কর মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে 

এবার ঘরে বসে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়াকেই বেশি উৎসাহ দিচ্ছে। 

আয়কর তথ্য সেবা মাস হিসেবে আয়কর মেলার পরিবর্তে অফিসে অফিসে চলছে মিনি কর মেলা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উদ্যোগে নভেম্বরজুড়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ৪১টি কর অঞ্চলের ৮৬৯টি সার্কেলে অফিস চলাকালীন নিরবচ্ছিন্নভাবে পাওয়া যাবে করসেবা। চলবে ৩০ তারিখ পর্যন্ত।

প্রতিটি কর অঞ্চলে করদাতাদের জন্য সেবাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। সেখানে রিটার্ন জমার পাশাপাশি রিটার্ন ফরম পূরণে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রিটার্ন জমার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্ন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্রও পাবেন করদাতারা।

কর অঞ্চলগুলোতে যেসব সেবা পাওয়া যাচ্ছে- প্রতিটি অফিসে উন্মুক্ত স্থান বা কার পার্কিং এরিয়ায় রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে রিটার্ন গ্রহণ করা হচ্ছে। অনলাইনে কীভাবে রিটার্ন দাখিল করা যায়, সে বিষয়টি হাতে-কলমে দেখিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করলে কর সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য অফিস যেতে হবে না। সব কর কমিশনার সেবাকেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। কর অঞ্চল-৪ এবং কর 

অঞ্চল-১৬ ব্যবস্থাপনায় সচিবালয়ের সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য বাংলাদেশ সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন রিটার্ন দাখিল সুবিধা ও হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে ৩-১৮ নভেম্বর পর্যন্ত কর তথ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে।

কর অঞ্চল-১১-এর ব্যবস্থাপনায় ১৮-১৯ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর সেবা দেওয়া ----

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, অনেক কর--- রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিভাগীয় কমিশনার অফিসের সামনে ১২ তলা ভবনে অবস্থিত কর অঞ্চল-১-এর অফিস। এখানে রিটার্ন দাখিল, অনলাইনে রিটার্ন দাখিল, ইটিআইএন, ডিজিটাল চালানসহ বিভিন্ন সেবা দিতে মোট ৬টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। কর অঞ্চল-১-এর আওতায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭১৬ ব্যক্তি ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছিলেন ৩ হাজার ৭৭৬ জন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২ হাজারের কিছু বেশি ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে কর অঞ্চল-১-এর কমিশনার মো. লুৎফুল আজীম সাংবাদিকদের বলেন, হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়া হচ্ছে। অনেক করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করছে। এতে সময় ও হয়রানির অভিযোগ কমে যাবে। অহেতুক অডিট থেকে মুক্তি পাবে করদাতারা।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পুরোনো এনবিআর প্রধান কার্যালয়ের ভবনে কর অঞ্চল-৪ অফিসেও চলছে মিনি কর মেলা। এখানে রিটার্ন দাখিল, অনলাইনে রিটার্ন দাখিল, ইটিআইএন, ডিজিটাল চালানসহ বিভিন্ন সেবা দিতে মোট ১৭টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এখানে প্রায় দেড় লাখের বেশি ব্যক্তি ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ১ লাখ ব্যক্তি নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। মোট ২২ কর সার্কেল রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত মিনি মেলায় প্রায় ৩ হাজার 

ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ও প্রায় ৮ হাজার অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন।

এনবিআর জানায়, ২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিল ও কর পরিশোধ পদ্ধতি গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল সিস্টেম করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। ই-রিটার্নসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য এনবিআরে একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। অফিস চলাকালীন যেকোনো সময়ে কল সেন্টারের ০৯৬৪৩৭১৭১৭১ নম্বরে করদাতারা তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এ ছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন থেকে করদাতারা ই-রিটার্নসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা e-mail এর মাধ্যমে জানাতে পারছেন, যা দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বিষয়ক একটি ভিডিও টিউটোরিয়াল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবপেজ (www.nbr.gov.bd), ইউটিউব চ্যানেল www.youtube.com/@nbr.bangladesh এবং ফেসবুক পেজ www.facebook.com/nbr.bangladesh -এ পাওয়া যাচ্ছে।

এবারে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলগুলোর অধিক্ষেত্রভুক্ত সব সরকারি কর্মচারী, তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং কয়েকটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। 

আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সভা-সেমিনারসহ নানা আয়োজন থাকবে। ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক করদাতাদের কর কার্ড ও সম্মাননা দেওয়া হয়। প্রতিবারের মতো এবারেও কর কার্ড দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে সিদ্ধান্তহীনতা। উল্লেখ্য, প্রতিবছর ১৪১ জন সেরা করদাতাকে কর কার্ড ও সম্মাননা দেওয়া হয়।

বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি বাকৃবি গবেষকদের

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৬ পিএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি বাকৃবি গবেষকদের
পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনে গবেষণাগারে কাজ করছেন গবেষকরা। ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার ও তার গবেষক দল

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের শিক্ষক।

বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার তৈরি বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন এ অধ্যাপক।

এ বিষয়ে আনিছুর রহমান বলেন, ‘বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনে প্রক্রিয়াকরণের জন্য গাজন প্রক্রিয়াটি পরিবেশবান্ধব। স্থানীয় কৃষি সম্পদ কাজে লাগিয়ে এবং অপচয় কমিয়ে এই পদ্ধতি খাদ্য উৎপাদনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতেও সহায়ক হতে পারে। গবেষণাটি বাংলাদেশের বৃহত্তর টেকসই উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’

দেশের বাজারে উৎপাদিত ভিনেগারের প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে এই গবেষণার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ভিনেগার উৎপাদন কেবল খাদ্য ও পানীয় হিসেবে ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি প্যাকেজিং, কসমেটিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পেও ব্যবহৃত হতে পারে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিকর ভিনেগারের চাহিদা বাড়ছে যা বাজারে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে।’

অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য স্থানীয় কৃষি সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে বন্য খেজুর ইদানিং ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এটি বেশ সস্তা এবং স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য। এই খেজুর গাছ সাধারণত গ্রামীণ এলাকায় এবং রাস্তার পাশের জমিতে পাওয়া যায়। তবে নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ার পরেও এই বন্য খেজুর দেশের প্রেক্ষাপটে অনেকটাই অব্যবহৃত একটি সম্পদ।’

গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বন্য খেজুরের রস ফারমেনটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিনেগারে পরিণত করা হয়েছে। এ গবেষণায় এক ধরনের ইস্ট ব্যবহার করে ওই রসে অ্যালকোহল তৈরি করা হয় এবং পরে অ্যাসিটোব্যাক্টর প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া দিয়ে অ্যালকোহল অ্যাসিটিক অ্যাসিডে রূপান্তর করা হয়।’

গবেষক আরও জানান, গবেষণায় দেখা গেছে যে রসের ঘনত্ব যত বেশি হয় তত বেশি অ্যালকোহল এবং অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি পায়। বেশি ঘনত্বের রসটি সবচেয়ে ভালো পুষ্টিগুণ, অ্যাসিডিটি ও ম্যাক্রো মিনারেলস (পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম) সমৃদ্ধ হয়। তাই এটি স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তাদের জন্য একটি আকর্ষণীয় পণ্যও বটে।

গবেষণাটি বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশনা এলসেভিয়ারের (Elsevier) নামকরা সাময়িকী ‘অ্যাপ্লাইড ফুড রিসার্চ’ এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভিনেগার তৈরির এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও মাঠ পর্যায়ে সফলতা সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, ‘এই গবেষণা স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি নতুন আয়ের পথ খুলতে পারে। একদিকে খেজুর থেকে তৈরি ভিনেগারের উচ্চমান অন্যদিকে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের স্থানীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।’

অধ্যাপক আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে বাকৃবি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) আরও ছয়জন গবেষক এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। 

বাকৃবি থেকে গবেষক দলে রয়েছেন- ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলিম ও একই বিভাগের অধ্যাপক ড. পলি কর্মকার এবং ওই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা ও আ ন ম ইফতেখার আলম।

এ ছাড়া সিকৃবির খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ফাহাদ জুবায়ের এবং ডুয়েটের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লোপা আনসারী এই গবেষক দলে যুক্ত ছিলেন। সূত্র: ইউএনবি

সুমন/পপি/

১২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ১৩৫ কোটি টাকা জরিমানা

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১০ পিএম
১২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ১৩৫ কোটি টাকা জরিমানা
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। ছবি : সংগৃহীত

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে ১২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ১৩৫ কোটি টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিএসইসির ৯৩৪তম কমিশন সভায় চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এ জরিমানার সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানির শেয়ার ও এক মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেনে কারসাজির কারণে এসব কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়েছে। ২০২১ সালের ৩ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ফরচুন শুজ লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে আবুল কালাম মাতবরকে ৭ কোটি ২০ লাখ, ডিআইটি কো-অপারেটিভ লিমিটেডকে ১৫ কোটি, কাজী সাদিয়া হাসানকে ২৫ কোটি, কনিকা আফরোজকে ১৯ কোটি, মো. আবুল খায়েরকে ১১ কোটি ও সাজিদ মাতবরকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

কমিশন সভায় ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করায় সাজিদ মাদবরকে ১ কোটি ৬০ লাখ, মো. বাশারকে ১ কোটি ১৫ লাখ, মো. আবুল খায়েরকে ১৯ কোটি ১৫ লাখ, কনিকা আফরোজকে ২ কোটি ৯০ লাখ, কাজী সাদিয়া হাসানকে ১ কোটি ৯০ লাখ, কাজী ফুয়াদ হাসানকে ১ লাখ, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৮৪ লাখ ও আবুল কালাম মাতবরকে ২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা জরিমানার সিদ্ধান্ত হয়।

তালিকাভুক্ত কোম্পানি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডে ২০২১ সালের ২৮ জুন থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেয়ার লেনদেনে কারসাজির দায়ে মো. আবুল খায়েরকে ১ লাখ, আবুল কালাম মাতবরকে ১ লাখ, কাজী সাদিয়া হাসানকে ২ লাখ, কনিকা আফরোজকে ১ লাখ, কাজী ফরিদ হাসানকে ৩৫ লাখ, কাজী ফুয়াদ হাসানকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

তালিকাভুক্ত কোম্পানি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডে ২০২১ সালের ৭ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত শেয়ার লেনদেনে কারসাজির দায়ে মো. আবুল খায়েরকে ২ কোটি ৩০ লাখ, আবুল কালাম মাতবরকে ৪ কোটি ১৫ লাখ, কাজী সাদিয়া হাসানকে ১১ লাখ, কনিকা আফরোজকে ১ লাখ, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ১২ লাখ, আলেয়া বেগমকে ১ লাখ, মোহাম্মদ বাশেরকে ১ লাখ, মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেডকে ১ লাখ এবং সাজেদা মাতবরকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। 

কমিশন সভায় তালিকাভুক্ত প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডে ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউনিট লেনদেনে কারসাজি করে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে মাহফুজা আক্তারকে ১২ লাখ এবং দেওয়ান সালেহীন মাহমুদকে ৪০ লাখ টাকা জরিমানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়েছে

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০ পিএম
নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়েছে
ছবি : সংগৃহীত

এক মাসের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়েছে। নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে পৌঁছেছে। শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নাগালের বাইরে গিয়ে অবিশ্বাস্য হলেও ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশে ঠেকেছে। 

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) নভেম্বর মাসের ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

দেশের ৬৪ জেলার ১৫৪টি হাটবাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। 

খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশের অর্থ হলো ২০২৩ সালের নভেম্বরে যে খাদ্যপণ্য ১০০ টাকায় কেনা যেত, ২০২৪ সালের নভেম্বরে তা কিনতে হয়েছে ১১৩ টাকা ৮০ পয়সায়। সরকার চলতি অর্থবছর মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার পরিকল্পনা করলেও বাস্তবতা এর ধারেকাছে নেই। কয়েকবার নীতি সুদহারও বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার নিয়ন্ত্রণে জেলায় জেলায় টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তার পরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না মূল্যস্ফীতি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি আগামী জুন মাসের মধ্যে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। আমরা আশা করছি, পরবর্তী অর্থবছরের মধ্যে তা ৫ শতাংশে নামবে। আমাদের মূল লক্ষ্য ৪-৫ শতাংশে নামিয়ে আনা। আশা করি, তা সম্ভব।’ 

মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারলে সুদের হার কমিয়ে আনা হবে জানিয়ে গভর্নর আরও বলেন, ‘বন্যার কারণে বর্তমান বাজারে সবজি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়তি। একসময় তা কমে আসবে।’ 

গভর্নর বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারলে আমরা ব্যাংকের সুদ ও নীতি সুদহার কমিয়ে আনব। গ্রাম ও শহর এলাকার মধ্যে শহরের তুলনায় গ্রামে গড় মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। তবে অক্টোবরে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি থাকলেও নভেম্বরে এসে পাল্টে শহর এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে।’

নভেম্বরে গ্রাম এলাকার গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশে, শহর এলাকায় তা আছে ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশে। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে গ্রাম এলাকায় ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশে পৌঁছে। যা আগের মাসে ছিল ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ। শহর এলাকায় নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশে। এটা আগের মাসে ছিল ১২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। 

জিআই স্বীকৃতি পেল শেরপুরের ছানার পায়েস

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ পিএম
জিআই স্বীকৃতি পেল শেরপুরের ছানার পায়েস
শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন ছানার পায়েস। ছবি : খবরের কাগজ

ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মিষ্টান্ন ছানার পায়েস। 

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ছানার পায়েসকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির আবেদন করে শেরপুর জেলা প্রশাসন। এরপর নানা তথ্য সংগ্রহ এবং এই খাবারের বিশেষত্ব যাচাই করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ছানার পায়েসকে ৪৩তম জিআই পণ্য হিসেবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। 

ছানার পায়েস বা রসমালাই জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় উৎসবে মেতেছেন শেরপুরের বাসিন্দারা। স্বীকৃতি পাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনেকে মিষ্টি বিতরণ করেন।

অনুরাধা মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী বাপ্পি দে বলেন, ‘জিআই পণ্য হিসেবে ছানার পায়েসের স্বীকৃতি শেরপুর জেলাকে বিশ্বের দরবারে অন্যভাবে চেনাবে। পাশাপাশি এই ছানার পায়েস দেশ ছাড়াও বিদেশে রপ্তানি হবে। এতে দেশের অর্থনীতিতে অনন্য ভূমিকা রাখবে পণ্যটি। মূলত দুধ, চিনি, এলাচের মিশ্রণে তৈরি গুটি গুটি রসালো মিষ্টির নামটি ছানার পায়েস বা রসমালাই।’

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ছানার পায়েস ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় তা শেরপুরের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। দেশের সব জেলাসহ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে এই ছানার পায়েস বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা। এর আগে শেরপুরের তুলশীমালা ধান জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়।’

 

ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহিরের ব্যাংক হিসাব সচল

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ পিএম
আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম
ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহিরের ব্যাংক হিসাব সচল
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহির ও তার পরিবারের সদস্যদের জব্দ ব্যাংক হিসাব সচল করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) সহকারী পরিচালক মোত্তাকিনুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

গত ১ ডিসেম্বর সিআইসি এক নির্দেশনার মাধ্যমে এসব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে। পরে আজ আরেকটি নির্দেশনা জারি করে অ্যাকাউন্টগুলো সচলের নির্দেশ দেওয়া হয়। শরীফ জহিরের আবেদনের প্রেক্ষিতে সঠিক তথ্য যাচাই করে তিনিসহ তার পরিবার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বাকি সদস্যদের ব্যাংক হিসাব সচল করে এনবিআর। 

এনবিআরের এই সিদ্ধান্ত ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় উদাহরণ তৈরি করেছে বলে মত প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। তবে একইসঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ বা তথ্য ছাড়া ব্যাংক হিসাব জব্দের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা দেশের ব্যবসায়িক মহলে প্রশ্ন ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। 

ব্যবসা খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ ধরনের সিদ্ধান্তের প্রভাব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-চেয়ারম্যান রোমো রউফ চৌধুরী বলেন, ‘এমন পদক্ষেপ ব্যবসায়িক কমিউনিটিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে এবং একইসঙ্গে তা ব্যাংকিং খাতের অংশীজনদের আস্থা ক্ষুণ্ন করবে।’

তার এই মন্তব্য একটি স্থিতিশীল রেগুলেটলরি এনভায়রনমেন্ট নিয়ে অংশীজনদের উদ্বেগেরই প্রতিফলন।

একইভাবে বিজিএমইএ সাপোর্ট কমিটির সদস্য শামস মাহমুদ পোশাক খাতে এ ধরনের সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাবের ওপর আলোকপাত করে বলেন, ‘পোশাক খাতে বেতন পরিশোধের সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেসব ব্যবসায়ী সুনামের সঙ্গে কারখানা পরিচালনা করে আসছেন, তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা অযৌক্তিক। ব্যাংকগুলো সাধারণত প্যাকিং ক্রেডিট (পিসি) ও ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ছাড়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত হিসাব ও গ্যারান্টির ওপর নির্ভর করে, যা সময়মতো মজুরি পরিশোধের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অভিযোগ উঠেছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে সম্পৃক্ত আগের পরিচালনা পর্ষদের একটি স্বার্থান্বেষী মহল ইউসিবির নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে এ ধরনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ব্যাংকের স্থিতিশীলতা ও আস্থা পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২৭ আগস্ট পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে। শরীফ জহিরের নেতৃত্বে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধার, খেলাপিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ পরিশোধে উৎসাহিত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি আগের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদের অধীনে অপব্যয় ও সম্পদের তছরুপ নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপও নিয়েছে নতুন পরিচালনা পর্ষদ।   

অতীতের অনিয়ম উন্মোচনে ও দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে ফরেনসিক অডিট পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, উল্লেখ্য স্বার্থান্বেষী মহল এ অডিট পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। তাদের উদ্দেশ্য- অডিট পরিচালনায় বাধা দেওয়ার মাধ্যমে নতুন পরিচালনা পর্ষদকে অস্থিতিশীল করা এবং আগে অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেওয়া।

শরীফ জহির দেশের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অনন্ত গ্রুপেরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ৩২ হাজারের বেশি মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে প্রতিষ্ঠানটি। অনন্ত গ্রুপ পেশাদারত্ব ও নিষ্ঠার জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সঙ্গে বৈশ্বিক রিটেইলার ও ব্যাংকসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করছে। তবে সরকারি কোনো ব্যবসার সঙ্গে অনন্ত গ্রুপের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

এক অভূতপূর্ব সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশে ব্যবসায়িক খাতসহ সব ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় সংস্কারের বাস্তবায়নে পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে।

এমন প্রেক্ষাপটে, যারা পেশাদারত্বের ক্ষেত্রে উৎকর্ষের মাধ্যমে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন তাদের জন্য স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি ও তাদের আস্থা অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায়, ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে সিদ্ধান্তগুলো দেশের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করবে।

লাবনী/সালমান/