নড়াইলে শীতের সবজি আসতে শুরু করলেও দাম আকাশ ছোঁয়া। প্রতিটি সবজি কেজিপ্রতি কমপক্ষে ৫০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ করে আলুর মূল্য কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।
শহরের প্রধান বাণিজ্যিককেন্দ্র রূপগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু ৭০-৮০ টাকা, ফুলকপি ১৩০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, উচ্ছে ১৪০ টাকা, লাউ ৭০-৮০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, সিম ১২০ টাকা, মরিচ ১২০ টাকা, পালংশাক ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সবজি বেশি দামে কেনার ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সবজি সরবরাহ আরও বাড়লে দাম কিছুটা কমবে।
সবজি ক্রেতা আতিকুর রহমান প্রিন্স বলেন, ‘শীতের সবজি বাজারে আসতে শুরু করলেও দাম আকাশ ছোঁয়া। আলু তো প্রতিটি পরিবারে সব সময় লাগে, অথচ প্রতি সপ্তাহে ৫ টাকা করে বাড়ছে কেজির দাম। সিম ১২০-১৩০ টাকা, পালংশাক ১৪০-১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এগুলো কিনে খাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’
ক্রেতা রাজু দাস বলেন, ‘ফুলকপি ১২০-১৩০ টাকা, পালংশাক ১৫০-১৬০ টাকা কেজি কিনে খাওয়া খুবই কঠিন। সংসার কীভাবে চলবে? দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আরও পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
সবজি ব্যবসায়ী মুনসুর হোসেন বলেন, ‘সবজির দাম কিছুটা বাড়ছে। কিছু স্থিতিশীল রয়েছে। আলুর দাম বেড়েছে। শীতের সবজি আরও বাজারে এলে দাম কিছুটা কমবে।’
বিন্দু অধিকারী বলেন, ‘সবজির দাম প্রতি সপ্তাহে বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে আলুর দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা করে বাড়ছে। সামনে আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হোস্টেলে থাকা শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে।’
নড়াইল জেলা কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সেক্রেটারি কাজি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমদানিকারক ও উৎপাদক পর্যায়ের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা, দোকানে মূল্য তালিকা না থাকা, বিক্রেতারা পাইকারি বাজার থেকে আনা পণ্যের সঠিক ক্রয়মূল্যের মেমো প্রদর্শন না করা, এসব কারণে দাম বাড়ছে। এ ছাড়া, ভোক্তাদের সচেতনতার অভাব, কালোবাজারি, অতিরিক্ত মুনাফা, বাজারে ঘুষখোর ও কালো টাকার দৌরাত্ম্যের কারণে ব্যবসায়ীদের তেমন বাধা পড়ছে না। এ কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ছে।’
নড়াইলের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শামীম হাসান জানান, ‘বিশেষ টাস্কফোর্স ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের জরিমানা ও কারাদণ্ডও দেওয়া হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে।’