ঢাকা ২৭ মাঘ ১৪৩১, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১

ভ্যাট অব্যাহতি পুনর্বহালের দাবি পাদুকা প্রস্তুতকারকদের

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫১ পিএম
আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৫ পিএম
ভ্যাট অব্যাহতি পুনর্বহালের দাবি পাদুকা প্রস্তুতকারকদের
রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির নেতারা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

‘প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল এবং পাদুকা’ (১৫০ টাকা মূল্যসীমা পর্যন্ত) উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি পুনর্বহালের জন্য জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতি।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাগর রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা এ দাবি জানান।

তারা বলেন, পূর্বের ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা বাতিল করে ১৫% ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পাদুকা শিল্প মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বেলাল লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল এবং পাদুকার ওপর ১৫% ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব অত্যন্ত অযৌক্তিক। এটি কার্যকর হলে এই সাশ্রয়ী পণ্য সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। বিশেষত শ্রমজীবী, দিনমজুর, কৃষক, রিকশা-ভ্যান চালক এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রায় এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ভ্যাট অব্যাহতির ফলে সরাসরি পণ্যের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় নিম্ম আয়ের ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বিবেচনায় এত উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতির মধ্যেও ১৫০ টাকা মূল্যের রাবার ও প্লাস্টিকের চপ্পল সরবরাহ অব্যহত রেখেছে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এই পণ্যের মূল কাঁচামাল হচ্ছে পরিত্যক্ত রাবার ও প্লাস্টিকের চপ্পলজাতীয় অপচনশীল দ্রব্যাদি, যা সংগ্রহ করা হয় দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছিন্নমূল টোকাই ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে। সংগৃহীত এই সমস্ত অপচনশীল পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ও রাবারের চপ্পল রি-সাইকেলিং করে পুনরায় উৎপাদন করা হয়। যা পরিবেশের ভারসাম্য তথা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি এবং জলবদ্ধতা রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। ভ্যাট অব্যাহতির ফলে তারা রিসাইক্লিং কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করতে পেরেছিল। এতে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ কমেছে, অন্যদিকে পরিবেশ দূষণ হ্রাস পেয়েছে। উক্ত বিবেচনায় ভ্যাট আইনের শুরু হতেই আমাদের উৎপাদিত প্লাস্টিক ও রাবারের পাদুকা ভ্যাট অব্যহতি সুযোগ দিয়ে আসা হয়। এই শিল্প দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাট অব্যাহতির আওতায় রয়েছে, যা পণ্য উৎপাদনের খরচ কমিয়ে গরিব জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী দামে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। কিন্তু ভ্যাট আরোপ করা হলে পণ্য উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে এবং বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।’

মালিক সমিতি মনে করছে, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে যেখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে সেখানে ভোক্তার কাছ থেকে কোনভাবেই ১৫% ভ্যাট আদায় করা সম্ভব নয়। চাইলেই পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা যায় না। অথচ বিগত সরকারের আমলে পরিষেবার ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে শ্রমিকদের মজুরি। দৈনন্দিন খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির জের তো আছেই। উচ্চ মূল্যস্ফিতির কারণে এমনেই ব্যবসা ৩০-৪০% কমে গিয়েছে। এই অবস্থায় ভ্যাট বাড়লে পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে।’

তিনি আরও বলেন, যেদিন থেকে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে সেদিন থেকেই এই পণ্যের ভ্যাট অব্যাহতি ছিলো। এমনকি রি-সাইকেলিং প্লাস্টিক হইতে তৈরিকৃত দানার কোন ভ্যাট নাই। কিন্তু এই পণ্যের ওপর কেন বা কী কারণে ভ্যাট আরোপ হবে?

ভ্যাট আরোপের নেতিবাচক প্রভাব

১. উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি: ১৫% ভ্যাট আরোপ হলে উৎপাদন খরচ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে, যা বিক্রির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর চাপ সৃষ্টি করবে।
২. ক্রেতার ক্ষতি: নিম্ন আয়ের মানুষেরা এই পণ্য কিনতে অপারগ হবে।
৩. শিল্প ধ্বংস: অধিকাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, যা ব্যাপক বেকারত্বের সৃষ্টি করবে।
৪. পরিবেশের প্রভাব: প্লাস্টিক ও রাবার দিয়ে তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকা মূলত রিসাইক্লিং পদ্ধতির মাধ্যমে উৎপাদিত পরিবেশবান্ধব পণ্য। এই পণ্য উৎপাদনে প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয় পরিত্যক্ত রাবার ও প্লাস্টিক জাতীয় অপচনশীল দ্রব্য, যা স্বাভাবিকভাবে পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। সংগঠনের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, এই পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় দুই দিক থেকে পরিবেশ রক্ষা সম্ভব হয়েছে। প্রথমত, টোকাই এবং অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠী তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য এই পরিত্যক্ত রাবার ও প্লাস্টিক সংগ্রহ করে, যা তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। দ্বিতীয়ত, এই অপচনশীল পণ্যগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্য হিসেবে তৈরি হওয়ায় পরিবেশ দূষণ রোধে এটি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। 

ব্যবসায়ীদের দাবি ও আন্দোলন কর্মসূচি

সংগঠনটি সরকারের কাছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। দাবি পূরণ না হলে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট এবং চূড়ান্তভাবে কারখানা বন্ধের মতো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কুদ্দুস (রানা), সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রেজাউল করিম, সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান রহমান (সাজু), সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন পাদুকা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা।

পরিশেষে সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘আমরা ভ্যাট আইন মানি, তবে তা অবশ্যই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বার্থ বিবেচনা করে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই, এই ধরনের সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করে দেশের পাদুকা শিল্প এবং সাধারণ জনগণের স্বার্থ রক্ষা করুন।’

বিজ্ঞপ্তি/এমএ/

বিদেশি বিনিয়োগ সম্পর্কিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পোর্টাল চালু

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৩ পিএম
বিদেশি বিনিয়োগ সম্পর্কিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পোর্টাল চালু
ছবি: খবরের কাগজ গ্রাফিক্স

‘বিদেশি বিনিয়োগ ও অর্থায়ন’ সংক্রান্ত ওয়েব পোর্টাল https://www.bb.org.bd/feidportal/index.html চালু করলো বাংলাদেশ ব্যাংক।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ পোর্টালের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ, অর্থায়নের বিকল্প এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগ সম্পর্কিত তথ্য ও পরিষেবাগুলোতে সহজে প্রবেশাধিকার প্রদান করা যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমস্ত অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকগুলোকে এই পোর্টালের সুবিধা গ্রহণ এবং তাদের ক্লায়েন্ট এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে এটি তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সূত্র: বাসস

সিফাত/

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ কর্মকর্তার লকার খুঁজে পায়নি দুদক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৪ পিএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ কর্মকর্তার লকার খুঁজে পায়নি দুদক
বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশন (লোগো)

সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ২৫ কর্মকর্তার নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে সেফ ডিপোজিট লকার খুঁজে পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জমানের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে তল্লাশি চালায়। 

অভিযান শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন কাজী সায়েমুজ্জমান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে যে ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছিল, তার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে এসেছিলাম। তবে তাদের কারও নামেই কোনো লকার নেই। আরও অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। আদালতের অনুমোদনের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে অভিযান চালানো হবে।’

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ২৫ জনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাই। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের অনেকেই এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত; অনেকে এখন চাকরিতে নেই। এখন পর্যন্ত মোট ২৭২টি সেফ ডিপোজিট লকারের সন্ধান পাওয়া গেছে। 

এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি দুদক বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের লকারে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পায়। সেগুলো এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের জিম্মায় রাখা হয়েছে। অভিযানের সময় দুদক বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নামে আরও কিছু লকার খুঁজে পায়। এর মধ্যে যাদের নামে বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে, তাদের নামেও লকার থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ কারণে দুদক ওই সব লকারেও তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ ফেব্রুয়ারি দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেওয়া হয়। কেউ যেন ওই সব লকার খুলতে না পারে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানায় তারা। এরপর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখার লকার আর কাউকে খুলতে দেওয়া হচ্ছে না। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুদক তালিকা নিয়ে এসেছিল। তারা লকারের তালিকা খুঁজে দেখেছে, কিন্তু তালিকাভুক্ত কারও লকার খুঁজে পায়নি।’

মৃত্তিকা/সালমান/

সিলেটে অন্য পণ্য না কিনলে মিলছে না সয়াবিন তেল

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৮ পিএম
সিলেটে অন্য পণ্য না কিনলে মিলছে না সয়াবিন তেল
ছবি : সংগৃহীত

সিলেটের কালীঘাট এলাকার পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্গে বাধ্যতামূলক কিনতে হচ্ছে অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে সিলেটের কালীঘাট পাইকারি বাজারে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

কালীঘাট এলাকায় মুদি দোকানের জন্য মালামাল কিনতে এসে সিলেট নগরীর জেরজেরি পাড়ার হবিব স্টোরের মালিক খবরের কাগজকে বলেন, ‘অন্য অনেক পণ্য সঠিক দামে ও পরিমাণ কিনতে পারলেও সয়াবিন তেল কিনতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এক লিটারের এক কার্টুন সয়াবিন তেল কিনতে এক বস্তা চাল কিনতে হয়েছে আমাকে। এক বস্তা চাল না কিনলে, ডিলার তেল বিক্রি করবে না। তাই বাধ্য হয়ে এক বস্তা চাল কিনতে হয়েছে।’

একই কথা জানালেন অনেক খুচরা বিক্রেতা। বেশ কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা খবরের কাগজকে বলেন, ‘সয়াবিন তেল কিনতে হলে ডিলাররা সঙ্গে চিনিগুড়া চাল, দুধ, ঘিসহ যে পণ্যগুলো বাজারে চলে না সেগুলো ধরিয়ে দিচ্ছে। আমরা পাড়া মহল্লার মুদি দোকানদার। এক কার্টুন সয়াবিন তেল নিতে গিয়ে চিনিগুড়া চাল নিতে হচ্ছে। কিন্তু এক বস্তা চিনিগুড়া চালের ক্রেতা তো আমাদের দোকানে নেই। সয়াবিন তেল সবার নিত্যপণ্য তাই দোকানে রাখা লাগে। এই জন্য পাইকারদের কাছ থেকে বাধ্য হয়ে তাদের শর্তে সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে।’

সারা দেশের মতো সিলেটের বাজারেও গত কয়েকদিন ধরে সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট চলছে। সেই সংকট এখন আরও বেড়েছে। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা যখনই পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে যান তখন বিভিন্ন কোম্পানির অফ প্রোডাক্ট (বাজারে কোম্পানির যে পণ্যগুলো চলে না) সেগুলো কিনতে বাধ্য করছেন। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা কম পরিমাণে সয়াবিন তেল কিনছেন। এ ছাড়াও বডি রেটের চেয়ে বেশি মূল্যে সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে।’

শনিবার সরজমিনে সিলেটের কালীঘাট পাইকারি বাজারে দেখা যায়, আগে যেভাবে দোকানের সামনে সয়াবিন তেল সাজিয়ে রাখতেন ডিলাররা এখন সেভাবে তেল ডিসপ্লে করছেন না তারা। প্রচুর খুচরা ক্রেতা বাজারে এসেছেন। পেঁয়াজ, রসুন, মসলাপাতি বেশ পরিমাণে কিনলেও সয়াবিন তেল খুব অল্প কিনছেন খুচরা বিক্রেতারা। ক্রেতা যে কোম্পানির সয়াবিন তেল কিনছেন তাকে সেই কোম্পানির বিভিন্ন পণ্য কিনতে বলছেন। পাইকারদের কথামতো অন্য পণ্য না কিনলে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন না।’

নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকার স্বপ্না স্টোরের মালিক মিশন তালুকদার খবরের কাগজকে বলেন, ‘পাইকারি বাজার থেকে তেল কিনতে হলে চাল, ঘি কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতাদেরকে এভাবে তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করতে পারি না। তাই দেখা যাচ্ছে, তেল বিক্রি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু অন্য যে পণ্যগুলো কিনেছি সেগুলো দোকানেই থেকে যাচ্ছে।’

এ দিকে কালীঘাটের পাইকাররাও বলছেন একই কথা। বেশ কয়েকজন পাইকারী ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় সব কোম্পানি তেল সরবরাহ কমিয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি তেল কিনতে গেলে ওই কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন অফ প্রোডাক্ট কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাই পাইকরারও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে একই নিয়মে তেল বিক্রি করছেন।’

কালীঘাট পাইকারি বাজারে মেসার্স জননী ভাণ্ডারের মালিক অলক পাল খবরের কাগজকে বলেন, ‘পুষ্টি কোম্পনির এক কার্টুন ৫ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে ১৩৫০ টাকা দামের ঘি কিনতে হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অফ আইটেম কিনতে হচ্ছে। যেগুলো আমরা সচরারচর তাদের কাছ থেকে কিনি না। সেজন্য খুচরা বিক্রেতাদের কাছে আমরা তাদের প্রক্রিয়ায় তেল বিক্রি করছি। কারণ ওই অফ আইটেমগুলো না বিক্রি করতে পারলে আমার ক্ষতি হবে।’

সুমন/

মুদ্রা বিনিময় হার: ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৭ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪১ এএম
মুদ্রা বিনিময় হার: ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
প্রতীকী ছবি

দিন দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্প্রসারিত হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যবসা–বাণিজ্য। তাছাড়া, পড়াশোনা, চিকিৎসা, ভ্রমণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রয়োজনে বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে আমাদের দেশের মুদ্রা বিনিময় করতে হয়। পাঠকদের সুবিধার্থে আমরা প্রতিদিনের মুদ্রা বিনিময় হার তুলে ধরছি।

একটা বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, মুদ্রার বিনিময় হার প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়। আমরা প্রতিদিন সর্বশেষ বিনিময় হার তুলে ধরছি। আরও বিস্তারিত জানতে স্থানীয় ব্যাংক বা বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা বা তাদের ওয়েবসাইট পরিদর্শন করা যেতে পারে।

সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক

মুদ্রা ক্রয় (টাকা) বিক্রয় (টাকা)
ইউএস ডলার ১২২.০০ ১২২.০০
ইউরো ১২৫.৯৯ ১২৬.১৬
ব্রিটেনের পাউন্ড ১৫১.৩৯ ১৫১.৪৩
অস্ট্রেলিয়ান ডলার ৭৬.৫১ ৭৬.৫২
জাপানি ইয়েন ০.৮০৫৬ ০.৮০৫৮
কানাডিয়ান ডলার ৮৫.৩৪ ৮৫.৩৫
সুইস ক্রোনা ১১.১৪৯১ ১১.১৫২১
সিঙ্গাপুর ডলার ৯০.০১ ৯০.০৮
চায়না ইউয়ান ১৬.৬৯৮৭ ১৬.৭০৮০
ইন্ডিয়ান রুপি ১.৩৯১৪ ১.৩৯২৩
সৌদি রিয়াল - ৩২.৪২
আরব আমিরাত দেরহাম - ৩২.৫৪

নড়াইলে কমছে বাঁশ-বেত শিল্পের চাহিদা

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৪ এএম
নড়াইলে কমছে বাঁশ-বেত শিল্পের চাহিদা
বাঁশ দিয়ে ঝুড়ি তৈরি করছেন এক নারী। খবরের কাগজ

নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া গ্রামের ঋষিপল্লিতে বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি সামগ্রী বিক্রি করে শতাধিক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। তবে বাঁশ ও বেতের কাঁচামালের অভাব এবং সস্তা প্লাস্টিক পণ্যের কারণে শিল্পের চাহিদা কমে গেছে। এতে কারিগররা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। সরকারি সহযোগিতা পেলেও এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ঋষিপল্লিতে বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে খোল, চাঙ্গই, চাটাই, খালই, মোড়া, দোলনা, কুলা ইত্যাদি। প্রতিটি বাড়িতে নারীরা শৈল্পিক হাতের কাজ দিয়ে এসব তৈরি করেন। পুরুষরা এগুলো বাজারে বিক্রি করেন।

তবে বাঁশ ও বেতের স্বল্পতা এবং সস্তা প্লাস্টিকের প্রচলন এই শিল্পের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি মানুষ বাঁশ ও বেতগাছ কাটছেন না, বরং অন্য কাজে তা ব্যবহার করছেন। এর ফলে বাঁশ ও বেতের কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে না আগের মতো। বর্তমানে প্লাস্টিকের পণ্য সহজলভ্য ও সস্তা হওয়ায় সাধারণ মানুষ তাদের দিকে ঝুঁকছেন। এতে কুটির শিল্পের বাজার সংকুচিত হচ্ছে।

নারী কারিগর গীতা রানী বলেন, ‘আমরা বাঁশ ও বেত দিয়ে পণ্য তৈরি করি। পুরুষেরা সেগুলো বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। যা আয় হয়, তা দিয়েই সংসার চলে। তবে আমাদের জীবিকা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।’

আরেক নারী কারিগর সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘ছোটবেলায় মা-বাবার কাছ থেকে বাঁশ ও বেত দিয়ে কাজ শিখেছিলাম। এখন আমরা বাঁশ কিনে চেরাই করি, পরে বেতি বানিয়ে নানা পণ্য তৈরি করি।’

কারিগর দীলিপ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বর্তমানে প্লাস্টিকের সামগ্রী সহজে পাওয়া যায়। তাই কুটির শিল্পের চাহিদা কমে গেছে। বাঁশ ও বেতের গাছও এখন পাওয়া যায় না। কারণ মানুষ তা কেটে চাষাবাদ এবং ঘরবাড়ি নির্মাণের কাজে ব্যবহার করছেন।’

আউড়িয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম পলাশ বলেন, ‘ঋষিপল্লিতে ৬৬টি পরিবার রয়েছে। যাদের তিন শতাধিক সদস্য রয়েছেন। ওই পরিবারের সদস্যরা বাঁশ ও বেতশিল্পে নিযুক্ত। তবে বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং স্বল্প আয় এই শিল্পে টিকে থাকতে বাধা সৃষ্টি করছে।’ 

জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মৌসুমী রানী মজুমদার বলেন, ‘বাঁশ ও বেতের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।’