ঢাকা ২৯ মাঘ ১৪৩১, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি ট্রাম্পের!

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৮ এএম
গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি ট্রাম্পের!
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

গ্রিনল্যান্ড নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে আসলেই চিন্তাভাবনা করছেন তা স্পষ্ট হয়েছে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনকলের মাধ্যমে। ওই ফোনকলে শুধু নিজের ইচ্ছার কথাই জানাননি, আক্রমণাত্মকভাবে কথাও বলেছেন ট্রাম্প। এমনকি হুমকিও দিয়েছেন বলে খবর রটেছে।

জ্যেষ্ঠ ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুসারে, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে ট্রাম্প গত সপ্তাহে ৪৫ মিনিট ফোনে কথা বলেছেন। 

বর্তমান ও সাবেক পাঁচ জ্যেষ্ঠ ইউরোপীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফোনে তাদের মধ্যে আলোচনা ভালোভাবে শেষ হয়নি। ট্রাম্প আক্রমণাত্মকভাবে কথা বলেছেন। গ্রিনল্যান্ড নিয়ে মন্তব্যের জন্য ড্যানিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন তিনি।

এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ট্রাম্প খুব কড়াভাবে কথা বলেছেন। এ ঘটনার আগে বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু এখন এটিকে গুরুতর ও সম্ভাব্য বিপদ বলেই মনে করি আমি।’ 

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ট্রাম্প আসার বিষয়টি যে আগামীতে ইউরোপীয় দেশগুলোর জন্য সমস্যা তৈরি করবে, তার একটা ইঙ্গিত মিলেছে ফোনকলে। যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলটি পাওয়ার জন্য মিত্র দেশগুলোর ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। 

অনেক ইউরোপীয় কর্মকর্তাই মনে করেছিলেন, রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার কথা বলে তার গ্রিনল্যান্ড নেওয়ার চেষ্টা আসলে ন্যাটো অঞ্চলে আরও প্রভাব খাটানোর একটি চালমাত্র। রাশিয়া ও চীনও মেরু অঞ্চলে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে চাইছে। 

তবে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে ফোনকলের পর এ ধরনের সব ভুল ধারণা ভেঙে গেছে কর্মকর্তাদের। এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার। তারা এটি চায়। ডেনমার্কের বাসিন্দারা এখন সংকটের মধ্যে রয়েছে।

আরেক কর্মকর্তা বলেন, ডেনমার্কের বাসিন্দারা এটি নিয়ে পুরোপুরি ঘাবড়ে গেছেন। অত্যন্ত কঠিন আলোচনা ছিল সেটি। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ করার মতো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি (ট্রাম্প)। 

গ্রিনল্যান্ডে ৫৭ হাজার মানুষ বসবাস করে। সেখানে আর্কটিকের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে জাহাজ চলাচলের রুট তৈরি হচ্ছে। ওই অঞ্চলে প্রচুর খনিজ সম্পদও রয়েছে। সূত্র: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

নগদে ২৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে দুদক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
নগদে ২৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে দুদক
নগদ

ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সহকারী পরিচালক রুহুল হক ও তানজির আহমেদের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল নগদের অফিসে অভিযান চালায়। অভিযানের পর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা। 

দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইলে অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ পায় দুদক। অভিযোগে বলা হয়, নগদ বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি করে বেশ কিছু বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছে। এ অভিযোগ পাওয়ার পর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বুধবার একটি অভিযান চালানো হয়। 

অভিযানের সময় নগদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য এবং রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদকের অভিযান পরিচালনাকারী দল। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, নগদ প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি অনিয়মিত ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন করেছে। এ ছাড়া ট্রাস্ট অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নগদের মূল অ্যাকাউন্টের হিসাবের গরমিল পাওয়া গেছে। অভিযোগের বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে যাচাইয়ের জন্য দুদক কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট সব নথি সংগ্রহ করেন। সংগৃহীত সব রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

এ বিষয়ে নগদের প্রশাসক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পাচার এবং ৬০০ কোটি টাকার ই-মানিসংক্রান্ত অনিয়ম পাওয়া গেছে।

পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২২ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৭ পিএম
পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু
ডিএসই-সিএসই

ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে আজ লেনদেন শুরু হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১১ পয়েন্ট।

বাকি শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ২ এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১ পয়েন্ট।

লেনদেনের শুরুতেই দাম বেড়েছে ১৯৭ কোম্পানির, কমেছে ১০৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

লেনদেনের প্রথম  ঘণ্টায়  ডিএসইতে ১২০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে লেনদেনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।

লেনদেন হওয়া ৯৯ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩১, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম। শুরুতেই মোট শেয়ার এবং ইউনিটের লেনদেন ছাড়িয়েছে ৪ কোটি টাকা। সূত্র: ইউএনবি

সুমন/

হয়রানির শিকার হবেন করদাতারা

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৬ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৭ পিএম
হয়রানির শিকার হবেন করদাতারা
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফ

ইলেকট্রনিক করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর বা ইটিআইএন থাকলেই রিটার্ন জমা দিতে হবে। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর রিটার্ন জমার শেষ দিন। ওই সময়ের মধ্যে যারা রিটার্ন জমা দেবেন না, তার পরের দিন থেকে অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে নোটিশ পাঠাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নোটিশে রিটার্ন জমা না দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হবে। নোটিশ পাওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে রিটার্ন জমা দিতে হবে। নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে করদাতাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এনবিআরের এ সিদ্ধান্তের ফলে করদাতারা হয়রানির শিকার হবেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এনবিআর সূত্র জানায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানা করা হবে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি এম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, মাসে ৩০ হাজার ৩৫ হাজার টাকা আয় করে সংসার চালিয়ে তিন বেলা পুষ্টিকর খাবার খাওয়া সম্ভব হয় না। অনেকে খাবার তালিকা থেকে অনেক নিয়মিত খাবারও কাটছাঁট করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ করদাতাদের কর পরিশোধ করা ও রিটার্ন জমায় কঠোরতা আনা ঠিক হবে না বরং এনবিআরকে করমুক্ত আয়সীমা আরও বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ধনীরা খুব কৌশলী। তারা নিজেদের আইন বিশেষজ্ঞ দিয়ে খুব কায়দা করে কর ফাঁকি দেন। এনবিআরের পক্ষে বেশির ভাগ সময় এদের ধরা সম্ভব হয় না। এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে  কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

করদাতা বেসরকারি চাকরিজীবী মাইদুল হাসান খবরের কাগজকে বলেন, মাসে ৪৫ হাজার টাকা আয় করে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। গত দুই বছর ধরে কর পরিশোধ ও রিটার্ন জমা কোনোটাই করতে পারিনি। এমন পরিস্থিতিতে কর ও রিটার্ন পরিশোধ করায় কঠোরতা আনা হলে কষ্ট আরও বেড়ে যাবে।

এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান খবরের কাগজকে বলেন, ইটিআইএন থাকার পরও যারা দীর্ঘদিন ধরে রিটার্ন দাখিল করছেন না, তাদের এনবিআর থেকে শিগগিরই নোটিশ পাঠানো হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা রিটার্ন দাখিল করছেন না, তাদের কোনো সমস্যায়ও পড়তে হচ্ছে না। তাই আমরা এ বিষয়ে এনফোর্সমেন্টে যাচ্ছি। আমাদের নাগরিকরা বিদেশে গিয়ে আইন ভঙ্গ করছেন না। কিন্তু দেশে আমরা আইন মানি না। তার মানে এ সমস্যার সমাধান করতে আইনের প্রয়োগ করা হয় না, এটাই সমস্যা।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, অনেকে ইটিআইএন গ্রহণ করার পর দুই-এক বছর রিটার্ন দিলেও কোনো কারণ ছাড়াই পরের করবর্ষে আর দেন না। এবার থেকে এসব চলবে না। ইটিআইএন থাকলেই বাধ্যতামূলক আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। যারা দেবেন না, তাদের নোটিশ পাঠানো হবে। নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে এনবিআর। 

রিটার্ন জমার সময় ১৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা । এ সময়ের পর ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে নোটিশ পাঠানো হবে। নোটিশ পাঠানোর সময় থেকে অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কর পরিশোধ ও রিটার্ন জমা দিলে কর অব্যাহতির, করমুক্ত এবং হ্রাসকৃত হারে কর প্রদানের সুবিধা পাবে না। বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত সুবিধাও পাবে না। নিয়মিত করের পাশাপাশি নির্ধারিত হারে জরিমানা দিতে হবে- এক হাজার টাকা। একই সঙ্গে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে জরিমানা করা হবে। 

মূল্যস্ফীতির চাপে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। চলতি অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের  আগে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর দাবি করলেও বিগত সরকার তা আমলে নেয়নি। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরেও সাধারণ করমুক্ত আয়সীমা আগের মতো ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাখা হয়। ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী নারী ও প্রবীণ নাগরিকদের করমুক্ত আয়সীমা হবে চার লাখ টাকা, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদের জন্য ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং যুদ্ধাহত গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পাঁচ লাখ টাকা আছে। 

বর্তমানে করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ এক করবর্ষে একজন ব্যক্তির আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলেই তাকে কর পরিশোধ করতে হবে। হিসাব কষে দেখা যায়, এক মাসে নিট আয় ২৯ হাজার ১৬৭ টাকার বেশি হলেই কর দিতে হবে। বর্তমানে সর্বনিম্ন করহার ৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ।

করোনা শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত প্রায় সব ধরনের খরচই বাড়তে থাকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ডলারসংকট দেখা দেয়। সাধারণ ব্যবসায়ীদের অনেকে এলসি খোলার সুযোগ পাননি। ফলে আমদানি কমতে থাকে। বাজারে পণ্য সংকট দেখা দেয়। অন্য দিকে আন্তর্জাতিকে বাজার থেকে যা কেনা হয় তার দামও বেশি পড়ে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ডলার সংকটের অজুহাত দেখিয়ে দাম আরও বাড়িয়ে দেন। তবে সব ধরনের খরচ বাড়লেও সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। গত কয়েক বছর ধরেই খরচের চাপে দিশেহারা অল্প আয়ের মানুষ। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে, ধার-দেনা করেও চলছে। এমন পরিস্থিতিতে, করদাতাদের ওপর কঠোর অবস্থান নিল এনবিআর।

তিন দেশে রপ্তানি হয় মামুনের মধু

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১২ এএম
তিন দেশে রপ্তানি হয় মামুনের মধু
খবরের কাগজ ফাইল ছবি

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার যুবক মামুন একসময় ছিলেন বেকার। চাকরির পেছনে দৌড়ে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন তিনি। ১৯৯৭ সালে বিসিক থেকে মৌবাক্সে মধু সংগ্রহের প্রশিক্ষণ নিয়ে মাত্র ২ হাজার ৬০০ টাকায় চারটি মৌবাক্স কিনে শুরু করেন মৌ চাষ। এই ছোট শুরুই তাকে নিয়ে আসে সাফল্যের পথে। 

মামুন এখন মধু মামুন নামে পরিচিত। তার খামারে এখন কয়েক শ মৌমাছির বাক্স। ধীরে ধীরে তিনি বাণিজ্যিকভাবে মৌচাষ শুরু করেন। তার মধু এখন অস্ট্রেলিয়া, স্পেন ও কোরিয়ায় রপ্তানি হচ্ছে। 

মামুনের খামারে এখন ২৫ জন কর্মী কাজ করছেন। তাদের মধ্যে কেউ মধু সংগ্রহ করেন, আবার কেউ বিক্রি করেন। এ খামার থেকে মধু সংগ্রহ করে অনেক যুবক তাদের ব্যবসা শুরু করেছেন।

মামুন জানান, মৌচাষের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে মধুর মান অক্ষুণ্ণ থাকে। 

সরিষা খেত থেকে মধু আহরণে জনপ্রিয়তা বাড়ছে। শুধু সরিষা নয়, লিচু ফুল, কালোজিরা ফুল থেকেও মধু সংগ্রহ হয় তার খামারে। মামুনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এই এলাকায় অনেকেই মৌ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা তাকে মৌ চাষে বিভিন্ন সহযোগিতা করেছেন। এখন তার খামারে ৩০০টি মৌবাক্স রয়েছে। এই মৌসুমে ৮-১০ লাখ টাকার মধু বিক্রির আশা করছেন।

পাইকারিতে নিম্নমুখী চালের বাজার

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০২ এএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৮ এএম
পাইকারিতে নিম্নমুখী চালের বাজার
পাইকারিতে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী পাইকারি বাজার থেকে। ছবি: মোহাম্মদ হানিফ

দেশে উৎপাদন ও দফায় দফায় আমদানি- সব মিলিয়ে সরবরাহ বাড়ায় চট্টগ্রামে চালের পাইকারি বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ছয় ধরনের চালে কেজিপ্রতি ১ থেকে ৫ টাকা কমেছে। তবে মোটা সেদ্ধ ও কাটারি আতপ চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এর প্রভাব খুচরা পর্যায়ে পড়েনি। দিন শেষে একজন ভোক্তাকে এক কেজি ভালোমানের চাল কিনতে গুনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। 

চট্টগ্রাম মহানগরের চাক্তাই ও পাহাড়তলীতে পাইকারি দরে বিক্রি হয় চাল। এই দুই পাইকারি বাজারে মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি মিনিকেট সেদ্ধ চালে ৫ টাকা, মিনিকেট আতপ চালে ১ টাকা, নাজিরশাইলে ১ টাকা, জিরাশাইলে ২ টাকা, পাইজাম সেদ্ধ চালে ২ টাকা ও বেতি আতপ চালে ৫ টাকা কমেছে।

এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি চাক্তাই ও পাহাড়তলী পাইকারি বাজারে প্রতি  কেজি মিনিকেট সেদ্ধ চাল ৬৪ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমান দর ৫৯ টাকায়। একই সময়ে কেজিপ্রতি ৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া মিনিকেট আতপ চাল বর্তমানে ৬৯ টাকা, কেজি ৮৪ টাকা বিক্রি হওয়া নাজিরশাইল বর্তমানে ৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া মাসখানেক আগে কেজিতে ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া জিরাশাইল বর্তমানে ৭৮ টাকা, কেজিতে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া পাইজাম সেদ্ধ চাল বর্তমানে ৫৮ টাকা ও কেজিতে ৬৪ টাকায় বিক্রি হওয়া বেতি আতপ চালের দাম ঠেকেছে ৫৯ টাকায়।

তবে মোটা সেদ্ধ ও কাটারি আতপ চাল মাসখানেক আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিকেজি সেদ্ধ চাল ৪৮ টাকা ও কাটারি আতপ চাল ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

অন্যদিকে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) হিসাবে, পাইকারিতে ছয় ধরনের চালে বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বর্তমানে বস্তাপ্রতি ২৫০ টাকা কমে মিনিকেট সেদ্ধ চাল ২ হাজার ৯৫০ টাকা, ৫০ টাকা কমে মিনিকেট আতপ চাল ৩ হাজার ৪৫০ টাকা, নাজিরশাইলে ৫০ টাকা কমে ৪ হাজার ১৫০ টাকা, জিরাশাইলে ১০০ টাকা কমে ৩ হাজার ৯০০ টাকা, পাইজাম সেদ্ধ চালে ১০০ টাকা কমে ২ হাজার ৯০০ টাকা ও বেতি আতপ চাল ২৫০ টাকা কমে ২ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

তাছাড়া বস্তাপ্রতি মোটা সেদ্ধ চাল ২ হাজার ৪০০ টাকা, কাটারি আতপ চাল ৪ হাজার ১০০ টাকা ও পাইজাম আতপ ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘বর্তমানে দেশে উৎপাদিত চাল রয়েছে। পাশাপাশি ভারত ও মায়ানমার থেকেও চাল এসেছে। সবমিলিয়ে চালের সরবরাহ বেড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- রমজান মাসে চালের চাহিদা তুলনামূলক কমে যায়। তাই পণ্যটির দর কমতে শুরু করেছে।’

এদিকে পাইকারি বাজারে সামান্য পরিমাণে দাম কমলেও এর প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে। বর্তমানে ভোক্তা পর্যায়ে ৭০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো চাল। বর্তমানে খুচরা দোকানে প্রতিকেজি স্বর্ণা সিদ্ধ ৭০ টাকা, পাইজাম আতপ ৭৫ টাকা, কাটারি আতপ ৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৮ টাকা, জিরাশাইল ৮২ টাকা, মিনিকেট আতপ ৭৫ টাকা ও মিনিকেট সিদ্ধ ৭৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নগরের উত্তর আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা মো. জয়নাল হক বলেন, ‘আমাদের দেশে উৎপাদিত চাল রয়েছে। ভারত, মায়ানমার থেকেও সরকার চাল আমদানি করছে। কিন্তু এর প্রভাব তো বাজারে পড়ছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে পুঁজি করে খুচরা ব্যবসায়ীরা চড়া দামে চাল বিক্রি করছেন। ভালোমানের এক কেজি চাল কিনতে গেলে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা খরচ করতে হয়।’ 

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন খবরের কাগজকে বলেন, ‘রমজান মাস যতই ঘনিয়ে আসছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা ততই দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন। কোথাও কোনো ধরনের তদারকি নেই। অথচ এখন থেকেই বাজার তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত ছিল। আমরা তো সব সময় এ ব্যাপারে বলে আসছি। কিন্তু জেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকারের কোনো পদক্ষেপ দেখছি না।’