ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

রিজার্ভ চুরির মামলা তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ আবারও পেছাল

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫০ পিএম
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১২ পিএম
তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ আবারও পেছাল
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার তদন্ত প্রতিবেদন মঙ্গলবারও আদালতে জমা পড়েনি। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগামী ১৭ এপ্রিল নতুন তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ তারিখ ধার্য করেন।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পুলিশের ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল।

২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। সুইফট কোডের মাধ্যমে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা এ রিজার্ভ চুরি করে। ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। পরে বিভিন্ন সময় ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়। তবে এখনো ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

রিজার্ভ চুরির ১ মাস ১০ দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপপরিচালক জোবায়ের বিন হুদা রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। মামলায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ৪-সহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন-২০০৬-এর ৫৪ ধারায় ও ৩৭৯ ধারার অভিযোগ আনা হয়। 

ভেজাল লাল চিনিতে বাজার সয়লাব

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৪১ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৫ এএম
ভেজাল লাল চিনিতে বাজার সয়লাব
লাল চিনি। ছবি: সংগৃহীত

রমজানে দেশি লাল চিনির চাহিদা বাড়ে। তবে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন তা সরবরাহ করতে পারছে না। এ সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অতিমুনাফার লোভে রং মিশিয়ে কথিত লাল চিনি বিক্রি করছে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি। রমজান মাসে ভোক্তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন এই লাল চিনি কিনতে। 

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ‘নকল ও ভেজাল চিনি বিক্রির জন্য উৎপাদকদের ধরার ব্যবস্থা করুক ভোক্তা অধিদপ্তর।’ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) বলছে, অতিমুনাফাখোররা একেক সময়ে একেক রকম রূপ ধারণ করছে। কখনো প্যাকেট হুবহু নকল করে, আবার কখনো বাংলাদেশ আখ শিল্প করপোরেশনসহ বিভিন্ন নামে বাজারে এই চিনি ছাড়ছে। স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ চিনি। 

এ ব্যাপারে বিএসএফআইসির বিপণন প্রধান ও মুখপাত্র মো. আকুল হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ আখ শিল্প করপোরেশন লিমিটেড নামে কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের নেই। অস্তিত্ববিহীন এই কোম্পানি লাল চিনি বিক্রি করতে পারে না।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. আকুল হোসেন বলেন, ‘১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৯টি উৎপাদনে আছে। আগে কম উৎপাদন হলেও চলতি মৌসুমে ৪০ হাজার টন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। দেশের মীনা বাজার, স্বপ্ন, আগোরা, আরএফএল বেস্টবাই সুপারশপে প্যাকেটজাত চিনি ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সারা দেশে ডিলারের মাধ্যমে (৫০ কেজি) বস্তার চিনি ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।’ 

সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক (পরিদর্শন ও তদন্ত) মাজহার উল হক খান বলেন, ‘দেশে লাল চিনি একমাত্র আমাদের চিনিকলের মাধ্যমে উৎপাদন। আমরা ছাড়া অন্য কারও বিক্রি করার অধিকার নেই। কাজেই কারা, কোথায়, রং মিশিয়ে লাল চিনি প্যাকেটজাত করে বিক্রি করছে তা ধরার জন্য ভোক্তা অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে চিনি দেওয়া হয়েছে। কারণ আমাদের কাছেও খবর এসেছে হুবহু প্যাকেট নকল করে বেশি দামে চিনি বিক্রি করছে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র। আইনে আমাদের বিচারিক ক্ষমতা নেই। বাজারে অভিযানও করতে পারছি না। এর আগেও বিভিন্ন কোম্পানি রং মিশিয়ে লাল চিনি বিক্রি করায় ভোক্তা অধিদপ্তর তাদের জরিমানা করেছে। এদের মধ্যে মাইশা নামেও একটি কোম্পানি রয়েছে।’ 

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর মতে, সারা দেশে বছরে চিনি লাগে ২০ লাখ টন। প্রতি মাসে গড়ে দেড় লাখ টন লাগে। রমজানে চাহিদা দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩ লাখ টনে পৌঁছে। রিফাইন করা বিভিন্ন কোম্পানির সাদা চিনি ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আর বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের লাল চিনি ১৪০ টাকা কেজি। 

রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে রং, মিশিয়ে লাল চিনিতে ভরে গেছে বিভিন্ন বাজার। কেউ সরকারের লাল চিনির মোড়কজাতের মতো করে ১৪০ টাকা কেজি, কেউ বা ১৭০ টাকা দরে বিক্রি করছে। কারওয়ান বাজারের হাজী মিজানুর স্টোরের বিক্রয়কর্মী মো. মিজানুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘লাল চিনি আছে, ১৪০ টাকা কেজি।’ কিন্তু এটাতো সরকারি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মেসার্স রাহা এন্টারপ্রাইজের মেমো দেখিয়ে বলেন, ‘আমাদের যারা এই চিনি দিয়েছে কিছু বলার থাকলে তাদের বলেন। তারা দেশি লাল চিনি বলে ১৩৮ টাকা কেজি রেট ধরেছে।’

তার কথার সত্যতা যাচাই করতে কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় মেসার্স রাহা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মো. জুয়েল হোসেনের কাছে গেলে তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি যে লাল চিনি বিক্রি করছি, সেটা চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের; যার এমআরপি ১৪০ টাকা। বাজারে অনেকে রং মেশানো লাল চিনি বিক্রি করলেও আমি করি না। কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার মেমো ব্যবহার করে এভাবে অস্তিত্ববিহীন বাংলাদেশ আখ শিল্প করপোরেশনের নামে চিনি বিক্রি করছে।’ 

একই মার্কেটের ২৩৪ নম্বর দোকান মেসার্স পলাশ এন্টারপ্রাইজের জসিম উদ্দিন বলেন, ‘খোলা লাল চিনি ১৪৫ টাকা কেজি।’ একটু দূরে মেসার্স মাজেদা স্টোরের বিক্রয়কর্মী নুরে আলম বলেন, ‘লাল চিনি আছে- ১৭০ টাকা কেজি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি স্বীকার করে বলেন, ‘এটা রং মেশানো লাল চিনি। অরিজিনালটা পাওয়া যায় না।’ মেমো দেখতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা (সরবরাহকারী) মেমো দেয় না। বেশি লাভ করার জন্যই তারা এ কাজ করছে। তাদের ধরে শাস্তি দেওয়া হোক এটা আমরাও চাই।’

এ সময় টুটুল মিয়া নামে এক ভোক্তা বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের দুর্বলতার কারণেই তারা এভাবে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। চাহিদা মতো দিতে না পারায় ভেজালকারীরা রং মিশিয়ে লাল চিনির নামে প্রতারণা করছে।’ শুধু এ বাজারেই নয়, টাউন হল বাজারসহ অন্য বাজারেও দেখা গেছে একই চিত্র। এভাবে বেশি দামে কথিত লাল চিনি বিক্রি করলেও অধিকাংশ বিক্রেতা দোকানের মেমো দেখাতে পারেননি। রমজান মাস কেন্দ্র করে বাজারে ভরে গেছে কথিত লাল চিনিতে। 

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ মোহাম্মদ আলীম আখতার খান খবরের কাগজকে বলেন, ‘চিনির দাম বাড়ার কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর তৎপরতা বেড়েছে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাজারে অভিযান চালানো হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের কিছু লোকের যোগসাজশেই প্যাকেট হুবহু নকল করা হচ্ছে। না হলে প্যাকেটের চারিদিকে এত সেফটি দেওয়ার পরও কীভাবে নকল হয়। যেহেতু স্বাস্থ্যগত ব্যাপার জড়িত, তাই এ ইস্যুতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষেরও উচিত হস্তক্ষেপ করা’

এখনো উত্তাপ বাজারে

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০৫ পিএম
এখনো উত্তাপ বাজারে
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বেগুন, শসা, লেবুসহ অন্যান্য পণ্যে ঠাসা থাকলেও কমছে না দাম। রমজানের মাঝামাঝি সময় এলেও ভালো মানের বেগুন, শসার কেজি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। বড় লেবুর হালিও সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে আছে। মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাড়তি দামে খেজুর বিক্রি হচ্ছে। তবে কমেছে মাল্টা ও তরমুজের দাম। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়লেও খোলা তেল মিলছে না। 

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সেঞ্চুরির ওপরেই বেগুন-শসা-লেবু 

আগে কম দামে বিক্রি হলেও রমজান উপলক্ষে বেড়ে গেছে বেগুন, শসা, লেবুর দাম। দ্বাদশ রমজান চলে গেলেও কমেনি এসব পণ্যের দাম। অসাধু ব্যবসায়ীরা মিলে রাজধানীতে বেশি দামে এসব পণ্য বিক্রি করছে।

গতকালও বিভিন্ন বাজারে লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে সবুজ বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বড় লেবুর হালি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ছোট লেবু ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় মিললেও দেশি জাতের শসার দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও টমেটো ৩০ থেকে ৫০ টাকা। করলা, পটোল ঢ্যাঁড়শের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তবে আগের মতোই কাঁচা মরিচের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, দেশি আদা ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, আমদানি করা আদা ২২০, দেশি রসুন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাড়তি দামেই খেজুর বিক্রি

এবার প্রচুর খেজুর আমদানি হলেও কমেনি দাম। কারওয়ান বাজারের বিক্রমপুর ফল বিতানের শরিফুল ইসলামসহ অন্য বাজারের ফল বিক্রেতারা জানান, ‘রমজান শুরুর আগেই সব খেজুরের দাম বেড়েছে। গতকালও মেডজুল খেজুর ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি, জাহিদি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, মরিয়ম ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০, তিউনিসিয়ার খেজুর ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা।

অন্যদিকে ফলের মধ্যে মালটার কেজি ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা, আপেল ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে তরমুজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

মুরগির দাম বাড়তি

মুরগি বিক্রেতারা বলছেন, রমজানে চাহিদা কমে গেলেও সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গতকাল বিভিন্ন বাজারে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং ২৭০ টাকার সোনালি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

টাউন হল বাজারের সোনালি ব্রয়লার হাউসের শাকিল মিয়া ও কারওয়ান বাজারের জননী ব্রয়লার হাউসের কবির হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে মুরগির দাম আবার বেড়েছে। ব্রয়লার ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।’ তবে আগের মতোই দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকা ডিমের ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

কমেনি চালের দাম

রমজানে চালের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিক্রিও কমে গেছে। তার পরও দাম কমেনি। আগের মতোই চড়া দামে মিনিকেট ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, আটাশ ৬৫ টাকা ও মোটা চাল ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। 

তবে বিভিন্ন পণ্যে উত্তাপ ছড়ালেও একটু স্বস্তির বার্তা দিয়েছে চিনি, ছোলা ও ডাল। গতকাল পর্যন্ত ছোলা, চিনি, খেসারি ও বুটের ডালের দাম বাড়েনি। বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আগের মতোই ছোলা ১০০ থেকে ১১০ টাকা। ছোলার ডাল ১২০ টাকা কেজি, খেসারির ডাল ১১০, চিনি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি লাল চিনি ১৪০ টাকা কেজি হলেও সহজে মিলছে না। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী রং মিশিয়ে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন।

এখনো ঠিকমতো মেলে না খোলা তেল

গত বছরের ৯ ডিসেম্বর প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়ানোর পরও চলে লুকোচুরি খেলা। প্রায় দুই মাস থেকে সয়াবিন ‘আছে-নেই’ চলতে থাকার পর কয়েক দিন থেকে সরবরাহ বেড়েছে বোতলজাত তেলের। নির্ধারিত ১৭৫ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো অধিকাংশ দোকানে খোলা তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কোনো দোকানে পাওয়া গেলেও নির্ধারিত ১৫৭ টাকা কেজি মেলে না। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। 

কারওয়ান বাজারের ইউসুফ জেনারেল স্টোরের মো. ইউসুফ আলীসহ অন্য খুচরা বিক্রেতারা বলেন, ‘মিল থেকে তেল না দেওয়ায় কয়েক মাস হলো সংকট চলছে। তবে সরকার চাপাচাপি করার কারণে পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। অধিকাংশ কোম্পানির বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে। তবে খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া যায় না। এই বাজারের রব স্টোরের আব্দুর রব বলেন, ‘১৭০ টাকার ওপরে কেনা। তাহলে কীভাবে ১৫৭ টাকা লিটার বিক্রি করি।’ 

হয়রানি বন্ধ হলে কর দিতে প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১০:০৫ পিএম
হয়রানি বন্ধ হলে কর দিতে প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা
এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য আগামী ২০৩১ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি চেয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। এর বাইরে করহার কমানোসহ বিভিন্ন নীতিসহায়তা চেয়েছে ডজনখানেক ব্যবসাসংগঠন। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতি কমালে কর দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীতে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে এনবিআর আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতারা এসব কথা বলেন। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

অনুষ্ঠানে বেসিসের কো-চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০২৬ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি রয়েছে। আইসিটি বিভাগ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশের জন্য ২০৩১ সাল পর্যন্ত রোডম্যাপ করেছে। দেশের প্রযুক্তি খাতের বিকাশের জন্য ওই রোডম্যাপের সঙ্গে মিলিয়ে আমরাও ওই সময় পর্যন্ত কর অব্যাহতির দাবি জানাচ্ছি।’ 

একই সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে ওঠার আগে ক্যাশলেস ট্রানজেকশনের শর্ত শিথিল করা, দেশি সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তির ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার, সফটওয়্যার রপ্তানিতে প্রণোদনা ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বেসিস।

এদিকে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধ করতে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহদাত হোসেন সোহেল বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আপনি দুর্নীতি বন্ধ করুন। ব্যবসায়ীরা আপনাদের সবকিছু দেবে।’

তিনি বলেন, ‘যাদের বন্ড নাই, তারা যখন রপ্তানিতে যায়, তখন চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জায়গায় অনেক কিছু হয়। আমার কাছে প্রতিটি ভয়েস মেসেজ আছে। আপনাকে পাঠিয়েছিলাম। এখনো বন্ধ হয় নাই। আপনার কাছে আবারও অনুরোধ করব, আপনার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা অনেক শক্তিশালী। আপনার মেম্বার সাহেব আপনার থেকেও শক্তিশালী।’ 

শাহদাত হোসেন সোহেল বলেন, ‘পরশু দিন একটা ফোন এসেছে। আমাকে দেখা করতে বলল। আমি যখন বললাম, আমি এনবিআর চেয়ারম্যানসহ অনেককেই চিনি, তখন বলে জি স্যার, জি স্যার। দিস ইজ দ্য সিনারিও।’

এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আপনাদের অভিযোগ জানাতে হবে। আপনি না দিলে সে নেবে কোথা থেকে? আপনারা জানান, দুদক ধরতে পারে, এনবিআরও ধরতে পারে।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘ট্রানজেকশন এখন ক্যামেরা দিয়ে রেকর্ড করে ফেলা যায়। কথোপকথন রেকর্ড করে ফেলা যায়। শত শত কোটি টাকা খরচ করে অভিযোগ জানানো অনলাইন সিস্টেম চালু করেছি। এটা আপনাদের ব্যবহার করতে হবে।’

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে বাংলাদেশ প্ল্যাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কে এম ইকবাল বলেন, ‘কদিন আগে পানগাঁওয়ে দুটি কনটেইনার আটকানো হলো আমান প্ল্যাস্টিকের। দুটির ডিউটি ৭ কোটি টাকা দাবি করা হয়। সরকার পরিবর্তনের পর সেই কনটেইনার ছেলেটি কোটি টাকা দিয়ে ছাড়িয়েছে।’

বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন উৎসে কর্তনের হার হ্রাস করা, নগদ প্রণোদনা থেকে উৎসে কর কর্তনের হার কমানোর প্রস্তাব দেয়।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ভারতীয় সুতার প্রভাবে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ৭-৮ কোটি টাকার সুতা অবিক্রীত রয়েছে। আমরা মুনাফা করতে পারছি না।’

বিটিএমএর আরেক পরিচালক শহীদ আলম বলেন, ‘তাহলে কি আমরা কারখানা বন্ধ করে দেব? আমরা চোরাচালানের জন্য পণ্য বিক্রি করতে পারছি না।’

ভারতীয় সুতা এত কম দামে আসে কীভাবে, প্রশ্ন তুলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত কয়েক মাসে আমরা অনেক কর অব্যাহতি বাতিল করেছি। সেসব অব্যাহতি এ বছরের জুনে শেষ হবে। এরপর আর  নতুন করে কর অব্যাহতি দেওয়া হবে না।’

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকারের নীতিসহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)। পাশাপাশি আসন্ন বাজেটে রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর অর্ধেক কমানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

এ বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা আগামী ৫ বছরের জন্য উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০ দশমিক ৫০ শতাংশ করা, ব্যক্তিপর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করা, কোম্পানির ক্ষেত্রে সঞ্চয়ী আমানত, স্থায়ী আমানত ইত্যাদির সুদ বা মুনাফার ওপর উৎসে কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।’

বাজেট আলোচনায় প্লাস্টিকের খেলনা প্রস্তুতে ২৪ ধরনের কাঁচামাল আমদানিতে করছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)। আমদানি করা ১৪টি কাঁচামালে করছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি। রপ্তানির উদ্দেশ্যে উৎপাদিত পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাঁচামাল বাবদ আরোপযোগ্য শুল্ক ও করের বিপরীতে শতভাগ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে বন্ড সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। 

সভায় বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভারসন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এলপিজি অটোগ্যাস সেক্টরকে ট্যাক্স হলিডে সুবিধা প্রদান, এলপিজি কনভারসন কিট, সিলিন্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে। পাশাপাশি ভোক্তাপর্যায়ে অটোগ্যাসের বিক্রিমূল্যের সঙ্গে সংযোজিত মূসক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে।

বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা প্রদান, নগদ সহায়তার ওপর ১০ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সভাপতি তারিকুল ইসলাম জহির। বাংলাদেশ বিস্কুট, ব্রেড ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতি কেক, বিস্কুট ও কনফেকশনারি পণ্যে শুল্ক অব্যাহতি চেয়েছে।

দি বাংলাদেশ জুয়েলারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘হীরা আমদানি-রপ্তানিতে মূসকের ওপর ২০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান ও স্বর্ণের গহনার ক্ষেত্রে তিন বছরের জন্য মূসকের ওপর ৫০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদানের প্রস্তাব করছি।’ 

এ ছাড়া বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে এআইটি ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে।

ফল আমদানিতে অগ্রিম কর কমল

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম
ফল আমদানিতে অগ্রিম কর কমল
ফলের দোকান। ছবি: খবরের কাগজ

আপেল, আঙুর, নাশপাতি, কমলা, মাল্টাসহ তাজা ফল আমদানিতে অগ্রিম কর কমানো হয়েছে। এখন থেকে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর দিলেই হবে। এত দিন ১০ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হতো।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)  এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। অবিলম্বে তা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যেসব ফল আমদানিতে অগ্রিম কর কমানো হয়েছে সেগুলো হলো- তাজা বা শুকনা কমলালেবু, আঙুর, আপেল, নাশপাতি ও লেবুজাতীয় ফল। গত ৯ জানুয়ারি আমদানি করা ফলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছিল। এতে বাজারে আমদানি করা বিদেশি ফলের দাম বেড়ে যায়।

বর্তমানে ফল আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর, ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ৫ শতাংশ আগাম কর রয়েছে। 

মোটামুটি যত ধরনের শুল্ক-কর আছে, সবই বসে ফলের ওপর। সব মিলিয়ে এত দিন শুল্ক-করভার ছিল ১৩৬ শতাংশ। ১০০ টাকার ফল আমদানি করলে ১৩৬ টাকা কর দিতে হতো। অগ্রিম কর কমানোয় এখন করভার কিছুটা কমবে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, প্রচলিত আমদানি পণ্যের মধ্যে গাড়ি ও মদ-সিগারেটের পর তাজা ফল আমদানিতেই সবচেয়ে বেশি শুল্ক-কর দিতে হয়।

বর্তমানে ৩৮ ধরনের ফল আমদানি করা হয়। এনবিআরের হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ফল আমদানি হয়েছে। এখান থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে ৫ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।

দাউদকান্দিতে ভুট্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৩১ এএম
দাউদকান্দিতে ভুট্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ডাকখোলা গ্রামে ভুট্টা রোদে শুকাচ্ছেন গ্রামের নারী-পুরুষ। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই কৃষকরা আলু, সরিষা, গমের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে মনোযোগ দিয়েছেন। ফলে মাঠজুড়ে ভুট্টার সোনালি শিষ বাতাসে দুলছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ভুট্টার চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমি। কিন্তু চাষ হয়েছে ১০ হেক্টর বেশি জমিতে। আলু ও সরিষার আবাদ বেশি হলেও ভুট্টার উৎপাদন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা জমিতে আইল বেঁধে পানি সেচ দিচ্ছেন। ইউরিয়া সার ছিটিয়ে গাছের পুষ্টি নিশ্চিত করছেন। প্রতিটি গাছে ইতোমধ্যে ফল ধরতে শুরু করেছে। কৃষকরা জানান, প্রথমে ২০ কেজি পটাস, ২৫ কেজি ফসফেট, ১০ কেজি জিপ সার, ১ কেজি বোরন, ১ কেজি দানাদার ও ১ কেজি সালফার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে জমি তৈরি করা হয়। এরপর বিঘাপ্রতি ৩ কেজি ভুট্টার বীজ বপন করা হয়। এক মাস পর আইল বেঁধে বিঘাপ্রতি ২৫ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি ডেপ ও ২ কেজি থিওভিট ছিটিয়ে পানি সেচ দেওয়া হয়। ৯০ দিনের মধ্যে ফসল কাটার উপযোগী হয়।

ভুট্টার চাষে বিঘাপ্রতি কৃষকের খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘায় ৪০-৫০ মণ ভুট্টা উৎপাদন হয়। গত বছর কৃষকরা প্রতি মণ ভুট্টার দাম পেয়েছিলেন ৭০০-৮০০ টাকা। এবারও ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তারা।

নৈইয়ার গ্রামের ভুট্টা চাষি নারায়ণ চন্দ্র বণিক বলেন, ‘গত বছর তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলাম, দামও ভালো পেয়েছি। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে চাষ করছি। আশা করছি, ভালো ফলন ও দাম পাব।’

কদমতলী গ্রামের চাষি বাদল মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর দুই বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করি। এবারও করেছি, দেখি কেমন হয়? অল্প জমি, তাই নিজেই সব কাজ করি। এতে খরচ কম হয়। আশা করছি, ভালো দাম পাব।’

দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, কৃষকদের সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে ৯০০ চাষিকে ২ কেজি করে হাইব্রিড ভুট্টা বীজ ও ২০০ টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষকদের পাশে আছি। সরকারিভাবে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্পার ফলন হবে।’

কৃষকরা আশাবাদী, এবার ভালো উৎপাদন হবে। দামও ভালো পেলে তাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।