ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

নগদে ২৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে দুদক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
নগদে ২৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে দুদক
নগদ

ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সহকারী পরিচালক রুহুল হক ও তানজির আহমেদের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল নগদের অফিসে অভিযান চালায়। অভিযানের পর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা। 

দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইলে অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ পায় দুদক। অভিযোগে বলা হয়, নগদ বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি করে বেশ কিছু বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছে। এ অভিযোগ পাওয়ার পর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বুধবার একটি অভিযান চালানো হয়। 

অভিযানের সময় নগদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য এবং রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদকের অভিযান পরিচালনাকারী দল। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, নগদ প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি অনিয়মিত ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন করেছে। এ ছাড়া ট্রাস্ট অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নগদের মূল অ্যাকাউন্টের হিসাবের গরমিল পাওয়া গেছে। অভিযোগের বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে যাচাইয়ের জন্য দুদক কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট সব নথি সংগ্রহ করেন। সংগৃহীত সব রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

এ বিষয়ে নগদের প্রশাসক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পাচার এবং ৬০০ কোটি টাকার ই-মানিসংক্রান্ত অনিয়ম পাওয়া গেছে।

এখনো উত্তাপ বাজারে

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০৫ পিএম
এখনো উত্তাপ বাজারে
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বেগুন, শসা, লেবুসহ অন্যান্য পণ্যে ঠাসা থাকলেও কমছে না দাম। রমজানের মাঝামাঝি সময় এলেও ভালো মানের বেগুন, শসার কেজি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। বড় লেবুর হালিও সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে আছে। মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাড়তি দামে খেজুর বিক্রি হচ্ছে। তবে কমেছে মাল্টা ও তরমুজের দাম। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়লেও খোলা তেল মিলছে না। 

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সেঞ্চুরির ওপরেই বেগুন-শসা-লেবু 

আগে কম দামে বিক্রি হলেও রমজান উপলক্ষে বেড়ে গেছে বেগুন, শসা, লেবুর দাম। দ্বাদশ রমজান চলে গেলেও কমেনি এসব পণ্যের দাম। অসাধু ব্যবসায়ীরা মিলে রাজধানীতে বেশি দামে এসব পণ্য বিক্রি করছে।

গতকালও বিভিন্ন বাজারে লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে সবুজ বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বড় লেবুর হালি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ছোট লেবু ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় মিললেও দেশি জাতের শসার দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও টমেটো ৩০ থেকে ৫০ টাকা। করলা, পটোল ঢ্যাঁড়শের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তবে আগের মতোই কাঁচা মরিচের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, দেশি আদা ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, আমদানি করা আদা ২২০, দেশি রসুন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাড়তি দামেই খেজুর বিক্রি

এবার প্রচুর খেজুর আমদানি হলেও কমেনি দাম। কারওয়ান বাজারের বিক্রমপুর ফল বিতানের শরিফুল ইসলামসহ অন্য বাজারের ফল বিক্রেতারা জানান, ‘রমজান শুরুর আগেই সব খেজুরের দাম বেড়েছে। গতকালও মেডজুল খেজুর ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি, জাহিদি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, মরিয়ম ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০, তিউনিসিয়ার খেজুর ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা।

অন্যদিকে ফলের মধ্যে মালটার কেজি ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা, আপেল ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে তরমুজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

মুরগির দাম বাড়তি

মুরগি বিক্রেতারা বলছেন, রমজানে চাহিদা কমে গেলেও সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গতকাল বিভিন্ন বাজারে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং ২৭০ টাকার সোনালি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

টাউন হল বাজারের সোনালি ব্রয়লার হাউসের শাকিল মিয়া ও কারওয়ান বাজারের জননী ব্রয়লার হাউসের কবির হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে মুরগির দাম আবার বেড়েছে। ব্রয়লার ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।’ তবে আগের মতোই দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকা ডিমের ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

কমেনি চালের দাম

রমজানে চালের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিক্রিও কমে গেছে। তার পরও দাম কমেনি। আগের মতোই চড়া দামে মিনিকেট ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, আটাশ ৬৫ টাকা ও মোটা চাল ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। 

তবে বিভিন্ন পণ্যে উত্তাপ ছড়ালেও একটু স্বস্তির বার্তা দিয়েছে চিনি, ছোলা ও ডাল। গতকাল পর্যন্ত ছোলা, চিনি, খেসারি ও বুটের ডালের দাম বাড়েনি। বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আগের মতোই ছোলা ১০০ থেকে ১১০ টাকা। ছোলার ডাল ১২০ টাকা কেজি, খেসারির ডাল ১১০, চিনি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি লাল চিনি ১৪০ টাকা কেজি হলেও সহজে মিলছে না। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী রং মিশিয়ে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন।

এখনো ঠিকমতো মেলে না খোলা তেল

গত বছরের ৯ ডিসেম্বর প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়ানোর পরও চলে লুকোচুরি খেলা। প্রায় দুই মাস থেকে সয়াবিন ‘আছে-নেই’ চলতে থাকার পর কয়েক দিন থেকে সরবরাহ বেড়েছে বোতলজাত তেলের। নির্ধারিত ১৭৫ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো অধিকাংশ দোকানে খোলা তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কোনো দোকানে পাওয়া গেলেও নির্ধারিত ১৫৭ টাকা কেজি মেলে না। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। 

কারওয়ান বাজারের ইউসুফ জেনারেল স্টোরের মো. ইউসুফ আলীসহ অন্য খুচরা বিক্রেতারা বলেন, ‘মিল থেকে তেল না দেওয়ায় কয়েক মাস হলো সংকট চলছে। তবে সরকার চাপাচাপি করার কারণে পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। অধিকাংশ কোম্পানির বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে। তবে খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া যায় না। এই বাজারের রব স্টোরের আব্দুর রব বলেন, ‘১৭০ টাকার ওপরে কেনা। তাহলে কীভাবে ১৫৭ টাকা লিটার বিক্রি করি।’ 

হয়রানি বন্ধ হলে কর দিতে প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১০:০৫ পিএম
হয়রানি বন্ধ হলে কর দিতে প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা
এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য আগামী ২০৩১ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি চেয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। এর বাইরে করহার কমানোসহ বিভিন্ন নীতিসহায়তা চেয়েছে ডজনখানেক ব্যবসাসংগঠন। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতি কমালে কর দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীতে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে এনবিআর আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতারা এসব কথা বলেন। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

অনুষ্ঠানে বেসিসের কো-চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০২৬ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি রয়েছে। আইসিটি বিভাগ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশের জন্য ২০৩১ সাল পর্যন্ত রোডম্যাপ করেছে। দেশের প্রযুক্তি খাতের বিকাশের জন্য ওই রোডম্যাপের সঙ্গে মিলিয়ে আমরাও ওই সময় পর্যন্ত কর অব্যাহতির দাবি জানাচ্ছি।’ 

একই সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে ওঠার আগে ক্যাশলেস ট্রানজেকশনের শর্ত শিথিল করা, দেশি সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তির ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার, সফটওয়্যার রপ্তানিতে প্রণোদনা ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বেসিস।

এদিকে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধ করতে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহদাত হোসেন সোহেল বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আপনি দুর্নীতি বন্ধ করুন। ব্যবসায়ীরা আপনাদের সবকিছু দেবে।’

তিনি বলেন, ‘যাদের বন্ড নাই, তারা যখন রপ্তানিতে যায়, তখন চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জায়গায় অনেক কিছু হয়। আমার কাছে প্রতিটি ভয়েস মেসেজ আছে। আপনাকে পাঠিয়েছিলাম। এখনো বন্ধ হয় নাই। আপনার কাছে আবারও অনুরোধ করব, আপনার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা অনেক শক্তিশালী। আপনার মেম্বার সাহেব আপনার থেকেও শক্তিশালী।’ 

শাহদাত হোসেন সোহেল বলেন, ‘পরশু দিন একটা ফোন এসেছে। আমাকে দেখা করতে বলল। আমি যখন বললাম, আমি এনবিআর চেয়ারম্যানসহ অনেককেই চিনি, তখন বলে জি স্যার, জি স্যার। দিস ইজ দ্য সিনারিও।’

এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আপনাদের অভিযোগ জানাতে হবে। আপনি না দিলে সে নেবে কোথা থেকে? আপনারা জানান, দুদক ধরতে পারে, এনবিআরও ধরতে পারে।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘ট্রানজেকশন এখন ক্যামেরা দিয়ে রেকর্ড করে ফেলা যায়। কথোপকথন রেকর্ড করে ফেলা যায়। শত শত কোটি টাকা খরচ করে অভিযোগ জানানো অনলাইন সিস্টেম চালু করেছি। এটা আপনাদের ব্যবহার করতে হবে।’

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে বাংলাদেশ প্ল্যাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কে এম ইকবাল বলেন, ‘কদিন আগে পানগাঁওয়ে দুটি কনটেইনার আটকানো হলো আমান প্ল্যাস্টিকের। দুটির ডিউটি ৭ কোটি টাকা দাবি করা হয়। সরকার পরিবর্তনের পর সেই কনটেইনার ছেলেটি কোটি টাকা দিয়ে ছাড়িয়েছে।’

বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন উৎসে কর্তনের হার হ্রাস করা, নগদ প্রণোদনা থেকে উৎসে কর কর্তনের হার কমানোর প্রস্তাব দেয়।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ভারতীয় সুতার প্রভাবে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ৭-৮ কোটি টাকার সুতা অবিক্রীত রয়েছে। আমরা মুনাফা করতে পারছি না।’

বিটিএমএর আরেক পরিচালক শহীদ আলম বলেন, ‘তাহলে কি আমরা কারখানা বন্ধ করে দেব? আমরা চোরাচালানের জন্য পণ্য বিক্রি করতে পারছি না।’

ভারতীয় সুতা এত কম দামে আসে কীভাবে, প্রশ্ন তুলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত কয়েক মাসে আমরা অনেক কর অব্যাহতি বাতিল করেছি। সেসব অব্যাহতি এ বছরের জুনে শেষ হবে। এরপর আর  নতুন করে কর অব্যাহতি দেওয়া হবে না।’

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকারের নীতিসহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)। পাশাপাশি আসন্ন বাজেটে রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর অর্ধেক কমানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

এ বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা আগামী ৫ বছরের জন্য উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০ দশমিক ৫০ শতাংশ করা, ব্যক্তিপর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করা, কোম্পানির ক্ষেত্রে সঞ্চয়ী আমানত, স্থায়ী আমানত ইত্যাদির সুদ বা মুনাফার ওপর উৎসে কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।’

বাজেট আলোচনায় প্লাস্টিকের খেলনা প্রস্তুতে ২৪ ধরনের কাঁচামাল আমদানিতে করছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)। আমদানি করা ১৪টি কাঁচামালে করছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি। রপ্তানির উদ্দেশ্যে উৎপাদিত পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাঁচামাল বাবদ আরোপযোগ্য শুল্ক ও করের বিপরীতে শতভাগ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে বন্ড সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। 

সভায় বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভারসন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এলপিজি অটোগ্যাস সেক্টরকে ট্যাক্স হলিডে সুবিধা প্রদান, এলপিজি কনভারসন কিট, সিলিন্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে। পাশাপাশি ভোক্তাপর্যায়ে অটোগ্যাসের বিক্রিমূল্যের সঙ্গে সংযোজিত মূসক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে।

বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা প্রদান, নগদ সহায়তার ওপর ১০ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সভাপতি তারিকুল ইসলাম জহির। বাংলাদেশ বিস্কুট, ব্রেড ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতি কেক, বিস্কুট ও কনফেকশনারি পণ্যে শুল্ক অব্যাহতি চেয়েছে।

দি বাংলাদেশ জুয়েলারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘হীরা আমদানি-রপ্তানিতে মূসকের ওপর ২০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান ও স্বর্ণের গহনার ক্ষেত্রে তিন বছরের জন্য মূসকের ওপর ৫০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদানের প্রস্তাব করছি।’ 

এ ছাড়া বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে এআইটি ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে।

ফল আমদানিতে অগ্রিম কর কমল

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম
ফল আমদানিতে অগ্রিম কর কমল
ফলের দোকান। ছবি: খবরের কাগজ

আপেল, আঙুর, নাশপাতি, কমলা, মাল্টাসহ তাজা ফল আমদানিতে অগ্রিম কর কমানো হয়েছে। এখন থেকে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর দিলেই হবে। এত দিন ১০ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হতো।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)  এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। অবিলম্বে তা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যেসব ফল আমদানিতে অগ্রিম কর কমানো হয়েছে সেগুলো হলো- তাজা বা শুকনা কমলালেবু, আঙুর, আপেল, নাশপাতি ও লেবুজাতীয় ফল। গত ৯ জানুয়ারি আমদানি করা ফলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছিল। এতে বাজারে আমদানি করা বিদেশি ফলের দাম বেড়ে যায়।

বর্তমানে ফল আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর, ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ৫ শতাংশ আগাম কর রয়েছে। 

মোটামুটি যত ধরনের শুল্ক-কর আছে, সবই বসে ফলের ওপর। সব মিলিয়ে এত দিন শুল্ক-করভার ছিল ১৩৬ শতাংশ। ১০০ টাকার ফল আমদানি করলে ১৩৬ টাকা কর দিতে হতো। অগ্রিম কর কমানোয় এখন করভার কিছুটা কমবে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, প্রচলিত আমদানি পণ্যের মধ্যে গাড়ি ও মদ-সিগারেটের পর তাজা ফল আমদানিতেই সবচেয়ে বেশি শুল্ক-কর দিতে হয়।

বর্তমানে ৩৮ ধরনের ফল আমদানি করা হয়। এনবিআরের হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ফল আমদানি হয়েছে। এখান থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে ৫ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।

দাউদকান্দিতে ভুট্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৩১ এএম
দাউদকান্দিতে ভুট্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ডাকখোলা গ্রামে ভুট্টা রোদে শুকাচ্ছেন গ্রামের নারী-পুরুষ। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই কৃষকরা আলু, সরিষা, গমের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে মনোযোগ দিয়েছেন। ফলে মাঠজুড়ে ভুট্টার সোনালি শিষ বাতাসে দুলছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ভুট্টার চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমি। কিন্তু চাষ হয়েছে ১০ হেক্টর বেশি জমিতে। আলু ও সরিষার আবাদ বেশি হলেও ভুট্টার উৎপাদন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা জমিতে আইল বেঁধে পানি সেচ দিচ্ছেন। ইউরিয়া সার ছিটিয়ে গাছের পুষ্টি নিশ্চিত করছেন। প্রতিটি গাছে ইতোমধ্যে ফল ধরতে শুরু করেছে। কৃষকরা জানান, প্রথমে ২০ কেজি পটাস, ২৫ কেজি ফসফেট, ১০ কেজি জিপ সার, ১ কেজি বোরন, ১ কেজি দানাদার ও ১ কেজি সালফার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে জমি তৈরি করা হয়। এরপর বিঘাপ্রতি ৩ কেজি ভুট্টার বীজ বপন করা হয়। এক মাস পর আইল বেঁধে বিঘাপ্রতি ২৫ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি ডেপ ও ২ কেজি থিওভিট ছিটিয়ে পানি সেচ দেওয়া হয়। ৯০ দিনের মধ্যে ফসল কাটার উপযোগী হয়।

ভুট্টার চাষে বিঘাপ্রতি কৃষকের খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘায় ৪০-৫০ মণ ভুট্টা উৎপাদন হয়। গত বছর কৃষকরা প্রতি মণ ভুট্টার দাম পেয়েছিলেন ৭০০-৮০০ টাকা। এবারও ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তারা।

নৈইয়ার গ্রামের ভুট্টা চাষি নারায়ণ চন্দ্র বণিক বলেন, ‘গত বছর তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলাম, দামও ভালো পেয়েছি। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে চাষ করছি। আশা করছি, ভালো ফলন ও দাম পাব।’

কদমতলী গ্রামের চাষি বাদল মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর দুই বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করি। এবারও করেছি, দেখি কেমন হয়? অল্প জমি, তাই নিজেই সব কাজ করি। এতে খরচ কম হয়। আশা করছি, ভালো দাম পাব।’

দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, কৃষকদের সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে ৯০০ চাষিকে ২ কেজি করে হাইব্রিড ভুট্টা বীজ ও ২০০ টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষকদের পাশে আছি। সরকারিভাবে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্পার ফলন হবে।’

কৃষকরা আশাবাদী, এবার ভালো উৎপাদন হবে। দামও ভালো পেলে তাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।

কুষ্টিয়ায় জিকে সেচ প্রকল্পে মিলছে পানি, স্বস্তিতে কৃষক

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:২৫ এএম
আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৬ এএম
কুষ্টিয়ায় জিকে সেচ প্রকল্পে মিলছে পানি, স্বস্তিতে কৃষক
গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় কৃষকদের জন্য এসেছে স্বস্তির খবর। কয়েক বছর ধরে প্রয়োজনের সময়ে কাঙ্ক্ষিত সেচসুবিধা না পেলেও এবার মৌসুমের শুরুতেই গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পে মিলছে পানি। ফলে কুষ্টিয়া ও পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

জানা গেছে, জেলার অন্তত ১১ হাজার হেক্টর জমি এবার জিকে প্রকল্পের পানিতে সেচসুবিধা পাবে। বোরো আবাদের খরচ বিঘাপ্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা কমবে। এতে কৃষকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর জানিয়েছে, মাসখানেক ক্যানেলের পানি পেলেই কৃষকদের সেচ খরচ অনেকটা কমে আসবে। যদি পানি মৌসুমজুড়ে থাকে, তাহলে ব্যয়ের পরিমাণ আরও কমবে। শুধু ধান নয়, পেঁয়াজসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনেও এ পানি কাজে আসবে।

গত কয়েক বছর পদ্মায় পানিসংকট ও জিকে প্রকল্পের পাম্প নষ্ট থাকায় কৃষকরা ঠিকমতো পানি পাননি। গত বছর মৌসুমের শেষভাগে পানি এলেও তাতে কৃষকের তেমন লাভ হয়নি। এবার আগেভাগেই পানি পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তারা।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের কৃষক সুমন আলী বলেন, ‘আমরা ধরেই নিয়েছিলাম জিকে প্রকল্পের পানি পাব না। ওই হিসাব করে চারা রোপণ করেছি। এখন জিকের পানি আমাদের জন্য বাড়তি বোনাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

অন্য কৃষকরা জানান, যেসব জমিতে ক্যানেলের পানি সরাসরি পৌঁছাবে না, সেসব জমির কৃষকরাও পরোক্ষভাবে উপকৃত হবেন। কারণ, গত দুই-তিন মৌসুমে এলাকার পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এতে শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে ঠিকমতো পানি ওঠে না। ক্যানেলে পানি থাকলে এ সমস্যা কমবে।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ‘এ পানিতে ধান চাষ করে কৃষক ভালো মুনাফা পাবেন। বোরো মৌসুমে সেচ বাবদই বেশি ব্যয় করতে হয়। অন্যান্য ফসলও সুবিধা পাবে। তবে আউশ ধান যারা লাগাবে, তারা বেশি উপকৃত হবেন। ১৫ মার্চের পর থেকে কৃষকরা আউশ ধানের বীজতলা তৈরি করবেন।’ তিনি আরও জানান, কুষ্টিয়ায় এ বছর বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ হাজার ৪৬৪ হেক্টর। তবে আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৯৬ হেক্টর জমিতে।

জিকে সেচ ব্যবস্থাপনা ফেডারেশনের সভাপতি সাফায়েত হোসেন পল্টু বলেন, ‘গত বছর খালে পানি সরবরাহ না থাকায় অনেক সমস্যা হয়েছে। অনেক জমি অনাবাদি ছিল। এবার পানির সরবরাহ সচল থাকলে ফসল উৎপাদন বাড়বে।’

ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের পাম্প ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, ৬ মার্চ থেকে একটি পাম্প দিয়ে পানি সরবরাহ শুরু হয়েছে। আরেকটি পাম্প সচল করতে কাজ চলছে। এটি চালু হলে পানির সরবরাহ আরও বাড়বে। তবে তৃতীয় পাম্পটি সম্পূর্ণ অকেজো। সেটি মেরামতযোগ্য নয়।

২০০৯ সালে জাপানের একটি কোম্পানি থেকে তিনটি বড় পাম্প এনে স্থাপন করা হয়। গত বছর দুটি বিকল হয়ে পড়ে। অন্যটি পানির অভাবে গত বোরো মৌসুমে বন্ধ রাখা হয়। জাপানের প্রকৌশলীদের সঙ্গে যোগাযোগের পর কিছু যন্ত্রাংশ আনা হয়েছে। বাকি যন্ত্রাংশ বন্দরে এসেছে।

ভেড়ামারা পয়েন্টে পদ্মার পানির লেভেল বর্তমানে ৪ দশমিক ৪০ মিটার। ৪ দশমিক ২০ মিটার পর্যন্ত পানি সরবরাহ করা যাবে। তবে এর নিচে নামলে পানি সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। তিনটি পাম্প চালু থাকলে প্রতি সেকেন্ডে ৩ হাজার ৯০০ কিউসেক পানি সরবরাহ সম্ভব। বর্তমানে একটি পাম্প চালু থাকায় ১ হাজার ৩০০ কিউসেক পানি পাওয়া যাচ্ছে। 

গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের আওতাধীন চারটি জেলা থাকলেও বর্তমানে কেবল কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গায় বোরো মৌসুমে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রশিদুর রহমান জানান, জিকে পাম্প হাউস আধুনিকায়ন ও খাল সংস্কারের জন্য ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পরে তা ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় দুটি বড় ও পাঁচটি ছোট পাম্প স্থাপন করা হবে। খাল সংস্কার ও গাছ লাগানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

১৯৫৯ সালে প্রধান পাম্প হাউস চালু হয়। ১৯৬২-৬৩ সালে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচসুবিধা দেওয়ার জন্য প্রকল্প শুরু হয়। শুরুতে তিনটি পাম্প দিয়ে বছরে ১০ মাস পানি সরবরাহ করা যেত। বর্তমানে পাম্পের ক্ষমতা কমে যাওয়ায় জমির পরিমাণ নেমে এসেছে ৯৫ হাজার ৬১৬ হেক্টরে। তিনটি পাম্প সচল থাকলে চার জেলার ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালে পানি সরবরাহ করা সম্ভব। সূত্র: বাসস