আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রনায়িকা ববিতা। কিছুদিন আগেই দ্বিতীয়বারের মতো করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। এরপর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। এ কারণে গত ৩০ জুলাই তার জন্মদিন থাকলেও পালন করতে পারেননি। ইচ্ছে ছিল এবারের জন্মদিনটা তার ছেলের সঙ্গে দেশের বাইরে কানাডায় পালন করবেন।
গত ৫ আগস্ট ছিল ববিতা দিবস। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে দিনটি উদযাপন করা হয়। গেল বছর ডালাসেই এ দিনটির যাত্রা শুরু করেন ডালাস সিটি মেয়র। তাই দিনটি শুরুর এক বছরপূর্তি উপলক্ষে ডালাসেই দিনটি উদযাপিত হয়। এবার ডালাসেও যেতে পারেননি ববিতা। একদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না, অন্যদিকে শারীরিক অসুস্থতা।
তবে এবার পুরোপুরি সুস্থ হয়েই ববিতা চলে গেলেন কানাডায়। গত ৯ আগস্ট রাতে ববিতা কানাডার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন। যাওয়ার আগে ববিতা বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে এখন আমি অনেকটাই সুস্থ। ছেলের কাছে যাওয়ার জন্য মনটা অস্থির হয়ে আছে। তাই কানাডার উদ্দেশে রওয়ানা হলাম। সবার কাছে দোয়া চাই আল্লাহ যেন সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন। দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিও দ্রুত স্বাভাবিক হোক, নিরাপত্তার বেস্টনীতে আবার দেশে শান্তি ফিরে আসুক। দেশের মানুষ ভালো থাকুক- এই দোয়া করি। আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
ববিতা আরও বলেন, ‘যখন আমি অভিনয় জীবনের শুরুতে দেশের বাইরে বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে হেঁটেছি, তখন একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি গর্ব অনুভব করেছি। এখনো প্রতিটি মুহূর্তে একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি গর্ব অনুভব করি। সেই আমার গর্বের বাংলাদেশ সব সময় ভালো থাকুক, এখানকার মানুষ শান্তিতে থাকুক, এটাই চাই সব সময়।’
ববিতা সফল একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং প্রযোজক। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ৭০-এর দশকের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৭৩ সালে ২৩তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে গোল্ডেন বিয়ার জয়ী সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রশংসিত হন। ববিতা ৩৫০-এর বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন।
এ ছাড়া ১৯৭৬, ১৯৭৭, ১৯৮৫ সালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। ১৯৯৬ সালে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, ২০০২ ও ২০১১ সালে পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৬ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়। ববিতা অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা ছিল নারগিস আক্তারের ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’।
জাহ্নবী