বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন সবাই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে সংস্কার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সমাজ, রাষ্ট্র এবং সংস্কৃতি অঙ্গনে সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার সকল স্তরের মানুষ।
এবার সৃষ্টির স্বাধীনতার পাশাপাশি আরও কিছু দাবি নিয়ে বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক নতুন এক দেশের আহ্বানে গতকাল বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে সমাবেশের ডাক দেয় দৃশ্যমাধ্যম শিল্পী সমাজ, আলোকচিত্রী সমাজ, বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীরা, বাংলাদেশ সংগীতশিল্পী সমাজ (গেটআপ স্ট্যান্ডআপ) সংগঠনগুলো।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বেলা ২টা থেকেই শহিদ মিনারে আসতে থাকেন সংস্কৃতি অঙ্গনের কর্মীরা। বেলা ৩টা বাজতেই ব্যানার হাতে সংস্কৃতিকর্মীরা দাঁড়িয়ে যান বাংলাদেশের সংগ্রামের প্রতীক শহিদ মিনারের সামনে। শুরুতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্বৈরাচার পতন হয়েছে। ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে সবাইকে বিপ্লবী অভিনন্দন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘এই সময়টা শুধু উদ্যাপন ও উল্লাসের নয়। এই সময়টা রাষ্ট্র পুনর্গঠনের। আন্দোলনে আমরা ছাত্রদের ওপর যেমন ভরসা রেখেছি, ঠিক তেমনি রাষ্ট্র পুনর্গঠনে তাদের পাশে থেকেও সর্বজনের প্রতিনিধিত্বমূলক বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। দেশের অভ্যন্তরে চলমান সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ আমরা সর্বস্তরের শিল্পী–সংস্কৃতিকর্মী গভীরভাবে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন। দেশের এই ক্রান্তিকালে সর্বস্তরের শিল্পীদের এক করতেই এই সমাবেশ।’
সমাবেশে সদস্যরা দাবি তোলেন অহিংস এক বাংলাদেশের। যেখানে নিশ্চিত হবে সহ-অবস্থান। নতুন এই বাংলাদেশ সবার।
সমাবেশে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, ‘এ সময়ে অনেক কিছুই হচ্ছে, হবে। আমরা সম্মিলিতভাবে সেটাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করব। যে স্বাধীনতা আমরা আজ পেয়েছি, এটা যেমন বিশাল একটা ঘটনা। এটাকে হারিয়ে ফেলাও বিশাল একটা ঘটনা হবে। আমাদের দেশে কোনো দিন যেন আর স্বৈরাচারতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র গ্রাস না করে।’
জনপ্রিয় নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষকে সম্মিলিতভাবে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য আহ্বান করছি। সবাই এক হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শুরু থেকেই সোচ্চার ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। এই সমাবেশে হাজির হয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে যে বিজয় আজ অর্জিত হয়েছে, সে বিজয়কে কোনোভাবেই কলুষিত করা যাবে না। আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা যেন কোনোভাবেই কেউ নষ্ট করতে না পারে। আমরা বৈষম্যহীন সুন্দর এক বাংলাদেশ চাই। যেখানে থাকবে না কোনো ভেদাভেদ।’
জাহ্নবী