একুশে পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা, নাট্যকার, পরিচালক আবুল হায়াতের আত্মজীবনীমূলক বই ‘রবির পথ’ এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। গেল ২ নভেম্বর এক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বইটি প্রকাশিত হয়েছে।
আবুল হায়াত ও শিরীন হায়াত দম্পতির দুই কন্যা। একজন বিপাশা হায়াত, অন্যজন নাতাশা হায়াত। বিপাশা হায়াত একজন অভিনেত্রী, চিত্রশিল্পী। অন্যদিকে নাতাশা হায়াত একসময় অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও এখন তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। বিপাশা হায়াত দীর্ঘদিন ধরেই স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। কয়েক মাস আগে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। এবার বাবার বই প্রকাশ এবং মায়ের জন্মদিন সামনে রেখেই বিপাশা হায়াত ঢাকায় এসেছেন। বাবার বই প্রকাশনা উৎসবেও তিনি উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার ছিল আবুল হায়াতের স্ত্রী শিরীন হায়াতের জন্মদিন। তার আগের দিন রাতে দিনের মুহূর্ত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি কেক কাটেন। জীবনের কিছু কিছু মুহূর্ত হয়তো একটু বেশিই সুন্দর হয়ে ওঠে, উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এমন সময়টাতে বিপাশা হায়াত দেশে না এলে হয়তো তার বাবার প্রকাশনা উৎসবটাও পরিপূর্ণতা পেত না। মায়ের জন্মদিনটাও এত চমৎকারভাবে উদযাপনের সুযোগ হতো না বিপাশা হায়াতের।
আবুল হায়াত বলেন, ‘সন্তানরা চোখের সামনে থাকলে বুকের ভেতর কী যে প্রশান্তি কাজ করে, তা একমাত্র বাবা-মাই অনুভব করতে পারেন। জীবনের প্রয়োজনে সন্তানরা নিজ নিজ সংসারে, কর্মক্ষেত্র ব্যস্ত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তারপরও মাঝে মাঝে মন ভীষণ চায় নিয়ম ভেঙে তারা আমাদের ছায়াতলে এসে থাকুক, আমাদের সময় দিক, আমরা আরও একটু ভালো থাকি, তাদের মুখ দেখলে, তাদের হাসি দেখলে, তাদের সঙ্গ পেলে। জীবন তো এক অনিশ্চিত গন্তব্যের যাত্রা। কখন যে এই পথচলা থেমে যায়, তা কেউ আগে থেকে বলতে পারে না। তাই মনটা এই সময়ে এসে মাঝে মাঝে ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু তার পরও দোয়া করি ওরা ভালো থাকুক, সুখে থাকুক। ওরা সুখে থাকলেই পিতা হিসেবে আমি শান্তিতে থাকব, ভালো থাকব। বিপাশা, নাতাশা ওদের মায়ের জন্মদিনকে এবার আরও বেশি আনন্দময় করে তুলেছে, ওদের মায়ের মুখের প্রাণবন্ত হাসি দেখে ভালো লেগেছে আমার। আমার পরিবারের সবার সব সময় সুস্থতার জন্য দোয়া চাই।’
শিরীন হায়াত বলেন, ‘জন্মদিন এলে আমার কখনোই ভালো লাগে না। আমি সবাইকে বারবার বলিও জন্মদিন যেন না মনে করা হয়। কিন্তু কেউ কথা শোনে না। তারপরও ভালো লাগে, সবাই মিলে একত্রিত হওয়া, একটু আনন্দ করা। দোয়া চাই সবার কাছে।’
হাসান