একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশের অন্যতম রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই শিল্পী। তার বয়স হয়েছে ৭২ বছর। খবরটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর স্বামী সারোয়ার আলম।
তিনি জানান, লাশ গতকাল বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। আজ ১৩ ডিসেম্বর জুমার পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে শিল্পীর বাবা সৈয়দ বজলুর রহমানের কবরে সমাহিত করা হবে।
সারোয়ার আলম বলেন, ‘আমার এবং পাপিয়ার পরিবারের অনেককে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। তাই আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্তে পাপিয়াকে বনানী কবরস্থানে তার বাবার কবরে সমাহিত করা হবে।’
শিল্পীর দুই মেয়ে জারা ও জিশান যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় থাকেন। মায়ের অসুস্থতার খবরে তারা দুজনই গতকাল ঢাকায় এসেছেন।
পাপিয়া সারোয়ার কয়েক বছর ধরেই ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন। নভেম্বর মাসে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সর্বশেষ তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। শেষ দিন পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পাপিয়া সারোয়ারের জন্ম বরিশালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে সে দেশে যান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই প্রথম ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে সেখানে স্নাতক করার সুযোগ পান।
১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সন্জীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সংগীতে দীক্ষা নেন পাপিয়া সারোয়ার। ১৯৯৬ সালে ‘গীতসুধা’ নামে একটি গানের দলও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই খ্যাতিমান শিল্পী।
তার দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে রবীন্দ্রসংগীতের পাশাপাশি আধুনিক গানেও পেয়েছেন সাফল্য। তার গাওয়া জনপ্রিয় গান হচ্ছে- ‘নাই টেলিফোন, নাইরে পিওন, নাইরে টেলিগ্রাম...।’ ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন এই শিল্পী। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। সংগীতে বিশেষ অবদানস্বরূপ ২০২১ সালে পেয়েছেন তিনি একুশে পদক।
হাসান