ঢাকা ২২ আশ্বিন ১৪৩১, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

শরীরচর্চায় ঘরের কাজের ভূমিকা

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম
আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
শরীরচর্চায় ঘরের কাজের ভূমিকা
মডেল: অন্তি , ছবি: শরিফ মাহমুদ

আমাদের কাজকর্ম বেশির ভাগ কোনো একটা নির্দিষ্ট স্থানে বসে করতে হয়। কাজের চাপ আর সময়ের স্বল্পতার কারণে খাবার খেতে হয় বাইরে। ফলে স্থূলতা আমাদের দেশের অতি পরিচিত সমস্যাগুলোর একটায় পরিণত হয়েছে। স্থূলতা নানা ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি করে বলে সবাই আবার নিজের অর্থ এবং সময় ব্যয় করে জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করে। সাধারণ নয়টা পাঁচটা অফিস করা মানুষের জন্য এসব শরীরচর্চার প্রতিষ্ঠান বিশেষ লাভজনক নয়। প্রতিদিনের কাজকর্মের মধ্যেই যদি শরীরচর্চা করা যায় তাহলে স্বাস্থ্যের উন্নতিও হবে আবার আলাদা সময় নিয়ে শরীরচর্চারও প্রয়োজন হবে না। কিছু ঘরের কাজ শরীরচর্চার মতোই কাজ করে। আসুন জেনে নিই কোন কোন ঘরের কাজ স্থূলতা কমাতে ও শরীরচর্চা হিসেবে ব্যবহার হতে পারে। 

ঘর গোছান
এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়া, চাদর বদলানো, ফ্লোর থেকে খেলনা ওঠানো, ফার্নিচার মোছার মতো ছোটখাটো কাজগুলো ওয়ার্মআপের মতো কাজ করে। হেঁটে হেঁটে ঘরের কাজ করা ও দেখার কাজ করলে মাঠে বা পার্কে গিয়ে হাঁটার মতোই শরীরচর্চা হয়ে যায়। এভাবে প্রতিদিন আপনার ২৪০ ক্যালরি কমবে। এ জন্য দিনের এক ঘণ্টা ঘর গোছানোর পেছনে ব্যয় করুন।

গার্ডেনিং
ঘরে বা বারান্দায় বাগান করেন অনেকেই। গাছের মাটি খুঁড়ে দেওয়া, নিয়মিত পানি দেওয়া, পরিষ্কার করলেও  হাতের মাসলের ব্যায়াম হয়। আর যদি সৌভাগ্যক্রমে ছাদে গিয়ে বড় পরিসরে বাগান করা সম্ভব হয় তাহলে সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠানামা করলে পায়ের গোড়ালি ও থাইয়ের ব্যায়াম করা হয়ে যায়। আপনার ওজন কমবে। সে ক্ষেত্রে পুড়বে ২০০ ক্যালরি।

ঘর মোছা
ঘর মোছা একটি পরীক্ষিত ব্যায়াম। বসে ঘর মুছলে পেটের ও পেলভিস পার্টে চাপ পড়ে, ফলে এসব অংশে চর্বি জমে না। আবার পেটের মেদ খুব বেড়ে গেলে নিয়মিত ঘর মুছতে পারেন। তবে সেটা দাঁড়িয়ে নয়, পেটে চাপ দিয়ে বসে বসে ঘর মুছুন। সাধারণত ১১০০ বর্গফুটের ঘর মুছলে এক দিনে বার্ন হবে ২৫০ ক্যালরি। একইভাবে ঘর ঝাড়ু দিলে পুড়বে ১৫০ ক্যালরি। এ ছাড়া ঘর মোছা হাত ও পায়েরও ব্যায়াম হয়। হাত পায়ের ওপর চাপ দিয়ে কাজ করতে হয় বলে এসব অঞ্চলে চর্বি জমা হয় না। 

কাপড় ধোয়া
কাপড় ধোয়ার কাজ করলে হাতে মাসলের ব্যায়াম হয়। এ ছাড়া পা ও পেলভিস অঞ্চলেরও ব্যায়াম হয়। তাই ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার না করে হাতে কাপড় ধুতে পারেন। হাতে কাপড় ধুয়ে প্রায় ১২০ ক্যালরি বার্ন করা সম্ভব। তবে কোমরের সমস্যা থাকলে ওয়াশিং মেশিনে কাপড় দোয়া, কাপড় নেড়ে দেওয়া ইত্যাদি কাজেও প্রায় ৬৮ ক্যালরি বার্ন করা সম্ভব। 

ঘরের ধুলো পরিষ্কার করা
ঘরের ঝুল ঝাড়াও শরীরের গঠন সুন্দর করতে সাহায্য করে। হাত ওপরে তুলে ঘরের ঝুল ঝাড়ার ফলে হাত এবং পিঠের মেদ কমে। এতেও খরচ হয় ১৫০ ক্যালরি। উপুড় হয়ে ও নিচু হয়ে ফার্নিচার মুছলে সারা শরীরের ব্যায়াম হয় এবং হাতে ও শরীরের গঠন ঠিক হয়।

ডিস ওয়াশ
সবার খাওয়ার পর আপনাকে একাই প্লেট ও হাঁড়ি ধুতে হচ্ছে বলে রাগ করবেন না। বরং মনের সুখে ধুয়ে ফেলুন। কারণ প্রতিবার ডিশ ওয়াশ করার সময় আপনি ঝরাতে পারেন ৮৫ ক্যালরি, যা একটি চকলেট চিপ্স বিস্কুটের সমান। এ ছাড়া কাপড় আয়রন করলে হাত ও পিঠের মাসলের ভালো ব্যায়াম হয়। জিমের প্রফেশনাল ব্যায়াম করে ছেড়ে দিলে শরীরে ব্যথা হতে পারে আবার যত দ্রুত মেদ কমে বিরতি দিলে তেমনি দ্রুত মেদ ফিরে আসে। তাই স্বাভাবিক কাজের মাধ্যমে ওজন কমালে ও ব্যায়াম করলে শরীর ভালো থাকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকবে না। 

কলি

পূজায় ঘর সাজাবেন যেভাবে

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৯ পিএম
পূজায় ঘর সাজাবেন যেভাবে
ছবি: সংগৃহীত

শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা উৎসব। এ উৎসব উপলক্ষে ঘর সাজাতে পারেন পছন্দমতো। তবে পূজার সময় ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে উজ্জ্বল রং ও দেশীয় ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

প্রবেশদ্বার
পূজার সময় মূল দরজার বাইরে গাঁদা ফুলের মালা লাগিয়ে দিতে পারেন। দরজার দুই পাশের দেয়ালে বড় দুটো চাঁদমালাও টাঙিয়ে দিতে পারেন। এ ছাড়া দরজার মুখে বড় দুটি মাটির কলস রাখা যেতে পারে। কলসের গায়ে সাদা খড়িমাটি দিয়ে ফুল-পাতা-কল্কা ফুটিয়ে তোলা যেতে পারে। দরজার সামনে আলপনা করতে পারেন। আলপনার মাঝে বসাতে পারেন প্রদীপ।

আসবাব
পূজার সময় ঘরের জন্য চাইলে নতুন আসবাব কেনা যায়, আবার পুরোনো আসবাবকে নতুন রূপ দেওয়া যেতে পারে। পেইন্ট করে আসবাবে নতুন ভাব আনা যেতে পারে। এ ছাড়া ঘরে নতুনত্ব আনতে আসবাবের জায়গা পরিবর্তনও গুরুত্বপূর্ণ। ঘর সাজাতে অনেকেই নতুন ডিভান, দোলনা, আঁকা টুল, রকিং চেয়ার, ছোট টেবিলের মতো শৌখিন আসবাব কেনেন। নতুন আসবাব কিনতে না চাইলে পুরোনো আসবাব বার্নিশ করে নতুন রূপ দিতে পারেন। চকচকে আসবাবে ঘরজুড়ে উৎসবের আমেজ আসবে।

বসার ঘর
পূজায় মেহমান ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটানো বা আড্ডা দেওয়া হয় সবার ঘরেই। তাই বসার ঘরকে সাজিয়ে তুলতে হবে নান্দনিকভাবে। সোফায় উজ্জ্বল রঙের কুশন রাখতে পারেন। এ ছাড়া ঘরের কোণে বেতের ল্যাম্প রাখা যেতে পারে, যার স্নিগ্ধ আলো আপনার ঘরকে আরও বেশি সুন্দর করে তুলবে। বসার ঘরে সবুজের ছোঁয়া দিতে ইনডোর প্লান্ট রাখতে পারেন। কয়েকটি ছোট গাছ রাখলে ঘরের লুক বদলে যাবে। সম্ভব হলে একটি অ্যাকোরিয়ামও রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া ঘরের খালি জায়গায় মাটির তৈরি শোপিস রাখা যেতে পারে। ঘরকে গ্রামীণ স্টাইলে সাজাতে চাইলে কুলা কিংবা রং করা হারিকেন এনে রাখতে পারেন৷ মেহমানের সংখ্যা বেশি হলে বসবার ঘরে শীতলপাটি বিছিয়ে দিতে পারেন৷

শোবার ঘর
শোবার ঘরের সুন্দর বিছানার চাদর পুরো ঘরের চেহারাই বদলে দিতে পারে। বিছানায় হালকা ও চোখের আরাম দেবে, এমন রঙের চাদর ভালো লাগবে। পূজার সময় নকশিকাঁথার চাদর বিছিয়ে নিতে পারেন। কিংবা কটনের ব্লক প্রিন্টের চাদর দিতে পারেন। পূজার দিনগুলোয় লাল, কমলা, রয়্যাল ব্লুয়েরমতো উজ্জ্বল রংগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে। তবে আপনি যদি ঘরজুড়ে স্নিগ্ধতা চেয়ে থাকেন, তবে সাদা, আকাশি, হালকা গোলাপি রঙের চাদর বিছিয়ে দিতে পারেন। বিছানার চাদরের সঙ্গে মিল রেখে ঘরের পর্দা টাঙিয়ে দিলে আরও ভালো লাগবে। শোবার ঘরের দেয়ালে নতুন কিছু পেইন্টিং ঝুলিয়ে দিতে পারেন। বসার ঘরে ডিভানে উজ্জ্বল রঙের চাদর মন্দ লাগবে না। ঘরের সাইড টেবিলে একটা বাটিতে করে কিছু শিউলি ফুল রাখতে পারেন।

আলোর ব্যবহার 
পূজায় ঘর সাজাতে বিভিন্ন কৃত্রিম লাইট ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্যবহারের আগে ঘরের সাইজের কথা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। একসেন্ট লাইট ব্যবহার করতে পারেন। একসেন্ট লাইটিং নির্দিষ্ট কোনো একটি জিনিসকে হাইলাইট করে রাখবে। এ ছাড়া স্পটলাইট, ওয়াল ব্রাকেট কিংবা হালকা হলুদ রঙের ল্যাম্প রাখা যেতে পারে। খাবার টেবিলের ওপরে বেতের ঝুলন্ত লাইট ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া পূজার সময় অনেকেই কাঁসার প্রদীপ কিংবা পুরো ঘরে মোমবাতি জ্বালিয়ে দেন। তাতে ভিন্নমাত্রার সৌন্দর্য যোগ হয়।

খাবার পরিবেশন
পূজার দিন খাবার টেবিল ভিন্নভাবে সাজালে উৎসবের পূর্ণতা পাবে, তেমনি মুগ্ধ করবে অতিথিদের। এ দিনগুলোয় খাবার টেবিলে পুরোনো রানারগুলো পরিবর্তন করে করে ফেলুন। ষষ্ঠীর দিন টেবিলে রানারের পরিবর্তে উজ্জ্বল রঙের বাটিকের কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তমীর দিন ফুল দিয়ে টেবিল সাজাতে পারেন। অষ্টমী, নবমী ও দশমীতেও রাখতে পারেন ভিন্ন ভিন্ন রঙের টেবিল ক্লথ। খাবার পরিবেশনার জন্য ষষ্ঠী থেকে নবমী বা দশমীর সকাল পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন কাঁসা বা পিতলের থালা, বাটি, গ্লাস বা বিভিন্ন তৈজসপত্র। অষ্টমীর দিন খাবার পরিবেশনে ব্যবহার করতে পারেন কলাপাতা। সরাসরি কলাপাতায় নয়, খাবার পরিবেশনার জন্য বড় থালায় বিছিয়ে দিতে পারেন কলাপাতাগুলো। পাতার ওপর সারি সারি সাজিয়ে দিন বিভিন্ন খাবারের বাটি। পাতার ব্যবহার পূজার দিনে খাবার পরিবেশনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনবে। নবমীর দিনে মাটির বাসনকোসনে খাবার পরিবেশন করতে পারেন। দশমীর দিন মুড়ি, মুড়কি, মোয়া রাখার জন্য বাঁশ বা বেতের তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতে পারেন। দই রাখার জন্য ব্যবহার করুন মাটির হাঁড়ি। মিষ্টি রাখার জন্য কাঁসা বা পিতলের পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া এই দিনে দুপুরে কাঁসার থালা-বাটির পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন চীনামাটির পাত্র।

ফুল ও গাছের ব্যবহার 
পূজার পুরো সময় বাড়িতে ফুলের ব্যবহার করুন। এই দিনগুলোয় ঘরে তাজা ফুল রাখার চেষ্টা করুন। এতে ঘরের শোভা আরও বেড়ে যাবে ৷ ফুলের রূপ ও সুগন্ধ পূজার আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে আপনাকে যুক্ত রাখতে সহায়তা করবে। ঘরে গাছ রাখলে পুরো ঘরের সৌন্দর্যই পাল্টে যাবে। অ্যালোভেরা, মানি প্লান্ট, লাকি ব্যাম্বু, লিলি কিনে আনুন এবং ঘরের বিভিন্ন কোণায় সেগুলো সাজিয়ে রাখুন। গাছগুলো রঙিন মাটির পাত্রে রাখা যেতে পারে। এতে ঘরের শোভা আরও বেড়ে যাবে।

 কলি

 

দুর্গাপূজার মিষ্টি

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৯ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২২ পিএম
দুর্গাপূজার মিষ্টি
ছবি: ছন্দা ব্যানার্জী

দুর্গাপূজা মানেই বিভিন্ন পদের মিষ্টি খাওয়া। পূজায় ভরপুর পেটপূজার পর পাতে মিষ্টি না হলে ঠিক জমে না। বাড়িতে বানাতে পারেন এমন সুস্বাদু কয়েকটি মিষ্টি পদের রেসিপি কলকাতা থেকে পাঠিয়েছেন ছন্দা ব্যানার্জী

লবঙ্গ লতিকা

লবঙ্গ লতিকা

উপকরণ 
ময়দা ২ কাপ, বেকিং পাউডার সামান্য, টকদই ২ চা চামচ, ঘি (ময়ানের জন্য) পরিমাণমতো, পানি পরিমাণমতো, ভাজার জন্য পরিমাণমতো তেল বা ঘি, কিছু লবঙ্গ, খোয়া ক্ষীর ১ কাপ। সিরার জন্য ২ কাপ চিনি, ২ কাপ পানি। 

প্রণালি
ময়দা, টকদই, সামান্য বেকিং পাউডার, ঘি আর পানি দিয়ে মেখে নিতে হবে। ডো যেন একটু শক্ত হয়। আধ ঘণ্টা ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। একটু বড় লুচির মতো বেলে নিয়ে মাঝখানে ক্ষীরের পুর দিয়ে ভাঁজ করে একটা লবঙ্গ গেথে দিন। লম্বাটে চৌকো আকার করলে দেখতে বেশি সুন্দর লাগে। কড়াইয়ে তেল গরম করে আঁচ একদম কমিয়ে দিন। এবার লবঙ্গ লতিকাগুলো সময় নিয়ে উল্টে পাল্টে ভাজুন। চিনি ও পানিতে একটি এলাচ দিয়ে ফুটিয়ে সিরা বানিয়ে নিন। হালকা গরম থাকতে এর মধ্যে লবঙ্গ লতিকাগুলো ডুবিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। তারপর গরম গরম বা ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।

দরবেশ 

দরবেশ 

উপকরণ 
বেসন (সুন্দর করে চালনি বা বড় ছাঁকনিতে চেলে নিতে হবে) ১ কাপ, দুধ (আধা কাপ) ও পানির (আধা কাপ) মিশ্রণ ১ কাপ ভাজার জন্য তেল/ঘি পরিমাণমতো, জাফরান রঙের আর লাল রঙের ফুড কালার ১ ফোটা, চিনি ১ কাপ (চিনির পাতলা সিরার জন্য) জাফরান ও এলাচের গুঁড়া পরিমাণমতো, খোয়া ক্ষীর ১ কাপ (ইচ্ছে হলে আরেকটু বেশিও ব্যবহার করা যেতে পারে) কাজুবাদাম কিশমিশ ১ কাপ, দারুচিনি ১ টুকরা, জায়ফল গুঁড়া সামান্য।

প্রণালি
প্রথমে এক কাপ বেসনের সঙ্গে দুধ ও পানির মিশ্রণ এক কাপ ভালোভাবে মিশিয়ে পাতলা ব্যাটার তৈরি করে নিতে হবে। পাতলা মানে অতিরিক্ত পাতলা নয়। চামচের গায়ে যেন লেগে থাকে এইরকম পাতলা। এক হাতা বেসন সরিয়ে রাখতে হবে। তাতে মিশাতে হবে লাল রঙের ফুড কালার। বাকি অংশতে গেরুয়া রঙের ফুড কালার মেশাতে হবে। কড়াইয়ে তেল বা ঘি গরম করে আঁচ একদম কমিয়ে দিয়ে তারপর পরিষ্কার বড় ছিদ্র ছাঁকনিতে ব্যাটার দিয়ে গরম তেলের ওপর দিয়ে দিতে হবে। আঁচ যেন বেশি না থাকে তাহলে ওগুলো পুড়ে যাবে। মচমচে ভাজা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো তেল থেকে তুলে নিতে হবে। দুই রঙের বুন্দি ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। 
অন্য আরেকটি পাত্রে এক কাপ চিনির সঙ্গে এক কাপ পানি মিশিয়ে তাতে একটু ছোট এলাচ থেঁতো করে আর একটু জাফরান দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে। চিনির এই রস যেন খুব পাতলা হয়। এরপর ভাজা বুন্দিগুলো এই রসে ফেলে এক মিনিট ফুটিয়ে ঢাকা দিয়ে ৫-৬ মিনিট রাখতে হবে। বুন্দি সব রস টেনে নিয়ে হালকা ঝরঝরে হয়ে যাবে। একটু ঠাণ্ডা করতে দিতে হবে। এবার এতে মেশাতে হবে গ্রেট করা খোয়া ক্ষীর, ঘিয়ে হালকা ভেজে নেওয়া কাজুবাদাম ও কিশমিশ। হালকা গরম অবস্থায় মেশাতে হবে দারুচিনি এবং জায়ফল গুঁড়া। নিজের পছন্দমতো সাইজে লাড্ডুর মতো পাকিয়ে নিতে হবে হাতে। এর ওপর গ্রেট করা খোয়া ক্ষীর ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন দরবেশ।

বেকড মিহিদানা

বেকড মিহিদানা

উপকরণ
দুধ ১ লিটার, ক্ষোয়া ক্ষীর ২০০ গ্রাম বেসন ১ কাপ, দুধ এবং পানির মিশ্রণ এক কাপ, ভাজার জন্য ঘি বা তেল, এক কাপ বেসন (সুন্দর করে চালুনি বা বড় ছাঁকনিতে চেলে নিতে হবে) তেল/ঘি ভাজার জন্য, জাফরান রঙের ফুড কালার সামান্য, চিনি এক কাপ (চিনির পাতলা সিরার জন্য) জাফরান ও এলাচের গুঁড়া পরিমাণমতো, কাজুবাদাম (ভাঙা) কিশমিশ আমন্ড কুচি (পরিমাণমতো) পাউরুটি ৪ পিস।

প্রণালি
এক লিটার দুধ ফুটিয়ে ২৫০ মিলি ঘনত্বে নিয়ে আসতে হবে। চিনি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ আমরা এখন মিহিদানা তৈরি করব, তাতে চিনি থাকেই। তবে কেউ যদি মিষ্টি বেশি পছন্দ করেন তিনি এই দুধ ঘন করার সময়, ইচ্ছামতো মিষ্টি ব্যবহার করতে পারেন। দুধ ঘন হওয়ার সময় তাতে কিছুটা খোয়া ক্ষীর মিশিয়ে ঘন করুন। প্রথমে এক কাপ বেসনের সঙ্গে দুধ ও পানির মিশ্রণ এক কাপ ভালোভাবে মিশিয়ে পাতলা ব্যাটার তৈরি করে নিতে হবে। পাতলা মানে অতিরিক্ত পাতলা নয়। চামচের গায়ে যেন লেগে থাকে এরকম পাতলা। এক হাতা বেসন সরিয়ে রাখতে হবে। তাতে মিশাতে হবে লাল রঙের ফুড কালার। বাকি অংশতে মেশাতে হবে জাফরান রঙের ফুড কালার। কড়াতে তেল বা ঘি গরম করে আঁচে একদম কমিয়ে দিয়ে তারপর পরিষ্কার ছোট ছিদ্রের ছাঁকনিতে ব্যাটার ঢেলে দিলে গরম তেলে দিলে ছোট ছোট ফোঁটা পড়তে থাকবে। আঁচ যেন বেশি না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ভাজা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো তেল থেকে তুলে নিতে হবে। দুই রঙের মিহিদানা ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।  অন্য পাত্রে চিনি এবং জল এলাচ গুঁড়া করে মিশিয়ে, পাতলা সিরা বানিয়ে নিতে হবে। মিহিদানা তাতে ভিজিয়ে রাখতে হবে পাঁচ-ছয় মিনিট। এবার পাউরুটির পিসগুলো বেলন দিয়ে চেপে চেপে পাতলা এবং বড় করে নিতে হবে।

একটা বেকিং ডিসে ঘি মাখাতে হবে। পাউরুটিগুলো প্রথমে চেপে চেপে সেট করতে হবে। তার ওপর ঘন ক্ষীর একটু ব্রাশ করে দিতে হবে। এবার মিহিদানাকে দুই ভাগে ভাগ করে তার এক ভাগ সুন্দর করে সমানভাবে ছড়িয়ে সেট করে দিতে হবে। তার ওপর আর একবার দু-এক চামচ ক্ষীর সমান করে ছড়িয়ে দিতে হবে। তার ওপর কাজু বাদাম, কিশমিশ, আমন্ড কুচি দিতে হবে। বাকি যতটুকু মিহিদানা আছে সেটা এবার পুরোপুরি সমানভাবে বিছিয়ে দিতে হবে। যতটুকু ক্ষীর বাকি থাকবে সেটা সমানভাবে বেকিং ডিসের একদম ওপর দিকে ছড়িয়ে দিতে হবে। যেন মিহিদানা পুরোটাই ঢেকে যায়। আর একবার এর ওপর কাজুবাদাম, কিশমিশ, আমন্ড কুচি ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রত্যেকটা লেয়ার মনে করে করে করতে হবে। এরপর ওভেন ১৮০ ডিগ্রিতে তিন মিনিট প্রিহিট করে, বেকিং ডিসটা দেওয়ার পর ১৫ মিনিট বেক করতে হবে। আপনি চাইলে এটা গরম খেতে পারেন।

 কলি

 

পূজায় ভিন্ন স্বাদ

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
পূজায় ভিন্ন স্বাদ
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা

কিছুদিন পর শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। এই পূজায় ভোজনরসিকদের জন্য থাকে নানারকম খাবারের আয়োজন। বাড়িতে পূজার দিনগুলোতে তৈরি করতে পারেন খাবারের নানা পদ। দুর্গাপূজা উপলক্ষে রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা 

খাসির মাংসের রসল্লা

খাসির মাংসের রসল্লা

উপকরণ
খাসির মাংস ১ কেজি, টক দই ১ কাপ, আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, মরিচ বাটা ১ চা-চামচ, ধনে বাটা ১ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ ফালি ১০-১২টা, পেঁয়াজ কুচি ২৫০ গ্রাম, তেজপাতা ২টা, ঘি ১০০ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ। 

প্রণালি
খাসির মাংস বড় টুকরো করে কেটে ধুয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে মাংস, ঘি, দই, পেঁয়াজ কুচি, মরিচ বাটা, আদা ও রসুন বাটা, লবণ, তেজপাতা সব একসঙ্গে ভালো করে মিশান। এরপর এরপর একটি হাড়িতে ঢেলে তা অল্প আঁচে  ঢাকনাসহ চুলায় বসান। মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে নেড়ে দিন। মাংস দইয়ের পানিতে সিদ্ধ না হলে অল্প পানি দিন। পানি শুকিয়ে ঘি ওপরে এলে হাঁড়ি নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল দারুণ স্বাদের খাসির মাংসের রসল্লা।

রুই মাছের রোস্ট

রুই মাছের রোস্ট

উপকরণ
রুই মাছের টুকরো ৬টা, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদা ও রসুন বাটা ১ চা-চামচ, শুকনো মরিচ বাটা ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিনি ২ চা-চামচ, ভিনেগার বা লেবুর রস ১ চা-চামচ, ৪ টেবিল চামচ টক দই, ধনে বাটা ১ চা-চামচ, কাঁচামরিচ ফালি ৬-৭টা।েআরো

আরো পড়ুন: খাবারে শারদীয় আমেজ

প্রণালি
রুই মাছ রিং পিস বা বড় টুকরো করে কেটে ধুয়ে রাখুন। পরে পেঁয়াজ বাটা, আদা ও রসুন বাটা, শুকনো মরিচ বাটা, ধনে বাটা দিয়ে ধুয়ে রাখা মাছ মাখিয়ে নিন। লবণ, চিনি, ভিনেগার বা টক দই দিয়ে মিশিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর কড়াইতে ঘি গরম হলে মাছগুলো একটা একটা করে নরম বা হালকা করে ভেজে নিন। ওই ঘিয়েই বাকি মসলা ভাজুন। ভাজার সময় সামান্য পানি আর কাঁচামরিচ ফালি দিন। বেশ গন্ধ বেরোলে মসলা ঘি, সিদ্ধ মাছের ওপর ঢেলে দিন। তৈরি হয়ে গেল রুই মাছের রোস্ট।

মুরগির কোর্মা

মুরগির কোর্মা

উপকরণ
দেশি মুরগি ২টা, টক দই ২ কাপ, আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, মরিচ বাটা ১ চা-চামচ, ধনে বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা ৪ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, ঘি আধা কাপ, গরম মসলা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, কাঁচামরিচ ১০-১২টা।

প্রণালি
মুরগির মাংস বড় টুকরো করে কেটে ধুয়ে দিন। টক দই, আদা ও রসুন বাটা, মরিচ বাটা, ধনে বাটা দিয়ে মেখে ঘণ্টাখানেক ম্যারিনেট করে রেখে দিন। এবার কড়াইতে ঘি গরম হলে পেঁয়াজ কুচি বাদামি করে ভেজে নিন। ভাজা হলে বেরেস্তার জন্য তুলে রাখুন। আর অর্ধেকটার ওপর দই মসলা মাখা মুরগির মাংস ঢেলে দিন। তারপর কষাতে থাকুন। এবার লবণ ও চিনি দিন। কষানো হলে অল্প আঁচে রাখুন। দই অনেকটা লাগবে। কারণ দইয়ের পানিতেই মাংস সিদ্ধ হবে। মাংস নরম হলে গরম মসলা বাটা বা গুঁড়া দিয়ে নেড়ে পেঁয়াজ বেরেস্তা ছড়িয়ে দিন। লো আঁচে ৪-৫ মিনিট রেখে নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল দারুণ স্বাদের মুরগির কোর্মা।

 কলি

 

শরতের খুশিতে রাঙানো সারার পূজা আয়োজন

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪২ পিএম
শরতের খুশিতে রাঙানো সারার পূজা আয়োজন
পোশাক ও ছবি: সারা লাইফস্টাইল

শরতের আগমনে সোনালি সূর্যের আলোর সঙ্গে মেঘ-রোদের লুকোচুরি খেলায় মত্ত প্রকৃতি। আর প্রকৃতির এই মনোরম দৃশ্যের সমারোহে আগমন ঘটেছে শারদীয় দুর্গাপূজার। দেশীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও নিত্যনতুন ট্রেন্ডি ডিজাইনের মিশেলে দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ‘সারা লাইফস্টাইল’ নিয়ে এসেছে পোশাকের দুর্গাপূজা সংগ্রহ।

‘সারা’র পূজার কালেকশনের এবারের থিম হচ্ছে শরতের খুশি। সময়, স্থান, আবহাওয়ার বিবেচনায় সারার পূজা কালেকশনে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি, ভিসকস, সিনথেটিক, জ্যাকার্ড, সিল্ক, ডাবল জর্জেট, ডেনিম ও নিট ফেব্রিকসের বিভিন্ন সমন্বয়।

সারার পূজা সংগ্রহে পোশাকের ডিজাইনে ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পকে আধুনিক নান্দনিকতার সঙ্গে সুন্দরভাবে মিশিয়ে এথনিক পোশাক তৈরি করা হয়েছে যা বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে। সমৃদ্ধ কাপড়, এমব্রয়ডারি এবং উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার, সৌন্দর্য এবং আরামের সমন্বয়ে পূজা সংগ্রহকে পরিপূর্ণ করে তুলেছে। থিমের সঙ্গে মিল রেখে ডিজাইন, পোশাকের প্যাটার্ন ও মোটিফের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন চক্রে আঁকা শিল্প।

পোশাক ও  ছবি: সারা লাইফস্টাইল

 

মোটিফ হিসেবে পূজা ফ্যাশন সংগ্রহে এথনিক পোশাকের নকশাগুলোতে পেইসলি, ফ্লোরাল, পিকক ও সূক্ষ্ম প্রিন্ট করা হয়েছে। পোশাকের রং হিসেবে লাল, কমলা, বাদামি, নীল, লাইম গ্রিন, স্কাই ব্লু, গোলাপি, ম্যাজেন্টা, সাদা, পিস ও আরও বিভিন্ন ধরনের রং প্রাধান্য পেয়েছে। পোশাকের প্যাটার্নে ব্যবহৃত হয়েছে এ লাইন ড্রেস, শিফট ড্রেস, ম্যাক্সি ড্রেস, চিনোস, কার্গো প্যান্ট, টিউনিক ও আনারকলি কাট।

এ বছর ‘সারা’র পূজা কালেকশনে নারীদের জন্য থাকছে কুর্তি, ফ্যাশন টপস, স্কার্ফ, থ্রি-পিস, টু-পিস সেট এবং শাড়ি। পুরুষদের জন্য ‘সারা’র পূজা কালেকশনে থাকছে পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, ডেনিম প্যান্ট, চিনো প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট ইত্যাদি।

পূজা আয়োজনে মেয়েদের জন্য ‘সারা’ নিয়ে এসেছে ফ্যাশন টপস, ফ্রক, থ্রি-পিস, টু-পিস সেট, লেহেঙ্গা, টি-শার্ট, ডেনিম প্যান্ট ইত্যাদি। এ ছাড়া শিশুদের জন্য রয়েছে ফ্রক, ফ্রক সেট, নিমা সেট, থ্রি-পিস, পার্টি ফ্রক।

আর ছেলেদের জন্য থাকছে শার্ট সেট, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, সিঙ্গেল শার্ট, পোলো শার্ট, কাতুয়া ইত্যাদি। আর শিশুদের জন্য রয়েছে নিমা সেট, পাঞ্জাবি ও কটি সেট, পাঞ্জাবি সেট ইত্যাদি।

 কলি

 

শারদ সাজে

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩২ পিএম
শারদ সাজে
পূজায় অঞ্জন’স-এর পোশাক

দুর্গাপূজা মানেই আনন্দ, সাজসজ্জা, নতুন পোশাক পরা ও ঘুরে বেড়ানো। পূজার আয়োজন চলতে থাকে কয়েকদিন ধরে। এই সময় সাজে ঐতিহ্যের সঙ্গে যোগ হয় হালের ট্রেন্ডও। পোশাকে লাল-সাদার পাশাপাশি যুক্ত হয় আরও অনেক মন মাতানো রং। বর্তমানে বিশ্বের ফ্যাশন ও রূপসচেতন নারীদের মধ্যে নো মেকআপ লুক ও মিনিমালিস্টিক সাজ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নিজেকে অনন্য করে তুলতে ষষ্ঠী থেকে অষ্টমীতে হালকা এবং নবমী-দশমীর দিনে ভারী সাজতে পারেন। কেমন হতে পারে পূজার সাজ এই বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে রূপ বিশেষজ্ঞ রেড বিউটি স্টুডিও অ্যান্ড স্যালনের স্বত্বাধিকারী আফরোজা পারভীন।

ষষ্ঠীতে হালকা সাজ

পূজার শুরুটা হয় মূলত ষষ্ঠীর দিন থেকে। এই দিন ষষ্ঠীর বিকেল থেকেই পূজার ঘোরাঘুরি শুরু হয়। এই দিন পোশাকের ক্ষেত্রে টপস, কুর্তা, কুর্তি, কাফতান স্টাইলে টিউনিক ও সুতি সালোয়ার-কামিজ পরতে পারেন। কেউ চাইলে শাড়িও পরতে পারেন। একদমই হালকা সাজসজ্জা হবে। তাই মুখে ময়েশ্চারাইজার বা সানব্লক মেখে তার ওপর হালকা পাউডারের টাচ কিংবা অল্প করে কমপ্যাক্ট পাউডারও লাগিয়ে নিতে পারেন। এর সঙ্গে চোখে কাজলের রেখা আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিয়েই ষষ্ঠীর সাজ সেরে ফেলতে পারেন। পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চুলে করতে পারেন হাত খোঁপা কিংবা ফ্রেঞ্চ বেণি বা পনিটেইল। অবশ্যই চুল বাঁধার ধরনে স্বস্তিকে প্রাধান্য দেবেন। চাইলে চুলে দু-একটি ফুলও গুঁজে নিতে পারেন।

পূজায় অঞ্জন’স-এর পোশাক
পূজায় অঞ্জন’স-এর পোশাক

সপ্তমীতে স্নিগ্ধ সাজ

সপ্তমীর সকাল মানেই দেশীয় সুতির শাড়ি। শাড়ির সঙ্গে নকশাদার ব্লাউজ। চাইলে দেবী দর্শনের জন্য রাখুন সিল্ক বা মসলিন শাড়ি। সপ্তমীর সাজে রাখুন স্নিগ্ধতা। হালকা স্নিগ্ধ সাজে ফুটে উঠবে উৎসবের আমেজ। সানস্ক্রিনের ওপর হালকা কমপ্যাক্ট পাউডার বুলিয়ে নিন। আইব্রো এঁকে চোখে কাজল দিতে পারেন। রঙিন আইশ্যাডো সঙ্গে কপালে একটা ছোট টিপ দিতে পারেন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই লিপস্টিকে সাজ শেষ করুন। চুল বেঁধে নিলেই আরাম হবে এমন করে চুল বাধুন। গহনাতে একটু ফিউশন থাকতেই পারে। সাজ শেষে হালকা সুগন্ধি লাগাতে ভুলবেন না।

ভিন্ন সাজে অষ্টমী

ষষ্ঠী এবং সপ্তমীর পূজার সাজ থেকে অষ্টমীর সাজে নিয়ে আসুন একটু ভিন্নতা। অষ্টমীর সকালের জন্য বেছে নিন জামদানি, কাতান বা ডিজাইনার শাড়ি। রং মিলিয়ে বা কনট্রাস্ট ব্লাউজের সঙ্গে হালকা মেকআপ আপনাকে দেবে সনাতনী লুক। দিনে আরামদায়ক কামিজ পরতে পারেন। অষ্টমীতে দিনের বেলা হালকা সাজুন। তবে রাতে একটু ভারী সাজ দেওয়াই ভালো। ফাউন্ডেশন, ফেস পাউডার, কন্টরিং করুন। সঙ্গে একটু ব্লাশন লাগালে সাজটা আরও ফুটে উঠবে। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চোখের সাজ এবং পছন্দমতো ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে সাজ শেষ করুন। চুলের সাজের ক্ষেত্রে ফুল দিয়ে খোঁপা করে নিতে পারেন অথবা চুল ছাড়া রাখলেও ভালো লাগবে। আর রাতে বেজ মেকআপের আগে ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ত্বক আর্দ্র করে নিন। তারপর তরল ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। সবশেষে ফিনিশিং পাউডার দিয়ে মেকআপ ভালোমতো সেট নিতে হবে। এখন ন্যুড সাজেই জমকালো লুক ফুটিয়ে তোলার ট্রেন্ড চলছে। এই সাজে চোখ যদি জমকালো হয়, ঠোঁটে থাকবে হালকা রং। এই সময়ে গ্লসি লিপস্টিক আদর্শ। উৎসবের আমেজ আনতে একটু চকচকে, ফ্রস্টেড ও মৃদু রং দিন ঠোঁটে।

নবমীতে জমকালো সাজ 

নবমীর রাত জমকালো সাজের জন্য আদর্শ। একটু ভারী মেকআপ চলতেই পারে। রাতের সাজে আভিজাত্য আনতে মুখ পরিষ্কার করে প্রাইমার লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর মেকআপ করতে করুন। ত্বকে দাগছোপ, অসম রং ও ডার্ক সার্কেল থাকলে ত্বকের সঙ্গে মিলিয়ে কনসিলার ব্যবহার করুন। এরপর ম্যাট ফাউন্ডেশন লাগিয়ে ব্লেন্ড করে, সেটিং পাউডার দিয়ে সেট করে নিন। মুখের শেপের সঙ্গে মিল রেখে পেনসিল দিয়ে ভ্রু আঁকুন। ডার্ক ব্রাউন রঙের আইব্রোশ্যাডো দিয়ে হালকা শেইপ করে নিন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চোখের পাতায় লাগিয়ে নিন গাঢ় রঙের আইশ্যাডো। চোখে মোটা করে আইলাইনার পরুন। মাশকারা লাগান। ভালো লাগলে আইল্যাশও পরতে পারেন। গোলাপি রঙের ব্লাশন দিয়ে দুই গালের চিককে হাইলাইট করুন। কপালে, নাকে ও গালের ওপরের দিকে হাইলাইটার ব্যবহার করুন। রাতের সাজে লিপস্টিকে গাঢ় রঙের ব্যবহারও করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে চোখের মেকআপে ন্যুড শ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন। হালকা গোলাপি, পিচ, বাদামি, সোনালি, সাদা রঙের আই শ্যাডো ব্যবহার করলে ভালো দেখাবে। ভিন্নতা আনুন চুলের সাজে। কার্ল করে ইচ্ছামতো সাজিয়ে নিতে পারেন চুল। গহনা হিসেবে সোনার বা গোল্ড প্লেটের গহনায় সাজিয়ে নিতে পারেন নিজেকে। এ ছাড়া রুপা, কুন্দনের গহনা, আফগানি, জয়পুরি গহনায়ও সুন্দর দেখাবে। একটু ভিন্নতা আনতে ফুলের মালা হাতে পেঁচিয়ে রাখতে পারেন। টানা কানের দুল, নাকের নথ ও নাকফুলে পূজার দিন সাবেকি ভাবে দারুণ লাগবে।

পূজায় অঞ্জন’স-এর পোশাক
পূজায় অঞ্জন’স-এর পোশাক

দশমীর উজ্জ্বলতা 

পূজার প্রাণ বলা হয় বিজয়া দশমীকে। দশমীতে সবাই মেতে ওঠে সিঁদুর খেলায়। সিঁদুর খেলায় লালপেড়ে সাদা শাড়ির বিকল্প নেই। লালপেড়ে শাড়ি বা জামদানি শাড়ির সঙ্গে সাবেকি সাজ পূজার চিরায়ত চিত্র। সাজে থাকুক ছিমছাম সতেজতা। সাজের শুরুতে ময়েশ্চারাইজার ও প্রাইমার লাগানোর পর ফুল কাভারেজ ম্যাটিফাইয়িং ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। তার ওপর প্রেসড পাউডার লাগিয়ে বেইজ সেট করে নিন। চোখ জোড়াকে সাজিয়ে তুলুন উজ্জ্বল রঙে। চাইলে আইলিডে ব্যবহার করতে পারেন শিমারি আইশ্যাডো। আইলাইনার অথবা কাজল ব্যবহার করে আনতে পারেন স্নিগ্ধতা। গালে ব্লাশন পরিপূর্ণ টেনে সাজে আনুন। সব শেষে ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিক এবং লাল টিপ দিয়ে শেষ করুন পূজার বাঙালিয়ানা লুক। দিনের বেলায় চুলগুলোকে ডোনাট বান, পনিটেইল বা স্টাইলিশ কোনো ঢঙে বেঁধে নিলে ট্রেন্ড আর আরাম দুটো দেবে। রাতের অনুষ্ঠানের জন্য চুলগুলো কোঁকড়া করে ছেড়েও রাখতে পারেন। চুলে তাজা ফুল পরলে সাজে আসবে উৎসবের পূর্ণতা। দিনের হালকা সাজে শাড়ি বা জামার সঙ্গে মিলিয়ে কাচের চুড়ি পরলে আপনাকে খুব স্নিগ্ধ দেখাবে।

/আবরার জাহিন