শীতের ফ্যাশনে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন আসলেও বহুকাল ধরেই শাল ফ্যাশনে রাজত্ব করে আসছে। ঘরের কাজেই হোক আর অফিস যাওয়ার সময়ই হোক, শাল প্রচলিত শীতপোশাক। এই পোশাকে কালের ধারায় এসেছে নতুনত্ব, ফ্যাশন ধারায় এনেছে বৈচিত্র্য। আজকাল শাল এতটাই ফ্যাশনেবল যে, উৎসব-আয়োজনেও তা পরা যায় অনায়াসে। হ্যান্ড প্রিন্টের শালগুলো নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে পরতে দেখা যায়।
শালের বাহার
হালকা শীত থেকে শুরু করে তীব্র শীত, যেকোনো সময় নিজেকে শালে জড়িয়ে নেওয়া যায়। দেশীয় নকশা আর উপকরণে বানানো শালগুলো পাশ্চাত্য সাজপোশাকের সঙ্গেও পরা যায়। দেশভেদে চাদর পরায় রয়েছে ভিন্নতা। বাংলাদেশে গায়ে জড়িয়ে চাদর পরা হয় বেশি। পাশ্চাত্যে আকারে ছোট চাদরগুলোকে স্কার্ফের মতো করে পরা হয়। শালের মাঝে শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে উলের শালের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া খাদি কাপড়ের, সুতি কাপড়ের, সিল্ক, পশমি সুতা, আদিবাসী শাল, পশমিনা শাল, আর কাশ্মীরি শাল তো আছেই। এসব শালে আবার হাতের কাজ করা হয় খুব নিপুণভাবে। কোনো কোনো শালে পুঁতি দিয়ে, স্টোন বসিয়েও কাজ করা হয়। তা ছাড়া নানা ধরনের লেসের কাজের বাহার থাকে শাল জুড়ে। কারও কারও পছন্দের কথা মাথায় রেখে শালে প্রিন্টের কাজ করা হয়।
রঙের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে এক রঙা। তবে বর্তমান সময়ের শাল দুই রঙের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এতে খুব সহজেই এক পাশ ভাঁজে রেখে অন্য পাশ ব্যবহার করা যাবে এবং নতুনত্বের ছোঁয়া পাওয়া যাবে। অন্যদের চেয়ে আলাদা দেখাতে ভিন্ন ধাঁচের রং বেছে নিতে সুন্দর এসব শালে সাজতে পারেন নানাভাবে। এ ছাড়া শালের রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে কালো, খয়েরি, কমলা, ম্যাজেন্টা, বাদামি, নীল রঙের বেশি দেখা যায়। এসব শাল বেশ নরম, ব্যবহারে ফ্যাশেনেবল আর সহজে নিজের সঙ্গে বহন করা যায় বলে শীতের সময় শালের চাহিদা থাকে অন্যসব শীতের পোশাকের থেকে বেশি। তবে এক্ষেত্রে রং, নকশা, কারুকাজের পাশাপাশি ওমের বিষয়ে নজর দিতে হবে। তবেই মিলবে ফ্যাশন আর স্টাইলের পাশাপাশি বাড়তি উষ্ণতা।
নতুনত্বে আভিজাত্য
বর্তমানে হ্যান্ড প্রিন্টের শাল সব বয়সী নারীর কাছে বেশ জনপ্রিয়। শাড়ি, কামিজ বা জিনস, টপ- সব ধরনের পোশাকের সঙ্গেই মানিয়ে যায় বলে এর চাহিদা ব্যাপক। হ্যান্ড প্রিন্টের শালগুলোয় কালো, মেরুন বা নীল রং ছাপিয়ে ফ্যাশন ধারায় উঠে এসেছে হালকা বেগুনি, সি-গ্রিন, পিচ গোলাপি, জলপাই-সোনালি, পেস্ট, সর্ষে-হলুদ, হালকা ছাই রং আর সুরমা রং। একটু ভিন্ন ধারার শাল নকশা করেছেন লিনা’স সিগনেচার নামে ফেসবুকের ফ্যাশন ব্র্যান্ডটি। লিনা’স সিগনেচারের স্বত্বাধিকারী নাজমুন নাহার লিনা জানান নিজ হাতে পেইন্ট করা শখ অনেক আগে থেকেই। এই শীতে তিনি বিভিন্ন ডিজাইনের শাল নকশা করেছেন।
তার ডিজাইনে ফুলের প্রাধান্য বেশি থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সাদা, লাল, গোলাপি, কচি সবুজ, ম্যাজেন্টা রঙের ভিসকস কাপড়ের ওপর আকাশি, বেগুনি, বাঙ্গি, গোলাপি, ইন্ডিগো ব্লু, হরিতকির সোনালি, জলপাই রং দিয়ে শালগুলোয় ফুলেল নকশা ফুটিয়ে তুলেছেন হ্যান্ড প্রিন্টের মাধ্যমে। যা যেকোনো পোশাকের সঙ্গে পরলে সাধারণ পোশাকও হয়ে উঠতে পারে জমকালো। দেশীয় হালকা নকশার বা একরঙা শালগুলো ঘরের পাশাপাশি ঘুরতে যাওয়া বা কর্মক্ষেত্রে খুব সহজে ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া বিয়ে বা জমকালো যেকোনো পার্টির ক্ষেত্রে শালগুলো গর্জিয়াস লাগবে।
ফেসবুকে LinA's Signature পেজে পেয়ে যাবেন একেবারে আলাদা ধরনের শালগুলো। ভিসকস সফট শালগুলো ডিজাইন ও সাইজ ভেদে বিভিন্ন দামের হয়ে থাকে। শালগুলো ১৫৫০ থেকে ২৪৭০ টাকার মধ্যে পরবে। হ্যান্ড পেইন্টের এই শালগুলো রঙ ও ডিজাইন অনুযায়ী কাস্টমাইজ করার সুবিধা রয়েছে।
কলি