ঢাকা ৫ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

যেসব খাবার খেলে বুকের দুধ বাড়ে

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম
আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২১ পিএম
যেসব খাবার খেলে বুকের দুধ বাড়ে
শিশুকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানো দুধ উৎপাদনের সেরা উপায়

বুকের দুধ বাড়ানোর জন্য মা ও শিশুর সঠিক পুষ্টি ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু বিশেষ খাবার রয়েছে যা স্তন্যদানের জন্য দুধ উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। চলুন দেখে নিই সেগুলো কী কী।

১. শাকসবজি ও ফলমূল

কাঁচা পেঁপে

পালং শাক, মেথি শাক, সরিষা শাক: এগুলো দুধ উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক।
কাঁচা পেঁপে: প্রাকৃতিক ল্যাক্টোজেনিক (দুধ উৎপাদনকারী) হিসেবে কাজ করে।
গাজর ও বিটরুট: ভিটামিন এ সমৃদ্ধ যা দুধের মান উন্নত করে।
আঙুর, আপেল, কলা: মায়ের শরীরে শক্তি বাড়াতে সহায়ক।

২. প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার

ডিম


ডিম, মাছ, মুরগি ও মাংস: পর্যাপ্ত প্রোটিন সরবরাহ করে যা দুধের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
ডাল ও ছোলা: উদ্ভিজ্জ প্রোটিন হিসেবে কার্যকর।

৩. কার্বোহাইড্রেট ও স্বাস্থ্যকর চর্বি

কাঠবাদাম

ভাত, রুটি, ওটস: কার্বোহাইড্রেট দুধ উৎপাদনের জন্য শক্তি সরবরাহ করে।
কাঠবাদাম, কাজু, সূর্যমুখীর বীজ: এসব খাবার স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।

৪. বিশেষ ল্যাক্টোজেনিক খাবার

মেথি

মেথি বীজ: দুধ উৎপাদন বাড়াতে অনেক কার্যকর।
রসুন: প্রাকৃতিক উপাদান যা দুধ উৎপাদন বাড়ায়।
জিরা ও মৌরি: হরমোনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে।

৫. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার

গরুর দুধ

গরুর দুধ, দই, ঘি: প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে এবং দুধের মান উন্নত করে।

৬. পর্যাপ্ত পানি

পানি

পানি: বুকের দুধ তৈরিতে প্রচুর পানি প্রয়োজন হয়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।

কিছু টিপস
শিশুকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানো দুধ উৎপাদনের সেরা উপায়।
মানসিক চাপ কমাতে এবং বিশ্রাম নিতে চেষ্টা করুন।
প্রয়োজন হলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
মায়ের খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক অবস্থার সরাসরি প্রভাব দুধের পরিমাণ ও গুণমানের ওপর পড়ে, তাই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুকে যেভাবে কোলে নিবেন

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ এএম
শিশুকে যেভাবে কোলে নিবেন
কখনোই শিশুকে এক হাতে তুলবেন না

শিশুকে কোলে নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে কোলে না নিলে শিশুর আরাম এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। শিশুকে কোলে নেওয়ার সময় কিছু বিষয় মেনে চলা উচিত। যেমন...

১. হাত ধোয়া
শিশুকে কোলে নেওয়ার আগে হাত ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এটি শিশুকে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়।

 

২. শিশুর মাথা এবং ঘাড় সাপোর্ট দেওয়া
নবজাতকের ঘাড় এবং মাথার পেশি খুবই নরম থাকে, তাই প্রথম কয়েক মাসে মাথা এবং ঘাড় ভালোভাবে সাপোর্ট দিতে হবে। যেমন 
এক হাত দিয়ে শিশুর মাথা এবং ঘাড় ধরে রাখুন। অন্য হাত দিয়ে কোমর এবং পিঠ সাপোর্ট দিন।

শিশুকে বুকের কাছে ধরে রাখুন, যাতে সে নিরাপদ অনুভব করে

 

৩. কোমল আচরণ
শিশুকে ধীরে এবং কোমলভাবে তুলুন। হঠাৎ টানাটানি বা দ্রুত গতিতে তুললে শিশুর ভয় পেতে পারে বা আঘাত লাগতে পারে।

 

৪. সঠিক ভঙ্গি
শিশুকে বুকের কাছে ধরে রাখুন, যাতে সে নিরাপদ অনুভব করে। পিঠ সোজা রাখুন এবং হাঁটু থেকে বেঁকে শিশুকে তুলুন।

 

৫. চোখে চোখ রাখা
শিশুর সঙ্গে চোখে চোখ রাখা এবং হাসিমুখে কথা বলা শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক।

 

৬. আরামদায়ক অবস্থান
শিশু যদি খাওয়ার জন্য কোলে থাকে, তবে তার মাথা সামান্য উপরে রাখুন, যাতে সে আরাম করে শ্বাস নিতে পারে।

 

৭. শিশুকে নামানোর পদ্ধতি
শিশুকে কোলে নেওয়ার মতোই সাবধানে এবং ধীরে ধীরে নামান। মাথা এবং ঘাড় সাপোর্ট দিতে ভুলবেন না।

 

সতর্কতা
কখনোই শিশুকে এক হাতে তুলবেন না।
যখন শিশু যদি কাঁদে বা অস্বস্তি প্রকাশ করে, তখন ভঙ্গি বদলে দেখুন।
যদি আপনি নতুন বাবা-মা হন, প্রথমে অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নিন।
এভাবে শিশুকে কোলে নেওয়া তার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং নিরাপদ।

যে ৭ লক্ষণ দেখলে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হতে পারে

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
যে ৭ লক্ষণ দেখলে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হতে পারে
দুর্বল অনুভব হওয়া, মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে

হৃদযন্ত্র বা হার্ট আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীরের সব অংশে রক্ত সরবরাহ করে। এর কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ দরকার হয়। হার্টে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালি যদি বন্ধ হয়ে যায় বা রক্ত হার্টে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে হার্টের মাংসপেশিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। আর তখনই হয় হার্ট অ্যাটাক।
৪৫ বছরের বেশি পুরুষ এবং ৫৫ বছরের বেশি নারীদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি। তবে এর চেয়ে কম বয়সেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। আসুন দেখে নিই, কোন লক্ষণগুলো দেখলে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকতে পারে।

১. বুকের মাঝখানে ব্যথা
হার্ট অ্যাটাকের প্রথম উপসর্গই হচ্ছে বুকে ব্যথা। বুকের ডান বা বাম পাশে ব্যথা হবে না। একেবারে বুকের মাঝ বরাবর ব্যথা হবে। এই ব্যথা ক্রমাগত বাড়তে থাকবে। ব্যথার তীব্রতা দেখে মনে হবে যেন বুকের মধ্যে ছুরি চালাচ্ছে বা বুকের মধ্যে হাতি পাড়া দিচ্ছে এবং বুকের হাড় ভেঙে যাচ্ছে।

 

২. হাত ও ঘাড় ব্যথা
বুকের ব্যথা একসময় বাম হাত ও ঘাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়বে। যাকে বলা হয় ‘ব্যথাটা রেডিয়েট’ করা। ব্যথা ঘাড়ে ছড়িয়ে পড়লে মনে হবে যেন গলার মাংসপেশি কেউ চেপে ধরছে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের ব্যথা বোঝার ক্ষমতাটা কম থাকে। যার কারণে তাদের অনেক সময় বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেলেও তারা টের পায় না। চিকিৎসকদের মতে, যদি গলায় কোনো কিছু আটকে থাকার অনুভূতি হয়, সেই সঙ্গে গলা ধরে আসে, কোনো কিছু গিলতে সমস্যা হয়, ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে সেটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।

হার্টে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালি বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়

 

৩. পেটে তীব্র ব্যথা
বুকের প্রচণ্ড ব্যথা অনেক সময় পেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই ব্যথাকে অনেকে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা মনে করতে পারেন। হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা পেটে হলে সেটি তীব্র হবে। তার সঙ্গে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া থাকবে।

 

৪. কাশি ও শ্বাসকষ্ট
যদি হার্ট অ্যাটাকের পর পরিস্থিতি যদি হার্ট ফেইলরের দিকে যায়, তাহলে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হবে। হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা যদি জরুরি ভিত্তিতে না নেওয়া হয়, তাহলে হার্ট আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে, ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তখন সারা দেহে পানি এসে পড়ে। এর মধ্যে প্রথমেই পানি আসে ফুসফুসে। ফলে কাশি ও শ্বাসকষ্ট হার্ট অ্যাটাকের পর হার্ট ফেইলরের একটা উপসর্গ।

 

৫. অতিরিক্ত ঘাম
বুক ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত ঘাম হয়, তাহলে সেটি হার্ট অ্যাটাকের একটি লক্ষণ। হার্ট অ্যাটাকের সময় দেহ খুব রেস্টলেস বা অস্থির হয়ে পড়ে, বুকে ব্যথা হয়, তাই তখন অস্বাভাবিক বা প্রচণ্ড রকমের ঘাম হয়।

 

৬. অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
দুর্বল অনুভব হওয়া, মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। বুকের ব্যথা অনেক সময় এতটা তীব্র হতে পারে যে, এতে আক্রান্ত রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এটাও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।

হার্ট অ্যাটাকের প্রথম উপসর্গই হচ্ছে বুকে ব্যথা

 

৭. বমি বমি ভাব ও বমি
বমি বমি ভাব কিংবা বমি শুরু হলেই যে সেটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ তা নয়। তবে যদি বমির সঙ্গে বুকেও তীব্র ব্যথা ও অস্বস্তি থাকে, তাহলে সেটা হার্ট অ্যাটাকের একটি উপসর্গ হতে পারে।

এই উপসর্গগুলো দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে যেতে হবে।

শরীরের কোথাও কেটে গেলে দ্রুত যে কাজগুলো করতে হবে

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৫০ পিএম
আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫০ এএম
শরীরের কোথাও কেটে গেলে দ্রুত যে কাজগুলো করতে হবে
ক্ষতস্থান বড় বা গভীর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে

শরীরের কোথাও কেটে গেলে সংক্রমণ এবং রক্তপাত প্রতিরোধের জন্য দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। কারণ দেরি হলে জটিলতা বাড়তে পারে। শরীরের কোথাও কেটে গেলে দ্রুত যে কাজগুলো করবেন তার মধ্যে আছে...


১. রক্তপাত থামানো
পরিষ্কার কাপড় বা গজ ব্যবহার করে কাটাস্থানের ওপর আলতো চাপ দিন। রক্তপাত বেশি হলে ক্ষতস্থানের ওপর চেপে ধরে রাখুন এবং প্রয়োজনে কাপড় পরিবর্তন করুন। আক্রান্ত অংশ যতটা সম্ভব কম নড়াচড়া করতে হবে। সম্ভব হলে রোগীকে শুইয়ে দিতে হবে।
হাতের কোথাও কাটলে ক্ষতের অংশটি উঁচু করে তুলে ধরতে হবে (মাথা থেকে উঁচুতে)। পায়ের কোথাও কাটলে পা উঁচুতে তুলে ধরতে হবে (হৃৎপিণ্ড থেকে উঁচুতে)। এতে আক্রান্ত অংশে রক্ত সঞ্চালন কমবে এবং রক্তপাত কমে আসবে।

 

২. ক্ষত পরিষ্কার করা
পরিষ্কার পানিতে কাটা অংশ ধুয়ে নিন। চারপাশের ময়লা বা ধুলো আলতো করে সরিয়ে ফেলুন। যদি প্রয়োজন হয়, হালকা সাবান ব্যবহার করে ধুয়ে নিন। তবে ক্ষতস্থানের ভেতরে যেন সাবান না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 
ধারালো ও চোখা জিনিস ঢুকে গিয়ে কেটে গেলে ক্ষতস্থানের ভেতরে কিছু ঢুকে আছে কি না সেটি ভালোভাবে লক্ষ করতে হবে। যদি এমন কিছু পাওয়া যায়, তা হলে তা বের না করে দ্রুত হাসপাতালে অথবা ডাক্তারের কাছে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে।

 

৩. অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করা
কাটাস্থানে অ্যান্টিসেপটিক লোশন বা ক্রিম লাগান। এটি সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করবে।

 

৪. ড্রেসিং করা
ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার পর ড্রেসিং করে ক্ষতস্থান মুড়ে দিলে তা ধুলাবালি ও রোগজীবাণু থেকে ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করবে। তবে ডেসিংয়ের আগে ক্ষতস্থানটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতো করে চেপে চেপে শুকিয়ে নিতে হবে। এর পর ‘অ্যাডহেসিভ ব্যান্ডেজ’, অর্থাৎ ক্ষতস্থানকে পুরোপুরি ঢেকে দিয়ে তার চারদিকে আপনা আপনি লেগে থাকে— এমন ব্যান্ডেজ লাগাতে হবে। এগুলো ফার্মেসিতে সার্জিন প্যাড ও সার্জিন পোর-সহ বিভিন্ন নামে কিনতে পাওয়া যায়।
এ ধরনের ব্যান্ডেজ হাতের কাছে পাওয়া না গেলে জীবাণুমুক্ত (স্টেরাইল) গজ ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষতটি ব্যান্ডেজ করে নিতে হবে। উভয় ধরনের ব্যান্ডেজের আকার ক্ষতের আকারের চেয়ে সামান্য বড় হতে হবে।

 

৫. প্রয়োজন হলে টিটেনাস টিকা নিন
যদি কাটা জায়গা বড় হয় বা নোংরা জিনিস দিয়ে কাটা হয় এবং সম্প্রতি টিটেনাস টিকা নেওয়া না থাকে, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে টিটেনাস ইনজেকশন নিন। এই ইনজেকশন পরবর্তিতে ক্ষতস্থানে জটিলতা এড়াতে কাজ করবে।

 

৬. ডাক্তার দেখানো
যদি ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে অথবা যদি মনে করেন ইতোমধ্যে ইনফেকশন হয়ে গেছে, তা হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
যেসব লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন ক্ষততে ইতোমধ্যে ইনফেকশন হয়ে গিয়েছে—
যদি ক্ষতস্থানটি ফুলে যায়। ক্ষতস্থানের ভেতরে কিংবা চারপাশে পুঁজ দেখা দেয়। ক্ষতস্থান থেকে তরল কিছু বের হয়। ক্ষতস্থানটি লাল এবং গরম হয়ে যায়। ক্ষততে ব্যথা হয়। অসুস্থ অনুভব হয়। জ্বর এলে বা শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪°ফারেনহাইট (৩৮°সেলসিয়াস)-এর চেয়ে বেশি হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। 

 

যা করবেন না
খালি চোখে দেখে পরিষ্কার মনে হলেও ক্ষতস্থানকে জীবাণুমুক্ত ভাববেন না। অবশ্যই ক্ষতস্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
ক্ষতস্থানের ওপর ফুঁ দেবেন না।
ক্ষত গভীর হলে রক্তপাত কমে যাওয়ার পর তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করবেন না। গভীর ক্ষতের সঠিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান।
ক্ষতস্থানের গভীরে ঢুকে যাওয়া কোনো কিছু টেনে বের করার চেষ্টা করবেন না।
ক্ষতস্থানে বড় কিছু ঢুকে গেলে তা বের করার অথবা তাতে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। বরং ডাক্তারের কাছে যান।

 

যেসব লক্ষণ দেখা গেলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে—
ক্ষতস্থান অনেক বড় বা গভীর হলে।
ক্ষত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ না হলে।
ক্ষতের অংশে ক্রমাগত অবশ অনুভূতি থাকলে।
শরীরের কোনো অঙ্গ নাড়াতে অসুবিধা হয়।
চেহারার কোথাও গুরুতরভাবে কেটে গেলে। পরবর্তী সময়ে দাগ হয়ে যাওয়া এড়াতে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
হাতের তালুতে কেটে গেলে তা দেখে ইনফেকশন হয়েছে মনে হলে।
বড়শি কিংবা মরিচা ধরা কোনো বস্তু (যেমন- পেরেক, ছুরি) দিয়ে কেটে গেলে কিংবা মাংস ফুটো হয়ে ক্ষত হলে।
ধমনী কেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়লে। এই রক্ত টকটকে লাল রঙের হয়। সাধারণত এই ধরনের রক্তপাত প্রাথমিক চিকিৎসায় বন্ধ করা কঠিন।

 

জ্বর-কাশি হলেই এইচএমপিভি ভাইরাস আক্রান্ত, এটা ঠিক নয়

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৬ এএম
জ্বর-কাশি হলেই এইচএমপিভি ভাইরাস আক্রান্ত, এটা ঠিক নয়
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

শীতে সাধারণত জ্বর, সর্দি-কাশির মতো বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। যা কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। যাদের ঠান্ডাজনিত অসুখ রয়েছে তাদের শীতে বাড়তি সতর্কতা না নিলে সমস্যা বেড়ে যায়। এই শীতে চীনে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) সনাক্ত হয়েছে। যা বিশ্বের কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও কয়েকটি শিশুর মধ্যে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে। ফলে অনেকটাই আতঙ্ক বিরাজ করছে মানুষের মধ্যে।

অনেকেই এই ভাইরাসকে করোনাভাইরাসের মতো আরেকটি ভাইরাস বলে অনুমান করছেন। আর করাটাই স্বাভাবিক। করোনার মতোই এই এইচএমপিভি ভাইরাস ছড়ায়। তবে অনেকেই জানেন না যে করোনা ভাইরাসের আগেই এইচএমপিভি ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বর, সর্দি বা কাশি হলেই যে এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এমনটি অন্য ভাইরাস বা ফ্লু থেকেও হতে পারে। তাছাড়া বহুকাল ধরে শীতজনিত যেসব রোগ রয়েছে তাও হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, ২০০১ সালে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হয়তো আরও অনেক যুগ আগে থেকেই পৃথিবীতে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই ঘাবড়ানোর কিছু নেই। কেন না, চীন সরকার বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কেউই এখনও এই ভাইরাস নিয়ে আনুষ্ঠানিক সতর্কতা জারি করেনি বা এই ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করবে কি-না সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরাও কোনো সতর্কবার্তা দেননি। তবে, রোগটি যাতে না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এইচএমপিভি সংক্রমিত হলে সাধারণ জ্বর বা ফ্লুর মতো উপসর্গ দেখা যায়। এর সঙ্গে কাশি, জ্বর, নাক বন্ধ এবং শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হতে পারে। তাছাড়া চামড়ায় র‍্যাশ বা দানা দানা দেখা দিতে পারে।

সিডিসি বলছে, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে কোন বয়সের মানুষের ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো অসুখ হতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এটি শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং যাদের ইমিউিটি সিস্টেম দুর্বল তাদের মধ্যেই বেশি দেখা গেছে।

এইচএমপিভি ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেতে তিন থেকে ছয় দিন সময় লেগে যায়। কিন্তু আক্রান্ত হলে ঠিক কতদিন ভুগবেন তা নির্ভর করে সংক্রমণের তীব্রতা ও আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক সক্ষমতার ওপর।

বাংলাদেশের ভাইরোলজিস্টরাও জানিয়েছেন, এইচএমপিভি নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এর বড় কারণ হচ্ছে, এটি কোভিডের মতো নতুন কোনো ভাইরাস নয়। ২০০১ সালে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়, এবং বাংলাদেশে ২০১৬ বা ২০১৭ সালের দিকে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসে আগেও মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সুতরাং কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একে মোকাবিলা করতে পারবে বলে আশা করা যায়।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ভাইরোলজিস্ট মাহবুবা জামিল বিবিসিকে জানান, কোভিড ফুসফুসের যতটা ক্ষতিগ্রস্ত করে, এইচএমপিভিতে ততটা ক্ষতি হয় না। তবে শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী বা কঠিন কোনো রোগে আক্রান্তদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ তীব্র হতে পারে।

এইচএমপিভি ভাইরাস ও করোনা ভাইরাসের মধ্যে মিল কতটুকু?

চীনের সেন্ট্রার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, এইচএমপিভি কোভিড-১৯এর মতোই একটি আরএনএ ভাইরাস। অর্থাৎ এর জিনের গঠন একই। এই ভাইরাসও শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে। তবে এরা একই পরিবারের ভাইরাস নয়। অর্থাৎ কোভিডের টিকা নেওয়া থাকলে বা আগে কখনো কোভিড হলেও আপনার এইচএমপিভির সংক্রমণ হতে পারে।

সিডিসি জানায়, ভাইরাসটি অন্তত ৬০ বছর আগেই ছড়িয়েছে।

এই ভাইরাস প্রতিরোধে করোনা মোকাবিলায় যেসব সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল, একই ধরনের পদক্ষেপে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

অমিয়/

এইচএমপিভি বা হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসে আতঙ্ক নয়

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৬ পিএম
এইচএমপিভি বা হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসে আতঙ্ক নয়
ছবি সংগৃহীত

চীনে আবার এক ভাইরাস নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বলা হচ্ছে, অনেকটা করোনাভাইরাসের মতো এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষের হাসপাতালে স্থান পাওয়া যাচ্ছে না। এই ভাইরাসটির নাম HMPV অর্থাৎ হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস।
এই ভাইরাসের কারণে চীনে ব্যাপক ভিড় এবং অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতে নতুনভাবে দুটি কেস পাওয়ার পর তাদেরও চিন্তা বেড়েছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ কর্নাটকে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসের দুটি কেস শনাক্ত করেছে। এমন অবস্থায় সবাই মনে করছে, এটি চীন থেকে আসা ভাইরাস।

এটি কতটা গুরুতর হতে পারে?
সিকে বিড়লা হাসপাতালে ইন্টারনাল মেডিসিনের কনসালটেন্ট ডা. তুষার তায়াল বলেন, চীনে কী পরিস্থিতি চলছে, সে সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না, তবে প্রথমত, এই ভাইরাসটি নতুন নয়। ২০০১ সালে এই ভাইরাসটি চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে এর উপস্থিতি আগেও ছিল।
হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস ভাইরাস শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত এবং এটি ফুসফুসে প্রবেশ করে ক্ষতি করতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত হাজার হাজার ভাইরাস পৃথিবীতে আছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর নিজেদের জীবনচক্র শেষ করে মারা যায়। আমাদের ইমিউন সিস্টেমও এই ভাইরাসগুলোকে মেরে ফেলে। এর মধ্যে কিছু ভাইরাস অবশ্যই ক্ষতি করতে পারে, তবে অধিকাংশ ভাইরাস বেশি ক্ষতি করেনি এবং সাধারণ সর্দি-কাশির মতো সমস্যা তৈরি করে চলে যায়। এসব ভাইরাসে সাধারণত ফ্লুর মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস সাধারণত শিশু ও বয়স্কদের আক্রান্ত করে। বেশির ভাগ মানুষ নিজেই সেরে যায়। যদি সমস্যা হয়, তবে সাধারণ ওষুধে এটি ভালো হয়ে যায়। বিরল ক্ষেত্রে এটি গুরুতর হতে পারে। তবে এই ধরনের ভাইরাল রোগের জন্য কোনো বিশেষ ওষুধ নেই, শুধু সোয়াইন ফ্লুর জন্য একটি ওষুধ তৈরি হয়েছিল।

যদি করোনা পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে কী হবে?
হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসের লক্ষণ খুব বিপজ্জনক নয়। এটি খুব কম ক্ষেত্রে ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হতে পারে। যেখানে এটি করোনা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, সে বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে এটি নতুন ভাইরাস নয় এবং এটি করোনা মহামারির মতো পরিস্থিতি তৈরি করবে, এমন সম্ভাবনা খুব কম।

প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রায় দুই দশক আগে প্রথমবারের মতো এইচএমপিভি ভাইরাস উপস্থিতি জানান দিলেও এখন পর্যন্ত এর টিকা আবিষ্কার হয়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা মোকাবিলায় যেসব সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল, একই পদক্ষেপে এই ভাইরাসও প্রতিরোধ করা সম্ভব। টানা ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়া, অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ স্পর্শ না করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার মধ্য দিয়ে এইচএমপিভি থেকে নিরাপদ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।