ঢাকা ১৮ কার্তিক ১৪৩১, রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪

ঐতিহ্যবাহী হাট: ঘিওরের ডিঙি নৌকার কদর

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
ঐতিহ্যবাহী হাট: ঘিওরের ডিঙি নৌকার কদর
নৌকার হাটে চলছে বেচাকেনা। গত সপ্তাহে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে। ছবি: খবরের কাগজ

হাটটি ২০০ বছরের পুরোনো। এর বিস্তৃতি ছিল প্রায় ৩ কিলোমিটার। শুরু থেকে গরু, পাট ও ধান বিক্রির জন্য সারা দেশে পরিচিত ছিল। কালের বিবর্তনে এটি ক্রমশ ছোট হয়ে বাজারে পরিণত হয়েছে। এখন এই হাটটিকে অনেকে নৌকার হাট নামে চেনেন। বলছিলাম মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ডিঙি নৌকার হাটের কথা।

পদ্মা, যমুনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতী নদীবেষ্টিত মানিকগঞ্জ জেলা। বর্ষা এলেই এ এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ফলে মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয় ডিঙি নৌকা। আর মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলোর ডিঙি ও কোশা নৌকার জোগান দিয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী ঘিওরের এ হাটটি।

বর্ষা মৌসুমে প্রতি বুধবার উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে বসে এ নৌকার হাট। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে নৌকা বেচাকেনা। আকার ও মানভেদে প্রতিটি নৌকা ৩ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। মানিকগঞ্জ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ঢাকার সাভার, ধামরাই, টাঙ্গাইল ও রাজবাড়ী থেকেও আসেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। 

অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মোহাম্মদ সিরাজ খান বলেন, ‘ব্রিটিশ শাসনামলে আঠারো শতকের প্রথম দিকে ধলেশ্বরী ও ইছামতী নদী তীরের এই ঘিওর হাটটি গরু, পাট ও ধান বিক্রির জন্য বিখ্যাত ছিল। এখনো প্রতি বুধবারে এখানে হাট বসে। কালের বিবর্তনে এই হাটটির ঐতিহ্য থাকলেও আগের মতো আর জৌলুস নেই। বর্ষা মৌসুমে এখানে প্রতিবছর নৌকার হাট বসে। অনেক জেলা উপজেলা থেকে নৌকার ব্যাপারী ও ক্রেতারা আসেন।’ 

বৃদ্ধ রহমত আলী বলেন, ‘এই ঘিওর হাটের ঐতিহ্য সারা দেশেই রয়েছে। আশপাশে এমন বড় নৌকার হাট না থাকায় অনেক নৌকা ওঠে এখানে। প্রতি মৌসুমে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার নৌকা বিক্রি হয়। একটা সময় এই হাটটি ৪০-৪৫ লাখ টাকা সরকারি ডাক হলেও বর্তমানে তা ১০-১২ লাখ টাকায় ডাক নেন ইজারাদার। হাটের অব্যবস্থাপনার জন্যই এমন দশা হয়েছে। এতে করে একদিকে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। আমরা চাই ঘিওরে হাটটির ঐতিহ্য আবার ফিরে আসুক।’

এই হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘এই হাটে ১৬ বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন আকার ও মানের নৌকা বিক্রি করে থাকি। এ বছরের জুন মাসে প্রথম নৌকার হাট বসেছে। হাট কবে শেষ হবে তা নির্ভর করে নদীতে পানি থাকার ওপর।’

নৌকার কারিগর সুবল সরকার প্রায় এক যুগ ধরে নৌকা বানোনোর সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, ‘এ হাটে আম, জাম, ঝিকা, ডুমরা, মেহগনি, কড়ই, চাম্বুল কাঠের নৌকা পাওয়া গেলেও চাম্বুল ও কড়ই কাঠের নৌকার চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু অধিকাংশ ক্রেতাই ছোট ও মাঝারি আকারের নৌকা কিনে থাকেন।’ 

দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগের নৌকাটা নষ্ট হওয়ায় ঘিওর হাটে এসেছি। নৌকার দাম তুলনামূলকভাবে আগের চেয়ে বেশি। আমি চাম্বুল কাঠের ৭ হাতের একটা নৌকা কিনেছি সাড়ে ৫ হাজার টাকা দিয়ে।’

নৌকার ব্যাপারী রহমত আলী বলেন, ‘নৌকা তৈরির কাঠ, পেরেক ও মিস্ত্রিখরচ বাড়ায় আমরা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। দাম বাড়ায় অনেক ক্রেতা না কিনেই চলে যান। এতে করে আমাদের ব্যবসায় লোকসান হয়। কার্তিক মাস পর্যন্ত বেচাকেনা চলবে।’

নৌকা কেনার পর হাট থেকে অন্যত্র নেওয়ার জন্য ভ্যান ও ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই হাটে নৌকা পরিবহন করার জন্য অর্ধশতাধিক ঘোড়ার গাড়ি ও ভ্যান চালক রয়েছেন। ঘিওর নৌকা হাটের ইজারাদার আলমগীর হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী ঘিওর নৌকার হাটে মানিকগঞ্জ জেলাসহ আশপাশের শতাধিক ব্যবসায়ী ও নৌকা তৈরির কারিগররা আসেন। এ হাটের স্থায়িত্ব নির্ভর করে নদীনালা ও খালবিলে পানি কতদিন থাকে তার ওপর। প্রতি বুধবার এ হাটে গড়ে এক থেকে দেড় শ নৌকা বিক্রি হয়, যা টাকার অঙ্কে প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা।’

ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঘিওর হাট জেলার অন্যতম বড় হাট হিসেবে পরিচিত। শুনেছি ব্রিটিশ আমলেও এই হাটটি বেশ জমজমাট ছিল। উপজেলায় মোট ৭টি হাট-বাজার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ টাকায় ইজারা দেওয়া হয় এই ঘিওর হাটটিকে।’

জমজমাট বুধপাড়া মেলা

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম
জমজমাট বুধপাড়া মেলা
ঐতিহ্যবাহী মেলায় পণ্যের পসরা সাজানো একটি দোকান। নাটোরের লালপুরের বুধপাড়ায়। ছবি: খবরের কাগজ

নাটোরের লালপুর উপজেলার বুধপাড়া গ্রামে কালীপূজাকে কেন্দ্র করে ৫০০ বছর ধরে মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বুধপাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা বসে বলে ‘বুধপাড়ার মেলা’ নামেও এটি পরিচিতি। প্রতিবছর কার্তিক মাসে হাজারও ভক্তের আরাধনা ও দর্শনার্থীর পদচারণে মুখরিত হয় লালপুরের এই কালীপূজার মেলা।

গত বৃহস্পতিবার বুধপাড়া শ্রীশ্রী কালীমাতা মন্দিরে ৫৩৫তম বার এ মতো মেলা শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী ৬ নভেম্বর পর্যন্ত। আয়োজকরা জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভিড় করছেন ভক্ত আর দর্শনার্থীরা। মেলা ও পাঁঠাবলি দেখার পাশাপাশি বাহারি পণ্যের পসরা নিয়ে বসা দোকানগুলো থেকে তারা কিনছেন পছন্দের সামগ্রী। মেলায় ধর্মীয় বই, বিভিন্ন পুতুল ছাড়াও মিলছে সুস্বাদু নানা রকমের খাদ্যসামগ্রী। 

জানা গেছে, নবাবী আমলে বর্গিদের অত্যাচারে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের খাগড়া থেকে কাঁসাশিল্প ব্যবসায়ীদের ৬০টি পরিবার লালপুরের বুধপাড়ায় এসে বসতি স্থাপন করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের এই কাঁসাশিল্পীরা কালীপূজা অর্চনার জন্য ৮৯৭ বঙ্গাব্দে শীষচন্দ্র চক্রবর্তীর দান করা জমিতে খড়ের ঘরে একটি মন্দির নির্মাণ করেন। পরে ১৩৩২ বঙ্গাব্দে জনৈক লাল কেনেডিয়ার স্ত্রী জানকী বাঈয়ের আর্থিক অনুদানে পাকা মন্দির নির্মিত হয়। এ ছাড়া জমিদার পুণ্যচন্দ্র দাস মন্দিরের নামে প্রায় দেড় শ বিঘা জমি দান করেন। তবে কালীমন্দির ও গোবিন্দমন্দির চত্বরের আট বিঘা জমি ছাড়া বাকি সব জমি বেদখল হয়।

আয়োজকরা জানান, কালীপূজা ও মেলা চলাকালীন প্রতিদিন শতাধিক পাঁঠাবলি হয়ে থাকে। প্রতিমা নির্মাতা লালপুরের জোতদৈবকী গ্রামের সুকুমার চন্দ্র হালদার দাবি করেন, এখানের কালী প্রতিমার উচ্চতা ৩৩ ফুট, যা দেশের সবচেয়ে বড় কালী প্রতিমা। ১৯৯৮ সাল থেকে প্রতিবছর এই প্রতিমা নির্মাণ করা হচ্ছে। 

মন্দির কমিটির সভাপতি শতদল কুমার পাল জানান, পূজা ও মেলা উপলক্ষে আশেপাশের এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে পূজা পরিচালনায় তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন। 

মন্দির কমিটির সদস্য আশীষ কুমার সরকার সুইট জানান, গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ৫৩৫তম কালীপূজা ও মেলা। হাজারও দর্শনার্থী ও ভক্তদের পদচারণে মন্দির এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশে মেলা চলছে। মেলায় বিভিন্ন ধরনের তিন শতাধিক স্টল স্থান পেয়েছে। রয়েছে শিশুদের জন্য নাগরদোলার ব্যবস্থা। লোহার তৈরি দা, কুড়াল, বঁটি, কাঁচি, হাঁসুয়া, কোদালসহ গৃহস্থালি কাজের রকমারি জিনিসপত্রের দোকান। বাঁশ ও কাঠের তৈরি নানা আসবাবপত্র, কুটিরশিল্পের নানা পণ্য এবং মিষ্টান্নের সঙ্গে কসমেটিকস সামগ্রীতে সেজেছে মেলার স্টলগুলো। রয়েছে বাহারি পোশাক, কম্বল, শিশুদের বিভিন্ন খেলনাসামগ্রী, খাবার, বইয়ের দোকান, ফার্নিচার সামগ্রীর দোকান। আরও রয়েছে বাহারি রকমের ও স্বাদের পানের দোকান।

তিনি বলেন, ‘জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা 

বাড়ি থেকে বিভিন্ন ফল ও মান্নতের পাঁঠা নিয়ে পূজামণ্ডপে আসেন। বাদকরা ঢাক-ঢোল বাজিয়ে তাদের স্বাগত জানান। ভক্তরা পূজামণ্ডপে এসে তাদের নাম ও ফি দেন। এরপর কালীকে প্রণাম শেষে সঙ্গে আনা বিভিন্ন সামগ্রী অর্পণ করেন। বলির জন্য আনেন পাঁঠা। ওই মেলা দেখতে ভিড় করেন নানা ধর্মের মানুষ। এতে মেলাটি সব ধর্ম-বর্ণের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

লালপুর বাজারের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও তিনি মেলায় এসেছেন। মেলা ঘুরে খাদ্যসামগ্রী ছাড়াও বাড়ির প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনেছেন।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপন ও মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কুঠিবাড়ির আদলে ‘স্বপ্নের বাড়ি’

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৮ এএম
কুঠিবাড়ির আদলে ‘স্বপ্নের বাড়ি’
ঝিনাইদহে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ির আদলে তৈরি করা হয়েছে ‘স্বপ্নের বাড়ি’। ছবি: খবরের কাগজ

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৩ নম্বর তাহেরহুদা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে নির্মিত হচ্ছে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ির আদলে একটি বাড়ি। বাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্নের বাড়ি’। নির্মাণকাজ এখনো পুরোপুরি শেষ না হলেও উৎসুক জনতা বাড়িটির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন। মূল্যবান কাঠ দিয়ে তৈরি করায় বাড়িটির মর্যাদা আরও বেড়েছে। এ ছাড়া বাড়িটির চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য দর্শনার্থীদের মন ভরিয়ে দিচ্ছে।

এই ‘স্বপ্নের বাড়ি’ নির্মাণ করছেন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাবু শ্যামল কুমার সাহার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ছেলে বাবু সঞ্জয় কুমার সাহা। সোয়া একর জমির ওপর ৫ কাঠা জায়গাজুড়ে নির্মিত হচ্ছে বাড়িটি। ইট-সিমেন্টের পাকা গাঁথুনি নয়, দামি কাঠ আর গ্রেডিং লোহার বার দিয়ে বাড়িটির সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। ইট-পাথর-সিমেন্ট ছাড়াও কাঠের তৈরি বাড়ি যে শিল্পসম্মত রূপে গড়ে তোলা যায়, তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই ‘স্বপ্নের বাড়ি’। বোস্টন প্রবাসী বাবু সঞ্জয় কুমার সাহা মনের মাধুরী মিশিয়ে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে নাইজেরিয়ান কাঠ ও লোহার সঙ্গে উন্নতমানের প্লেনসিট দিয়ে সাজিয়ে তুলছেন বাড়িটিকে। ঢাকার মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা দক্ষ কারিগররা কাজ করছেন।

বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে যেন একটি টিনের চালা দিয়ে বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে নান্দনিক সব কারুকার্য। অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে সাজানো হয়েছে বাড়ির প্রবেশপথ। দেয়ালে দেয়ালে বাহারি ডিজাইন শোভা পাচ্ছে। চারিদিকে আবহমান গ্রামবাংলার লোকজ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বাড়িটির বাইরে বিশ্বকবির কুঠিবাড়ির সীমানা প্রাচীরের আদলে প্রাচীরের কাজ এগিয়ে চলছে।

সঞ্জয় বাবুর স্বপ্নের বাড়ির কথা জানাজানি হওয়ায় আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সৌন্দর্যপিপাসুরা বাড়িটি দেখতে ছুটে আসছেন। স্বপ্নের বাড়ি দেখতে আসা হরিণাকুণ্ডুর আব্দুল খালেক বলেন, ‘এরকম বাড়ি এই এলাকাতে দ্বিতীয়টি নেই। বাড়িটি দেখতে খুবই সুন্দর।’ আরেক দর্শনার্থী রাসেল রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘গ্রামীণ এলাকায় এরকম একটি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে, এটা কল্পনার বাইরে। আমি অনেক জায়গায় ঘুরেছি। কিন্তু এরকম স্বপ্নের ছোঁয়া লাগা বাড়ি দেখিনি। এখানে এসে মনটা ভরে গেছে।’

শৈলকূপার এস এম রনি বলেন, ‘শুধু টাকা থাকলেই এমন স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যায় না। দরকার একটি শৈল্পিক মন। যেটি বাড়িটির নির্মাতা বাবু সঞ্জয় কুমার সাহার মধ্যে আছে। নিজের মনের মধ্যে এমন অসম্ভব কল্পনা না থাকলে, এরকম ব্যতিক্রমী চিন্তা করা সম্ভব নয়। আমাদের এলাকার বিত্তশালীরা এমন বাড়ি নির্মাণে এগিয়ে এলে, এই এলাকাকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।’

স্থানীয়রা বলছেন, নির্মাণসম্পন্ন হলে সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হবে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জমিদার পল্লিখ্যাত ভবানীপুরের স্বপ্নের বাড়িটি।

৪০ বছরে পা দিচ্ছে কলকাতা মেট্রো

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
৪০ বছরে পা দিচ্ছে কলকাতা মেট্রো
মেট্রোতে উঠছেন যাত্রীরা

নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) কলকাতা শহরজুড়ে জাল বিছিয়েছে মেট্রো। তবে শুরুটা এমন ছিল না। একটা সময় কেবলমাত্র সীমিত রুটেই চলত মেট্রো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই মেট্রোর রুট ক্রমশ বেড়েছে। 

আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) জন্মদিন। ৪০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে পুরোনো দিনের সেই মেট্রো আবার ফিরে দেখার আয়োজন করেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। 

১৯৮৪ সালে ২৪ অক্টোবর কলকাতায় মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়। প্রথম এসপ্ল্যানেড এবং ভবানীপুরের (এখন নেতাজী ভবন) মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার রাস্তায় চলেছিল প্রথম মেট্রো। ছুটেছিল তিন স্টেশনে- পার্কস্ট্রিট-ময়দান-রবীন্দ্র সদন। বাকিটা তো ইতিহাস। দিন যত গেছে ততই যেন কলকাতার অন্যতম প্রধান লাইফলাইনে পরিণত হয়েছে মেট্রো।

এখন কলকাতার একাধিক জায়গায় মেট্রো আর পাতালপথে নয়, চলে মাটির ওপর দিয়েই। আরও নতুন নতুন রুট তৈরি হচ্ছে কলকাতা মেট্রোতে। আরও আধুনিক ও স্মার্ট হচ্ছে মেট্রো। এমনকি গঙ্গা নদীর নিচে দিয়েও এখন চালু হয়েছে মেট্রো, যা যাত্রীদের কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

এখন কলকাতা মেট্রো মানেই তো এসি রেক। নন-এসি রেকের দিন শেষ। কিন্তু কেমন ছিল সেই সব নন-এসি রেক? মেট্রোর জন্মদিনে ফের দেখা যাবে, এমনকি চড়াও যাবে সেই নন-এসি রেকে। আসলে পুরোনো সেই দিনের কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেট্রোর ৪০তম জন্মদিনে আসছে সেই নন-এসি রেক। মহানায়ক উত্তরকুমার (টালিগঞ্জ) স্টেশন থেকে ময়দান পর্যন্ত চলবে এই নন-এসি রেক। মূলত নন-এসি রেকে চড়ার সেই আগের অভিজ্ঞতা পাওয়ার জন্যই এই বিশেষ উদ্যোগ। আপাতত শহরের উত্তর প্রান্তে নোয়াপাড়া কারশেডে রয়েছে এই রেক। সেই রেকটিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে চড়ার অভিজ্ঞতা নিতে পারেন যাত্রীরা।

বছর তিনেক আগে কলকাতা মেট্রোর ইতিহাস থেকে কার্যত মুছে যায় নন-এসি রেক। নোয়াপাড়া রেকে এখনো কয়েকটি নন-এসি রেক রাখা ছিল। সেই রেককে ফের মেট্রোপথে নিয়ে আসা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার থেকে এই নন-এসি রেককে ফের রেলপথে নামানো হবে। মূলত যাত্রীরা যাতে আবার সেই নন-এসি রেকে চড়ার অভিজ্ঞতা নিতে পারেন সেকারণেই এই ব্যবস্থা। এই রেকটিকে মেট্রোর পুরোনো দিনের নানা কথায় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সাজানো হচ্ছে ফুল দিয়ে। 

মূলত মেট্রোর ইতিহাসের নানা দিক তুলে ধরা হচ্ছে এই নন-এসি রেককে। মেট্রোর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ লোগো প্রকাশ করা হচ্ছে। নানা ধরনের প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হচ্ছে।

কাঠের ঘর যাচ্ছে বেলজিয়ামে

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৯ এএম
কাঠের ঘর যাচ্ছে বেলজিয়ামে
বেলজিয়ামের ইকোপার্কের জন্য বাগেরহাটে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন কাঠের ঘর। ছবি: খবরের কাগজ

ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামের পাইরি ডাইজা ইকোপার্কের জন্য বাগেরহাটে তৈরি হচ্ছে কাঠের ঘর। 

বাগেরহাট সদর উপজেলার সিএনবি বাজারসংলগ্ন করোরি গ্রামে ন্যাচারাল ফাইবার নামের একটি কারখানায় ঘরগুলো তৈরি হচ্ছে। ঘরের কাঠামো, দরজা, জানালা এবং আসবাবপত্র তৈরি করা হচ্ছে আম, জাম, মেহগনিসহ দেশি সব গাছের কাঠ দিয়ে। সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি এ ঘরের একটি নমুনা পছন্দ করেছেন বিদেশি ক্রেতারা। এর মধ্য দিয়ে কাঠের তৈরি ঘর রপ্তানিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলল বাংলাদেশের। আগামী বছরের জুনের মধ্যে ১২০টি কাঠের ঘর রপ্তানি হবে ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে। 

চলতি বছরের শুরুর দিকে গ্রিসের কোকোম্যাট নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বেলজিয়াম থেকে কাঠের ঘর তৈরির অর্ডার পায় বাগেরহাটের ন্যাচারাল ফাইবার নামক প্রতিষ্ঠানটি। এর পর থেকে কাঠের ঘরের স্যাম্পল তৈরি শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। কাঠের তৈরি ঘরটি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের পছন্দ হওয়ায় চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের মধ্যে ১২০টি ঘর তৈরি করে রপ্তানির জন্য কাজ শুরু করেছে ন্যাচারাল ফাইবার নামের এই প্রতিষ্ঠানটি।

সরেজমিনে ন্যাচারাল ফাইবার কোম্পানির কারখানাটিতে গিয়ে দেখা যায়, কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ঘরের মূল কাঠামোসহ দরজা, জানালা ও আসবাবপত্র। শ্রমিকদের মধ্যে কেউ মেশিনে কাঠ কাটছেন, কেউ ফিটিং করছেন, কেউ কাঠের ওপর ডিজাইন করছেন। সবশেষে শ্রমিকদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব কাঠের ঘরের বিভিন্ন অংশ। এই অংশগুলোকেই জোড়া লাগিয়ে তৈরি করা হচ্ছে আস্ত কাঠের ঘর। প্রতিটি ঘর ১১ মিটার লম্বা এবং চওড়া সোয়া ৪ মিটার। দুটি বেডরুমে মোট পাঁচজনের থাকার উপযোগী এ ঘর সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হবে। ঘরের এক পাশে একটি বারান্দা, বেডরুমের সঙ্গে বাথরুম ও বসার ঘর থাকবে। বসার ঘরে টেলিভিশন দেখার ব্যবস্থা এবং ঘরের ভেতরেই রান্না করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঘরের প্রতিটি অংশ খুলে প্যাকিং করে পাঠানো হবে বেলজিয়ামে। 

কারখানার প্রোডাকশন ম্যানেজার শংকর বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা এখানে যে ঘর তৈরি করছি তা বিশ্বমানের পরিবেশবান্ধব ঘর। ক্রেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রথমে যে ঘরটি তৈরি করে দেখিয়েছি, সেটি ক্রেতারা পছন্দ করেছেন। এর মাধ্যমে কাঠের তৈরি ঘর রপ্তানিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে। আমাদের কাছ থেকে তারা মোট ১২০টি ঘর কিনবেন। আমরা অত্যন্ত যত্নসহকারে কাজ করছি, যাতে ইউরোপের বাজারে আমাদের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পায়।’

পাইরি ডাইজা ইকোপার্কের প্রধান স্থপতি পেসেল ডি বেক বলেন, ‘আমরা এখানে এসে খুঁজে পেয়েছি এমন মানুষ, যারা দারুশিল্পে দক্ষ। এ ছাড়া এই এলাকার কাঠও খুব উন্নত। আমরা এই কাঠের বাড়িগুলোয় থেকেছি, তবে সেখানে মশার ভয় ছিল। আমাদের দেশে এত মশা নেই। আমরা এই বাড়িগুলোতে থেকে খুবই শান্তি পেয়েছি। মনে হয় প্রকৃতির কাছেই আছি। বাংলাদেশের কাঠমিস্ত্রিদের দক্ষতা অনন্য। আমরা মনে করছি সামনে আরও প্রজেক্ট আনতে পারব।’ 

উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাচারাল ফাইবারের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজ আহমেদ বলেন, ‘এই প্রোডাক্টটি বেলজিয়ামের পাইরি ডাইজা ইকোপার্কের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। কোকোম্যাট নামক গ্রিসের একটি প্রতিষ্ঠান পাইরি ডাইজার এই কাজটি আমাদের এনে দিয়েছে। আমরা ক্রেতাদের ডিরেকশন ও ডিজাইন অনুযায়ী একটি আস্ত ঘর তৈরি করে দেখিয়েছি। তারা নির্দিষ্ট ডিজাইন ও ডিরেকশন অনুসারে কাজ হয়েছে কি না যাচাই করে দেখেছেন। ক্রেতারা এই ঘরে রাত্রি যাপন করেও সন্তুষ্ট হয়েছেন। আগামী জুনের ভেতর মোট ১২০টি ঘর তৈরি করে তাদের দিতে হবে। আমাদের লোকজন পাইরি ডাইজা ইকোপার্কে গিয়ে ঘরগুলো সেট করে দিয়ে আসবেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘কাঠের সঙ্গে ঘরের যেসব ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল জিনিসপত্র ব্যবহৃত হবে, সেগুলো ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ডের হবে। আমরা প্রাথমিকভাবে এসব ঘরে বাংলাদেশের লোকাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করছি। এই একই ধরনের প্রোডাক্ট আমরা ইউরোপ থেকে কিনে দেব। এই ঘরের একেক অংশের জন্য একেক রকম কাঠের প্রয়োজন হয়। আমাদের দেশি কাঠের পাশাপাশি আফ্রিকার ঘানা থেকেও কাঠ কিনে এনে এই ঘরের একটি অংশে ব্যবহার করব।’

কলকাতায় আর চলবে না ট্রাম

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ এএম
কলকাতায় আর চলবে না ট্রাম
অবসান হতে যাচ্ছে দেড়শ বছরের ঐতিহ্যের। কলকাতায় আর চলবে না ট্রাম। ছবি: খবরের কাগজ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ট্রাম। ভারতের একমাত্র কলকাতা শহরেই ছিল ট্রাম পরিষেবা। কলকাতায় গেছেন আর ট্রামে চড়েননি- এমনটা খুব কম পর্যটকের ক্ষেত্রে ঘটেছে। কলকাতার ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ সেই ট্রাম আর আর চলবে না। দেড় শ বছর ধরে বহু মানুষের যাত্রাপথের বিশ্বস্ত সঙ্গী হয়ে থেকে, দেশ-বিদেশের প্রশংসা কুড়িয়ে অবশেষে বিদায় নিচ্ছে বাহনটি। 

সম্প্রতি শহরে ট্রাম পরিষেবা চালু রাখার দাবিতে ‘ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ তরফে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল। তাতেই সরকারের ট্রাম-নীতি জানতে চেয়েছিলেন আদালত। নবান্ন সূত্রের খবর, প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার পরে, শেষমেশ শহর থেকে ট্রাম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বালিগঞ্জ-ধর্মতলা ও শ্যামবাজার-ধর্মতলা রুটে শেষ যে দুটি ট্রাম চলত, তাও বন্ধ করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

তাহলে আগামী প্রজন্ম কী আর চোখেও দেখতে পাবে না এই যান? তা যাতে না হয়, সে জন্য ধর্মতলা থেকে ময়দান পর্যন্ত লুপ লাইনে ট্রামের জয় রাইডের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গেছে। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন ট্রামযাত্রা। সেটি বাদে শহরের বাকি সব ট্রামলাইনও এবার তুলে ফেলা হবে।

কলকাতায় প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, ট্রামলাইনের জন্য দুর্ঘটনা ঘটার। শহরটিতে জনসংখ্যার তুলনায় রাস্তা অনেক কম। ফলে এমনিতেই যান নিয়ন্ত্রণ একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তার মধ্যে রাস্তার ওপর ট্রামলাইন যেন আরও সমস্যা বাড়ায়। তাই সব দিক ভেবেই এই সিদ্ধান্ত।

এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেছেন, ‘আদালত এই নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছিল। আমরা বলেছি, ময়দান-ধর্মতলা ছাড়া বাকি কোনো রুটে ট্রাম চলবে না। লাইনও তুলে ফেলব। রাস্তা বাড়েনি। যান বেড়েছে। তাই যানজট হচ্ছে। এভাবে ট্রাম চালানো অসম্ভব।’ 

অবশ্য বহু আগেই ট্রামের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সময় যত এগিয়েছে বিকল্প যানও রাস্তায় নেমেছে। ফলে আগের মতো যাত্রী না হওয়ায় এক প্রকার যাত্রীশূন্যতায় ভুগছিল শহরের এই ঐতিহ্যবাহী পরিবহনটি। কাজেই সব রকম চিন্তা মাথায় রেখেই শহরের রাজপথ থেকে চিরতরে ট্রাম তুলে দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত।

কলকাতায় ১৮৭৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার ঘোড়ায় টানা ট্রাম চালানো হয়। শিয়ালদহ থেকে আর্মেনিয়া ঘাট পর্যন্ত ওই ট্রাম চলে। পরে ‘কলকাতা ট্রামওয়ে কোম্পানি লিমিটেড’ গঠন করা হয়। এ কোম্পানির নিবন্ধন ছিল লন্ডনে। পরে ১৯০২ সালে কলকাতায় প্রথমবার চালু করা হয় বৈদ্যুতিক ট্রাম। কলকাতা শহরে ২৭-২৮টি রুটে ট্রাম চলত। ১৫ বছর আগেও ১২ রুটে সচল ছিল ট্রাম। শেষমেশ দুটি রুটে চলত।

ঐতিহ্যবাহী ট্রামের ১৫০ বছর পূর্তি উৎসব হয় ২০২৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। দিবসটি উপলক্ষে কলকাতা ট্রাম কোম্পানি বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে। পুরোনো আটটি ট্রাম নতুন করে সাজিয়ে পথে নামানো হয়।

ওই দিন দাবি ওঠে, কলকাতার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য ট্রাম চালু রাখতে হবে। কিন্তু সব দাবি উপেক্ষা করে বন্ধ করা হচ্ছে ট্রাম পরিষেবা।