ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং
বৈশ্বিক অস্থিরতার ওপর সতর্ক নজর রাখতে এবং ‘অপ্রত্যাশিত’ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌতে এক সামরিক অনুষ্ঠানে ইউক্রেন-রাশিয়া ও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ উত্তেজনাসহ বিভিন্ন বিষয়কে ইঙ্গিত করে তিনি এমন নির্দেশ দিয়েছেন। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
লক্ষ্ণৌতে প্রথম জয়েন্ট কমান্ডার্স কনফারেন্সের শেষ দিনের বক্তৃতায় রাজনাথ এসব মন্তব্য করেন। বক্তব্যে তিনি যৌথ সামরিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ এবং কোনো যুদ্ধে জড়ালে দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে সেসবের জন্য প্রস্তুতির তাৎপর্যের ওপরও জোর দিয়েছেন।
ভারতকে ‘শান্তিপ্রিয় দেশ’ উল্লেখ করে রাজনাথ সিং বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে শান্তি রক্ষা করতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসরায়েল-হামাস সংঘাত এবং বাংলাদেশে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মতো অন্যান্য বৈশ্বিক অস্থিরতার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
কমান্ডারদের এই পরিস্থিতিগুলো বিশ্লেষণ, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের পূর্বাভাস ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজনাথ ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সমস্যা নিয়ে ‘ব্যাপক বিশ্লেষণের’ প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন। সেগুলো এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে বলে মনে করেন তিনি।
রাজনাথ আরও বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা সত্ত্বেও ভারত একটি অসাধারণ শান্তির সুফল উপভোগ করছে। ভারত শান্তিপূর্ণভাবে বিকশিত হচ্ছে। তবে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের কারণে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সব সময়ের জন্য আমাদের শান্তি অটুট রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমানের ওপর মনোনিবেশ করতে হবে এবং চারপাশে ঘটতে থাকা ক্রিয়াকলাপগুলোর ওপর নজর রাখতে হবে। ভবিষ্যৎমুখী হওয়ার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। আর এ জন্য আমাদের একটি শক্তিশালী ও মজবুত জাতীয় সুরক্ষা উপাদান থাকা উচিত।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মহাকাশ ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধে সক্ষমতা বিকাশের ওপরও জোর দিয়েছেন। তিনি সামরিক নেতৃত্বকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ব্যবহার বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশের আহ্বানও জানান। তিনি এগুলোকে আধুনিক দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার অবিচ্ছেদ্য বিষয় হিসেবে বর্ণনা করেন।
রাজনাথ ভারতের সামরিক নেতৃত্বকে তথ্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) খাতের সর্বশেষ প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ব্যবহার বাড়ানোর ব্যাপারে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এই উপাদানগুলো সরাসরি কোনো সংঘাত বা যুদ্ধে অংশ নেয় না, তবে তাদের পরোক্ষ অংশগ্রহণ অনেকাংশেই যুদ্ধের গতিপথ নির্ধারণ করে।’ সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে