ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যাকায় আরও দুটি স্কুলে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩০ জন বাস্তুচ্যুত মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি দখলদাররা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলায় হাসান সালামা এবং নাসর এলাকায় অবস্থিত এই দুটি স্কুলে থাকা শিশুদের ৮০ শতাংশেরই মৃত্যু হয়েছে, বাকিদের বেশির ভাগ গুরুতর আহত হয়েছেন।
আব্দুল্লাহ আকিলা নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী আল-জাজিরাকে বলেন, ‘যখন বোমা পড়ছিল এখানে আমরা বসেছিলাম, এরপরই আরেকটি বোমা স্কুলের দরজায় পড়ল। দুটি স্কুলেই বাস্তুচ্যুত সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। এটা খুবই অমানবিক। আমরা আর কতদিন এভাবে থাকব? আমরা ক্লান্ত…. যথেষ্ট হয়েছে।’
এদিকে ইরানের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এক বৈঠকে তিনি জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, হানিয়াকে হত্যা করে ইসরায়েল ‘বড় ভুল’ করেছে এবং তাদের এর মাশুল গুনতে হবে।
এদিকে দখলদার দেশ কর্তৃক অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরে রেইড চালাচ্ছে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। ইতোমধ্যে অসংখ্য সাধারণ মানুষকে আটক করেছে আইডিএফ। আল-জাজিরার স্থানীয় এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি সশস্ত্রগোষ্ঠী জেরুজালেম ব্রিগেডের নাবলুস ব্যাটালিয়ন ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট জোসেফস টম্বের পাশে ইসরায়েলি দখলদারদের অবস্থান লক্ষ করে শক্তিশালি বোমার বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন। এ ছাড়া আল-আক্বসা ব্রিগ্রডের সেনারা দাবি করছে, তাদের সেনারাও পূর্ব নাবলুসের বালাতা ক্যাম্পের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। জোসেফস টম্ব মুসলিম এবং ইহুদি উভয়ের কাছে পবিত্র জায়গা, এটিকে কেন্দ্র করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত দীর্ঘদিনের।
অন্যদিকে দখলদারত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এখন আর ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাত নয় বরং এটি সারা বিশ্বের নিপীড়ক ও নিপীড়িতদের মধ্যে লড়াই বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। গত শনিবার অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফিদান গাম্বিয়ার রাজধানী বানজুলে বক্তৃতায় ইসরায়েলের কয়েক দশক ধরে দখলদারত্ব, অবৈধ সম্প্রসারণ, অবরোধ এবং আক্রমণের মুখে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দখল প্রতিরোধের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরও খারাপ বিপর্যয় ঘটতে পারে। রাফাহতে ইসরায়েলের পরিকল্পিত আগ্রাসনের ফলে ওই অঞ্চলে একটি অভূতপূর্ব বিপর্যয় ঘটতে পারে। তেল আবিবকে এই অপরাধের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।’
ফিদান বলেন, তুরস্ক ঘোষণা করেছে যে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অমানবিক সামরিক অভিযানের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে সব বাণিজ্য কার্যক্রম স্থগিত করছে, যতক্ষণ না স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা প্রবাহের অনুমতি দেয়।