ঢাকা ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

যে শহরে দেখানো যাবে না জীবাশ্ম জ্বালানির বিজ্ঞাপন

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ এএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ এএম
যে শহরে দেখানো যাবে না জীবাশ্ম জ্বালানির বিজ্ঞাপন
নেদারল্যান্ডসের হেগ শহর। ছবি: সংগৃহীত

নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরের কোনো স্থানে এখন থেকে আর পেট্রল, ডিজেল, বিমান পরিবহন সংস্থা ও ক্রুজ জাহাজের কোনো বিজ্ঞাপন দেখানো যাবে না। কারণ এগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির প্রচার চালায়, যা বৈশ্বিক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অভিনব এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে শহরটি বিশ্বের প্রথম শহরে পরিণত হলো, যারা জীবাশ্ম জ্বালানির প্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

শুধু জীবাশ্ম জ্বালানি নয়, জলবায়ুর ক্ষতি করে এমন কোনো পণ্যেরই বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না শহরটিতে। গত বৃহস্পতিবার এক আইনের মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এই নিয়মের কারণে বিলবোর্ড, বাস ছাউনি থেকে শুরু করে শহরের রাস্তা থাকবে জলবায়ুবিরোধী বিজ্ঞাপনমুক্ত।

চলতি বছরের শুরুতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারকে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তারা যেভাবে তামাকের বিরুদ্ধে যে রকম দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিল, সে রকমভাবেই যাকে জীবাশ্ম জ্বালানির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়। 

এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা যাতে সামনে নিয়ে আসা হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, গুতেরেসের ওই মন্তব্যের পরই এ রকম পদক্ষেপ নিতে দেখা গেল হেগ কর্তৃপক্ষকে। পুরো বিষয়টি কার্যকর করা হয়েছে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে।

আগামীতে আরও কিছু শহর একই পথে হাঁটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে মে মাসে একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছিল স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবার্গের কাউন্সিলও। তবে হেগে যে নিষেধাজ্ঞাটি আরোপ করা হয়েছে, তা একেবারে আইনসিদ্ধ। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রুভকুন

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৭ পিএম
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রুভকুন
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পাওয়া বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রুভকুন। ছবি: সংগৃহীত

মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকার জন্য এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রুভকুন।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায়) এ পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

ভিক্টর অ্যামব্রোস এবং গ্যারি রুভকুন কীভাবে বিভিন্ন কোষের বিকাশ ঘটে সে সম্পর্কে আগ্রহী ছিলেন।

গত বছর হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান ক্যাটালিন কারিকো এবং আমেরিকান ড্রু ওয়েইসম্যান কোভিড-১৯ এর মাইক্রো আরএনএ ভ্যাকসিনের উদ্ভাবনের জন্য নোবেল পান।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে মনোনীত ২২৭ জন এর আগে ১১৪ বার এই বিভাগে নোবেল পেয়েছেন। যাদের মধ্যে নারী বিজ্ঞানী রয়েছেন ১৩ জন।

সপ্তাহজুড়েই বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। মঙ্গলবার পদার্থবিদ্যা পুরস্কার, বুধবার রসায়ন, বৃহস্পতিবার সাহিত্য, শুক্রবার শান্তি পুরস্কার এবং ১৪ অক্টোবর অর্থনীতি পুরস্কার ঘোষণা করা হবে।

নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানীরা পাবেন একটি নোবেল মেডেল, একটি সনদপত্র এবং মোট ১১ মিলিয়ন বা এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। এর বর্তমান বাজারমূল্য ১০ লাখ ৬৭ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় হবে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যেসব বিভাগে একাধিক নোবেলজয়ী থাকবেন, তাদের মধ্যে এই এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ভাগ হয়ে যাবে।

বিজয়ীরা আগামী ১০ ডিসেম্বর নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাদের পুরস্কার গ্রহণ করবেন।

সাদিয়া নাহার/ অমিয়/

নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু আজ

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০৪ পিএম
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০৫ পিএম
নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু আজ
নোবেল পুরস্কার

নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হচ্ছে আজ সোমবার থেকে। প্রথম দিন ঘোষণা করা হবে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায়) চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বা বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

এ বছরের নোবেল পুরস্কারের ঘোষণাগুলো ৭ থেকে ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। সমস্ত ঘোষণা nobelprize.org ও নোবেল পুরস্কার  কমিটির ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

প্রথা অনুযায়ী, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার শুরু হয় নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা। প্রথম দিনে ঘোষণা করা হয় চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পুরস্কারজয়ীর নাম। এরপর ছয়টি বিভাগে ছয় দিন নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হয় নরওয়ে থেকে। সাহিত্য ও অর্থনীতির মতো অন্য পুরস্কারগুলো সুইডেন থেকে ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য ও শান্তিতে পুরস্কারগুলো সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তার রেখে যাওয়া অর্থ থেকে দেওয়া হয়। সুইডিশ শিল্পপতি নোবেল ডিনামাইটের উদ্ভাবক ছিলেন। তার মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সালে এ পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।

১৯০১ সালে জার্মান জীববিজ্ঞানী এমিল ফন বেরিংকে ডিপথেরিয়া রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর সিরাম থেরাপি বিষয়ে গবেষণার জন্য প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়।

সর্বশেষ গত বছর ২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার প্রথম দিন করোনাভাইরাসের টিকার প্রযুক্তি আবিষ্কারের জন্য দুই বিজ্ঞানীকে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। নোবেল বিজয়ী ওই দুই বিজ্ঞানী হলেন ক্যাটালিন ক্যারিকো ও ড্রু ওয়েইসম্যান।

এমআরএনএ করোনার টিকার প্রযুক্তি করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর আগে পরীক্ষামূলক অবস্থায় ছিল। তবে এ টিকা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছে। এখন ঠিক একই ধরনের এমআরএনএ প্রযুক্তি ক্যানসারসহ অন্য নানা রোগের টিকা আবিষ্কারের গবেষণার কাজে লাগানো হচ্ছে।

ধারণা করা হচ্ছে, এবার চিকিৎসা ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হতে পারে লিপিড নিয়ে উদ্ভাবনী কোনো গবেষক দলকে। বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ক্ল্যারিভেট ধারণা করছে, প্রথম দিন চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পেতে পারেন লিপিড বিপাকের জেনেটিকস নিয়ে গবেষণা করা কোনো বিজ্ঞানী বা প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া মস্তিষ্কের আবেগ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রেও এ পুরস্কার দেওয়া হতে পারে।

চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার দেওয়া প্রদান করা হয়। এটি প্রদান করে সুইডেনের কারোলিন্স্কা সমিতি। ১৮৯৫ সালে সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল যে পাঁচটি ক্ষেত্রে পুরস্কার প্রদানের ব্যাপারে দলিলে উল্লেখ করে গিয়েছিলেন তন্মধ্যে এটি অন্যতম। এই পুরস্কারটি ১৯০১ সাল থেকে নিয়মিত প্রদান করা হচ্ছে।

এই পুরস্কারের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে নোবেল ফাউন্ডেশন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে এটি সর্বজনস্বীকৃত। প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বিজ্ঞানী নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে এই পুরস্কার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হয়ে থাকে।

বিজয়ী বিজ্ঞানী সুইডেনের মহিমান্বিত রাজার কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। প্রত্যেক নোবেলবিজয়ী ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া একটি সবুজ স্বর্ণপদক, একটি ডিপ্লোমা ও একটি আর্থিক পুরস্কার পান। ২০২৪ সালের হিসাবে নোবেল পুরস্কারের আর্থিক পুরস্কার হল এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা, যা ১০ লাখ ৩৫ মার্কিন ডলারের সমান।

একটি নোবেল পুরস্কার তিনজনের বেশি ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করা হয় না, যদিও নোবেল শান্তি পুরস্কার তিনজনের বেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া যেতে পারে। নোবেল পুরষ্কার মরণোত্তর দেওয়া হয় না, তবে যদি কোনো ব্যক্তিকে পুরস্কার দেওয়া হয় এবং তিনি এটি পাওয়ার আগে মারা যান, তবে পুরস্কারটি প্রদান করা হয়।

আজ থেকে ১২২ বছর আগে ১৯০১ সালে এবং এরং এর ৬৮ বছর পর ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পুরস্কার প্রদান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার জন বিজয়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৬২৭টি নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯৬৫ ব্যক্তি ও ২৭ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পাঁচ ব্যক্তি ও দুটি সংস্থা একাধিকবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছে।

একমাত্র আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি সর্বোচ্চ তিনবার ১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে।

প্রদত্ত মেডেলের সম্মুখ দিকে থাকে আলফ্রেড নোবেলের খোদিত ছবি যা পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বা সাহিত্যের জন্য প্রদত্ত মেডেলের মতই। তবে অন্য পাশটা আলাদা। সেই পাশে মেধাবী এক চিকিৎসকের প্রতিকৃতি দেখা যায়, যে নিজের কোলে রাখা একটি উন্মুক্ত বই ধরে আছে এবং একই সাথে পাথরের বুক চিরে প্রবহমান পানি দিয়ে একটি মেয়ের তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছে।

১৯১৫-১৯১৮, ১৯২১, ১৯২৫, ১৯৪০-১৯৪২ মোট ৯ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়নি। অধিকাংশ বছরই দেওয়া হয়নি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে।

১৯৩৯ সালে অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত জার্মান রাজনীতিবিদ এডলফ হিটলার গারহার্ড ডোমাগ নামের চিকিৎসাবিজ্ঞানীকে তার প্রাপ্য নোবেল পুরস্কার গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেন। পরবর্তীতে তিনি অবশ্য তার প্রাপ্য ডিপ্লোমা ও পদক গ্রহণ করেন, কিন্তু অর্থ ফিরে পাননি।

বাসস/অমিয়/

৪২ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৩ এএম
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৬ এএম
৪২ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে সোমবার (৭ অক্টোবর)। গত বছরের এই দিনে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলি ভূখণ্ডে স্থল, আকাশ ও নৌপথে আচমকা হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নাগরিককে হত্যা করে এবং ২৫০ জনকে বন্দি করে। বন্দিদের মধ্যে সাধারণ নাগরিক ছাড়াও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সেনাসদস্য ছিলেন। এর পর থেকে প্রতিশোধের যে উন্মত্ত প্রদর্শনী ইসরায়েলি বাহিনী শুরু করে, তা বিরামহীনভাবে চলছে এক বছর ধরে। আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ প্রস্তাব অনুসারে ‌নিপীড়ক ও দখলদার শক্তি হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। এই আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪১ হাজার ৮৭০ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে ১৭ হাজার শিশু এবং ১১ হাজার নারী রয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় এক লাখ মানুষ। 

৭ অক্টোবরের হামলাকে নিপীড়িতের প্রতিরোধ বলছে হামাস। অন্যদিকে ইসরায়েল আত্মরক্ষার অধিকারের নামে ক্লিশে যুক্তি দেখিয়ে পৈশাচিক আগ্রাসনকে যৌক্তিক প্রমাণের চেষ্টা করে আসছে। সমর্থক হিসেবে তারা পাশে পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু পশ্চিমা দেশকে।

গাজা ছাড়িয়ে যুদ্ধ গত মাসে গড়িয়েছে লেবাননেও। সেখানেও পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু করেছে ইসরায়েল। এই যুদ্ধে সম্প্রতি জড়িয়ে পড়েছে ইরানও। তাদের মিত্র সশস্ত্র লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহসহ একাধিক ইরানি জেনারেলকে হত্যা, লেবানন ও গাজায় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইসরায়েলে সম্প্রতি নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তেহরান। ইতোমধ্যে এর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাই আরেকটি ফ্রন্টে যুদ্ধ শুরুর দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য।

কোটি কোটি টন ধ্বংসস্তূপ নিয়ে বিপাকে গাজাবাসী

ইসরায়েলি দখলদারদের ধারাবাহিক হামলায় পুরো গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যেখানেই চোখ যায় বিধ্বস্ত কংক্রিটের ছড়াছড়ি। সেখানে ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ ৪ কোটি ২০ লাখ টনেরও বেশি হবে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, এসব ধ্বংসস্তূপ ২০০৮ থেকে গত বছর যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত গাজা ভূখণ্ডে সঞ্চিত আবর্জনার ১৪ গুণ এবং ২০১৬-১৭ সালে ইরাকের মসুলে হওয়া যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের পাঁচ গুণের বেশি। এসব ধ্বংসস্তূপ একসঙ্গে জড়ো করা হলে তা দিয়ে মিসরের বৃহত্তম পিরামিডটিকে (গিজার মহাপিরামিড) ১১ বার ভরে দেওয়া যাবে। আর এই ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ প্রতিদিনই বাড়ছে। এই বিষাক্ত ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে প্রয়োজন প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। তবে উপত্যকাটিকে বাস উপযোগী করতে আবর্জনাগুলো দ্রুত অপসারণ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশে দেশে বিক্ষোভ

গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবিতে ফ্রান্সের প্যারিস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, ইতালির রোমসহ নানা দেশে হাজারও মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভে কোথাও পুলিশ বাধা দিয়েছে, কোথাও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়েছে, আবার কোথাও সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে।

আল-জাজিরার খবর বলছে, গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপজুড়ে হাজারও মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিট অভিমুখে পুলিশের কড়া পাহারায় কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেন। সে সময় পরিস্থিতি উত্তেজনাকর হয়ে ওঠে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড পার করে যেতে চাইলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, সেখান থেকে কমপক্ষে ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। 

জার্মানির সংবাদ সংস্থা ডিপিএ বলেছে, দেশটির হামবুর্গ শহরে ফিলিস্তিন ও লেবাননের সমর্থনে প্রায় ৯৫০ জন মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা দেখা গেছে। তারা এ সময় ‘গণহত্যা বন্ধ করুন’ বলে স্লোগান দেন।

এদিকে প্যারিসের রিপাবলিক প্লাজায় ফিলিস্তিনি ও লেবাননের নাগরিকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে কয়েক হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। এ সময় অনেক ফিলিস্তিনির হাতে ‘স্টপ জেনোসাইড’, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘হ্যান্ডস অব লেবানন’ লেখা পোস্টার দেখা যায়। ইতালির রাজধানী রোমে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। শনিবার বিকেলে রোমে কয়েক হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেন।

নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে যুদ্ধবিরতির দাবিতে ফিলিস্তিনি সমর্থকরা জড়ো হয়েছেন। তারা ‘গাজা, গাজা’ বলে স্লোগান দেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছবিতে লাল রং মাখিয়ে, ফিলিস্তিনি ও লেবাননের পতাকা হাতে তারা বিক্ষোভে অংশ নেন। এ ছাড়া এশিয়া ও আফ্রিকার অসংখ্য দেশে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ মানুষ। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আল-জাজিরা, রয়টার্স

সেই হামলাস্থলে আবারও ট্রাম্পের সমাবেশ

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৯ এএম
সেই হামলাস্থলে আবারও ট্রাম্পের সমাবেশ
পেনসিলভানিয়ার বাটলারের যে জায়গায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল সেখানে আবারও নির্বাচনি সমাবেশ করেছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার বাটলারের যে জায়গায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল সেখানে আবারও নির্বাচনি সমাবেশ করেছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাস আগে গত শনিবার তিনি সেখানে বিশাল এক জনসভার আয়োজন করেন। 

বার্ত সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, জনসভায় ট্রাম্প গত ১৩ জুলাই কানে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা স্মরণ করেন। সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যা বলছিলাম।’ এর দ্বারা তিনি বুঝিয়েছেন, ১৩ জুলাই নির্বাচনি সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তার যে বক্তব্য বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল তা আবার শুরু করেছেন তিনি। 

রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প বলেন, ‘ঠিক ১২ সপ্তাহ আগে এমনই এক সন্ধ্যায়, এই জায়গাতেই একজন ঠাণ্ডা মাথার খুনি আমাকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল।’ তবে নিরাপত্তার স্বার্থে ট্রাম্প হাজার দশেক সমর্থকের সামনে বুলেটপ্রুফ কাচের আড়াল থেকে ভাষণ দেন।

গত ১৩ জুলাই বাটলারে এক নির্বাচনি সমাবেশে ট্রাম্পের ওপর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১১ মিনিটে হামলা হয়েছিল। শনিবার ঠিক ওই সময় উপস্থিত সবাইকে ট্রাম্প এক মুহূর্ত নীরবতা পালনের আহ্বান জানান। তারপর একটি ঘণ্টা চারবার বাজানো হয় এবং ট্রাম্পসহ আহত চারজনের জন্য একবার করে নীরবতা পালন করা হয়।

একপর্যায়ে ট্রাম্প তার বক্তৃতার মাঝখানে টেসলার প্রধান নির্বাহী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিক ইলন মাস্ককে মঞ্চে ডাকেন। ট্রাম্পকে সমর্থনের পর প্রথম কোনো নির্বাচনি জনসভায় যোগ দিয়েছেন মাস্ক। ট্রাম্পের আহ্বানে হাত নাড়িয়ে মঞ্চে উঠেন ইলন মাস্ক। 

তিনি বলেন, এ নির্বাচনে অবশ্যই ট্রাম্পের জয়ের জন্য ভোট দেওয়া উচিত। কারণ তিনি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের সবার ট্রাম্পের হয়ে কাজ করা উচিত। সূত্র: রয়টার্স

ভারতের কাছে অর্থনৈতিক সহায়তা চেয়েছে মালদ্বীপ

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৬ এএম
ভারতের কাছে অর্থনৈতিক সহায়তা চেয়েছে মালদ্বীপ
দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু

পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত গেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। ৬ থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত এই সফরে তিনি ভারতের কাছে কয়েক মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা (বেল আউট) চাইবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ দ্বীপরাষ্ট্রটি অর্থনৈতিক সংকটে আছে। দেশটির ঋণখেলাপি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। 

এ বিষয়ে মুইজ্জু গতকাল রবিবার সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে ভারত সাহায্য করবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি।

গত বছরের শেষ দিকে মুইজ্জু প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি এই প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন। 

নির্বাচনি প্রচারে মুইজ্জু তার দেশের ওপর নয়াদিল্লির প্রভাব কমানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। তার নির্বাচনি প্রচারের কেন্দ্রে ছিল ‘ইন্ডিয়া আউট’ তথা ‘ভারত হটাও’ নীতি। মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে টানাপোড়েন চলে আসছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মালদ্বীপ যে তার বড় প্রতিবেশী দেশটিকে (ভারত) উপেক্ষা করতে পারে না, তার ইঙ্গিত দিচ্ছে মুইজ্জুর এই সফর।

মালদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গত মাসে (সেপ্টেম্বর) ছিল প্রায় ৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অর্থ দিয়ে কোনোরকম দেড় মাসের আমদানির খরচ মেটানো সম্ভব। এদিকে গত মাসে আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা মুডিস মালদ্বীপের ক্রেডিট রেটিং (ঋণমান) কমিয়ে দেয়। সংস্থাটি জানায়, মালদ্বীপের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাস্তবিক অর্থে বেড়েছে।
 
মুইজ্জু ইতোমধ্যে তুরস্ক ও চীন সফর করেছেন। বিশেষ করে গত জানুয়ারিতে তার চীন সফরকে নয়াদিল্লির প্রতি মালদ্বীপের একটি বড় ধরনের কূটনৈতিক অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ হিসেবে দেখা হয়েছিল।

মুইজ্জু ভারত সফর নিয়ে এক ইমেল সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেন, ‘ভারত আমাদের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে সম্পূর্ণ সচেতন। আমাদের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে ভারত অন্যতম। আমাদের বোঝা কমাতে, মুখোমুখি হওয়া প্রতিবন্ধকতাগুলোর ভালো বিকল্প এবং সমাধান খুঁজতে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে দেশটি।’ সূত্র: বিবিসি