জার্মানিতে উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির উঠতি প্রভাবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন দেশটির নাগরিকরা। ছবি: সংগৃহীত
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির নির্বাচন নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতে দেখা না গেলেও দেশটিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। আরও নির্দিষ্ট করে বললে- ইউরোপের মাথাব্যাথা সবচেয়ে বেশি।
এ বিষয়ে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান।
জার্মানির আসন্ন নির্বাচনের হাওয়া জাতীয় পরিমণ্ডল ছেড়ে পুরো ইউরোপেই ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববাণিজ্য ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের ভবিষ্যতও জড়িয়ে পড়েছে এই নির্বাচনের সঙ্গে।
দেশটিতে আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রচলিত থাকায় বেশিরভাগ সময়ই একদলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকে না। এতে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দল অন্যান্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করে।সম্প্রতি জার্মানিতে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে দেশটির বিরোধী দলের জোট সিডিইউ’র সমর্থন সবচেয়ে বেশি।
বর্তমান জার্মান চ্যাঞ্চেলর ওলাফ শোলৎজকে সরিয়ে সিডিইউর নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ ক্ষমতায় বসবেন বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
তবে সিডিইউর ক্ষমতাপ্রাপ্তিতে শঙ্কিত ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ। জার্মানির উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির সঙ্গে মার্জের সাম্প্রতিক ঘনিষ্টতাই এই দুশ্চিন্তার কারণ।
দেশটির সামনের সারির রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত উগ্রপন্থি দলগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধে না। তবে এই ঐতিহ্যে ফাঁটল ধরিয়ে সম্প্রতি সিডিইউ আসন্ন নির্বাচনে এএফডির সমর্থন চেয়েছে।
এদিকে নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য আসনে উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে নির্বাচন পরবর্তী জোট গঠন নিয়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক আশঙ্কা।
একপক্ষের বয়ান, জার্মানিতে আভিজাত্যবাদের কারণে এএফডির মতো দলগুলো ক্ষমতায় আসতে পারে না। নির্বাচনের পরেও জোট গঠন আলোচনায় এএফডিকে অন্তর্ভূক্ত না করলে এ ধরণের মন্তব্যের শিকার হতে পারে দেশটির নির্বাচন ব্যবস্থা। এই জায়গা থেকে এএফডিকে কেন্দ্রীয় আলোচনার বিকল্প নেই।
অন্যদিকে এই দল ক্ষমতার কেন্দ্রে পৌঁছালে নীতিনির্ধারণে ইউরোপের বিপক্ষে ‘ক্ষতিকর’ অবস্থান নিতে পারে বলে শঙ্কিত মহাদেশের রাঘববোয়ালরা।
আসন্ন নির্বাচনের ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি সরাসরি নির্ভর করছে। চলমান যুদ্ধ নিরিসনে ইইউ’র অবস্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে জার্মানির বয়ান অত্যন্ত গুরুত্ববহ।
এদিকে এএফডির ইউক্রেনবিরোধী অবস্থান ইইউ’র অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইউক্রেনে জার্মানির দেওয়া সামরিক সহায়তা পাঠানোর বিপক্ষে এই দল।
এ পরিস্থিতিতে জার্মানির নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে কিয়েভসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের প্রশাসন।
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি জার্মানিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
নাইমুর/