ঢাকা ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবার ফলের অপেক্ষা

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ এএম
এবার ফলের অপেক্ষা
যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এবার ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষা। ছবি: বিজ্ঞাপন

অবশেষে শেষ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এবার ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষা।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা ছাড়াও গোটা বিশ্বেই উত্তেজনা বিরাজ করে। এবার সেই উত্তেজনা ছিল আরও বেশি। কে হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প, সে ব্যাপারে ভোটের আগের দিন পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছিল না। কারণ দুই প্রার্থীর মধ্যে ছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস। জরিপে তাদের ব্যবধান মাত্র ১ শতাংশ। তাই কোনো সমীকরণেই আঁচ করা যাচ্ছে না কে হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। তবে গতকাল ভোট দেওয়ার মাধ্যমে ভোটাররা তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। 

কয়েক দশকের প্রথা মেনে দেশটির নিউ হ্যাম্পশায়ারের কমিউনিটি ডিক্সভিল নচে ভোট শুরু হয় মধ্যরাতের পরপর। সাকল্যে ছয়জন নিবন্ধিত ভোটার সেখানে। ছয়জনই ভোট দেন। তিনটি পেয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস, আর তিনটি পেয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে হিসাবে শুরু থেকেই লড়াইয়ে সমতায় ছিলেন কমলা ও ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ভোর ৫টার দিকে ভোট শুরু হয় ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যের কিছু কেন্দ্রে। মানুষকে এ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। পরে ধীরে ধীরে অ্যারিজোনা, আইওয়া, লুইজিয়ানা, মিনেসোটা, সাউথ ডাকোটা, নর্থ ডাকোটা, ওকলাহোমা, টেক্সাস, উইসকনসিন, নর্থ ক্যারোলাইনা, নিউইয়র্ক সিটিসহ সব অঙ্গরাজ্যের ভোটকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই সময়ের তারতম্য থাকায় একেক স্থানে একেক সময়ে ভোট শুরু হয়। 

যুক্তরাষ্ট্রে এবার ভোট দেওয়ার মতো যোগ্য নাগরিক রয়েছেন ২৪ কোটি ৪০ লাখ। তাদের উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করেই নির্ধারিত হবে কে হবেন দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। ভোটারদের উপস্থিত হওয়ার জন্য এরই মধ্যে অনুরোধ জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সোমবার শেষ দিনের প্রচারে তিনি বলেছেন, কমলার বিরুদ্ধে নয়, দুষ্ট ডেমোক্র্যাট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়ছেন তিনি। 

একই অনুরোধ জানিয়েছেন কমলা হ্যারিসও। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পকে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে বিভক্তির রাজনীতির যুগের অবসান করতে হবে। হ্যারিস নারীর গর্ভপাতের অধিকার ফিরিয়ে আনা, খাদ্য ও বাসস্থানের খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প সীমান্তে কড়াকড়িসহ ট্রিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ কর কর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা যে শুধু প্রেসিডেন্ট বেছে নিচ্ছেন, তা নয়। তারা দেশটির কংগ্রেসের সদস্যও নির্বাচিত করছেন। নির্বাচনে আগেই দেশটির ৮ কোটি ২০ লাখেরও বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। 

সিনেটের ১০০ আসনের ৩৪টির ভাগ্য নির্ধারণ হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪৩৫টি আসনের সব কটিতে নির্বাচন হবে। প্রতি দুই বছর পরপর এটি হয়।  

মঙ্গলবারের ব্যালটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নাম নেই। তাই বলে তিনি যে নজর রাখছেন না, তা নয়। হোয়াইট হাউস থেকেই চোখ রাখছেন তিনি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাইডেনকে খুব একটা বেশি দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ইচ্ছা করেই আড়ালে থাকছেন তিনি। 

ভোটের ফল পেতে কয়েক দিনও লাগতে পারে
ভোট গণনা করতে কয়েক দিনও লেগে যেতে পারে। তবে সাধারণত যেদিন ভোট হয়, তার পরের দিন সকালেই জয়ী কে, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। এ বছর প্রায় ৮ কোটির বেশি ভোটার ডাকযোগে আগাম ভোট দিয়েছেন। সেই হিসাবে গতকাল বুথে গিয়ে ভোট দিতে পারেন মোট নিবন্ধিত ভোটারের অর্ধেক। ফলে বুথে পড়া ভোটের হিসাবে জয়-পরাজয় নির্ধারিত নাও হতে পারে। 

ডাকযোগে যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের ব্যালট পেপার পৌঁছাতে এবং গণনা শেষ হতে মঙ্গলবার পেরিয়ে আরও কয়েক দিন সময় লেগে যেতে পারে। 
২০১৬ সালে নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্প রাত ৩টায়ই নিউইয়র্কের মঞ্চে সমর্থকদের সামনে বিজয়ীর ভাষণ দিতে উঠেছিলেন। কিন্তু ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চার দিন পর নিশ্চিত হয় যে জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন

গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ২ ত্রাণকর্মীর মৃত্যু

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ পিএম
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ২ ত্রাণকর্মীর মৃত্যু
হামলার শিকার গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় দুই ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই এই আক্রমণ চালালো ইসরায়েল। 

শনিবার (৩০ নভেম্বর) এই হামলা চালানো হয়। 

নিহতদের মধ্যে একজনের নাম আহেদ আজমি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ত্রাণ সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের হয়ে গাজায় কর্মরত ছিলেন। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ত্রাণকর্মীদের একটি গাড়িতে থাকা অবস্থায় তিনি নিহত হন। 

এদিকে ইসরায়েলের দাবি, আহেদ আজমি কিব্বুতজ আক্রমণে অংশ নিয়েছিলেন। তবে এ দাবির পেছনে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি তারা। 

আজমির বিরুদ্ধে আনা ইসরায়েলের অভিযোগ মিথ্যা জানিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘আজমি একজন প্রকৌশলী। তিনি মানবিক জায়গা থেকে ত্রাণসংস্থার হয়ে কাজ করছিলেন। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে হামলার পক্ষে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে ইসরায়েল।’

এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, ‘কোনো কর্মী হামাসের সঙ্গে জড়িত এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’ আপাতত সংস্থাটির কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

দ্বিতীয় ত্রাণকর্মীর নাম আহমেদ ফয়সাল আল-কাদী। ৩৯ বছর বয়সী এই কর্মী সেইভ দ্য চিলড্রেনের হয়ে খান ইউনিসে কাজ করছিলেন।
 
তার মৃত্যুর বিষয়ে সংস্থাটির সিইও ইংগার এশিং বলেন, ‘কাদির মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করার মতো যথাযথ শব্দ আমার কাছে নেই। তিনি সেইভ দ্য চিলড্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন।’

এই বিমান হামলায় আরও ৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইসরায়েলের পৃথক হামলায় মোট ৩২ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে শনিবার (৩০ নভেম্বর) যুদ্ধবিরতি আলোচনার উদ্দেশ্যে মিশরের কায়রোতে পৌঁছেছেন সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নেতারা। 
এর আগে কাতার, তুর্কি ও মিশরকে সঙ্গে নিয়ে হামাস ও ইসরায়লের মধ্যে যুদ্ধবিরিতির চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র। 

ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে হামাস যুদ্ধবিরতিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। 
তবে হামাস নিশ্চিহ্ন করার আগে কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না, মন্তব্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেহানিয়াহুর।

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। অঞ্চলটির প্রায় সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠী আশ্রয় শিবিরে থাকতে বাধ্য হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স 

নাইমুর/অমিয়/

প্লাস্টিকের সীমিত উৎপাদন চুক্তি নিয়ে তীব্র বিতর্ক

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১০ পিএম
প্লাস্টিকের সীমিত উৎপাদন চুক্তি নিয়ে তীব্র বিতর্ক
জলাশয়ের নিচে প্লাস্টিকবর্জ্য। ছবি: সংগৃহীত

প্লাস্টিক দূষণ কমানোর উদ্দেশ্যে চলমান আলোচনার চূড়ান্ত দিনে এসে চুক্তিটি নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল নেগোসিয়েটিং কমিটির (ইএনসি) পঞ্চম এবং চূড়ান্ত বৈঠকে এই চুক্তির বিষয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে ১০০টিরও বেশি দেশ প্লাস্টিক উৎপাদন সীমিত করার পক্ষে। তবে কিছু তেল উৎপাদনকারী দেশ শুধু প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এই মতবিরোধকে কেন্দ্র করে আলোচনায় বেশ উত্তপ্ত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

আলোচনায় বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক সীমিত উৎপাদনের একটি খসড়া চুক্তি প্রস্তুত করার কথা থাকলেও এ বিষয়ে চূড়ান্ত অধিবেশন এখনও শুরু হয়নি।

বৈঠকে এই চুক্তিটি চুড়ান্ত হলে তা পরিবেশগত সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির পর এটি নতুন মাইলফলক হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। 

আলোচনায় পানামার একটি প্রস্তাবে ১০০টিরও বেশি দেশ সমর্থন দিয়েছে। যেখানে তারা বিশ্বে প্লাস্টিক উৎপাদন কমানোর লক্ষ্যে কাজ করতে চায়। তবে আরেকটি প্রস্তাবে প্লাস্টিক উৎপাদনের সীমা আরোপ করা হয়নি।

ফিজির প্রধান আলোচক এবং পরিবেশমন্ত্রী সিভেন্দ্র মাইকেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘কেউ যদি কার্যকর অবদান রাখতে না চান এবং এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে সহায়তা না করেন, তবে দয়া করে আমাদের পথে বাঁধা সৃষ্টি করবেন না।’

তবে সৌদি আরবের মতো কিছু পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদনকারী দেশ শক্তভাবে প্লাস্টিক উৎপাদন সীমিত করার উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে এবং আলোচনা বিলম্বিত করতে সব ধরনের কৌশল প্রয়োগের চেষ্টা করেছে।

চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সৌদি আরব ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি প্রধান পলিমার উৎপাদনকারী দেশ ছিল।

এদিকে বৈঠকের সময়সীমা শেষ হতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি থাকলেও এখনো একটি চুক্তি নিয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। 

এই আলোচনা ভেঙে যেতে পারে অথবা পরবর্তী সেশনে স্থানান্তরিত হতে পারে বলে কিছু আলোচক এবং পর্যবেক্ষকের ধারণা।

মেক্সিকোর প্রতিনিধি দলের প্রধান ক্যামিলা জেপেডা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘প্লাস্টিকের সীমিত উৎপাদন একটি জটিল প্রক্রিয়া। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি জোট তৈরি করেছি। প্লাস্টিক কম উৎপাদনে আগ্রহী ১০০টিরও বেশি দেশ একসঙ্গে কাজ শুরু করতে পারি।’

প্লাস্টিক উৎপাদন ২০৫০ সালের মধ্যে তিনগুণ বাড়ার পথে রয়েছে এবং মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি বাতাস, তাজা শাক-সবজি এমনকি মায়ের বুকের দুধেও পাওয়া গেছে।

বৈঠকের চেয়ারম্যান লুইস ভায়াস ভ্যালদিভিয়েসো চুক্তির খসড়া হিসেবে একটি সংশোধিত দলিল প্রকাশ করেন। তবে, এই দলিলটিতে কিছু বিতর্কিত বিষয় রয়েছে। এর পাশাপাশি বেশ কিছু বিকল্প প্রস্তাবনাও রয়েছে, যেমন - প্লাস্টিক উৎপাদন সীমিত করা, প্লাস্টিক পণ্য ও রাসায়নিকের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং চুক্তি বাস্তবায়নে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থ সহায়তা নিশ্চিত করা।

২০২৩ সালের জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্লাস্টিকের মধ্যে তিন হাজার ২০০টিরও বেশি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। এগুলো নারী ও শিশুদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

সিভেন্দ্র মাইকেল বলেন, ‘যদি কেউ এই চুক্তি করতে বাঁধা দেয় তাহলে তাদেরকে চুক্তির অন্তর্ভূক্ত হতে চাপ প্রয়োগ করা হবে। আমরা বুসান থেকে কোনো দুর্বল চুক্তি নিয়ে চলে যাব না।’ সূত্র: রয়টার্স

তাওফিক/নাইমুর/অমিয়/

যুক্তরাষ্ট্র ইস্যুতে মুখ খুললেন আদানি

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম
যুক্তরাষ্ট্র ইস্যুতে মুখ খুললেন আদানি
ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি । ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে অভিযুক্ত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছেন ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি

শনিবার (৩০ নভেম্বর) এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

এর আগে গৌতম আদানি ও ভাতিজা সাগর আদানিসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ২৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়। 

ঘটনাক্রমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করে মার্কিন আদালত।

এদিকে দুই বছরের মধ্যে আদানি গ্রুপ দুইবার বড় ধরনের আইনি ধাক্কা খাওয়ায় ভারতে এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে।

আদানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের চুক্তি পুনর্বিবেচনা করছে। ফ্রান্স টোটাল এনার্জি প্রতিষ্ঠানটিতে তাদের বিনিয়োগ স্থগিত করেছে। এ ছাড়া ভারতের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের কথা ভাবছে।
 
আদানিকাণ্ডে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও কিছুটা অস্থির। ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে বিরোধী দল কংগ্রেসের বাগবিতণ্ডায় দেশটির সংসদ টানা তিন দিন বন্ধ ছিল।

এ বিষয়ে ভারতের উত্তরাঞ্চলের শহর জয়পুরে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আদানি বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে আদানি গ্রিন এনার্জি প্রকল্পের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়। তবে এ ধরনের বাধা আমরা আগেও মোকাবিলা করেছি।’

অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি আঘাত আমাদের আরও শক্তিশালী করবে। এই যুগে সত্যের চেয়ে মিথ্যাই বেশি তাড়াতাড়ি পৌঁছায়। তবে আমরা সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেব।’

এ ছাড়া আদানি গ্রুপ আন্তর্জাতিক মানের সেবা অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ আসেনি বলে জানিয়েছে ভারত সরকার। 

এ পর্যায়ে গত দুই সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ বাতিল হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স

নাইমুর/অমিয়/

ট্রাম্প-ট্রুডোর বৈঠক, সীমান্ত ও বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
ট্রাম্প-ট্রুডোর বৈঠক, সীমান্ত ও বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাস্টিন ট্রুডোর মধ্যে সীমান্ত, বাণিজ্য এবং জ্বালানি নিয়ে বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে সীমান্ত, বাণিজ্য এবং জ্বালানি নিয়ে বৈঠক করেছেন।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের বিলাসবহুল রিসোর্ট মার-এ-লাগোতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমাদের আলোচনা ‘খুবই ফলপ্রসূ’ হয়েছে।

গত শুক্রবার রাতে হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এরপর ট্রুডো গোপনে ফ্লোরিডায় পৌঁছান এবং ট্রাম্পের রিসোর্টে ডিনারে যোগ দেন।

এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন ট্রাম্প পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পর কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দেন। যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে বলেন, ‘আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছি। উভয় দেশকে এসব বিষয়ে একত্রে কাজ করতে হবে। আমরা ফেন্টানাইল ও মাদক সমস্যা, অবৈধ অভিবাসন সমস্যা এবং সুষম বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীদের ক্ষতি না করে এসব সমস্যার সমাধান করা হবে। এ ছাড়া কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রুডো আমাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এতে বিপর্যয় কমে আসবে।’

ট্রুডো সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ শনিবার পোস্ট করেন, ‘গত রাতে ডিনারের জন্য ধন্যবাদ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আমি আশা করি আমরা আবার একসঙ্গে কাজ করতে পারব।’

কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই বৈঠক নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, কানাডার এক সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানান, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠকটি চলেছিল। যা ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ।

এদিকে শুক্রবার, কানাডায় এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, তিনি ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছেন। ট্রাম্প মুখে যা বলেন তা বাস্তবায়ন করতে চান বলে জানান তিনি।

এদিকে, ট্রাম্পের চীন, মেক্সিকো ও কানাডায় অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। 

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই পরিকল্পনা দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কে গুরুতর প্রভাব পড়বে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম এ সপ্তাহে সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্পের শুল্ক পরিকল্পনা দুই দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে এবং তিনি প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেন।

অন্যদিকে ট্রাম্পের লক্ষ্য হলো, শুল্ক ব্যবহার করে মেক্সিকো এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ মাদক এবং সীমান্তে অনুপ্রবেশকারী অভিবাসীদের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করবে।

অনেক অর্থনীতিবিদ সতর্ক করেছেন, আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করলে মার্কিন গ্রাহকদের জন্য খরচ বাড়বে।

তবে, ট্রাম্প বলেছেন, বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তিনি মার্কিন ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিতে চান এবং অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে চান। সূত্র: রয়টার্স 

তাওফিক/অমিয়/

মালয়েশিয়ায় বন্যা, বাস্তুচ্যুত লক্ষাধিক মানুষ

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
মালয়েশিয়ায় বন্যা, বাস্তুচ্যুত লক্ষাধিক মানুষ
মালয়েশিয়ার কেলান্তান প্রদেশের বাসিন্দারা বন্যার পানিতে হেঁটে যাচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় বন্যায় ১ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অবিরাম বৃষ্টি থেকেই তৈরি হয়েছে এরকম বন্যা পরিস্থিতি। দেশটির দুর্যোগ কর্মকর্তারা শনিবার একথা জানান।

দেশটির বর্তমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২০১৪ সালের ভয়ংকর বন্যা পরিস্থিতিকেও ছাড়িয়ে গেছে। সেবার বন্যায় ১ লাখ ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দুর্যোগ কর্মকর্তারা।

চলমান প্রাকৃতিক দুর্যোগে কেলান্তান, তেরেঙ্গানু ও সারাওয়াক অঞ্চলে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। জাতীয় দুর্যোগব্যবস্থাপনা সংস্থার তথ্যানুসারে, কেলান্তান রাজ্যে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যটির ৬৩ শতাংশ বা ১ লাখ ২২ হাজার ৬৩১ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তেরেঙ্গানুতে প্রায় ৩৫ হাজার লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও সাতটি রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুতির খবর পাওয়া গেছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুর ভাগে হওয়া ভারী বর্ষণের কারণে কেলান্তানের পাসির পুতেহ অঞ্চলে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়। ওই শহরে লোকজনকে কোমড়পানিতে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। সূত্র: এএফপি