ঢাকা ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, রোববার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

যুদ্ধে কঠিনতম মাস পার করল রাশিয়া

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ এএম
যুদ্ধে কঠিনতম মাস পার করল রাশিয়া
যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাওয়া যানবাহন ও ট্যাংক। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ মাসের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রাশিয়া। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা প্রধান এডমিরাল স্যার টনি রাদাকিন বলেছেন, অক্টোবর মাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় হাজার রাশিয়ার সৈন্য নিহত ও আহত হয়েছেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়ার প্রায় ৭ লাখ সৈন্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করে না রাশিয়া; তবে পশ্চিমা প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, অক্টোবর মাসে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল।

গতকাল রবিবার সংবাদমাধ্যম বিবিসি ওয়ানের ‘সানডে উইথ লরা কুয়েনসবর্গ’ প্রোগ্রামে একটি সাক্ষাৎকারে স্যার টনি বলেন, রুশ জনগণ পুতিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক আক্রমণের জন্য চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। সামন্য ভূমির জন্য এই ক্ষয়ক্ষতি। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, রাশিয়া কৌশলগত ও আঞ্চলিক সাফল্য লাভ করছে এবং তা ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া তার সরকারি ব্যয়ের ৪০ শতাংশেরও বেশি অর্থ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তায় ব্যয় করছে। দেশটির জন্য এটি বিরাট বোঝা।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিত্ররা জোর দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হয়তো সংঘর্ষ শেষ করতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হতে পারেন। তবে স্যার টনি বলেছেন, পশ্চিমা মিত্ররা যত সময় প্রয়োজন ততদিন পর্যন্ত দৃঢ় অবস্থানে থাকবে। এই বার্তাটি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে গ্রহণ করতে হবে এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির জন্য এটি আস্থার বার্তা।

৩৪ ড্রোন দিয়ে মস্কোতে হামলা ইউক্রেনের
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ওপর সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। গতকাল অন্তত ৩৪টি ড্রোন দিয়ে এই হামলা চালানো হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার ফলে মস্কোর প্রধান তিনটি বিমানবন্দরের ফ্লাইট সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় এবং একজন আহত হয়েছেন। 

একই দিনে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী তিন ঘণ্টার মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলের অন্যান্য এলাকায় আরও ৩৬টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রুশ ভূখণ্ডে ড্রোন ব্যবহার করে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য কিয়েভের একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সূত্র: বিবিসি

ফিনল্যান্ডের ১০৭তম স্বাধীনতা দিবসে প্রেসিডেন্ট ভবনে স্বপ্নময় উৎসব

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৪ এএম
ফিনল্যান্ডের ১০৭তম স্বাধীনতা দিবসে প্রেসিডেন্ট ভবনে স্বপ্নময় উৎসব
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন ফিনিস প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টুব ও তার স্ত্রী সুজান্নে ইন্নেস-স্টুব

ফিনল্যান্ডে উদযাপিত হলো দেশটির ১০৭তম স্বাধীনতা দিবস। ১৯১৭ সালের এইদিনে ফিনল্যান্ড প্রতিবেশি সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।

ফিনিস প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টুব ও তার স্ত্রী সুজান্নে ইন্নেস-স্টুবের আমন্ত্রণে প্রায় এক হাজার ৭০০ অতিথি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

আমন্ত্রিতদের মধ্যে ছিলেন- ফিনল্যান্ডের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীপরিষদের সদস্য, পার্লামেন্ট মেম্বার, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও সুধীজন।

স্বাধীনতা দিবসে ফিনিস প্রেসিডেন্টের অট্টালিকায় চলে অভিনব ও জাঁকজকম এক উৎসব। যা সাধারণ মানুষের চিন্তার বাইরে।

স্বাধীনতা দিবসের এই উৎসবে ঐতিহ্যবাহী মার্জিত ও রুচিশীল পোশাকে আমন্ত্রিতদের নিয়ে চলেন কল্পনার জগতে। এমন পোশাকের দাম পাঁচ লাখ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। কথাটি মিথ্যে নয়,‘জীবন ও উত্তেজনার সৌন্দর্য এমন এক বিষয়, যার জন্য পয়সা খরচ করতে খারাপ লাগে না। ’ আবার অতিথিদের পোশাকের আধুনিকতা পুরোপুরি সত্য বলেও মেনে নেওয়া যায় না।

এতে থাকে অতীত, বর্তমান ও আধুনিক যুগের মিশ্রণ, আবার ভবিষ্যতের ছোঁয়াও থাকে। এখানে সবাই নিজেকে মনোরম পোষাকে রূপ দিয়ে থাকেন। গোটা ফিনল্যান্ড সেজে ওঠে আলোর রোশনাই আর ফুলের ডালিতে।

অবশ্য সারা বিশ্বেই সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উৎসবের বিশেষ কদর রয়েছে। তাই দেশীয় ঐতিহ্যের প্রভাবে এটিকে কীভাবে আরও উপভোগ্য করে তোলা যায়, সেটি নিয়ে গবেষণাও চলে।

ফিনল্যান্ডে এদিনটি অন্যান্য দিনের থেকে একটু আলাদা মনে হয়। আলোকমালায় উদ্ভাসিত প্রেসিডেন্টের অট্টালিকা দেখে যে কেউ যেন বুঝতে পারে, এখানেই একটি দেশের স্বাধীনতার উৎসব হচ্ছে।
 
নানা ধরনের খাবার ও পাশাপাশি পরিবেশিত হয় দেশের খ্যাতনামা শিল্পীদের নৃত্য সঙ্গীত। অতিথিদের কাছে ফিনিশ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
 
স্বাধীনতা উপলক্ষে দিবসে শুক্রবারের এই ছুটির দিনে ফিনল্যান্ডে সরকারি ও বেসরকারি ভবনসহ বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও নীরবতা পালন করা হয়।

জামান সরকার, ফিনল্যান্ড থেকে

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের অভিশংসন প্রস্তাব বাতিল

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ এএম
আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ এএম
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের অভিশংসন প্রস্তাব বাতিল
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। ছবি: সংগৃহীত

সামরিক আইন জারির কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসনের জন্য বিরোধী নেতৃত্বাধীনের করা প্রস্তাবটি বাতিল হয়েছে বলে জানান দেশটির স্পিকার। 

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সিউলের পার্লামেন্টে এই প্রস্তাবটির উপর ভোট হলে তা বাতিল হয়।

সিউল থেকে এএফপি জানায়, ইউন সুক ইওলকের ক্ষমতানীন দল ভোট বয়কট করার পর প্রয়োজনীয় কোরাম পূরণ করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত অভিশংসন প্রস্তাব পাস হতে পারেনি।

জাতীয় পরিষদের স্পিকার উ ওন শিক বলেছেন, ‘মোট ১৯৫ ভোট পড়েছে। ভোট দেওয়া সদস্যের সংখ্যা মোট সদস্যের প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়নি। তাই, আমি ঘোষণা করছি যে এই বিষয়ে ভোট বৈধ নয়।’ সূত্র: বাসস/এএফপি

তাওফিক/ 

নটরডেমের দরজা খুলল ৫ বছর পর

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪ এএম
নটরডেমের দরজা খুলল ৫ বছর পর
প্যারিসের নটরডেম ক্যাথেড্রাল

ফ্রান্সের প্যারিসের নটরডেম ক্যাথেড্রালের দরজা গতকাল শনিবার খুলে দেওয়া হয়েছে। সাড়ে পাঁচ বছর আগে আগুনে পুড়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ৮৬০ বছরের পুরোনো স্থাপনাটি। নতুন করে আবার সব ঠিকঠাক করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে খুলে দেওয়া হয়েছে সবার জন্য।

২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল ঘটেছিল দুর্ঘটনাটি। বিশ্বের অনেকেই হতবাক হয়ে যান ওই ঘটনার জেরে। 

শনিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, বিশ্ব সেদিন নড়ে উঠেছিল। আবারও এটি খুলে দেওয়ার চমকটিও ওই ঘটনার মতোই দৃঢ় হবে।

রাজনীতির ময়দানে সময়টা ভালো যাচ্ছে না ম্যাক্রোঁর। ফ্রান্সে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আয়োজনে কোনো কমতি রাখা হচ্ছে না। 

শনিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়ামসহ আরও কয়েক ডজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান উপস্থিত হন। সূত্র: রয়টার্স

সিরিয়ায় চতুর্থ শহর বিদ্রোহীদের দখলে

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ এএম
সিরিয়ায় চতুর্থ শহর বিদ্রোহীদের দখলে
সিরিয়ার হামা শহরের রাস্তায় গত শুক্রবার অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এক বিদ্রোহীকে। সংগৃহীত

সিরিয়ায় এক সপ্তাহের মধ্যে চতুর্থ শহরের দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা। গতকাল শনিবার দক্ষিণের দারা শহরটি তাদের হাতে চলে যায়। ২০১১ সালে ওই শহর থেকেই শুরু হয়েছিল আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ।

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, ‘সরকারি বাহিনী পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করায় ‘স্থানীয় দলগুলো দারা প্রদেশের আরও বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং দারা শহরসহ প্রদেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে।’

বিদ্রোহী সূত্রগুলো বলছে, দারা থেকে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী সুশৃঙ্খলভাবেই সরে গেছে। সামরিক বাহিনী নিরাপদে সরে ১০০ কিলোমিটার দূরের দামেস্কে যাওয়ার সুযোগ চেয়েছিল। সেটি তাদের দেওয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্রোহীরা মোটরসাইকেল ও অন্যান্য বাহনে করে দারায় প্রবেশ করছেন। মানুষ সেখানে আকাশে গুলি ছুড়ে উল্লাস প্রকাশ করছেন। জনসাধারণের অনেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে উল্লাসে যোগ দিচ্ছেন।

সামরিক বাহিনী বা আসাদ সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। রয়টার্স বিদ্রোহীদের দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। দারার পতনের মধ্য দিয়ে এক সপ্তাহের ভেতরে চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাল আসাদ সরকার। ১৩ বছর আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ওই শহরের জনসংখ্যা ছিল এক লাখেরও বেশি। শহরটি জর্ডান সীমান্তবর্তী প্রদেশেরও রাজধানী।

গত শুক্রবার শেষ ভাগেই দারা দখলে নেওয়ার দাবি করে বিদ্রোহীরা। তারা কেন্দ্রীয় শহর হোমসের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বলেও জানায়। হোমস সিরিয়ার রাজধানী ও ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের মাঝামাঝি অবস্থিত। ওই শহরটি বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেলে দামেস্কের উপকূলীয় এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। উপকূলীয় এলাকায় আসাদ সরকারের বেশ কিছু ঘাঁটি রয়েছে, নৌঘাঁটি রয়েছে এবং রুশ মিত্রদের বিমান ঘাঁটিও রয়েছে। 

বিদ্রোহীদের অগ্রসর হওয়ার মুখে হোমস ছেড়ে হাজার হাজার বাসিন্দা উপকূলীয় অঞ্চল লাতকিয়া ও তার্তুসে পাড়ি জমিয়েছেন। ওই অঞ্চলগুলো আসাদ সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

পরিস্থিতি এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আসাদ সরকার কতক্ষণ লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে। থিংকট্যাংক সেনচুরি ফাউন্ডেশনের ফেলো অ্যারন লান্ড বলেন, আসাদ সরকার এ মুহূর্তে জীবন বাঁচাতে লড়ছে। হতে পারে সরকার হোমস ধরে রাখতে পারে। কিন্তু সবকিছু যে গতিতে হচ্ছে, তাতে আমি এর ওপর ভরসা রাখব না।

সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টিভির খবর বলছে, রাশিয়া-সিরিয়ার যৌথভাবে হামা, ইদলিব ও আলেপ্পোতে বিদ্রোহীদের দপ্তর লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। রাশিয়ার কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, এসব হামলায় শুক্রবার অন্তত ২০০ জন বিদ্রোহী মারা গেছেন।

সিরিয়ার সামরিক এক সূত্র জানিয়েছে, ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ বাহিনী সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং হোমসের কাছে রয়েছে। হোমস বিদ্রোহীদের হাতে চলে গেলে আসাদ সরকারের ক্ষমতা ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে। সূত্র: এএফপি, রয়টার্স

দ. কোরিয়ার রাজনৈতিক সংকটে ‘মর্মাহত’ নোবেলজয়ী হান কাং

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ পিএম
দ. কোরিয়ার রাজনৈতিক সংকটে ‘মর্মাহত’ নোবেলজয়ী হান কাং
সাহিত্যে নোবেলজয়ী দক্ষিণ কোরিয়ান লেখক হান কাং। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছর সাহিত্যে নোবেলজয়ী দক্ষিণ কোরিয়ান লেখক হান কাং বলেছেন, প্রেসিডেন্টের সংক্ষিপ্ত সামরিক শাসন জারির ঘটনার পর তার দেশের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে তিনি গভীরভাবে ‘মর্মাহত’। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সুইডেনের স্টকহোমে চলতি বছরের পুরস্কার বিতরণের জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজনস্থলে হান এ কথা বলেন। তিনি নিজেও এই অনুষ্ঠান থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। খবর এএফপির।

তিনি বলেন, ‘অন্য কোরিয়ান নাগরিকের মতো আমিও গভীরভাবে মর্মাহত। আমি আমার দৃষ্টি সার্বক্ষণিকভাবে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের দিকে নিবন্ধ করে রেখেছি।’

গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় আকস্মিকভাবে দেশে সামরিক শাসন জারির ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তখনো সেনাবাহিনী ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত ছিল না। তিনি বেসামরিক শাসন স্থগিত করে সংসদ সদস্যদের তার জারি করা সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকার ফরমান জারি করেন।

 কিন্তু তার সামরিক শাসন জারির মুহূর্তের মধ্যে পার্লামেন্ট সদস্যরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। দেশের আপামর জনসাধারণও এসে পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে রাখেন। তখন সেনাবাহিনীর ২৮০ জন সদস্য এসে পার্লামেন্ট ভবনের প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে রাখেন। সংসদ সদস্যরা ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে স্পিকারের নেতৃত্বে ভোটাভুটির আয়োজন করেন। পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় সামরিক শাসনের বিপক্ষে বেশি ভোট পড়ায় স্পিকার সামরিক শাসন রহিত করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক শাসন বাতিল ঘোষণা করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে ৩০০ আসনের মথ্যে উত্তর কোরিয়াপন্থি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জোটগত সদস্যসংখ্যা ১৯০ জন। দলটির সদস্যসংখ্যা ১৭০ জন। সরকারি পিপল পপুলার পার্টির সদস্যসংখ্যা মাত্র ১০৮ জন। 

হান বলেন, ১৯৭৯-৮০ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক শাসন জারির পর তিনি সেই সময়কার সামরিক শাসনের পরিস্থিতি নিয়ে পর্যাপ্ত পড়ালেখা করেছেন। এমনকি সেই সময়ের মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডের ওপরও প্রচুর সময় ব্যয় করেছেন। তিনি বলেন, ‘এখন আমার পরম সৌভাগ্যের বিষয় হচ্ছে নিজ চোখে ২০২৪ সালের সামরিক শাসন প্রত্যক্ষ করার।’

নোবেলজয়ী হান ১৯৮০ সালে দুই দফা সফল অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণা করে বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় গোয়াংঝু শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন, সামরিক শাসন জারির পর সেনাসদস্যদের অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণতন্ত্র বিঘ্নিত হওয়ার প্রতিবাদে ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলনের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ। 

ছোট গল্পকার ও নোবেলজয়ী হান তার ‘দ্য ভেজিটারিয়ান’ বইটির জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এই বইটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘ম্যান বুকার-২০১৬’ সালে পুরস্কার জয়ের মাধ্যমে তাকে বিরাট সফলতা এনে দেয়। সূত্র: এএফপি

মাহফুজ/এমএ/