অবৈধ ও নথিপত্রবিহীন ১০৪ ভারতীকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সামরিক বিমানে করে হাতকড়া পরিয়ে ও পায়ে শিকলে বেঁধে ভারতে ফেরত পাঠানোর এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠেছে ভারতজুড়ে। বিরোধী কংগ্রেস সংসদরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয়দেরক নিয়ে মার্কিন বিমান বাহিনীর পরিবহন বিমানটি ভারতের অমৃতসরে অবতরণ করে।
এ ঘটনা নিয়ে সংসদে প্রবল হইচই করে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, আমেরিকা ভারতীয়দের প্রতি অমানবিক ব্যবহার করেছে। তাদের অপমান করা হয়েছে।
এরপর সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস অ্যানফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্তৃপক্ষ অভিবাসীদের ফেরত পাঠায়। সেখানে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিভ প্রসিডিওর (এসওপি) আছে। ২০১২ সাল থেকে তা চালু আছে। সেখানে এই কড়াকড়ির কথা বলা হয়েছে।’
জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ‘আইসিই তাকে জানিয়েছে, নারী ও বাচ্চাদের হাতকড়া বা শিকল পরানো হয়নি। অন্যদেরও খাবার সময় বা টয়লেট যাওয়ার সময়ও বাঁধনমুক্ত করা হয়েছিল।’
অমানবিক উপায়ে ভারতীয়দের ফেরত পাঠানোর ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে রাহুল গান্ধীসহ বিরোধী সাংসদরা। ছবি: সংগৃহীত
জয়শঙ্কর আরও বলেছেন, ‘অবৈধ ও নথিহীন ভারতীয়দের ফেরত পাঠানোর ঘটনা নতুন নয়। ২০০৯ থেকে গত ১৫ বছরে ১৫ হাজার ৭৫৬ জন ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’
এ ঘটনায় ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে বিরোধী কংগ্রেস সাংসদ মানিকরাম ঠাকুর বলেছেন, ‘এই ঘটনা ভয়ঙ্কর ও লজ্জাজনক। আমেরিকা এমনভাবে ভারতীয়দের ফেরত পাঠিয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে তারা অপরাধী। এটা অমানবিক ও মেনে নেওয়া যায় না।’
কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের মতে, ‘বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকলে তাদের ডিপোর্ট করার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের আছে। কিন্তু যেভাবে তারা ডিপোর্ট করেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। সামরিক বিমানে হাতকড়া, পায়ে শিকল বেঁধে ভারতীয় ফেরত পাঠানো ভারতীয়দের প্রতি অপমান।’
তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বের পঞ্চম সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ। কলম্বিয়ার মতো ছোট দেশ পর্যন্ত অভিবাসী ভর্তি সামরিক বিমান তাদের দেশে নামতে দেয়নি, তারা মর্যাদার সঙ্গে অভিবাসীদের দেশে ফেরাচ্ছে, সেখানে ভারত সরকার কী করছে?’
খবরে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে এখনো প্রায় ২০ হাজার অবৈধ ভারতীয় রয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তিনি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে ১০৪ ভারতীয়কে ফেরত পাঠিয়েছে। ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির ভালো সম্পর্ক থাকার নজির থাকলেও এঘটনা যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে নতুন মোড় নিচ্ছে কি না তা-ই দেখার বিষয়। সূত্র: এনডিটিভি
মাহফুজ/এমএ/