
সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) ও পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটি (ওয়াইপিজি) যদি সিরিয়া না ছাড়ে, তাহলে দেশটিতে সামরিক অভিযান চালানো হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
ফিদান বলেন, ‘আমরা তাদের (পিকেকে ও ওয়াইপিজি) যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছি, তা স্পষ্ট। এই বার্তা আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীরা যারা তুরস্ক, ইরান এবং ইরাক থেকে এসেছে, তাদের অবিলম্বে সিরিয়া ছাড়তে হবে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত ৪০ বছরের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে নারী, শিশু, নবজাতকসহ তুরস্কের ৪০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে পিকেকে। এর শাখা ওয়াইপিজি দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কের সীমান্তবর্তী উত্তর সিরিয়ায় একটি ‘সন্ত্রাসী করিডোর’ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। তুরস্ক এই পরিকল্পনা প্রতিহত করতে সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং স্থানীয় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করছে।
ফিদান জোর দিয়ে বলেন, ‘তুরস্ক সিরিয়ার ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে চায় না। বরং ভ্রাতৃত্ব, ভৌগোলিক অবস্থান এবং সীমান্ত সম্পর্ক থেকে প্রাপ্ত প্রভাবকে সবচেয়ে গঠনমূলক উপায়ে কাজে লাগাতে চায়।
তিনি আরও বলেন, ‘সিরিয়ায় যারা ক্ষমতায় বসেছে তাদের অবমূল্যায়নের কোনো কারণ নেই, তাদের যুদ্ধের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। কারণ তারা সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসেছে।
ফিদান বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের সিরিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে এবং অস্ত্র জমা দিলে তারা সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিতে পারবে। এভাবে একটি রক্তপাতহীন সমাধানে পৌঁছা সম্ভব।
তিনি নিশ্চিয়তা দেন, যদি শান্তিপূর্ণ উপায়ে তারা (পিকেকে/ওয়াইপিজি) সমস্যা সমাধান করে তাহলে সাধারণ কুর্দিদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করা হবে। এ ব্যাপারে সিরিয়ার বর্তমান সরকারও সহায়তা করতে প্রস্তুত। অন্যথায় যেকোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে তুরস্ক প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, বাশার আল আসাদের পতন ও পালিয়ে যাওয়ার পর সিরিয়ার কুর্দি জনগোষ্ঠীর সংগঠন পিকেকে ও তাদের আরেক শাখা ওয়াইপিজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তুরস্কের বর্তমান সরকার। তুরস্ক পিকেকে ও ওয়াইপিজিকে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করে। তুরস্কের দক্ষিণ সীমান্তে পিকেকে ও তুরস্কের সেনাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের ইতিহাস কয়েক দশক ধরে চলছে। কুর্দিদের আক্রমণে অনেক তুর্কি সেনা ও সাধারণ নাগরিক মারা গেছে। বিপরীতে তুরস্কও পিকেকের ওপর সামরিক হামলা ও অভিযান পরিচালনা করেছে। বাশার আল আসাদের পতনের পর তুরস্ক আবারও সামরিক অভিযান পরিচালনার প্রস্ততি নিচ্ছে। সিরিয়াতে পিকেকের বড় সমর্থক হলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। তারাই পিকেকেকে আর্থিক ও সামরিক সাহায্য করে আসছে। পিকেকে কুর্দিদের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। সূত্র: আনাদুলু এজেন্সি
মাহফুজ/সালমান/