ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নাখোশ রিপাবলিকানরাই

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২১ এএম
আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৪ এএম
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নাখোশ রিপাবলিকানরাই
জার্মানির বার্লিনে গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্পের গাজা দখল পরিকল্পনার বিরোধিতায় বিক্ষোভ করে জনসাধারণ। ছবি :সংগৃহীত

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সে পরিকল্পনা নিয়ে নাখোশ খোদ তার দলের লোকজনই। দলের ভেতরেই তৈরি হয়েছে বিভক্তি। এক ভাগ তাকে সমর্থন জানালেও আরেক ভাগ করছে জোর সমালোচনা।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন ট্রাম্প। পরে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান যে, গাজাকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে চান এবং সেখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের তিনি অন্য কোথাও পাঠাতে চান।

ট্রাম্পের বক্তব্যের পরপরই আন্তর্জাতিক মহল থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়। কংগ্রেসে থাকা কিছু রিপাবলিকান এর বিরোধিতাও করেন। অথচ এদের অনেকেই ট্রাম্পের বিদেশি সহায়তা বন্ধ ও কেন্দ্রীয় কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো বিষয়গুলোতে সায় দিয়েছিলেন।

ট্রাম্পের এমন পরিকল্পনায় নাখোশ আইনপ্রণেতারা বলেন, তারা এখনো দ্বিরাষ্ট্র সমাধান চাইছেন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের জন্য। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘসময় ধরেই ওই কূটনীতির ওপর নির্ভর করেছে। অনেক আইনপ্রণেতা আবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ খরচ করে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় সেনা পাঠানোর বিরোধিতা করছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে রিপাবলিকান সিনেটর র‌্যান্ড পল বলেন, ‘আমি মনে করেছিলাম যে আমরা আমেরিকা প্রথম নীতির জন্য ভোট দিয়েছিলাম। আমাদের আরেকটি দখলদারত্বে জড়িয়ে আমাদের সম্পদ ধ্বংস ও সেনাদের রক্তপাত ঘটানোর কোনো দরকার নেই।’

কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে রিপাবলিকানরা। ডেমোক্র্যাটরা সরাসরি ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন বলেছেন, এটি আরেক নামে জাতিগত নির্মূল কর্মকাণ্ড। রিপাবলিকান সিনেটর জেরি মোরান বলেন, দ্বিরাষ্ট্র সমাধান বাতিল করে দেওয়া সম্ভব না। এটি এমন কিছু না যা নিয়ে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।

সিনেটর লিসা মুরকোয়স্কি বলেন, ওই অঞ্চলে সেনা পাঠানোর কথাও আমি মাথায় আনতে চাই না। কারণ, এই চিন্তাটাই ভীতিকর। তবে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, এ পরিকল্পনা দৃঢ় এবং সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ। জনসন আরও জানান, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন।

ট্রাম্প নির্বাচনি প্রচারের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি নতুন বিদেশি সংশ্লিষ্টতা গড়ে তোলা ও আজীবন ধরে চলা যুদ্ধ এড়াবেন। এ ছাড়া রয়টার্সের করা এক জরিপের ফলাফল বলছে, ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের মানুষও পছন্দ করবেন না। এমনকি রিপাবলিকান ভোটাররাও না। ট্রাম্পের শপথের পর জানুয়ারি ২০-২১ তারিখে করা হয় ওই জরিপ। সে সময় নিজের এই পরিকল্পনা জানাননি ট্রাম্প।

তবে জরিপে একটা প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভূখণ্ড দখলে নেবে, তা মানুষ সমর্থন করবেন কি না। উত্তরে বেশির ভাগই এর বিরোধিতা করেছেন। মাত্র ১৫ শতাংশ রিপাবলিকান ভোটার এই চিন্তাভাবনা পছন্দ করেছেন।

সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা জন থুনে বলেছেন, ওই অঞ্চলে তিনি শান্তি ও স্থিরতা আনার পক্ষে। কিন্তু প্রতিটি পরিকল্পনাই ভালোভাবে যাচাই করে দেখতে হবে। 

বার্লিনে বিক্ষোভ

এদিকে, ট্রাম্প গাজা সংক্রান্ত পরিকল্পনা জানানোর পর গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির বার্লিনে বিক্ষোভ হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পাঠানোর চিন্তা ও গাজার দখল নেওয়ার প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জনতা।

বার্লিনে পটসডামের প্লাটজে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি পতাকা ও ব্যানার। সেখানে লেখা ছিল, নির্বাসনকে না বলুন, পশ্চিম তীরে আগ্রাসন রুখে দিন। ট্রাম্প ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে শোনা যায় অনেককে।

এক বিক্ষোভকারী জানান, ফিলিস্তিনিরা সরে যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তাদেরকে সরিয়ে দেওয়ার সব চেষ্টায় বাধা দিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজাবাসী মিসরে পালিয়ে যায়নি। তারা লড়াই করবে এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করবে।

আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, গাজা নিয়ে না ভেবে, ট্রাম্পের উচিত ফ্লোরিডার দিকে মনোযোগ দেওয়া। তিনি আরও বলেন, গাজা কোনো রিয়েল এস্টেট না। সেখানকার মানুষ নিজেদের মাটি ছেড়ে যাবে না। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স

জাল ও ভেজাল ওষুধে ছেয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম
জাল ও ভেজাল ওষুধে ছেয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গ
ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র জাল (নকল) ও ভেজাল ওষুধে ছেয়ে গেছে। সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ওষুধের গুণমানের ওপর যে তদন্ত ও সমীক্ষা চালিয়েছিল, তাতেই সামনে এসেছে এই মারাত্মক খবরটি।

প্রায় ৩৫০ রকমের জাল ও ভেজাল ওষুধ দিনের পর দিন ব্যবহার করেছেন রাজ্যের কোটি কোটি মানুষ! শুধু পশ্চিমবঙ্গবাসী নয়, বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকেও অসংখ্য মানুষ কলকাতায় আসেন চিকিৎসার জন্য। ফলে এই ভেজাল ওষুধের প্রভাব অনেক দূর ছড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে এখানকার চিকিৎসক মহল।

হাওড়ার আমতা থেকে সম্প্রতি উদ্ধার করা প্রেসারের ওষুধের রিপোর্ট জমা করেছে ডিরেক্টরেট অব ড্রাগ কন্ট্রোল। এই রিপোর্টটি ঘিরে ইতোমধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই প্রেসারের ওষুধ সম্পূর্ণ জাল। উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় চিকিৎসকরা যে ওষুধ দিয়ে থাকেন তার অন্যতম হল ‘টেলমা এএম ৪০’।

এই ওষুধ নিয়েই চলছিল কালোবাজারি। এই ওষুধ সম্পর্কে প্রস্তুতকারী সংস্থাকে চিঠি লিখে জানতে চাওয়া হয়েছিল মূল ওষুধের কোন কোন অংশ নকল করা হয়েছে। ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফ থেকে ডিরেক্টরেট অব ড্রাগ কন্ট্রোলকে সব তথ্যই দেওয়া হয়। জানানো হয় উচ্চ রক্তচাপের যে ওষুধ জাল করা হয়েছে তার ব্যাচ নম্বর ০৫২৪০৩৬৭। এই ব্যাচ নম্বরের সঙ্গে আসল ওষুধের ব্যাচ নম্বরের সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। অর্থাৎ ব্যাচ নম্বর জাল করা হয়েছিল।

প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গিয়ে ওষুধের ওপর ছাড় দিচ্ছেন বহু ব্যবসায়ী। আর সেই সুযোগে দেশ তথা রাজ্যে জাল ওষুধের রমরমা ব্যবসা ক্রমশ বাড়ছে। এদিকে জাল ওষুধ চেনার উপায় ঠিক জানা নেই সাধারণ মানুষ তো বটেই, এমনকি ওষুধ ব্যবসায়ীদেরও। এ কথা স্বীকার করেছে ‘বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (বিসিডিএ)।

গুণগত মানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করতে ইতোমধ্যে নির্দেশিকা জারি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। বলা হয়েছে, পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ব্যাচের ওষুধের তালিকা ও তথ্য সব সরকারি হাসপাতাল, সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর, পাইকারি বিক্রেতা এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের নির্দেশিকা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলকে, যাতে কোথাও ওই সব ওষুধ ব্যবহৃত না হয়।

‘সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ (সিডিএসসিও) সূত্রের খবর, গত তিন মাসে প্রায় ৩০০টি ওষুধ গুণ-মানের পরীক্ষায় ফেল করেছে। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক সংস্থার তৈরি ওষুধও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরও। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল থেকে শুরু করে দোকানেও প্রকাশ্যে ঝোলাতে হবে অনুত্তীর্ণ সব ওষুধের তালিকা। সেই তথ্য রাখতে হবে স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটেও।

এর পরও কোথাও ওই সব ওষুধ কেনাবেচা হচ্ছে কি না, তাতে নজরদারি চালাতে দোকানে আচমকা পরিদর্শন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলকে। গাফিলতি ধরা পড়লে কড়াব্যবস্থা নেওয়ার কথাও নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।

বিসিডিএ-এর মুখপাত্র শঙ্খ রায়চৌধুরী বলেছেন, ‘জাল বা ভুয়া (নকল) ওষুধের সমস্যা গুরুতর, যা দেশের জনগণের স্বাস্থ্য এবং ওষুধ ব্যবসা, দুটিরই ক্ষতি করছে। দ্রুত এর বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।’ তাদের অভিযোগ, ৩৫ শতাংশ জাল (নকল) ওষুধ তৈরি হয় এ দেশে।

পশ্চিমবঙ্গে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ যখন নকল ওষুধের সমস্যা মোকাবিলায় অভিযান জোরদার করছে, তখন কলকাতাভিত্তিক ওষুধ ব্যবসায়ী সংগঠন- অল ইন্ডিয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউটরস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ সরকার অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে আসা বেশির ভাগ নকল ওষুধ উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খন্ড এবং ছত্তিশগড় থেকে আসে। পাশাপাশি হরিয়ানা থেকেও প্রচুর নিম্নমানের ওষুধ রাজ্যে আসছে। তিনি অভিযোগ করেন, উত্তর ভারতের এই রাজ্যগুলো নকল ওষুধের কেন্দ্রস্থল। এদের বেশির ভাগই বাদ্দি এবং সোলান শহরের কারখানাগুলোতে তৈরি হয়।

সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করে ইউক্রেন, রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করে ইউক্রেন, রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র
ছবি: সংগৃহীত

বিগত ২০২০-২৪ সময়কালে বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ইউক্রেন। গত চার বছর ধরে বিশ্বজুড়ে যে অস্ত্র রপ্তানি হয়েছে, তার ৯ শতাংশই হয়েছে ইউক্রেনে। যুদ্ধরত দেশটিতে ২০১৫-১৯ সালের পরিসংখ্যানের তুলনায় আমদানি প্রায় শতগুণ বেড়েছে। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। আর ভারতকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে রাশিয়া।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (এসআইপিআরআই) রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে মারণাস্ত্র কেনাবেচার পরিমাণ একই আছে, কেবল যারা সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কিনছে তাদের নাম বদল হয়েছে। বিশ্বজুড়ে অস্ত্র বিক্রির এই চিত্র ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় একই।

২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইউক্রেন সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করেছে। সম্প্রতি তারা অস্ত্র আমদানির পরিমাণ অনেকগুণ বাড়িয়েছে। একই সময়ে ইউরোপের দেশগুলোতে অস্ত্র কেনার পরিমাণ বেড়েছে ১৫ শতাংশ। এটি মূলত ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের একটি প্রভাব। 

এসআইপিআরআই’র রিপোর্ট বলছে, রাশিয়া আক্রমণ করতে পারে, এই ভয় থেকেই ইউরোপ বেশি অস্ত্র কিনছে। এর আগে যারা সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করত সেই সৌদি আরব, ভারত, চীন ওই সময়ের মধ্যে অস্ত্র কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে।

রিপোর্ট বলছে, ৩৫টি দেশ ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়েছে। তার মধ্যে ৪৫ শতাংশ অস্ত্র গেছে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এছাড়া জার্মানি ১২ শতাংশ এবং পোল্যান্ড ১১ শতাংশ অস্ত্র দিয়েছে।

অন্যদিকে, বিশ্বে অস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এক নম্বরে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে তারা ১০৭টি দেশকে অস্ত্র দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে মোট অস্ত্র রপ্তানির ৪৩ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে হয়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফ্রান্সের তুলনায় তাদের অস্ত্র রপ্তানির পরিমাণ চারগুণেরও বেশি।

এছাড়া ২০১৫ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে রাশিয়ার অস্ত্র রপ্তানির পরিমাণ ৬৩ শতাংশ কমে গেলেও দেশটি ২০২১ ও ২০২২ সালে চীন ও ভারতকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র দিয়েছে।  সুত্র: দ্য হিন্দু

দিনা/অমিয়/

সুনীতাদের ফেরাতে অবশেষে রওনা দিল মাস্কের মহাকাশযান

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:০০ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:১৫ পিএম
সুনীতাদের ফেরাতে অবশেষে রওনা দিল মাস্কের মহাকাশযান
শনিবার ভোরে ( ১৫ মার্চ ) মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে স্পেসএক্সের ক্রু-১০। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তার সঙ্গী বুচ উইলমোরকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে স্পেসএক্স ক্রু-১০ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।  

ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় শনিবার ( ১৫ মার্চ) ভোর ৪টা ৩৩ মিনিটে নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মহাকাশযানটির সফল উৎক্ষেপণ হয়।

জুন মাস থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) আটকে থাকা প্রবীণ নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোরের প্রত্যাবর্তনকে সহজ করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই মিশনটি মূলত বুধবার (১২ মার্চ) পরিচালনা করার কথা ছিল। কিন্তু কিছু কারিগরি সমস্যার কারণে এটি বিলম্বিত হয়। 

নাসা এবং ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের যৌথ উদ্যোগে ক্রু-১০ উৎক্ষেপণ হাইড্রলিক সিস্টেমের সমস্যায় পিছিয়ে যায়। মহাকাশযানটিতে নাসা, জাপান ও রাশিয়ার চার নভোচারী রয়েছেন। তারা হলেন- নাসার অ্যান ম্যাক্লেন, নিকোল আইয়ার্স এবং জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার প্রতিনিধি টাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের প্রতিনিধি কিরিল পেসকভ।

ফ্যালকন-৯ রকেটটি উৎক্ষেপণের সময় যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ছিল সন্ধ্যা ৭টা ৩ মিনিট। নাসা এই বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও তাদের অফিশিয়াল পেজে পোস্ট করে। ধারণা করা হচ্ছে, ক্রু-১০ সুনীতাদের নিয়ে ১৯ মার্চের পর পৃথিবীতে ফিরে আসবে।

গত বছরের জুনে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতা এবং বুচ। আট দিন পরেই তাদের পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু তারা যে মহাকাশযানে চড়ে গিয়েছিলেন, সেটির বোয়িং স্টারলাইনারে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। যার কারণে তাদের প্রত্যাবর্তন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। 

পরে নাসা সিদ্ধান্ত নেয়, ওই মহাকাশযানে সুনীতারা ফিরবেন না। এ কারণে সেটি খালি অবস্থাতেই পৃথিবীতে ফিরে আসে। এভাবেই মহাকাশে আটকে পড়েন সুনীতা, বুচ। তাদের আট দিনের মহাকাশ সফর ৯ মাস দীর্ঘায়িত হয়। অবশেষে তারা ফিরতে চলেছেন।  সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

দিনা/অমিয়/

অলিম্পিক তারকা এখন এফবিআই-এর মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:০৯ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:২২ এএম
অলিম্পিক তারকা এখন এফবিআই-এর মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল
কানাডার  অলিম্পিকজয়ী স্নোবোর্ডার রায়ান ওয়েডিং। ছবি: সংগৃহীত

কানাডার সাড়া জাগানো অলিম্পিকজয়ী স্নোবোর্ডার রায়ান ওয়েডিংকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত করেছে। ৪৩ বছর বয়সী রায়ান ২০০২ সালে ইউটা সল্টলেক সিটিতে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকে কানাডার হয়ে জায়ান্ট স্ল্যালম ইভেন্টে অংশ নিয়েছিলেন।

কানাডার তারকা খেলোয়াড়দের নাম নিতে গেলে সেই তালিকায় প্রথমেই আসে রায়ান ওয়েডিংয়ের প্রসঙ্গ। অথচ এখন তার নাম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায়।

অবসরের পর রায়ান ওয়েডিং অন্ধকার জগতে পা বাড়ান। তার বিরুদ্ধে খুন, মাদক পাচারের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।

কানাডার পুলিশের হাত থেকেও একাধিকবার পালিয়ে বেঁচেছেন তিনি। এর আগে ২০১০ সালে দোষী সাব্যস্ত হয়ে চার বছর জেলও খেটেছেন। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন।

সম্প্রতি যুক্ত্ররাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) তাদের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকা ঘোষণা করেছে। সেই তালিকার ১০ জনের মধ্যে রায়ান ওয়েডিংয়ের নাম রয়েছে। 

এফবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রায়ান ওয়েডিংকে ধরে দিতে বা খোঁজ দিতে পারলে এক কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে। 

এফবিআই জানায়, ওয়েডিং বর্তমানে মেক্সিকো বা লাতিন আমেরিকার কোনো একটি দেশে লুকিয়ে রয়েছেন।

এফবিআই আরও জানায়, রায়ান একটি সংগঠন পরিচালনা করতো; যেটি কলম্বিয়া থেকে মাদক কিনে মেক্সিকোতে পাঠাতো। সেখান থেকে আবার সেসব মাদক লস অ্যাঞ্জেলেসে আনা হতো। এরপর পাঠানো হতো কানাডায়। 

আর এই চোরাচালান করতে গিয়ে ওয়েডিং খুনের সঙ্গেও যুক্ত হন। তিনি ২০২৩ সালে অন্টারিওতে দুই ব্যক্তিকে খুন করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

তবে রায়ান এতদিন ধরে অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তাকে মাত্র একবার ধরতে পেরেছে এফবিআই। তিনি এল জেফে, জায়ান্ট, পাবলিক এনিমি ছন্দনামে এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করত। সূত্র: নিউজ উইক

দিনা/অমিয়/

ইরানে নারীদের পোশাকবিধি নজরদারিতে ড্রোন ও অ্যাপ ব্যবহারের অভিযোগ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৯ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:১২ এএম
ইরানে নারীদের পোশাকবিধি নজরদারিতে ড্রোন ও অ্যাপ ব্যবহারের অভিযোগ
ছবি: সংগৃহীত

ইরান ড্রোন ও আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের কঠোর আইন অমান্যকারীদের দমন-পীড়ন করছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিশেষ করে, সেসব নারী ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পোশাকবিধি মানতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানান, ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সতর্কতার সঙ্গে এসব কৌশল প্রয়োগ করছে। বিশেষ করে ট্যাক্সি এবং অ্যাম্বুলেন্সের মতো ব্যক্তিগত যানবাহনে মহিলাদের পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে বিশেষ ফোন অ্যাপ ব্যবহার করতে জনগণকে উৎসাহিত করছে।

এই প্রতিবেদনে তেহরান এবং দক্ষিণ ইরানে পর্যবেক্ষণের জন্য ড্রোন এবং নিরাপত্তা ক্যামেরার ব্যবহার তুলে ধরা হয়।

তাদের নতুন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তেহরান এবং ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে হিজাব আইন বাস্তবায়নের জন্য ড্রোন ও নিরাপত্তা ক্যামেরার ব্যবহার বেড়েছে। যারা এই কঠোর আইনের বিরোধিতা করছেন বা প্রতিবাদ করছেন, তারা গ্রেপ্তার, মারধর এবং কখনো কখনো পুলিশি হেফাজতে যৌন সহিংসতারও শিকারও হচ্ছেন।

জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তথ্য-উদ্ধার মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানি কর্তৃপক্ষের সহিংসতার কারণেই ২০২২ সালে মাসা আমিনির মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২২ বছর বয়সী ওই কুর্দি তরুণীকে দেশটির নীতি পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারধর করা হয়েছিল। তবে কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং তার মৃত্যুর কারণ ‘হৃদরোগ’ বলে দাবি করে।

মাসার মৃত্যুর পর দেশজুড়ে যে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, তা পরে আন্দোলনে রূপ নেয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর দমন-পীড়নের হুমকি থাকার পরও এই আন্দোলন এখনো অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়- ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভের দুই বছর পরও ইরানের নারী ও কিশোরীরা আইনি ও বাস্তব জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাঠামোগত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে, ইরান সরকারের বাধ্যতামূলক হিজাব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে।

‘সতর্কতা’ কর্মসূচির মাধ্যমে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব বাস্তবায়নে রাষ্ট্র সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছে। বিষয়টিকে নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

তেহরানের আমির-কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে নারীদের হিজাব পরিধান নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ইনস্টল করেছে। এ ছাড়াও, ইরানের প্রধান সড়কগুলোর নিরাপত্তা ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে হিজাববিহীন নারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানান, তারা ‘নাজার’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ পেয়েছেন। ইরানের পুলিশ এই অ্যাপ পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে অনুমোদিত ব্যক্তিরা হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে পারেন। এই অ্যাপ ব্যবহার করে লোকজন যানবাহনের ভেতরে হিজাববিহীন নারীদের অবস্থান, তারিখ, সময় এবং যানবাহনের নম্বর প্লেটসহ রিপোর্ট করতে পারেন। এই রিপোর্ট পুলিশকে সরাসরি সতর্কবার্তা পাঠায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযোগ পাওয়ার পর যানবাহনের মালিককে একটি মেসেজ পাঠিয়ে হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ জানায় পুলিশ। যদি কেউ এই সতর্কবার্তাকে উপেক্ষা করেন, তবে তার যানবাহন আটক করা হতে পারে।

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা প্রায় ৩০০ জন ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ইরানের বিচারিক ব্যবস্থার গভীর পর্যালোচনা করেছেন। নির্যাতিতদের পরিবারকে পরিকল্পিতভাবে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।

তদন্তে আরও দেখা গেছে, সরকার কর্তৃক তিন শিশু এবং তিন প্রাপ্তবয়স্ক বিক্ষোভকারীকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মৃত্যুকে পরে আত্মহত্যা বলে দাবি করা হয়।

প্রতিবেদনে আটক নারীদের ওপর যৌন সহিংসতার প্রমাণও পাওয়া গেছে। 

বিবিসি জানায়, এই প্রতিবেদনটি ১৮ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। সূত্র: বিবিসি

দিনা/অমিয়/