
মার্কিন ত্রাণসংস্থা ইউসএইড ৯০ দিন বন্ধ ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী ত্রাণ কার্যক্রমে ব্যাপক হইচই পড়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণা প্র্যত্যাশা করেননি কেউ। তবে এই সুযোগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী চীন নিজেদের প্রভাব বাড়াবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
এর আগে গত সপ্তাহে জনপ্রিয় মার্কিন ত্রাণসংস্থা ইউএসএইড বন্ধের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের কারণের বিশ্বব্যাপী ত্রাণ সরবরাহের প্রায় ৪০ শতাংশ স্থবির হয়ে পড়ে।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যালয়ে প্রবেশাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের।
তবে তাৎক্ষনিক এই বিপর্যয়ের বাইরেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্র নিজের হাতে প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের কাছে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তারের সুবর্ণ সুযোগ তুলে দিচ্ছে বলে মত তাদের।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন কাউন্সিলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হুয়াং ইয়াংজং বলেন, ‘প্রভাব বিস্তারের সুযোগ রূপোর পাত্রে বেইজিংয়ের হাতে দিচ্ছেন ট্রাম্প।’
অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে ধুকছে চীন। এ পর্যায়ে মানবহিতৈষী কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার বেশ ভালো সুযোগ এসেছে চীনের সামনে, ধারণা তার।
ইউএসএইড বিপর্যস্ত দেশের স্থানীয় এনজিওগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। অন্যদিকে চীন দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে অবকাঠামোগত উন্নয়নের উদ্দেশ্যে সল্প সুদে ঋণ দিয়ে থাকে। তবে দুই দেশেরই আসল উদ্দেশ্য প্রভাব বিস্তার।
এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ত্রাণ কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখলে চীন এই শূন্যস্থান পূরণ করে নেবে বলে ধারণা করছেন অনেকেই। জানা গেছে, প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ত্রাণ তহবিল প্রতিস্থাপন করেছে চীনের এক সংস্থা।
‘যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ প্রগতিশীল ভূরাজনীতির মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি কায়েম করতে চায়। অন্যদিকে রাশিয়ার মতো চীনও চাইছে স্বৈরাচারী প্রভাবের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থা পোক্ত করতে। ইউএসএইড বন্ধের সুযোগ লাগিয়ে তারা ঠিক এটাই করবে’, বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকিংস্ ইন্সটিটিউটের ফেলো জর্জ ইনগ্রাম।
এ পরিস্থিতিতে চীন উদ্ভূত শুন্যস্থান পূরণ করতে পারে কি না- এটাই দেখার বিষয়। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
নাইমুর/