ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

গুলশানে বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দার তালিকায় টিউলিপ

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম
গুলশানে বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দার তালিকায় টিউলিপ
টিউলিপ সিদ্দিক

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশানে একটি বিলাসবহুল ১০ তলা ভবনের বাসিন্দা হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম তালিকাভুক্ত ছিল। তার পরিবারের নামে ওই ভবনের নামকরণ করা হয়। 

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

টিউলিপ যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির একজন এমপি এবং সাবেক ট্রেজারি মিনিস্টার। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তিনি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন। টিউলিপ বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের উত্তর লন্ডনের ক্যামডেনের কাউন্সিলর থাকার সময় তার ‘স্থায়ী ঠিকানা’ ছিল অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স ‘সিদ্দিকস’। এটি ঢাকার গুলশানে অবস্থিত। এই এলাকা মূলত বিদেশি কূটনৈতিক মিশন ও বড় করপোরেট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ের জন্য বিখ্যাত। আদালতের নথি ও সংবাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, এ নিয়ে বাংলাদেশে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে যুক্ত ‘পঞ্চম সম্পত্তির’ খোঁজ মিলেছে। উল্লেখ্য, টিউলিপের পারিবারিক পদবি ‘সিদ্দিক’। 

তবে লেবার পার্টির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে টিউলিপের কোনো সম্পত্তি নেই। যেসব বিষয় তার সঙ্গে যুক্ত নয়, সেসব বিষয়ে কোনো প্রশ্নের জবাব দেওয়ারও তার দরকার নেই। মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগের এক মাস পেরিয়ে গেলেও টিউলিপ সিদ্দিক এখনো তার সম্পত্তিসংক্রান্ত বিষয় ও বাংলাদেশে তার খালা শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্নের মুখে আছেন। 

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নৈতিকতাবিষয়ক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস তার তদন্তে দেখেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির দেওয়া একটি ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপ অনিচ্ছাকৃতভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিলেন। এ-সংক্রান্ত অভিযোগ ওঠার পর টিউলিপ মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

ট্রেজারি মিনিস্টারের দায়িত্ব পালনকালে টিউলিপের দায়িত্ব ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা। অথচ তার নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত চান। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি লন্ডনে বিনামূল্যে (উপহার) ফ্ল্যাট নিয়েছেন। এ ছাড়া একইভাবে নেওয়া তার ছোট বোনের ফ্ল্যাট তিনি ব্যবহার করেছেন।

এদিকে বাংলাদেশের গাজীপুরে কানাইয়া এলাকায় ‘টিউলিপস টেরিটরি’ নামের প্লটসহ একটি পারিবারিক অবকাশযাপনের বাগানবাড়ি নিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ তথ্য সামনে আসার পর গুলশানের সম্পত্তির সঙ্গে টিউলিপের যোগসূত্রের তথ্য জানতে পারে দ্য টেলিগ্রাফ।

সরকারি একটি আনুষ্ঠানিক নথিতে দেখা গেছে, ওই সম্পত্তিকে টিউলিপের ‘বর্তমান’ ও ‘স্থায়ী’ ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। নথিটি ২০১৪ সালের মে মাসে ক্যামডেন কাউন্সিলরের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর তিন সপ্তাহ পরের তারিখে লিপিবদ্ধ করা হয়। 

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে অবস্থিত ১০ তলা ভবনটি ২০১০ সালের দিকে নির্মিত। ভবনটিতে ছাদবাগান, দুই ও তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট, বারান্দাসহ আবাসিক ইউনিট রয়েছে। এ ধরনের প্রশস্ত অ্যাপার্টমেন্টগুলোর সঙ্গে ঢাকার দুই কোটি মানুষের বসবাসের পরিবেশের বড় ধরনের বৈসাদৃশ্য আছে। কারণ এটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে একটি। 

ভবনটি টিউলিপ সিদ্দিকের বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিক, তার দাদা বা পুরো পরিবারকে উদ্দেশ্য করে নামকরণ করা হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এই ভবনটির মালিকানার বিষয়ে অবগত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, এটি পরিবারের এক সদস্যের মালিকানাধীন জমির ওপর নির্মিত হয়। তবে পরিবারটি এখনো ওই ভবনের কোনো ফ্ল্যাটের মালিক কি না বা ভবনটির নামকরণ কার নামে হয়েছে- এ বিষয়ে লেবার পার্টি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। 

টিউলিপ এর আগে পরিবারের আরেক সদস্যের সঙ্গে ঢাকায় একটি ফ্ল্যাটের মালিক ছিলেন, যার মূল্য ১ লাখ পাউন্ডের বেশি। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের রেজিস্ট্রার অব ইন্টারেস্টের তথ্য অনুসারে ফ্ল্যাটটি ২০১৫ সালে বিক্রি করা হয়।

ইরানে নারীদের পোশাকবিধি নজরদারিতে ড্রোন ও অ্যাপ ব্যবহারের অভিযোগ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৯ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:১২ এএম
ইরানে নারীদের পোশাকবিধি নজরদারিতে ড্রোন ও অ্যাপ ব্যবহারের অভিযোগ
ছবি: সংগৃহীত

ইরান ড্রোন ও আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের কঠোর আইন অমান্যকারীদের দমন-পীড়ন করছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিশেষ করে, সেসব নারী ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পোশাকবিধি মানতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানান, ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সতর্কতার সঙ্গে এসব কৌশল প্রয়োগ করছে। বিশেষ করে ট্যাক্সি এবং অ্যাম্বুলেন্সের মতো ব্যক্তিগত যানবাহনে মহিলাদের পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে বিশেষ ফোন অ্যাপ ব্যবহার করতে জনগণকে উৎসাহিত করছে।

এই প্রতিবেদনে তেহরান এবং দক্ষিণ ইরানে পর্যবেক্ষণের জন্য ড্রোন এবং নিরাপত্তা ক্যামেরার ব্যবহার তুলে ধরা হয়।

তাদের নতুন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তেহরান এবং ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে হিজাব আইন বাস্তবায়নের জন্য ড্রোন ও নিরাপত্তা ক্যামেরার ব্যবহার বেড়েছে। যারা এই কঠোর আইনের বিরোধিতা করছেন বা প্রতিবাদ করছেন, তারা গ্রেপ্তার, মারধর এবং কখনো কখনো পুলিশি হেফাজতে যৌন সহিংসতারও শিকারও হচ্ছেন।

জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তথ্য-উদ্ধার মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানি কর্তৃপক্ষের সহিংসতার কারণেই ২০২২ সালে মাসা আমিনির মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২২ বছর বয়সী ওই কুর্দি তরুণীকে দেশটির নীতি পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারধর করা হয়েছিল। তবে কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং তার মৃত্যুর কারণ ‘হৃদরোগ’ বলে দাবি করে।

মাসার মৃত্যুর পর দেশজুড়ে যে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, তা পরে আন্দোলনে রূপ নেয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর দমন-পীড়নের হুমকি থাকার পরও এই আন্দোলন এখনো অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়- ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভের দুই বছর পরও ইরানের নারী ও কিশোরীরা আইনি ও বাস্তব জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাঠামোগত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে, ইরান সরকারের বাধ্যতামূলক হিজাব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে।

‘সতর্কতা’ কর্মসূচির মাধ্যমে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব বাস্তবায়নে রাষ্ট্র সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছে। বিষয়টিকে নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

তেহরানের আমির-কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে নারীদের হিজাব পরিধান নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ইনস্টল করেছে। এ ছাড়াও, ইরানের প্রধান সড়কগুলোর নিরাপত্তা ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে হিজাববিহীন নারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানান, তারা ‘নাজার’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ পেয়েছেন। ইরানের পুলিশ এই অ্যাপ পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে অনুমোদিত ব্যক্তিরা হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে পারেন। এই অ্যাপ ব্যবহার করে লোকজন যানবাহনের ভেতরে হিজাববিহীন নারীদের অবস্থান, তারিখ, সময় এবং যানবাহনের নম্বর প্লেটসহ রিপোর্ট করতে পারেন। এই রিপোর্ট পুলিশকে সরাসরি সতর্কবার্তা পাঠায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযোগ পাওয়ার পর যানবাহনের মালিককে একটি মেসেজ পাঠিয়ে হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ জানায় পুলিশ। যদি কেউ এই সতর্কবার্তাকে উপেক্ষা করেন, তবে তার যানবাহন আটক করা হতে পারে।

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা প্রায় ৩০০ জন ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ইরানের বিচারিক ব্যবস্থার গভীর পর্যালোচনা করেছেন। নির্যাতিতদের পরিবারকে পরিকল্পিতভাবে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।

তদন্তে আরও দেখা গেছে, সরকার কর্তৃক তিন শিশু এবং তিন প্রাপ্তবয়স্ক বিক্ষোভকারীকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মৃত্যুকে পরে আত্মহত্যা বলে দাবি করা হয়।

প্রতিবেদনে আটক নারীদের ওপর যৌন সহিংসতার প্রমাণও পাওয়া গেছে। 

বিবিসি জানায়, এই প্রতিবেদনটি ১৮ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। সূত্র: বিবিসি

দিনা/অমিয়/

গাজায় ১৩ দিন ধরে সহায়তা ঢুকছে না

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৭ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩০ এএম
গাজায় ১৩ দিন ধরে সহায়তা ঢুকছে না
গাজায় ১৩ দিন ধরে সহায়তা ঢুকছে না। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা আরও বৃদ্ধি করেছে। তাদের হামলায় গাজা সিটি ও বেইত লাহিয়ায় অন্তত দুই শিশু মারা গেছে। উপত্যকাজুড়ে টানা ১৩ দিনের মতো সহায়তা বন্ধ করে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। 

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েল পদ্ধতিগতভাবে নারীদের স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা ধ্বংস করে দিয়ে এবং যৌন সহিংসতাকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

হামাস কর্মকর্তারা বলছেন, ফিলিস্তিনিরা গাজার বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি বজায় রাখার পক্ষে এবং দ্বিতীয় ধাপে যেতে চাইছে। তবে এরই মধ্যে খবর রটেছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ধাপ ৬০ দিনের জন্য বৃদ্ধি করার প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে আরও ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করা যায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, অন্তত ৪৮ হাজার ৫২৪ জন ফিলিস্তিনি গাজার যুদ্ধে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫৫ জন।

তবে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর বলছে, মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি। তারা ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপাপড়া ব্যক্তিদেরও মৃতের তালিকায় ধরেছে। 

দামেস্কে ইসরায়েলের হামলা

সিরিয়ায় সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে হতাহত হয়েছেন হাজারও মানুষ। চলমান সংঘাতের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে একটি স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। 

দেশটির সামরিক বাহিনীর দাবি, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের কমান্ড সেন্টারকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিকল্পনা ও পরিচালনার জন্য ব্যবহার হচ্ছিল জায়গাটি।

তবে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামিক জিহাদ। তবে এক সূত্র জানায়, ইসরায়েলি হামলার মূল লক্ষ্য ছিল একজন ফিলিস্তিনি।

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক সফর করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান। দেশটিতে আসাদ যুগের অবসানের পর পুনর্গঠন নিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ও সামরিক তৎপরতা। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর দেশব্যাপী বিদ্রোহীদের ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান বাশার আল-আসাদ। এর মধ্যে দিয়েই সিরিয়ায় আসাদ যুগের ৫৩ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। সূত্র: আল-জাজিরা, এএফপি

আইসিসিতে হাজির রদ্রিগো দুতার্তে

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৬ এএম
আইসিসিতে হাজির রদ্রিগো দুতার্তে
প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) হাজির ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। ছবি: সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে শুক্রবার (১৪ মার্চ) প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) হাজির করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেই এক বিবৃতিতে আদালত জানান, শুক্রবার বেলা ২টায় দুতার্তের প্রথম হাজিরা নির্ধারণ করেছে চেম্বার।

৭৯ বছর বয়সী দুতার্তে শুনানির জন্য বিচারকদের সামনে হাজির হন। কোন কোন অপরাধে তিনি অভিযুক্ত তা শোনেন এবং বিবাদী হিসেবে তার অধিকার সম্পর্কে সেখানে তাকে অবহিত করা হয়।

মাদক সেবনকারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর অভিযান চালাতে গিয়ে দুতার্তে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলেছে, তার এই মাদকবিরোধী অভিযানে হাজার হাজার মানুষ হত্যার শিকার হয়েছেন।

আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার ম্যানিলায় দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করে দেশটির পুলিশ। এরপর তাকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত আইসিসিতে পাঠানো হয়।

গত বুধবার নেদারল্যান্ডসে পা রাখার পর সাবেক এই নেতা নিজ কর্মকাণ্ডের দায়ভার স্বীকার করে নেন। এক ফেসবুক ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি পুলিশকে, সামরিক বাহিনী বলেছি যে এটি আমার কাজ ছিল এবং আমিই এর জন্য দায়ী।’ সূত্র: আল-জাজিরা।

সুদানে শিশুরা নৃশংসতার শিকার: ইউনিসেফ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৫ এএম
সুদানে শিশুরা নৃশংসতার শিকার: ইউনিসেফ
সুদানে গৃহযুদ্ধে কারণে শিশুরা নৃশংসতার শিকার হচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

সুদানের গৃহযুদ্ধে শিশুরা নৃশংসতার শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও ডক্টরস উইথআউট বর্ডারস (এমএসএফ)।

ইউনিসেফের তথ্যানুসারে, সুদানের গৃহযুদ্ধের মুখে সে দেশের ১ লাখ ৬০ হাজার শিশু দুর্ভোগের শিকার হয়েছে, অনেকেই প্রতিদিন সহিংসতা, অনাহার, ব্যাধি এবং যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে বলেন, ওই শিশুদের ঠিক দরজার সামনে, বাড়ির আশপাশে, স্কুল ও হাসপাতালে এবং সুদানের বহু শহর, নগর ও গ্রামে যুদ্ধ চলছে।

তিনি আরও বলেন, এ যুদ্ধে বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ১৩ লাখেরও বেশি শিশু দেশের পাঁচটি সর্বাধিক দুর্ভিক্ষ-পীড়িত এলাকায় বাস করছে এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় আরও ৩০ লাখ শিশু কলেরা, ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর মতো রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। অন্তত ১ কোটি ৬৫ লাখ তরুণ-তরুণী এখন শিক্ষাগ্রহণ করতে পারছে না।

রাসেল বলেন, গত বছর সুদানের ১৮টি রাজ্যের মধ্যে ৯টিতে ২২১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, এদের দুই-তৃতীয়াংশই মেয়ে।

তিনি বলেন, ‘যেসব ঘটনার রেকর্ড রয়েছে তার মধ্যে ১৬ জন শিশুর বয়স ছিল পাঁচ বছরেরও কম। চারজনের বয়স ছিল এক বছরেরও কম।

তিনি জানান, এই শিশুরা যে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গেছে তা কখনই মুছে যাবে না। রাসেল বলেন, ‘এই শিশুরা আতঙ্কের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে এবং যে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে তা অস্ত্রবিরতি বা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে মুছে যায় না। তাদের নিরাময়ের জন্য এবং তারা যাতে তাদের জীবন আবার গড়ে তুলতে পারে সে জন্য তাদের প্রয়োজন অব্যাহত পরিচর্যা ও সহযোগিতা।

এমএসএফের প্রধান ক্রিস্টফার লকইয়ার নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, তারা সুদানে যৌন সহিংসতার প্রমাণ পেয়েছে, গত বছর তারা প্রাণে রক্ষা পেয়েছে এমন ৩৮৫ জনের চিকিৎসা করিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে খারতুমে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেলের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই শুরু হয় তার শিকার হচ্ছে শিশুরা। আর তখন থেকে এই সংঘাত দারফুর অঞ্চলসহ দেশটির অধিকাংশ স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। আধা-সামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জাতিসংঘ বলছে, দুই পক্ষই মারাত্মকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে নিজেদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা

যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিনের প্রশ্ন, শর্ত

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৫ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩০ এএম
যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিনের প্রশ্ন, শর্ত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও রাজি। তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সঙ্গে শর্তজুড়ে দিতে চান তিনি। ইউক্রেনের প্রস্তাব প্রসঙ্গে নিজের মত জানাতে গিয়ে ওই কথা বলেন পুতিন। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, 

মস্কোয় গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় পুতিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সম্পর্কে বলেন, ‘ধারণাটি সঠিক এবং আমরা এটিকে সমর্থন করি, তবে এমন প্রশ্ন রয়েছে যেগুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা করা দরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি এমন হওয়া উচিত যা একটি স্থায়ী শান্তির দিকে পরিচালিত করবে এবং এই সংকটের মূল কারণগুলো দূর করবে। আমাদের যুক্তরাষ্ট্র সহকর্মী এবং অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সম্ভবত আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলব।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি ইউক্রেনের জন্য ভালো হবে। আমরা এর পক্ষে। তবে এর কিছু অস্পষ্টতাও রয়েছে।’

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, বিবাদের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে একটি রাশিয়ার কারস্ক অঞ্চল। পুতিনের দেওয়া তথ্যানুসারে, সেখানে ইউক্রেন গত বছর একটি সামরিক আগ্রাসন শুরু করে এবং কিছু অঞ্চল দখল করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তারা সেখানে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। রাশিয়া কারস্কের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার কারস্ক সফর করেন পুতিন। সেখানে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী পুতিনকে জানান, কারস্ক পুনরুদ্ধার অভিযানের শেষ ধাপে রয়েছেন তারা। পুতিন এখন বলছেন, ‘কারস্কে ইউক্রেনীয়দের জন্য দুটি বিকল্প রয়েছে- আত্মসমর্পণ অথবা মৃত্যু।’ 

যুদ্ধবিরতি কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন পুতিন, ‘৩০ দিনের এই সময়টা কীভাবে কাজে লাগবে? ইউক্রেনকে সংগঠিত করার জন্য? পুনরায় অস্ত্র দিতে? মানুষকে প্রশিক্ষণ দিতে? নাকি এর কোনোটিই নয়?’

কীভাবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সেটিও জানতে চান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার নির্দেশ কে দেবে? কী মূল্যে? কে সিদ্ধান্ত নেবে যে, দুই হাজার কিলোমিটারেও বেশি এলাকায় কে কোন সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করেছে? এসব প্রশ্নের জন্য উভয় পক্ষের সূক্ষ্মভাবে কাজ দরকার। এসবের নীতি কে ঠিক করবে?’

এদিকে পুতিনের এই মত প্রকাশ ও প্রতিক্রিয়াকে ‘ধুর্ততা’ হিসেবে অভিহিত করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরই মধ্যে রাশিয়ার তেল, গ্যাস ও ব্যাংক খাতে আরও কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তিনি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়ানোর দাবি তুলেছেন।

জেলেনস্কি মনে করছেন, পুতিন সরাসরি না বলেননি। কিন্তু তিনি প্রত্যাখ্যানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় নিজের মনোভাব তুলে ধরেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। 

জেলেনস্কি বলেন, ‘পুতিন অবশ্যই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সরাসরি বলতে ভয় পাচ্ছেন যে তিনি এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান এবং ইউক্রেনীয়দের হত্যা করতে চান।’ পুতিনের এত পূর্বশর্ত বেঁধে দেওয়ার ফলে কিছুই কার্যকর হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পুতিনের মন্তব্য এবং এ বিষয়ে জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়ার পরে এখন দুই পক্ষের মধ্যকার পার্থক্যটা স্পষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করেছে। ইউক্রেন দুই স্তরের একটি প্রক্রিয়া চায়। প্রথমে দ্রুত যুদ্ধবিরতি, পরে দীর্ঘমেয়াদি নিষ্পত্তির আলোচনা।

তবে রাশিয়া মনে করছে এই দুটি প্রক্রিয়া আলাদা করা সম্ভব না এবং সব সমস্যা একটি একক চুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা উচিত। দুই পক্ষই নিজ নিজ চুক্তির পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে।

ইউক্রেন রাজি হওয়ার পর ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘বল এখন রাশিয়ার কোর্টে’ এবং তিনি আশা করেছিলেন যে মস্কো সঠিক কাজ করবে ও প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে। সূত্র: বিবিসি