ঢাকা ২৮ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

নতুন ছায়াপথ খুঁজে পেল হাবল

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৬ পিএম
নতুন ছায়াপথ খুঁজে পেল হাবল
ছবি : সংগৃহীত

হাবল টেলিস্কোপকে কাজে লাগিয়ে নতুন এক সর্পিলাকার ছায়াপথের (গ্যালাক্সি) সন্ধান পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইএসএর গবেষকরা। ‘আইসি ৪৬৩৩’ নামে চিহ্নিত করা সেই ছায়াপথের ছবিও তুলেছেন তারা। 

নাসার প্রতিবেদন অনুসারে, এর অবস্থান আমাদের পৃথিবী থেকে ১০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। জ্যোতির্বিদরা ধারণা করছেন, শত শত কোটি নক্ষত্র এই গ্যালাক্সির মধ্যে রয়েছে। 

মহাজাগতিক বস্তুগুলোর দূরত্ব এতই বেশি যে, আমাদের প্রচলিত দূরত্ব মাপার একক সেখানে ব্যবহার করা জটিল হয়ে পড়ে। আলো সেকেন্ডে ৩ লাখ ৮ হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটে। আর এভাবে এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে- তাই এক আলোকবর্ষ। 

আইসি ৪৬৩৩ ছায়াপথের পুরো চিত্র ধারণ এখনো সম্ভব হয়নি। এর বড় একটি অংশ মহাজাগতিক ধূলিকণার মেঘের পেছনে লুকিয়ে আছে। হাবলের গবেষকরা বলেছেন, এখন পর্যন্ত তারা যেই চিত্র পেয়েছেন- সেখানেই ১০০ কোটির বেশি নক্ষত্র রয়েছে। তবে গ্যালাক্সির বৈশিষ্ট্যগুলো পুরোপুরি বোঝাতে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। কারণ এর জন্য প্রয়োজন আইসি ৪৬৩৩-এর পূর্ণ চিত্র। 

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, আইসি ৪৬৩৩ ছায়াপথটিকে চামেলিওন ১, চামেলিওন ২ ও চামেলিওন ৩ মহাজাগতিক মেঘগুলোই আড়াল করে রেখেছে। নাসা বলছে, এই মেঘগুলোই চামেলিওন তারকা গঠনের অঞ্চল। অর্থাৎ এখান থেকে নক্ষত্রের জন্ম হয়। আর এটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির তুলনামূলক কাছে। মাত্র ৫ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। সূত্র: এনডিটিভি

মঙ্গলে ছিল বিশাল সমুদ্র!

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ এএম
মঙ্গলে ছিল বিশাল সমুদ্র!
মঙ্গল গ্রহে সমুদ্র থাকার চিহ্ন। চীনা রোভার ঝুরং এ ছবি ধারণ করেছে। ছবি: এনডিটিভি

মঙ্গল গ্রহে উপকূলরেখার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। অতীতে সেখানে যে এক বিশাল সমুদ্রের উপস্থিতি ছিল, এই রেখা সেটিই প্রমাণ করে। সম্প্রতি চীনা রোভার ঝুরং মঙ্গলে প্রাচীন সমুদ্রের এমন প্রমাণ পেয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, প্রায় ৩৬৮ কোটি বছর আগে সেখানে এই সমুদ্র বিদ্যমান ছিল। সমুদ্রটি তুলনামূলকভাবে দ্রুত বরফের সাগরে পরিণত হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলে সমুদ্রের অস্তিত্বের কথা গ্রহটি যে আগে বাসযোগ্য ছিল বলে সেই প্রমাণকে জোরালো করছে।

চীনের ঝুরং রোভার ২০২১ সালের মে মাস থেকে ছয়টি বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম নিয়ে মঙ্গলে অবতরণ করেছে। সম্প্রতি রোভারটি বিভিন্ন তথ্য ও তার চলার পথে নমুনার তথ্য পৃথিবীতে পাঠায়। 

মঙ্গল গ্রহের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এতে পৃথিবীর উপকূলরেখার মতো দেখা গেছে। মঙ্গলের পলল আর আগ্নেয়গিরির কাদাসহ বিভিন্ন খাদের বৈশিষ্ট্য অতীতে সেখানে সমুদ্র ছিল বলে প্রমাণ করছে। নতুন এই সমুদ্রের খোঁজ মঙ্গল গ্রহে অতীতে উষ্ণ বায়ুমণ্ডলসহ অণুজীবের উপস্থিতির ধারণাকে শক্তিশালী করে তুলবে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে সমুদ্রের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী বো উ বলেন, ‘আমরা অনুমান করছি, ইউটোপিয়া প্ল্যানিটিয়া নামের মঙ্গলের এলাকায় প্রায় ৩৬৮ কোটি বছর আগে বন্যা হয়েছিল। তখন সমুদ্র সম্ভবত সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে বরফ হয়ে গিয়েছিল। আমরা ধারণা করছি, প্রায় ৩৪২ কোটি বছর আগে সেই সমুদ্র অদৃশ্য হয়ে গেছে।’

আরেক বিজ্ঞানী সের্গেই ক্রাসিলনিকভ বলেন, সমুদ্র সম্ভবত পলি দিয়ে ভরাট হয়ে যায়।

আমাদের সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহের মতো মঙ্গল গ্রহ প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হয়েছিল। সেখানে প্রাচীন সমুদ্রের উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে মঙ্গল গ্রহ একসময় আরও বাসযোগ্য ছিল। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য ইনডিপেনডেন্ট

ব্রাজিলে নখের চেয়েও ছোট নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ এএম
ব্রাজিলে নখের চেয়েও ছোট নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান
ব্রাজিলে নখের চেয়েও ছোট নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান। সংগৃহীত

বিজ্ঞানীরা ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রেইনফরেস্টে আঙুলের নখের চেয়েও ছোট আকৃতির একটি নতুন ব্যাঙের প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় এই প্রজাতির ব্যাঙের দৈর্ঘ্য ১ সেন্টিমিটারেরও কম। এটি পৃথিবীর অন্যতম ক্ষুদ্রতম কশেরুকা প্রাণী। ‘ব্র্যাচিসেফালাস ডাকনিস’ নামের এই ব্যাঙ পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা প্রজেক্ট ডাকনিসের নামে নামকরণ করা হয়েছে, যারা এই আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

গবেষকরা এই ছোট ‘ফ্লি টোড বা পোকার মতো ব্যাঙ’ নিয়ে গবেষণা করার সময় এদের এই ক্ষুদ্রাকৃতির জন্য বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন। এই ক্ষুদ্র ব্যাঙের আকৃতি ও তার গঠন বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত ক্ষুদ্রতম মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। গবেষণায় বলা হয়েছে, এটি দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম উভচর প্রাণী। বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্র ব্যাঙ হওয়া সত্ত্বেও এই ব্যাঙের অস্থি কাঠামো সাধারণ বড় ব্যাঙের মতোই।

গবেষণাপত্রের সহলেখক লুইস ফেলিপে তোলেদো জানান,‘বিবর্তনের ধারায় এটির হাড়ের গঠন সংকুচিত হয়ে ক্ষুদ্রাকার ধারণ করেছে, যা শরীরের কিছু অংশের অনুপস্থিতির জন্য দায়ী। আমরা জীববিজ্ঞানীরা যাকে মাইক্রোটাইজেশন বলি, এদের বিবর্তনের সময় সেই প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যেতে হয়েছে। এতে হাড়ের ক্ষয়, হ্রাস বা একীভূতকরণ ও শরীরের অন্যান্য অংশের অনুপস্থিতি ঘটে।’

এই প্রজাতি দেখতে একই অঞ্চলের আরেক প্রজাতি বি হারমোজেনেসি (B. hermogenesi) দেখতে অনেকটাই মিল রয়েছে। উভয়ের ত্বক হলুদাভ-বাদামি ও পাতার নিচে বাস করে। এ ছাড়া এরা সরাসরি ডিম থেকে ক্ষুদ্র ব্যাঙ হিসেবে জন্ম নেয়। তবে গবেষকরা নতুন প্রজাতিটির স্বতন্ত্র ডাকের মাধ্যমে এর অস্তিত্ব সম্পর্কে অবগত হন। পরবর্তীতে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়, ব্রাচিসেফালাস ডাকনিস সত্যিই একটি নতুন প্রজাতি। তোলেদো বলেন, ‘১৯৯৮ সালে বি হারমোজেনেসি বর্ণনার জন্য ব্যবহৃত নমুনাগুলোর মধ্যে নতুন প্রজাতির নমুনা থাকতে পারে।’

মেক্সিকোর জঙ্গলে প্রাচীন মায়ান নগরী আবিষ্কার

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৫ পিএম
মেক্সিকোর জঙ্গলে প্রাচীন মায়ান নগরী আবিষ্কার
মেক্সিকোর জঙ্গলে প্রাচীন মায়ান নগরী আবিষ্কার। ছবি: সংগৃহীত

মেক্সিকোর এক জঙ্গলে হাজার হাজার অজানা কাঠামো, পিরামিডসহ একটি সুবিশাল মায়ান নগরী আবিষ্কার করেছেন একজন আমেরিকান ছাত্র। পাবলিক ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি এই শহরের সন্ধান পান।

কাম্পেচ অঞ্চলের লেজার স্ক্যানের ডেটা বিশ্লেষণ করে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ অজানা স্থাপনা খুঁজে পাওয়া যায়। এই হারিয়ে যাওয়া নগরীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভ্যালেরিয়ানা’। মধ্য আমেরিকার ইউকাটান উপদ্বীপে প্রাচীন মায়ান স্থাপনাগুলো খুঁজে বের করতে প্রত্নতত্ত্ববিদরা লেজার স্ক্যানিং লিডার প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। এ প্রযুক্তির সাহায্যে তারা পিরামিড, সাধারণ মানুষের বাসস্থান এবং অন্যান্য মায়ান স্থাপনা খুঁজে পেয়েছেন।

আগে কয়েক শ বর্গকিলোমিটার এলাকা জরিপ করে প্রাচীন স্থাপনা খুঁজে বের করা হতো। নর্দার্ন অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটির পিএইচডির শিক্ষার্থী লুক অউল্ড-থমাস জানান, এই জরিপের কাজে প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রতিটি বর্গমিটার পরীক্ষা করতেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গবেষকরা মায়ান স্থাপনার প্রমাণ খুঁজতে লিডার স্ক্যানের ডেটা বিশ্লেষণ করছেন। অল্ড-থমাস ২০১৩ সালে এমনই এক লিডার প্রকল্পের ডেটা বিশ্লেষণ করেন। এর মাধ্যমে তিনি মেক্সিকোর বনাঞ্চলে ৫০ বর্গমাইল এলাকায় কী লুকিয়ে আছে তা খুঁজে বের করেন। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল মেক্সিকোর বনাঞ্চলে কার্বন পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ করা।

তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘গুগল সার্চের প্রায় ১৬তম পাতায় গিয়ে পরিবেশ পর্যবেক্ষণের জন্য মেক্সিকোর একটি সংস্থার করা লেজার জরিপের তথ্য পাই।’

আধুনিক প্রত্নতাত্ত্বিক পদ্ধতিতে এই তথ্য বিশ্লেষণ করে ঘনবসতিপূর্ণ ও বিচিত্র মায়ান জনবসতির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে ২৫০ থেকে ৯০০ খ্রিষ্টাব্দ অবধি সময়ের এক বিশাল নগরী। অল্ড-থমাস বলেন, ‘সরকার বা বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় এই শহরের বিষয়ে কিছুই জানত না। এটি প্রমাণ করে, এখনো অনেক কিছু আবিষ্কার করার বাকি আছে।’ সম্প্রতি অ্যান্টিকুইটি জার্নালে তার গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক অল্ড-থমাসের মতে, সম্প্রতি আবিষ্কৃত এই প্রাচীন নগরীতে একটি ক্লাসিক্যাল মায়া রাজনৈতিক রাজধানীর সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু গ্রামীণ এলাকা বা ছোটখাটো বসতি নয়, বরং পিরামিডসহ বিশাল এক নগরীর সন্ধান পেয়েছি, যা ওই এলাকার একমাত্র মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত। স্থানীয়রা বহু বছর ধরে এই ধ্বংসাবশেষের আশপাশে চাষাবাদ করছেন।’

গবেষকরা মনে করেন, প্রাচীন এই নগরীর নির্মাণশৈলী আধুনিক শহুরে উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে। অল্ড-থমাস বলেন, ‘এমন অনেক মায়া নগরী ছিল যা কৃষিভিত্তিক এবং উচ্চ ঘনবসতিপূর্ণ। আমাদের বর্তমান পরিবেশগত ও সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলো মাথায় রেখে, প্রাচীন এই নগরীগুলোর গবেষণা আমাদের শহর পরিকল্পনার ধারণাকে আরও সম্প্রসারিত করতে সাহায্য করতে পারে।’

অতীতের নগরী নির্মাণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনার এই উদাহরণগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আধুনিক নগরায়ণের উন্নয়ন করা যেতে পারে বলে গবেষকদের অভিমত।

/আবরার জাহিন

সূর্যের আরও কাছে যাচ্ছে পার্কার সোলার প্রোব

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
সূর্যের আরও কাছে যাচ্ছে পার্কার সোলার প্রোব
সূর্যের আরও কাছে যাচ্ছে পার্কার সোলার প্রোব। ছবি: সংগৃহীত

নাসার মহাকাশযান পার্কার সোলার প্রোব মানুষের তৈরি কোনো বস্তু হিসেবে সূর্যের সবচেয়ে কাছে যাচ্ছে। গত বুধবার এই যান শুক্র গ্রহের মহাকর্ষীয় টানকে কাজে লাগিয়ে নিজের গতি ও পথ পরিবর্তন করেছে। এই মহাকর্ষীয় বলের সহায়তায় মহাকাশযানটি সূর্যের আরও কাছাকাছি যেতে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে মহাকাশযানটি আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলবে।

পার্কার সোলার প্রোবকে সূর্যের বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে বাইরের স্তর বা আউটার করোনা গবেষণার জন্য পাঠানো হয়েছে। এই মহাকাশযান সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৩৮ দশমিক ৬ লাখ মাইল দূর দিয়ে অতিক্রম করবে। এর আগে কোনো মানবসৃষ্ট বস্তু সূর্যের এত কাছে পৌঁছায়নি। এই অভূতপূর্ব নিকটবর্তী অবস্থান থেকে পার্কার সোলার প্রোব সূর্যের প্লাজমা ও সৌরঝড়ের মতো বিভিন্ন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করবে।

মেরিল্যান্ডের গ্রিনবেল্টে অবস্থিত নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের পার্কার সোলার প্রোব প্রকল্পের বিজ্ঞানী অ্যাডাম সাবো এই মিশনকে প্রকৌশলের বড় ধরনের অর্জন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি মনে করেন, এই মিশনের মাধ্যমে সূর্য সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি আরও বিস্তৃত হবে। সৌরজগতের গঠন ও বিবর্তন সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষমতা বাড়বে।

পার্কার সোলার প্রোবের এই অভিযান সৌর পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এই মিশনের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা সূর্যের অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ, সৌরঝড়ের উৎপত্তি ও এর প্রভাব সম্পর্কে আরও জানতে পারবেন। এই তথ্য পৃথিবীকে সৌরঝড়ের প্রভাব থেকে রক্ষায় নতুন প্রযুক্তি বিকাশে সাহায্য করবে।

আগামী ২৪ ডিসেম্বর যানটি সূর্যের সবচেয়ে কাছে পৌঁছাবে, যাকে পেরিহেলিয়ন বলা হয়। এই সময় প্রায় তিন দিনের জন্য নাসার মিশন কন্ট্রোলের সঙ্গে মহাকাশযানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৭ ডিসেম্বর যানটি একটি সংকেত পাঠিয়ে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করবে। এ সময়ের মধ্যে যানটি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নাসার মতে, পার্কার সোলার প্রোব এই কক্ষপথে তার মিশনের বাকি সময় কাটাবে। একই দূরত্বে আরও দুটি পেরিহেলিয়ন সম্পন্ন করবে।

পুরো মিশনের সময় ধরে পার্কার সোলার প্রোব সূর্যের আরও কাছে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে নাসার পার্কার সোলার প্রোব প্রথমবারের মতো সূর্যের প্রায় ২ দশমিক ৬৫ কোটি মাইলের মধ্যে গিয়ে ‘হেলিওস ২’ মহাকাশযানের ১৯৭৬ সালে গড়া রেকর্ড ভেঙেছিল। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রোবটি সূর্যের প্রায় ৪৫ দশমিক ১ লাখ মাইলের মধ্যে গিয়ে নিজস্ব রেকর্ড ভাঙে। এবার এটি সূর্যের আরও কাছে ৩৮ দশমিক ৬ লাখ মাইলের মধ্যে পোঁছাবে। এটি পার্কার প্রোবের জন্য সূর্যের কাছে তৃতীয়বারের মতো রেকর্ড ভাঙার ঘটনা ঘটবে।

ভেনাস ফ্লাইবাইটি হবে প্রোবের সপ্তম ও শেষবারের মতো এই গ্রহের পাশ দিয়ে যাওয়া। ২০২০ সালের তৃতীয় ফ্লাইবাই-এর সময় প্রোবের ‘ওয়াইড-ফিল্ড ইমেজার ফর পার্কার সোলার প্রোব’ (ডব্লিউআইএসপিআর) ক্যামেরা শুক্র গ্রহের ঘন মেঘের স্তর ভেদ করে জ্বলন্ত পৃষ্ঠের ছবি ধারণ করেছে। জন হপকিন্স অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স ল্যাবরেটরির মহাকাশ বিজ্ঞানী নোয়াম আইজেনবার্গ বলেন, ‘এই ক্যামেরা শুক্র গ্রহের মেঘের মধ্যদিয়ে তার পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতা দেখতে সক্ষম।’

শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠের ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আরও জানতে গবেষকরা আগামী বুধবারের ফ্লাইবাইটি থেকে নতুন তথ্য আশা করছেন।

মানবমস্তিষ্কে ভাইরাসের হানা

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
মানবমস্তিষ্কে ভাইরাসের হানা
মস্তিষ্কের কোষে এইচএসভি-১ ভাইরাসের সংক্রমণ। ছবি: এনডিটিভি

মস্তিষ্ক মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের কেন্দ্রীয় অঙ্গ। এটি মানবদেহের সিংহভাগ কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে একটি নতুন ভাইরাস বা জীবাণু মানবমস্তিষ্কের জন্য বড় বিপদ বয়ে আনছে। মুখের ভেতর যেমন ঘা হয়, ঠিক তেমনি আমাদের মগজে এই ধরনের নতুন ঘা তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে সম্প্রতি সতর্কবাণী শুনিয়েছেন চিকিৎসকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানিয়েছেন, মগজের বিভিন্ন স্থানে জায়গা করে নিচ্ছে এই ঘা। এইচএসভি-১ নামের এই ভাইরাস মগজের কাজ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি স্নায়ুতন্ত্রকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে এই নতুন ধরনের ঘা। এটি সরাসরি মুখে ও চোখের বিভিন্ন কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বাতাসের মধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে এই ভাইরাস।

কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ক্রিস্টি নেইমেয়ার ভাইরাসটির নাম দিয়েছেন এইচএসভি-১। তবে ভাইরাসটি কেন্দ্রীয় নার্ভ সিস্টেমকে কীভাবে আক্রমণ করে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তিনি শুধু বলছেন, ভাইরাসটি বাতাসের মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। তবে এটি মস্তিষ্কে ঢুকে এর কোন কোন অংশকে বিপন্ন করে ফেলে তা তিনি বলতে পারেননি। ভাইরাসটি মস্তিষ্কের ভেতর কীভাবে চলাচল করে থাকে তার একটি পথনকশা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন চিকিৎসকরা। 

গবেষকরা বলছেন, বাতাসের মধ্য দিয়েই এই ভাইরাস সরাসরি প্রবেশ করছে আমাদের মগজে। এরপর নিজের কাজ শুরু করে সে। মাথার বিভিন্ন অংশের ওপর সরাসরি প্রভাব খাটাচ্ছে এই ভাইরাস। এমনকি রাতের দিকে যাদের ভালো ঘুম হচ্ছে না তারাও এই ভাইরাসের শিকার হতে পারেন। মগজের কার্যক্ষমতা নষ্ট করার পাশাপাশি মাথার ভেতরের বিভিন্ন অংশে ঘা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসের আক্রমণে আলঝেইমারের মতো রোগও হতে পারে।

এই ভাইরাসের চিকিৎসা করতে গিয়ে চিকিৎসদের রীতিমতো হিমশিম অবস্থা। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, একবার যদি মগজে এই জীবাণু প্রবেশ করতে পারে তাহলে আর রক্ষা নেই। এর হাত থেকে বাঁচা মুশকিল। আপাতত এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। শুধু একে খানিক সময় ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির স্নায়ুবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটে মারাত্মকভাবে। তাই নতুন এই ভাইরাস ভয় ধরাচ্ছে সবার মনে। সূত্র: এনডিটিভি