‘মেটাস্ট্যাটিক’ নামের ক্যানসার কোষ শরীরের বিভিন্ন অংশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে এটি মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ক্যানসারের বিস্তার ঠেকানোর নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি নিউইয়র্কের মন্টেফিয়োর আইনস্টাইন কম্প্রিহেনসিভ ক্যানসার সেন্টারের (এমইসিসিসি) বিজ্ঞানীরা এমন দাবি করেছেন। এ বিষয়ে তারা ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এক প্রাকৃতিক ‘ইমিউন রেসপন্স’ বা প্রতিরোধ সক্ষমতা আবিষ্কার করেছেন। তারা দেখেছেন, এই প্রতিরোধ সক্ষমতা শরীরে ঘুরে বেড়ানো বা ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ক্যানসার কোষকে নতুন টিউমার গঠনে বাধা দেয়। এমইসিসিসির করা এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘সেল’-এ।
এমইসিসিসির প্রধান গবেষক ড. জুলিও আগুয়েরে-ঘিসো বলেছেন, ‘ক্যানসার চিকিৎসার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মেটাস্ট্যাসিসকে থামানো। আমরা অনুমান করছি, মানবদেহে ছড়িয়ে পড়া এ ক্যানসার প্রতিরোধ বা চিকিৎসার নতুন উপায়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে আমাদের এই আবিষ্কার।’
গবেষণায় উঠে এসেছে, দেহের ফুসফুসে পাওয়া ‘অ্যালভোলার ম্যাক্রোফেজ’ নামের নির্দিষ্ট কিছু ইমিউন কোষ এসব ক্যানসার কোষকে সুপ্ত বা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রাখতে সাহায্য করে। এ গবেষণায় স্তন ক্যানসারের কোষের ওপর নজর দেন গবেষকরা, যা মূলত ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যানসারের যেসব কোষ মূল টিউমার ছেড়ে দেহের অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে, সেসব কোষ ডিসমিনেটেড ক্যানসার সেল (ডিসিসি) হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে কিছু কোষ দ্রুত দেহে নতুন টিউমার গঠন শুরু করে ও বাকিরা দেহের কোনো ক্ষতি না করে বহু বছর ধরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, মানব ফুসফুসে থাকা বিভিন্ন ‘অ্যালভোলার ম্যাক্রোফেজ’ এসব ক্যানসার কোষকে সুপ্ত অবস্থায় রাখার জন্য দায়ী। এসব ইমিউন কোষ দেহের ফুসফুসে বাস করে এবং ব্যাকটেরিয়া ও ক্ষতিকারক পদার্থ থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ইঁদুরের ওপর করা এ পরীক্ষায় গবেষণা দলটি দেখেছে, অ্যালভোলার ম্যাক্রোফেজ অপসারণ করার কারণে ক্যানসার কোষ আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে বেড়ে যায় টিউমার। অন্যদিকে দেহে এসব ম্যাক্রোফেজ ক্যানসারের বিস্তার ঠেকাতে সাহায্য করেছে। সূত্র: মেডিকেল এক্সপ্রেস