এলিয়েন বা ভিনগ্রহে প্রাণের সংকেত খুঁজে পাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে নাসার এক মহাকাশযান। গত সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার পর ইউরোপা ক্লিপার নামের এ মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণের মাধ্যমে এ যাত্রা শুরু হয়।
এ যানটির গন্তব্য ‘ইউরোপা’ উপগ্রহ। ইউরোপা হচ্ছে বৃহস্পতি গ্রহের এক রহস্যময় চাঁদ। পৃথিবী থেকে ১৮০ কোটি মাইল দূরে অবস্থিত ইউরোপা। সেখানে পৌঁছাতে মহাকাশ যানটির ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। ইউরোপা আকারে আমাদের চাঁদের চেয়ে কিছুটা বড়। এর বরফে ঢাকা পৃষ্ঠের নিচে এক বিশাল সমুদ্র লুকিয়ে রয়েছে, যার পানির পরিমাণ ভূপৃষ্ঠে থাকা সমুদ্রগুলোর পানির দ্বিগুণ বলে ধারণা করা হয়।
এ মহাকাশযানটি যে বিষয়ে অনুসন্ধান চালাবে সেটি সৌরজগতে জীবনধারণ-সম্পর্কিত প্রচলিত ধারণায় বড় পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হচ্ছে। নাসা মিশনের বিজ্ঞানী ও যুক্তরাজ্যের ওপেন ইউনিভার্সিটির প্ল্যানেটারি মাইক্রোবায়োলজিস্ট মার্ক ফক্স-পাওয়েল বলেছেন, ‘আমরা যদি সূর্য থেকে এতটা দূরে জীবনের খোঁজ পাই, তবে সেটা পৃথিবীতে প্রাণের উৎস থেকে ভিন্ন কিছু একটা হবে। নিঃসন্দেহে সেটি হবে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।’
১৯৭০-এর দশকে বিজ্ঞানীরা প্রথম বুঝতে পেরেছিলেন ইউরোপায় সম্ভবত জীবনধারণ সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় অবস্থিত এক টেলিস্কোপ দিয়ে ইউরোপায় গবেষকরা বরফ গলা পানি দেখতে পেয়েছিলেন।
ভয়েজার ১ ও ২ মহাকাশযান এর কাছে থেকে প্রথমবার ছবি তুলেছিল। এরপর ১৯৯৫ সালে নাসার ‘গ্যালিলিও’ স্পেসক্রাফটও ইউরোপার এক পাশের বেশ কিছু রহস্যময় ছবি তুলেছিল। এতে এমন এক পৃষ্ঠ দেখা যায়, যার মধ্যে গাঢ়, লালচে বাদামি ফাটল রয়েছে। আর এ ফাটলগুলোয় সম্ভবত লবণ ও সালফারের মতো উপাদান আছে, যা জীবনধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এরপর জেমস ওয়েব টেলিস্কোপেও এর বিভিন্ন ছবি উঠে এসেছে। তবে এসব মিশনের কোনোটিই ইউরোপার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছাতে পারেনি। সূত্র: সিএনএন