গবেষণার মধ্য দিয়ে পাওয়া গেছে বিকল্প জ্বালানির সন্ধান। গবেষকরা একে একধরনের বিপ্লব বলে উল্লেখ করেছেন।
তারা বলছেন বর্জ্যের পানি শোধন করে ভবিষ্যতে মিলবে তেলভিত্তিক পণ্য, ফসফরাস এবং অন্যান্য খনিজ দ্রব্য। এখন যা বর্জ্য, তাই হয়ে উঠবে মূল্যবান জিনিসের আধার।
ডেনমার্কের অ্যালবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন ও জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক পার হাল্কজার নিলসেন একটি গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে বলেছেন, পানিতে অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া পানিতে থাকা উদ্ভিজ্জ জিনিস খায় এবং এভাবেই ব্যাকটেরিয়া উদ্ভিদজাতীয় জিনিসে পরিণত হয়। রসায়নের ভাষায় একে বলে বায়োপলিমার। এখন পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে কৃত্রিম বায়োপলিমার উৎপাদিত হয়। এই বায়োপলিমারগুলো হচ্ছে প্লাস্টিক, রঙ ইত্যাদি। অপরিশোধিত তেলে এগুলো পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে এগুলোই পাওয়া যাবে পানিতে। পানির ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে থাকা বায়োপলিমার বা উদ্ভিজ্জ জিনিসগুলো গ্যাসের চুল্লিতে রূপান্তরিত হবে। এটাই হচ্ছে শক্তি বা এনার্জি। ব্যাকটেরিয়াই পরিণত হবে শক্তিতে। বাণিজ্যিকভাবে এগুলো উৎপাদন করা যাবে।
গবেষণায় বলা হচ্ছে, একটি বর্জ্যপানি শোধনাগারে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকশ’ ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যসহ নানা ধরনের বায়োপলিমার তৈরি করে। পানি নিষ্কাশন করে এই বায়োপলিমার পাওয়া যাবে, যা শিল্পপণ্যের জন্য ব্যবহার করা যাবে।
ডেনমার্কে অনেক বর্জ্যপানির শোধনাগার রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ডেনমার্কের বর্জ্যপানি শোধনাগার থেকে বায়োপলিমার তৈরির কারখানা নির্মাণ করা সম্ভব হবে। এই সম্ভাবনা বিপুল। এক ডেনমার্কেই বছরে কয়েক হাজার টন ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। এই পানি শোধনাগার থেকে খনিজ এবং অন্যান্য মূল্যবান উপাদানও সংগ্রহ করা যেতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ কাঁচামাল হিসেবে ফসফরাস ব্যবহার করে। গবেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে এই ফসফরাস পানি শোধনাগার থেকেই পাওয়া যাবে। বিকল্প জ্বালানিও মিলবে এই নোংরা পানি থেকে। সূত্র: সায়েন্সব্লগ