আমেরিকার স্লিপ ফাউন্ডেশনের গবেষণা অনুসারে, ১০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ক্রনিক ইনসমনিয়ায় ভোগেন। এটা ঘটে মূলত উদ্বেগজনিত চিন্তার কারণে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মন যখন চিন্তার দখলে চলে যায়, তখনই অনিদ্রার শিকার হয় মানুষ। চিন্তার দ্বারা ঘুম নিয়ন্ত্রিত হলে ঘুম নিয়ন্ত্রণে থাকে না। চিন্তা জন্ম দেয় উদ্বেগের আর উদ্বেগে জন্ম দেয় অনিদ্রার।
বাস্তবে দেখবেন, আপনি টেলিভিশন দেখতে দেখতে দিব্যি ঘুমিয়ে পড়ছেন। কিন্তু টেলিভিশন দেখার পরিবর্তে আপনি যদি বিছানায় যান, অনেক সময় আপনার ঘুম আসবে না। এর কারণ বিছানায় আপনি গেছেন হয়তো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে, ফলে আপনার ঘুমে বিঘ্ন ঘটছে। কিন্তু আপনি যখন টেলিভিশন দেখছিলেন, তখন কোনো উদ্বেগ আপনাকে গ্রাস করেনি।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, রাতে কোনো চিন্তাকেই মস্তিষ্কে স্থান দেবেন না। পরের দিনের জন্য রেখে দেবেন। যদি ক্লান্ত না হন, তাহলে ডায়েরি লিখতে পারেন। এতে মনের আবেগ প্রশমিত হবে। চিন্তা উদ্বেগ আপনার মাথা থেকে সরে যাবে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন, যারা এই ডায়েরি লেখেন তাদের ঘুম খুব ভালো হয়।
২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বেলর ও এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা বলছেন, ঘুমানোর আগে যারা ডায়েরি লেখেন, তাদের ঘুম দ্রুত আসে। তবে সবচেয়ে ভালো ঘুম হয় যদি পরবর্তী দিনটিতে একজন মানুষ কী কী করবেন, সেই পরিকল্পনাটা করে ফেলতে পারলে। আপনি রাতে সবার আগে এটাই করার চেষ্টা করবেন। দিনের বেলায়ও এই পরিকল্পনাটা আপনি করে ফেললে আরও ভালো। একেবারে নির্ভার হয়ে ঘুমাতে পারবেন।
সাধারণভাবে ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপত্রটি এ তথ্য দেয় যে, মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকবেই। রাতে শান্তিতে ঘুমাতে চাইলে পরবর্তী দিনটিতে আপনার পরিকল্পনা কী, সেই পরিকল্পনাটা করে ফেলাই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ। এরপর আপনি যখন বালিশে মাথা রাখবেন, তখন সহজেই চোখে ঘুম চলে আসবে। সূত্র: সায়েন্স ফোকাস