আমাদের ছায়াপথের নাম মিল্কিওয়ে। এই ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের প্রথম বিখ্যাত ছবিটি সঠিক নাও হতে পারে, এমনটাই দাবি করা হয়েছে নতুন এক গবেষণায়।
২০২২ সালে প্রকাশিত ছবিটি আন্তর্জাতিক গবেষণা দল ‘ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ (ইএইচটি)’ প্রকল্পের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফসল। ছবিটি ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত ব্ল্যাকহোলের বিস্ময়কর দৃশ্য উপস্থাপন করে।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, কমলা রঙের ডোনাট আকৃতির বৃত্তাকারের মাঝখানে একটি কালো গর্তের মতো অংশ। মাঝের অন্ধকার অংশটিই হলো আসল কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোল। আর কমলা রঙের অংশটি হলো কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে থাকা উত্তপ্ত গ্যাস, যা কৃষ্ণগহ্বরের শক্তিশালী মহাকর্ষীয় বলের কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই চিত্রের আকার প্রকৃতপক্ষে সঠিক নয়। জাপানের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি (এনএওজে) পরিচালিত গবেষণা অনুযায়ী, ব্ল্যাকহোলের চারপাশে থাকা ডিস্কটির আকার আরও লম্বাটে হতে পারে।
প্রাথমিক ছবিটি তৈরিতে ব্যবহৃত তথ্য সংগ্রহ ও যাচাইয়ে গবেষকরা অনেক কাজ করেছেন। তবে নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রক্রিয়ায় কিছু ত্রুটির কারণে হয়তো ডেটা বিশ্লেষণে ভুল হয়েছে। ২০১৭ সালে সংগ্রহ করা মূল ডেটা পুনরায় পর্যবেক্ষণ করে এই দাবি জানিয়েছেন গবেষকরা। ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরির গবেষক মিওশি মাকোতো বলেন, ‘আমাদের প্রাপ্ত ছবিতে পূর্ব-পশ্চিম দিকে কিছুটা লম্বাটে আকৃতি দেখা যাচ্ছে এবং পূর্বের অংশটি পশ্চিম অংশের চেয়ে উজ্জ্বল। এই আকৃতি ইঙ্গিত দেয়, ব্ল্যাকহোলের চারপাশের থাকা জমা পদার্থের ডিস্কটি আলোর গতির প্রায় ৬০ শতাংশ গতিতে ঘুরছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তা হলে কিভাবে এই বলয়াকার ছবিটি পাওয়া গেল? আসলে কোনো টেলিস্কোপই কোনো জ্যোতির্বিদ্যাসংক্রান্ত ছবি নিখুঁতভাবে ধারণ করতে পারে না। আমাদের ধারণা হলো, ইএইচটির ইমেজিং বিশ্লেষণে ত্রুটির কারণে ডোনাট আকৃতির চিত্রটি তৈরি হয়েছে, যা প্রকৃত জ্যোতির্বিদ্যাগত কাঠামোর প্রতিফলন নাও হতে পারে।’
এসব দাবির বিস্তারিত উঠে এসেছে ‘অ্যান ইনডিপেনডেন্ট হাইব্রিড ইমেজিং অব এসজিআর এ* ফ্রম দ্য ডেটা ইন ইএইচটি ২০১৭ অবজারভেশন্স’ শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে। ‘মান্থলি নোটিসেস অব দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি’ নামের বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নালে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট