মস্তিষ্ক মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের কেন্দ্রীয় অঙ্গ। এটি মানবদেহের সিংহভাগ কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে একটি নতুন ভাইরাস বা জীবাণু মানবমস্তিষ্কের জন্য বড় বিপদ বয়ে আনছে। মুখের ভেতর যেমন ঘা হয়, ঠিক তেমনি আমাদের মগজে এই ধরনের নতুন ঘা তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে সম্প্রতি সতর্কবাণী শুনিয়েছেন চিকিৎসকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানিয়েছেন, মগজের বিভিন্ন স্থানে জায়গা করে নিচ্ছে এই ঘা। এইচএসভি-১ নামের এই ভাইরাস মগজের কাজ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি স্নায়ুতন্ত্রকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে এই নতুন ধরনের ঘা। এটি সরাসরি মুখে ও চোখের বিভিন্ন কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বাতাসের মধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে এই ভাইরাস।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ক্রিস্টি নেইমেয়ার ভাইরাসটির নাম দিয়েছেন এইচএসভি-১। তবে ভাইরাসটি কেন্দ্রীয় নার্ভ সিস্টেমকে কীভাবে আক্রমণ করে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তিনি শুধু বলছেন, ভাইরাসটি বাতাসের মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। তবে এটি মস্তিষ্কে ঢুকে এর কোন কোন অংশকে বিপন্ন করে ফেলে তা তিনি বলতে পারেননি। ভাইরাসটি মস্তিষ্কের ভেতর কীভাবে চলাচল করে থাকে তার একটি পথনকশা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন চিকিৎসকরা।
গবেষকরা বলছেন, বাতাসের মধ্য দিয়েই এই ভাইরাস সরাসরি প্রবেশ করছে আমাদের মগজে। এরপর নিজের কাজ শুরু করে সে। মাথার বিভিন্ন অংশের ওপর সরাসরি প্রভাব খাটাচ্ছে এই ভাইরাস। এমনকি রাতের দিকে যাদের ভালো ঘুম হচ্ছে না তারাও এই ভাইরাসের শিকার হতে পারেন। মগজের কার্যক্ষমতা নষ্ট করার পাশাপাশি মাথার ভেতরের বিভিন্ন অংশে ঘা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসের আক্রমণে আলঝেইমারের মতো রোগও হতে পারে।
এই ভাইরাসের চিকিৎসা করতে গিয়ে চিকিৎসদের রীতিমতো হিমশিম অবস্থা। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, একবার যদি মগজে এই জীবাণু প্রবেশ করতে পারে তাহলে আর রক্ষা নেই। এর হাত থেকে বাঁচা মুশকিল। আপাতত এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। শুধু একে খানিক সময় ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির স্নায়ুবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটে মারাত্মকভাবে। তাই নতুন এই ভাইরাস ভয় ধরাচ্ছে সবার মনে। সূত্র: এনডিটিভি