ঢাকা ৩১ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রধান বিচারপতিসহ ৫৭ বিচারপতির পদত্যাগ দাবি

প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৪, ০৯:১০ পিএম
প্রধান বিচারপতিসহ ৫৭ বিচারপতির পদত্যাগ দাবি

বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও দলবাজি করার কারণে প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৭ ও হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতিসহ মোট ৫৭ বিচারপতির পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীরা। 

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টে সাধারণ আইনজীবীদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের আপামর জনগণ সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে গ্রহণ করেছিল এবং তার ওপর জনগণ আস্থা রেখেছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্ট দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, বিচারপতি ভবন জনরোষানলের শিকার হয়। এ ছাড়া ১৫ দিন ধরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশের প্রায় সব আদালত ভবন জনগণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়, যা গত ২০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার। ১৬ বছর ধরে দেশের আপামর জনগণ এই আওয়ামী লীগের বিচার বিভাগের কাছ থেকে কোনো বিচার পায়নি। বরং খুনি, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা সরকারের সব অন্যায় পাপের সহযোগী হয়েছে প্রধান বিচারপতিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, মো. মোজাম্মেল হোসেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ গত ১৫ বছরের দলবাজ বিচারপতিদের পদত্যাগ করতে হবে। আইনজীবী সমাজ এসব সংবিধান লঙ্ঘনকারী প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আদালতে বিচারের দাবি জানাচ্ছে। পাশাপাশি সৎ, দক্ষ, নিরপেক্ষ যোগ্য ব্যক্তিদের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।’

এ ছাড়া সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, শেখ ফজলে নূর তাপস, সদ্য পদত্যাগকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানসহ ১২ আইনজীবীকে সামাজিকভাবে বয়কট ও অসহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়। 

এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, অ্যাডভোকেট গোলাম রহমান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম প্রমুখ। 

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইন সমিতির সভাপতির কক্ষে একই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিতর্কিত-দলবাজ বিচারপতিদের দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে রবিবারের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট খুলে দিতে হবে।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন, আমরা এই দাবির সঙ্গে একমত। আজকের মধ্যে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। যেসব বিচারপতি সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে বিচারকাজ পরিচালনা করেছেন তাদের ভয় নেই।’ 

এ সংবাদ সম্মেলনে সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম ও ফাতিমা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে জ্যোতি ৪ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ পিএম
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে জ্যোতি ৪ দিনের রিমান্ডে
আদালতে তোলা হয় সাফি মোসাদ্দের খান জ্যোতিকে। ছবি : ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ছেলে সাফি মোসাদ্দের খান জ্যোতির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

ঢাকার আশুলিয়া থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় জ্যোতিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আবু তাহের মিয়া। শুনানি শেষে জ্যোতির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। 

এর আগে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সালমান/

৪ মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
৪ মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (ফাইল ছবি)

সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় গ্রেনেড হামলা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলাসহ সিলেটে জঙ্গি হামলার চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।

গতকাল বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার শুনানি শেষে বাবরের জামিন মঞ্জুর করেন। তার পক্ষের আইনজীবী শহীদুজ্জামান চৌধুরী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘সিলেটে চারটি মামলার আসামি বাবর। তার জামিনের আবেদন করা হলে চারটি মামলা শুনানির পর আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। তিনি বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আছেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তিনি আদালতে হাজির থাকতে পারেননি।’

আদালতের বেঞ্চ সহকারীর দপ্তর থেকে জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের জামিন শুনানির আবেদন করেছিলেন তার পক্ষের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনি এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই বাজারে জনসভায় গ্রেনেড হামলা হয়। জনসভায় তখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গ্রেনেড হামলায় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। এ ঘটনায় দিরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা করেছিলেন। দুটো মামলার অধিকতর তদন্তে বাবরকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

অপর দুটো মামলা হচ্ছে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলা। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া নিহতের ঘটনায় দুটো মামলায় অধিকতর তদন্তে বাবরকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

রাষ্ট্র সংস্কারে কমিশন গঠন জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন: অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৫ পিএম
রাষ্ট্র সংস্কারে কমিশন গঠন জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন: অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগে যে ছয়টি কমিশন গঠন করেছে, তাতে মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘শুধু আমাদের দেশে নয়, পৃথিবীব্যাপী তিনটি বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ।’ 

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমাদের বিচার বিভাগের সংস্কার প্রয়োজন। কেননা বিচার বিভাগ তার কার্যক্রমে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করে। প্রজাতন্ত্রের অন্য কোনো বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগকে মেলানোর কোনো সুযোগ নেই। বিচার বিভাগ তার কার্যক্রমে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করবে।’

তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচার বিভাগের ওপর অন্য বিভাগের হস্তক্ষেপ ছিল। বিগত সময়ে গণতন্ত্র হত্যা, লুটপাটের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করেছেন তারা আদালতে ন্যায়বিচার পাননি, হয়রানির শিকার হয়েছেন। বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা ভুলেই গিয়েছিলেন যে, তারা সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। তারা নিজেদের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ভাবতেন।’ 

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণেই কার্যত বাংলাদেশের আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সংবিধান সংস্কার কমিশন বিষয়গুলো দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় সরকারের সংস্কারের উদ্যোগে সবাইকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুই মামলা

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুই মামলা
শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ও অন্য মামলাটি করা হয় গতকাল বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়ায়। এসব মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও তার আমলের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশপ্রধানদেরও আসামি করা হয়েছে। 

ঢাকা: বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলমকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুক্তভোগী নিজেই মামলাটির আবেদন করেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে অভিযোগটি সাভার মডেল থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন আদালত।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ভোলা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, তৎকালীন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, ঢাকা রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, তৎকালীন পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান ও সাভার মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। 

এক যুগ আগের ঘটনায় করা এ মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ডাকা গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে নাজিম উদ্দিন আলমসহ নেতা-কর্মীরা আমিনবাজার ব্রিজের ওপর অবস্থান করছিলেন। এ সময় পুলিশ নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হয়ে গুলি চালায় ও লাঠিপেটা করে। তখন পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলিতে নাজিম উদ্দিন আলমসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হন।

বগুড়া: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বগুড়ায় আব্দুল মান্নান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ১২২ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন নিহতের ছেলে মো. রানা। 

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওয়ালিউল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মো. মজিবুর রহমান মজনু এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট দুপুর ১টার দিকে আসামি মঞ্জুরুল আলম মোহন, রফি নেওয়াজ খান রবিন, আসাদুর রহমান দুলু, ওবায়দুল হাসান ববি, আমিনুল ইসলাম মণ্ডল ও আওয়ামী লীগ নেতা বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাছুদুর রহমান মিলনের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর পিস্তল ও কাটা রাইফেল দিয়ে গুলি করা হয়। এ সময় ককটেল ও পেট্রলবোমারও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। মামলার ২৩ নম্বর আসামি আব্দুল মতিন পিস্তল দিয়ে আব্দুল মান্নানকে গুলি করেন। পরে আব্দুল মান্নান মারা যান।

সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান ৭ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ পিএম
সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান ৭ দিনের রিমান্ডে
আদালতে তোলা হয় সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে। ছবি : ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ

ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনিকে হত্যার অভিযোগে করা এই মামলায় আছাদুজ্জামান মিয়ার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক গোলাপ মাহমুদ তাকে ১০ দিন রিমান্ডে চেয়ে এই আবেদন করলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে ডিএমপির সাবেক এই কমিশনারকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে রাজধানীর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনিকে পুলিশি হেফাজতে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যার’ অভিযোগে এই মামলা করা হয়। মামলায় ডিএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ পুলিশের বর্তমান ও সাবেক ১৩ কর্মকর্তাসহ ৬২ জনকে আসামি করা হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর খিলগাঁও থানায় জনির বাবা ইয়াকুব আলী এই মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের ১৯ জানুযারি সকালে নূরুজ্জামান জনি ও তার সহপাঠী মইন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরাকে দেখতে যান। কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেরার পথে আসামিরা জনি ও মইনকে ডিবি পরিচয়ে অবৈধভাবে আটক করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে নির্যাতন চালায়। তখন নুরুজ্জামান জনির ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুনিয়া পারভিনসহ আত্মীস্বজন খিলগাঁও থানা, ডিবি দক্ষিণ অফিস, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসসহ বিভিন্ন থানায় হন্য হয়ে খুঁজে বেড়ান। দুদিন ধরে খোঁজাখুজি করার পরও নুরুজ্জামান জনির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ২০ জানুয়ারি রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর খেলার মাঠের আশপাশের লোকজন কান্নার শব্দ শুনতে পান।

ঘটনাস্থলের পাশে সি-ব্লকের বাসিন্দা লাভলী বেগম ও এ-ব্লকের বাসিন্দা সাইফুদ্দিনের স্ত্রী সানজিদা আক্তার সেতু কান্না ও চিৎকারের শব্দ শুনতে পান। সেই সময় আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা গুলির শব্দ শুনতে পায়। ভোরে বাদীসহ সাক্ষীরা ও প্রতিবেশীরা খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর মাঠের দিকে গিয়ে পুলিশদের দেখতে পান। আসামিরা বলেন, নুরুজ্জামান জনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

মামলার বাদী ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গিয়ে দেখতে পান নুরুজ্জামানের বুকের বামে, ডান দিকে, দুই হাতের তালুতে ১৬টি গুলির চিহ্ন রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জিজ্ঞাসা করলে তারা গালিগালাজ করে। লাশ গ্রহণ না করলে মামলা দেওয়ার হুমকিও দেন তারা।