ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত কমিটির ওপর ‘একটি অবৈধ অসাংবিধানিক অ্যাডহক কমিটি দিয়ে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করা হয়েছে’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সমিতির নির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার শাহাদাত শাওন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করা হয়েছে। নির্বাচিত কমিটির তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন (জেসি) বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) গণমাধ্যমে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান।
বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, সমিতির গঠনতন্ত্রের কোথাও অ্যাডহক কমিটির কথা বলা নেই। নির্বাচিত কমিটি গত ১২ আগস্টও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘সদস্যদের তরফ থেকে আমার কাছে তলবি সভার কোনো লিখিত নোটিশ আসেনি। অথচ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এটি পাঠানো বাধ্যতামূলক।’
তিনি বলেন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রে (পৃষ্ঠা ১৬) বলা আছে, (১) বিশেষ/তলবি সাধারণ সভা আহ্বানের জন্য সমিতির কমপক্ষে ১ হাজার নিয়মিত সদস্যের স্বাক্ষর, সদস্য নম্বর, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং অন্য কিছু থাকলে সেটিসহ লিখিতভাবে কোনো নোটিশ দেবেন সাধারণ সম্পাদক। ওই নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে তলবি বিষয়ে আলোচনা করার জন্য একটি তলবি/সাধারণ সভার আহ্বান করবেন। কিন্তু ডাকে বা ই-মেইলে তাকে নোটিশ দেওয়া হয়নি বলে জানান সাধারণ সম্পাদক।
সরকারকে আইনজীবী ফেডারেশনের ১৩ দফা প্রস্তাব
জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। গতকাল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম এই ১৩ দফা প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবগুলো হলো- ১. ইসলামি আদর্শ ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা এবং সব ধর্মের মর্যাদা সুনিশ্চিত করা, ২. বিশ্ব মানবতার মহামুক্তি সনদ ‘মদিনা সনদ’-এর আলোকে সব নাগরিকের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা, ৩. ৫ আগস্টকে ‘ছাত্র-জনতার বিপ্লব দিবস’ অথবা ‘জাতীয় বিপ্লব দিবস’ অথবা ‘বাংলাদেশ বিপ্লব দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে ওই দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা। ৪. সাম্প্রতিক বিপ্লবে নিহতদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান এবং হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা, ৫. নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ফেডারেল পদ্ধতির শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনপূর্বক বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক প্রদেশে বিভক্ত করা, ৬. আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা এবং অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালগুলোর বিচারকদের জন্য যুগোপযোগী আইন প্রবর্তন করা, ৭. ‘ধর্ম যার যার বাংলাদেশ সবার’- এই উক্তির আলোকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুদৃঢ় করা। ৮. মামলার জট নিরসনের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে হাইকোর্ট বিভাগের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন করা, ৯. প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে অনগ্রসর ও প্রতিবন্ধী নাগরিক ব্যতীত সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা, ১০. শিক্ষাক্ষেত্রে ধর্মবিদ্বেষী কোনো পাঠক্রম প্রণয়ন না করা, ১১. বিচারপতিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে My Lord/Your Lordship শব্দের পরিবর্তে Your Honour শব্দ প্রবর্তনের বিষয়ে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা, ১২. সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি চিরতরে বন্ধের লক্ষ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। ১৩. প্রশাসনিক হস্তক্ষেপমুক্ত বিচারব্যবস্থা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠন করা।